হাতে তারাফুল, শরীরে মারি ও মড়ক… / জফির সেতু কবিতাকালেকশন

হাতে তারাফুল, শরীরে মারি ও মড়ক… / জফির সেতু কবিতাকালেকশন

শুয়ে আছি
শুয়ে আছি। নদীর তলায় শুয়ে আছি ঝিনুকের পাশে।

শুয়ে আছি মাছের পেটে
মাছের ভিতরে সংবিধান নেই হত্যাকাণ্ড নেই।

মায়ের পেটই ভালো ছিল গুম হওয়ার ভয় ছিল না
এখন শেয়ালের শিঙে ভর করে দৌড়াতে হয়
আর দরজায় বাতাস কড়া নাড়ে পলাতক! পলাতক!

শুয়ে আছি।
বেওয়ারিশ লাশের চোখে পোকা হয়ে আকাশ দেখছি
সাপের পাশে শুয়ে আশ্চর্য তারা-ফোটা রাত দেখছি!
.
.
প্রথম
প্রেমের নিচে
প্রথম প্রেমের নিচে ঝরে পড়ে মাংস
মাংসের ভেতর রক্ত ও পুঁজ;

প্রথম প্রেমের নিচে ধোঁয়া-ওঠা ভাত
পচে-গলে, আশেপাশে ভনভন মাছি;

হলুদ সূর্যের নিচে শুয়ে আছে চুপচাপ
প্রথম প্রেমের প্রেমিক, রোঁয়া-ওঠা কুকুর

হাতে তারাফুল, শরীরে মারি ও মড়ক!
.
.
কুয়া
গনগনে সূর্যের নিচে
একটি প্রাচীন কুয়া

দূরাগত আমি যেই উঁকি দিলাম
দেখি তাতে নিষ্পলক
একটি মুন্ডামেয়ের
চোখ।

কালো স্থির অতল
এবং উদ্বাস্তু।
.
.
সাদা পাথর
আমি সাদা পাথর
এসেছি পাহাড়ের গর্ভ থেকে, আমি পাষাণ।

আমি পাথর, জমাট দুঃখ-পৃথিবীর করুণ অশ্রুবিন্দু
এসেছি বোবা ও অনুভূতিহীন একা!

আমি সাদা পাথর, স্থবির মহাকাল
এসেছি মৃত্যুবীজ, মারির চিহ্ন।
.
.
অভিজ্ঞান
শরীরে দুধ-দুধ আঘ্রাণ
এই সোঁদাগন্ধ কোথা থেকে আসে?

শরীর যৌনতাড়িত, প্রাণ
ও প্রেম কাঁপে মর্ত্য-বাতাসে।
.
.
প্রত্নপ্রেমিকাদের উদ্দেশে
পানিতে ডুবে মরেছে প্রথম প্রেমিকা
দ্বিতীয়ার জন্য এনেছি তার পাঁজরের হাড়

সে-ও যদি পুড়ে যায় দৈবাৎ আগুনে
তৃতীয়াকে এনে দেবো তার দাঁতের মালা

অশ্বমেধযজ্ঞে অতঃপর কেউ এলে

মৃত্তিকার দগ্ধবাহু ও দুই স্তনের মাঝখানে
মৃত্যুর ঘন-নীল উল্কি এঁকে দেবো!
.
.
ভাগী
আমরা বলতাম রাখাল
আসলে বাস্তুসাপ সে গৃহস্থের বাড়ি পাহারা দিত

কালো গাইটি রাখালের মানত্
রাতের বেলা চুপটি করে দুধও খেয়ে যেত

রাখালের মাথায় ছিল সাদা বৃত্ত আঁকা
এটা হয়তো দুধ-দিয়ে-অঙ্কিত চন্দ্রসূর্য!

মাঝে মাঝে আমরাও রাখালের ভাগী হতাম।
.
.
গঙ্গামনসা মা
পদ্মপাতার ওপর শুয়ে আছে জগৎমাতা
ওগো ধরো, আমাকে জড়িয়ে ধরো!

