প্রিয় যন্ত্র, প্রথম যন্ত্র :: ফোয়াদ নাসের বাবু

প্রিয় যন্ত্র, প্রথম যন্ত্র :: ফোয়াদ নাসের বাবু

[‘ফিডব্যাক’ ব্যান্ডের লিডার, কিবোর্ডপ্লেয়ার এবং মিউজিক-অ্যারেঞ্জার ফোয়াদ নাসের বাবু। সংগীতজীবনে চার-চারটে দশক পার করেছেন একটানা গান বেঁধে, সংগীতায়োজন ও বাদ্যযোজন করে, এবং বাজিয়ে। এদেশের ব্যান্ডসংগীত ম্যুভে একজন পুরোধা ব্যক্তি। নিজের ব্যান্ডের বাইরেও গোটা বাংলাদেশে নতুনধারা মিউজিক্যাল অ্যাম্বিয়্যান্স তৈরিতে যারা আগাগোড়া নিরলস কাজ করে গেছেন, লড়ে চলেছেন যারা আজও, ফোয়াদ নাসের বাবু তাদেরই একজন। টিভিসি মিউজিক নির্মাণ, জিঙ্গেল পরিচালনা এবং বাংলাদেশের কম্যার্শিয়াল সিনেমায় আবহসংগীত ও টিভিনাটকে ব্যাকগ্রাউন্ডস্কোর তৈয়ার করেছেন বাবু প্রভূত দক্ষতায় দীপ্ত সুনামের সঙ্গে।

এইখানে পত্রস্থ রচনাটি লিখেছেন কাজী উচ্ছল। অনুসৃতি নিবন্ধ এটি; ডিক্টেশন/শ্রুতিলিখন প্রক্রিয়ায় বাবুর জবানিতেই লিখিত রচনা। ‘আনন্দভুবন’ ১৯৯৮ থেকে এটি রিপাব্লিশ হচ্ছে এখানে। এর উৎসপত্রিকার তথ্য : বর্ষ ৩ সংখ্যা ৬; ১ অগাস্ট ১৯৯৮, ১৭ শ্রাবণ ১৪০৫। দুই দশক আগেকার রচনা হলেও সংগীতক্ষেত্রে একজন বাদ্যযন্ত্রী মিউজিশিয়্যানের গোড়ার দিককার প্রবণতা, যান্ত্রিক যাতনা ও জোশ, আর পাওয়া যায় তার ফর্ম্যাটিভ ইয়ার্স। ‘গানপার’ থেকে এই ধরনের রচনা আমরা ধারাবাহিক ছাপানো অব্যাহত রাখতে চাই, বিশেষ ও বিশদ বিস্তারে আমরা চাই আনকোরা বাদ্যযন্ত্রশিল্পীর বাজনাপ্রেম ও বাজনাসাধনা গানপারে ছেপে যেতে। — গানপার]

একদম শুরুতে বাজাতাম একটা ফার্সিনা অর্গ্যান। ’৭৫-’৭৬ সালের দিকে বন্ধুর কাছ থেকে ধার করে বাজাতাম। বন্ধুর কাছ থেকে পরে সেটা আমি কিনে নেই। ‘ফিডব্যাক’ যখন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল-এ শো করত তখন আমি এই অর্গ্যানটা আর হোটেলের পিয়্যানো বাজাতাম। সে-সময় আরেক বন্ধুর রোল্যান্ড এসএইচ-২০০০ আর জুনো-১০৬ আমরা বাজিয়েছি প্রায় সবাই। ’৮৭ সালের দিকে সিঙ্গাপুর থেকে কিনি ইয়ামাহা ডিএক্স-৭, সাথে ছিল ডি-৫৫০ মডিউল। ’৯৬ সালে ওই সিঙ্গাপুর থেকেই কিনে আনি এলেসিস্ কোয়াড্রা সিন্থেসাইজার, যার টোন এখনো আমার খুবই পছন্দ। এর আগেই ’৯০-তে কিনেছিলাম এমভি-৩০ সিকোয়েন্সার; একটা নষ্ট হয়ে যাবার পর কিনেছি আরেকটা। ’৯৬-এর শুরুতে কিনেছি কুর্জাল কে-২ ডিএক্স। ভাড়া করে নয়তো ধার করে এছাড়াও বাজিয়েছি কর্গ এম-১। পিয়ারু ভাইয়ের কর্গটা তো ব্যবহার করেছি অনেকদিন। আমার প্রথম অ্যালবামে শোনা যাবে রোল্যান্ড জুনো-১০৬, জুনো-৬০, জুপিটার-৪ আর ইয়ামাহা ডিএক্স-৭।

বাঁশি-সানাই ইত্যাদি জাতীয় আওয়াজ ডিএক্স-৭ যন্ত্রে ভালো আসে; পিয়্যানোর আওয়াজ ইয়ামাহা কিবোর্ডে ভালো আসে, কিন্তু ন্যাচারাল টোন ভালো আসে না। আমাদের লিমিটেশনের কারণে লাইভ মিউজিশিয়্যানের বদলে সিন্থেসাইজার ব্যবহার করতে হয়; কিন্তু আমার মতে, সিন্থের আওয়াজ সিন্থের মতোই হওয়া উচিত; এক্ষেত্রে এলেসিস্ আরডিএক্স-৭ আমার খুবই পছন্দ।

পুরনো দিনে আমরা যেসব কিবোর্ড ব্যবহার করতাম সেগুলোর ভিন্টেজ আওয়াজ বরং আমার বেশি ভালো লাগে — কুর্জাল, প্রোফেট-৫, ম্যুড, ওভারহাইম। এখনকার কিবোর্ডের মধ্যে ডি-৫০, কর্গ এম-১, টি-৩ — এসব প্রচুর বাজিয়েছি। এছাড়া রোল্যান্ড এক্সপি-৮০ আর এক্সপি-৫০ এদেশের জন্যে বিশেষ উপযোগী, এগুলোর টোনও আমার ভালো লাগে।

ইদানীং আগেকার স্যাম্পল সাউন্ডগুলো সিডি-রমের আকারে পাওয়া যাচ্ছে বলে আরো সুবিধা হয়েছে। আগে একটা ইন্ডিয়ান অ্যাম্প ব্যবহার করতাম, তার নামও মনে নেই। সে-সময়ে ইন্সট্রুমেন্টের ভীষণ অভাব ছিল। এমন সময়ে সেলমার নামে একটা অ্যাম্প পাই, তারপরে পাই একটা হফনারও। ইদানীং ইয়ামাহা ওয়াইসি ২৫-ডি, রোল্যান্ড অ্যাম্প ব্যবহার করছি।

লেখা : কাজী উচ্ছল

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you