তুমি ঘুমের মধ্যে যা দেখো, তা স্বপ্ন নয়; বরং যা তোমাকে ঘুমাতে দেয় না, সেটাই স্বপ্ন।
— এ.পি.জে আবদুল কালাম (বিজ্ঞানী ও ভূতপূর্ব ভারতপতি)
শুয়ে-ঘুমিয়ে কেটে গেল ছুটির দিন। দেখেছি যে, এমনটাই হয়, ছুটির দিনগুলিতে কিছুই করা হয়ে ওঠে না কাজের কাজ। অলস চিৎ শুয়ে এমনকি কিছু-একটা পড়াটড়াও যদি সম্ভব হয়ে উঠত! হয় না, আদৌ। যদিও বৃহস্পতিরাতে খুব উৎফুল্ল লাগে ভেতরে-ভেতরে যে পরের দিন অনেককিছু করতে পারব, ঘুরে আসব অন্তত কোনো স্কুলফ্রেন্ডের বাড়ি, লিখতেটিখতে পারব একটাকিছু — ঘোড়াড্ডিম হয়। ইতলবিতল কল্পনাভাবনা বাস্তবে রূপ নেয়ার আগেই ফুরিয়ে আসে দিনের আলো। সমস্তদিন ঘুমিয়ে-ঝিমিয়ে কেটে যায়, বেলা আসে পড়ে, ফুরায় শুক্রবার। পরিস্থিতি দিনের পর দিন তথৈবচ।
কিছুতেই, কি বলে, তৃষ্ণা পাচ্ছি না। তৃষ্ণা পাচ্ছি না, মানে, যাকে বলে ক্ষুধামান্দ্য। অনাক্ষরিক, অবশ্য, রক্ষে! এখন যেন কোনোকিছুতেই ঠিক মন বসানো হয় না, প্রায় না-মুমকিন, মুশকিল মনে হয় যেন সবই। থির হতে পারছি না কোনোকিছুতেই। তাই বলে আমি-যে একেবারে স্বভাব-অস্থির, তেমনও না। যাকে বলে কন্সেন্ট্রেশন, কন্টেমপ্লেশন, ওই জিনিশটা আমার ধাতে নেই বোধয়। কী ভালোই-না হতো, আহা, থাকলে! স্থৈর্য দরকার খুব, অথচ। অনুভব করি ঠিকই, হয়ে-যে ওঠে না তা নিয়া অনুযোগ করবারও কিছু নাই। কতকিছুই তো হয় না কিছু/কত মানুষের, আবার কতকিছুই-না হয় কিছু/কত মানুষের! যার হয় তার হয়, যার হয় না তার হয় না। ভাবলেশহীন হওয়াও তো একটা হওয়া, না? তা-ই, তা-ই।
অন্ধের স্পর্শের মতো । শঙ্খ ঘোষের একটা বই। ছিমছাম, ছিপছিপে, চটি গ্রন্থিকা। আর বরাবরের মতো শঙ্খগভীর, স্বচ্ছস্রোতা, তাৎপর্যপ্রশস্ত। সংযোগের ভাষা নিয়ে এখানে লেখক কথা বলেছেন মৌন কিন্তু স্পষ্ট স্বরে। এখন কম্যুনিকেশন জিনিশটা বাংলাজ্ঞানেই বোঝে সবাই, সংযোগ বললে হেল্পলেস হয়া যায়, অ্যানিওয়ে। একটা অভিভাষণের মুদ্রিত রূপ এই বইটা। তা, ছাপাকাল খুব-সম্ভব ২০০৮, কে ছেপেছিল মনে নাই। কিন্তু খুব শান্তি পেয়েছিলাম বইটা পড়ে, এইটা ভুলি নাই। শঙ্খ তো, তাই, সমুদ্রপ্রশান্তিকর।
লেখা / জাহেদ আহমদ ২০১৩
… …
- জন্মদিন, মৃত্যুদিন ও অন্যান্য অবসিন - July 11, 2025
- বিল নট অর্ধশতাধিক - July 4, 2025
- আত্মহন্তার অন্তরাত্মা - June 25, 2025
COMMENTS