বাইশ বছর বাদে

বাইশ বছর বাদে

সূচনালগ্নে স্বকীয়কণ্ঠী কবিগণের তালিকায় মোস্তাক আহমাদ দীনের নামটি নিঃসন্দেহে উল্লেখের যোগ্য। দীনের ‘কথা ও হাড়ের বেদনা’ বিগত দশকগুলোয় বিদ্যমান ভাষাছক থেকে সফলভাবে বেরিয়ে এলেও অর্থস্তর বা মিনিং পয়দার জায়গাটি নব্বইয়ের সময়সারণির প্রতিনিধিত্ব করে কি? — প্রশ্নটি সম্ভবত এখন উঠানো প্রয়োজন।

সম্মোহক এই কিতাবের প্রতি অঙ্গে জড়ানো ভাষাজালের প্রভাব নব্বই ও পরবর্তী অনুজদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছিল। মরমি, আধ্যাত্মিক, লোকায়ত এবং অমোঘভাবে ‘উত্তর-আধুনিক’ সংজ্ঞাছকে কবিকে অনেকে পাঠ গিয়েছিলেন মনে পড়ে। পাঠকের স্বাধীনতা বিবেচনায় এহেন পাঠ নিয়ে আপত্তি বা দ্বিমত প্রকাশের সুযোগ নেই। তবে প্রশ্নটি সবিনয় তুলতে চাই, — অর্থ উৎপাদনের কেরামতি বিবেচনায় নিলে কথা ও হাড়ের বেদনায় সেই ভাষা কি স্বয়ংক্রিয় যেটি পালাবদলের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে ‘কোনদিকে যাই’ তুল্য সংকটের মুখোমুখি মরিয়া মুখগুলোকে চিনে নিতে পাঠকের সহায় হয়? পাঠক বরং কবিকে প্রান্তে নিষ্ক্রমণ নিতে দেখে; এমন এক প্রান্ত যার সাবয়ব অস্তিত্ব নব্বইয়ের পটপ্রবাহ স্মরণ করলে কেন যেন খাপছাড়া ঠেকে!

প্রভাব সৃষ্টিকারী কাব্যগ্রন্থে সংকলিত কবিতারা স্থানিকতায় অনুপ্রবেশ ও আত্মীকরণের ক্ষণে বিগত কালপর্বে সুলভ ব্যক্তি আমির বৃত্তে ঘুরপাক খেয়েছিল কি না সে-পুনর্পাঠ বোধহয় এখন করাই যায়।

তিন দশকের কবিতাযাত্রায় মোস্তাক আহমাদ দীন স্বাতন্ত্র্যে ভাস্বর হলেও কথা ও হাড়ের বেদনার পুনর্পাঠ প্রভাববিস্তারী কিতাবে বিরাজিত সাদা স্পেসগুলোকে দৃশ্যমান করতেও পারে, যার পাঠ হয়তো এখনো হয়নি।

আহমদ মিনহাজ

(প্রথম প্রকাশের দুই দশক তথা বাইশ বছর বাদে নব্বইয়ের দশকে আবির্ভূত কবি মোস্তাক আহমাদ দীনের অভিষেক কবিতাবই ‘কথা ও হাড়ের বেদনা’ পাব্লিশ করেছে বৈতরণী। নয়া কাভার, নতুন প্রকাশক, বইয়ের বিন্যাসটাও নতুন। প্রচ্ছদ করেছেন দেওয়ান আতিকুর রহমান। ২০২৩ বইমেলায় এইটা ছাপা হয়েছে। এর প্রথম প্রকাশক ছিল, উল্লেখ্য, বইপত্র। — গানপার)


রিলেটেড রচনারা
নব্বইয়ের কবি, নব্বইয়ের কবিতা
আশির দশকের কবি, আশির দশকের কবিতা
আহমদ মিনহাজ রচনারাশি

COMMENTS

error: