[বাংলাদেশে ব্যান্ডসিনে ২০০০-অনোয়ার্ডস্ যে-কয়টা ব্যান্ড নিজেদের নাম্বার নিয়ে স্টেজে ধারাবাহিকভাবে নিজেদের হাজিরা জারি রেখেছে ‘নেমেসিস’ তাদের অগ্রগণ্য একটা। ‘গানপার’ থেকে এই পর্যায়ে নেমেসিসের ছয়টা গানের গীতিভাগ যথাসম্ভব স্পষ্ট বানানে এবং পাঠবান্ধব স্তবকবিভাজনে মুদ্রিত করা হলো। উল্লেখ বাহুল্য যে নেমেসিসের আরও-সমস্ত গান পরবর্তী সুযোগে পত্রস্থ হবে এই বিভাগে। এবং নিচে যে-গানগুচ্ছ রইল, এখানে প্রুফসংশোধন ও পঠনগত সৌকর্যের দিক থেকে অধিকতর শ্রীসম্পন্ন প্রকাশ সম্ভব এবং তা ঐকান্তিক আবশ্যকও বটে। সেক্ষেত্রে শ্রোতা-পাঠক সকলের অংশগ্রহণ ও সক্রিয়তা চাই।
গৃহীত গানগুলোর গীতিকার ব্যান্ডেরই ভিতরের মিউজিশিয়্যানরা। গানগুলোতে কণ্ঠশিল্পী মূলত জোহাদ (নাকি জোয়াদ হবে এর উচ্চারণ?) এবং গীতিকার জোহাদ, রাইন, অপু প্রমুখ। কখনো গীতরচনা হয়েছে একক প্রয়াসে, কখনো যৌথ, যেমন হয়ে থাকে ব্যান্ডমিউজিকসিনে সামবায়িক সৃজন। নেমেসিসের ‘তৃতীয় যাত্রা’ ও ‘অন্বেষণ’ অ্যালবামদ্বয় থেকে এই লিরিকগুলো চয়িত। — গানপার]
শেষ গান
চাঁদের দড়ি দিয়ে বেয়ে উঠি
তারই আলো দিয়ে তোমায় খুঁজি
খুঁজতে গিয়ে আমায় আমি ভুলি
তবে তমায় পেয়ে আমি সুর তুলি
থমকে তাকিয়ে থাকি দাঁড়িয়ে
সুর খুঁজতে গিয়ে যাই হারিয়ে
শোনাব শেষবারের মতো এই সুর
এই ভাঙা সুর দিয়ে যাব কতদূর?
থমকে তাকিয়ে থাকি দাঁড়িয়ে
সুর খুঁজতে গিয়ে যাই হারিয়ে
থমকে তাকিয়ে থাকি দাঁড়িয়ে
সুর খুঁজতে গিয়ে যাই হারিয়ে
শোনাব শেষবারের মতো এই সুর
বীর
কোথায় আছো যে
এলাম তোমারই খোঁজে
সূর্যের আলোতে
আর না-হয় মেঘেরই ভেতরে
কোথায় আছো যে
পারবে কি আমায় জানাতে?
মনের ভেতরে
পারবে মন নতুন বানাতে?
কার কাছে এত প্রয়োজন
সব আশা ছেয়ে রাখাতে
যার সবই জুড়ে প্রয়োজন
কল্পনায় চেয়ে থাকাতে
দূর পথে ক্লান্তির মুখেতে
এই ভেবে অগ্রসর
নতুন স্বপ্ন কবে দেখা
মনে পড়ে না
আলোকিত হয়ে ওঠো
আছে সবাই আলোড়িত
জেগে ওঠার কথা বলো
কিরণমেলায় নেবে চলো
কবে বলো তো
দেবে আমায় একটু আলো
অন্ধকারেতে
প্রশ্ন আমার হাজারো
কোন গোপন শব্দের আড়ালে
মৌনতা ভাঙবে সবার
কোন বাঁকের উৎস বেরোলে
ঠিক পথে ফিরব আবার
দূর পথে ক্লান্তির মুখেতে
এই ভেবে অগ্রসর
মনে লাগে রঙিন আলোয়
ভোরের শুভ্রতা
আলোকিত হয়ে ওঠো
আছে সবাই আলোড়িত
জেগে ওঠার কথা বলো
কিরণ মেলায় নেবে চলো
তোমারই কথায় চেয়ে দেখি
আমার হাতে রোদের খেলা ভাঙে ঘুম
তৃতীয় যাত্রা
শক্ত মুঠো করে রেখেছ
পিছে হাঁটার হাল ধরে বসেছ
কত স্বপ্ন কত প্রশ্ন
অন্ধ মায়ায় তার সবই চেয়েছ
তবে আমায় কি দিবে
জলে-ডোবা স্বপ্ন দাও ভাসিয়ে
মায়াচোখের এককোণে
লুকিয়ে
শক্ত মুঠো করে রেখেছ
পিছে হাঁটার হাল ধরে বসেছ
আর কতবার শুনব প্রচার
হবে বিচার আর কতবার
তবে আমায় কি দিবে
জলে-ডোবা স্বপ্ন দাও ভাসিয়ে
আশা আমার নিঃশ্বাসে
হারিয়ে
ছায়ার নিচে দাঁড়িয়ে থেকে
মেঘেদের দাও তাড়িয়ে
তোমার যাত্রা আমার পথে
হারিয়ে
মুখোশ দিয়ে ঢাকা
আড়ালে লুকিয়ে থাকা
এক পথ এগিয়ে
শত পিছিয়ে
ছায়ার নিচে দাঁড়িয়ে থেকে
মেঘেদের দাও তাড়িয়ে
তোমার যাত্রা আমার পথে
হারিয়ে
বিবর্ণ স্রষ্টা
পেরিয়ে বহুদূর আজ আমি আলোয়
পেছনে ফেলে সব বিষণ্ণ প্রলয়
পেয়েছি নতুন সুর বিবর্ণ গানে
দেখেছি স্বপ্ন আবার আচ্ছন্ন মনে
আজ আমি দুঃখ ভুলে চলেছি কল্পলোকে
সৃষ্টিরও তীব্র লোভে আবারও এই আমি
হারিয়ে ব্যস্ততায় হয়েছি অবশ
ছায়ানীড়ের উপহাসে ক্লান্ত বিভোর
সময়ের স্থিরতায় স্তব্ধতা নিয়ে
আঁধারের সীমানাতে কষ্ট বিলিয়ে
আজ আমি দুঃখ ভুলে চলেছি কল্পলোকে
সৃষ্টিরও তীব্র লোভে আবারও এই আমি
আমার স্বপ্ন ভাঙে শুধু কষ্ট নিয়ে
আমি দুঃখ আঁকি আজো সাদা রঙে
জানি সবই ধুলোবাস্তবতা
জীবনে …
আজ আমি দুঃখ ভুলে, চলেছি কল্পলোকে
সৃষ্টিরও তীব্র লোভে আবারও, এই আমি
ঘুড়ি
আর একটু পথ যাওয়া বাকি
সময়কে ধরে রাখি
তোমার ওই মুক্ত হাসি
দেখব তাই ফিরে আসি
ফিরে আসে চারিপাশে
আর একটু রাতজাগা বাকি
সময়ই দিবে ফাঁকি
জোনাকিদের লুকোচুরি
দেখাবে তারার ঘুড়ি ফিরে আসে চারিপাশে …
কি ভেবে তুমি ফিরে তাকাবে?
কি দেখে তুমি আমায় রাঙাবে?
কি বলে তুমি আমায় ভাবাবে?
নাকি ঘুড়ির মতো আবার কোথাও হারাবে?
মৃত্যুছায়া
আমার পৃথিবী আজ হারিয়ে গেছে
ক্লান্ত বিষণ্ণতার মাঝে
চেতনায় স্বপ্নগুলো সব মিলিয়ে
চলেছি নিয়মভাঙার পথে।
মহাকালের দ্বারে দাঁড়িয়ে
ভাবি দুঃখগুলো দেবো বিলিয়ে
দূর বহুদূরে গ্রহান্তরে
চেয়ে দেখি ভাবনাগুলো
শেষ প্রান্তরে
জানি না পারব কি না
কভু পেরোতে
আমার … এই আমার
এই কি শেষ ভাবনা?
মহাকালের দ্বারে দাঁড়িয়ে
ভাবি দুঃখগুলো দেবো বিলিয়ে
ফেলে যাই এ নিথর দেহ
বস্তুময় পৃথিবীতে
ছুটে যাই সেই আলোর পানে
যেথা গেলে মুক্তি মেলে
সৃষ্টি আর স্রষ্টা যেন
হঠাৎ করে মিথ্যে হয়
আলো আর আঁধারের মাঝে
সবকিছুই স্বপ্নময়
আলো আর আঁধারে
আমি কোথায়
অজানা ভয়ে আমার স্বপ্ন
ভেঙে যায় …
- ভোটবুথ, ভূতভোট, বজরঙবলি ও বেবুন - November 26, 2024
- ক্বারী আমীর উদ্দিন সান্নিধ্যে সেদিন || তারেক আমিন - November 20, 2024
- পোয়েট ও তার পার্টনার - October 19, 2024
COMMENTS