পুরো সাতদিন আমি খাইনি কিছু
আমাকে আহার দাও দয়া করো

আমার ডানে হরিণী আর বামদিকে বাঘিনি
ওগো, আমাকে পথ দেখাও রক্ষা করো

আমার ঝলসানো পিঠ আর বিকৃত মুখ
ওগো গঙ্গা-মনসা, আমাকে আবার পেটের ভেতর নাও!
.
.
সংক্রান্তির রাতে
সংক্রান্তির রাতে আমি তোমাকে চাই
এখন বছর শেষ চরাচরে মহাবিষুব

তুমি অন্নপূর্ণা এসো কলার পাতার সাজে
পায়ে অলক্ত দাগ আর চোখে অঞ্জন মেখে

যখন সূর্য ডুবে যাবে পশ্চিমে আবির ছড়িয়ে
পুণ্যস্নানে চড়কগাছের নিচে তোমাকে চাই!
.
.
বউ
হলুদ বাটতে গিয়ে বউটি পাখি হয়ে গেল।

আমি পাখিটিকে ডাকি জবাব পাই না
শুধু এ-ডাল থেকে ও-ডালে যায় আর কাঁদে

আসলে সে পাখি নয় একটি লাজেরাঙা মেয়ে
ছাতিমগাছের আড়ালে শেষ কথা হয়েছিল।
.
.
গ্রীষ্মে রচিত কবিতা
তোমার রামধনুমোড়া কোমরে সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে
একটি আদিম বালক বেয়াড়া মোষ হয়ে উঠলে
লাঙলের ফাল মৃত্তিকার রক্তে ভিজে গেল

তখন তোমার ছোট্ট শরীরে শিকারীর আশ্চর্য ব্যূহ
আর খাড়া দুটি স্তনে গ্রামভাঙার শব্দ
গাঢ় পরিচয়ে তুমি ঘাসের গন্ধ
ফুলের পরিচয়ে তীব্র নাচ

তোমার রামধনুমোড়া কোমরে সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে
আমি নিতান্ত অন্ধ হয়েছি
আর পৃথিবীর প্রাচীন পদ্মপাতায় ঘুমিয়েও পড়েছি।

আমি আমার অর্ধলিঙ্গ প্রেমিকার কথা বললাম
আর তুমি তাচ্ছিল্যের সুরে হাসলে
দেখলাম তোমার ঔৎসুক্য ও ভয়ে-ভরা চোখে নুনের বৃষ্টি

সমুদ্রের নুড়ির মতো আমরা ক্রমাগত
নিঃশব্দ আর স্থির হয়ে পড়ছিলাম
অথচ তুমি সর্বদাই ছিলে হাঙরের মতো
সবাক আর তীব্র

বালিরা একসঙ্গে থেকেও যেমন পৃথক রয়ে যায় প্রত্যেকে
আমার অর্ধলিঙ্গ প্রেমিকার কথা শুনে
ভয়ে আর ঈর্ষায় তুমি তলিয়ে গেলে সমুদ্রডুবি জাহাজের মতো।

গ্রাম থেকে যে-নদীটি সরে গেছে দূরে
আমরা তার চঞ্চুতে তোমাকে দেখি
তোমার কঙ্কাল দেখি

যখন তুমি গ্রীবা বাড়িয়ে দাও লোকালয়ে
আমরা প্রত্যেকে খুরের নিচে
গমের খেতে
আর অন্ধকারে ঢেকে যায় লোকালয়ের চাঁদ

আমাদের ঘাটে ঘাটে আজও নাও বাঁধা আছে
আমাদের সৎমায়ের স্তনে দুধ অফুরান
কেবল কেশর হারিয়ে তোমার কাছে মাগছি
চিরতার জল।

সারাটা বসন্তজুড়ে পালক ঝরল
পথেঘাটে এত-যে নীল পালক
আর তোমার বোঁটার খোসা, রংধনুরেণু

তোমার শরীর থেকে খসে-পড়া তারার ময়ূর
গাঢ় বেদনার দানা
খুঁটে খুঁটে মূর্ছাগত আমি
আর সমোদরা জেনে তোমাকে আবারও
গভীর চুম্বনে সিক্ত করে তুলি।

হাঁটু ভাঁজ করে যে বসে আছে তার বাহুতে উল্কি আঁকা
গ্রীষ্মের সরস গাছের নিচের ওই গৃহী মেয়েটিকে
একটি সাপ গিলে খেয়েছিল

হাঁটু ভাঁজ করে মেয়েটি এখন নিজেই সাপ
বুনো ঘাসের গন্ধ মুছে
একটা আস্ত দোয়েল গিলে
মৃত্যুকে চিবুতে চিবুতে অশান্ত আত্মা নিয়ে পুরুষের খোঁজে

আজ আমি নিজেই তার ক্রোধের সামনে অশ্বমেধ হয়েছি।
.
.
স্যানাটোরিয়াম
বন্ধুকে বলতে পারো, অনায়াসে বলতে পারো বন্ধুর মাকেও। আমি পরেছিলাম তুঁতরঙের জামা — তা এমন আহামরি ছিল না, কিন্তু ছিল তোমাদের কবরের মতো মাঠভরতি অন্ধকার। আমি ছিটিয়েছিলাম কিছু বিষাদবীজ আর অদ্ভুত গাছসকল জন্মেছিল ধূসররঙ মেয়েদের চোখের ভেতর — তা আবার কান্নাও নয়, ঠিক যেমন প্রত্যাখ্যাত হয়ে আমরা উষ্ণ ব্রোথেলে যাই কিংবা ফিরে আসি মধুর মাতৃগৃহে।
.
.
দুধগাছ
দুধগাছ আমার মা

না-হলে বাবা কী করে আমাদের
এই বনের ভেতর পেলে-পুষে মানুষ করলেন

নাঙ্গা সময়ের নিচে শিশুদের ভাতের জোগাড় ছিল না
জন্মেছি রোগা-পটকা আমরা ন’ ভাইবোন

মা ছিল হাড়-জিরজিরে কিন্তু বুকভরা দুধ
আমরা ন’ ভাইবোন স্তন চুষে স্তন্য খেয়ে

দুধের ফেনায় পুড়ে পুড়ে মা আমার ধনুক আর
শস্যের দেবী হয়ে গমখেতে সূর্যালোক হয়ে জ্বলে
ফলবতী মাটিতে বিষণ্ন লাল ফুল হয়ে ঝরে

মা আমার চিরহরিৎ, অন্নপূর্ণা; বাবা বিষগাছ — করুণ ওষধি!
.
.
সিন্ধুদ্রাবিড়ের ঘোটকী ৬৭
এইখানে, আমার মাচানের পাশে আবারও লাফিয়ে উঠেছ তুমি
ভাদ্রের ফুলে-ওঠা মরা-নদীটির তীরে যখন এরণ্ডা পাতায় ছেয়ে
গেছে মাঠ আর আমি চোখ মেলে তোমার দিকে তাকিয়ে রয়েছি!

মাটিতে বৃষ্টির ফোঁটা বর্শার মতো গেঁথে যাচ্ছে আর আল ভেঙে
ক্ষেতে ঢুকে যাওয়া পানির শব্দে একটি কেউটের মুগ্ধ জাগরণ
আমাকে যখন গভীর পুলক দিয়েছে আর তমাল গাছটি রাধিকার
আর্তি হয়ে ফুটেছে চরাচরে — ভেজামুখে আবারও লাফিয়ে উঠেছ!
.
.
আদিপাপ
ভগ্নী তুমি সরে দাঁড়াও! চিৎকার করে একজন
আকলিমা কাঁদে আর ভাবে এই দুই পুরুষের ক্রোধের উৎস কী?

হাবিল ও কাবিল মল্লযুদ্ধে মেতে উঠেছে পৃথিবীর প্রথম প্রান্তরে
আকলিমা দেখে দুজনের শরীরের মাঝখানে দুটি করে অণ্ডকোষ আছে
আর তার একটিও নেই

হাবিলের রক্ত মাটিতে গড়িয়ে পড়ে আর কাবিল উল্লাস করে
আকলিমা ভীত হয়

কিন্তু তার উষ্ণ জরায়ুতে
হাবিলের ভেড়ার বলি-দেওয়া মাথা তখন ছটফট করছে।
.
.
ময়ূর উজানে ভাসো ২৩
আমাদের বাক্যালাপের মাঝখানে একটা অস্পষ্ট আগামীকাল ছিল। তোমার শরীরের সৌন্দর্যের নুন তোমারই ক্ষয়-হয়ে-আসা পোর্ট্রেট। আমি অবাক হয়ে দেখি তোমার কথাবলার মুহূর্তের গ্রীষ্মগুলো কীভাবে তোমার জোড়াবুকে ওঠানামা করে। বাক্যালাপ শেষ হয়ে গেলে দীর্ঘ মৌনতার ভেতর আমাদের আগামীকালের বেঁচে থাকাটাও নিশ্চিত হয়ে ওঠে। যদিও এ-সবকে তুমি নিতান্তই আয়ুক্ষয় ভেবেছ।
.
.
প্রস্তরলিখিত
সিয়েরা স্টেটন, তোমার নামের রঙ লাল। আমারও।
তুমি সমাধির এপিটাফ, আমি তাতে একের পর এক খোদাই
করে যাচ্ছি আমার অনুভূতিগুলো।
তুমি এসব কোনোদিন জানতেও পারবে না, কারণ আমি মৃত।
আজকের দুপুরটা খুব বিষণ্ন ছিল,
আর আমি হারিয়ে ফেলেছি আমার স্বপ্ন।
আমি এখন মধু আর লেবু সমেত পান করছি সবুজ চা
তুমি ক্যালিফোর্নিয়ায় বসে পান করছ বিশ্রী রকমের কালো কফি
চিনি ছাড়াই। তাতে কিছু যায় আসে না।
আমরা দুজনই মৃত্যুর সমবয়েসী। আমরা বসে আছি মুখোমুখি
আমাদের কোনোকালেই দেখা হবে না, সিয়েরা স্টেটন।
.
.
প্রথম বৃক্ষরোপণ
এই লিঙ্গমুণ্ড, আদিম দেবতা
গ্রহণ করো গ্রহণ করো বলে
পুরুষ কাঁপাচ্ছিল রক্তিম প্রদোষ!

এই যোনিচক্র, মন্দিরতোরণ
ব্রহ্মাস্ত্র নিয়ে প্রবিষ্ট হও বলে
নারীও উৎসুক হলো কম্পিতা!

তখন থেকে ভূমি ভেদ করে
জেগে ওঠে ফুলশস্যের গাছ।
.
.
চন্দ্রাবতী
আমি কি লিখেছি তোমারে পত্র আড়াই অক্ষরে?
বলেছি হইও সাক্ষী ওরে নদী, কূলের হিজলগাছ!
তা হলে বিষ্টিতে গাছের মূলে আর ঘাসে ঘাসে
ঘুরে বেড়ায় এই সমাচার? রে কন্যা চম্পকবরনী!
আমি কি তোমারে শুধায়েছি তাবৎ দুস্কের কাহিনি?
তবু দেখো তোমারেই ভাবিয়াছি কন্যা চন্দ্রাবতী
আর তিলে তিলে দগ্ধ নাগর আমি জয়ানন্দ রায়?
ঢেউয়ের ওপরে ভাসে দ্যাখো সাড়ে তিন হাত জমি
নদীও উজানি কন্যা মুখে নাই বাণী
আমারে অভিশাপ দিলা কেমন অনাদি শঙ্করে?
না-হইলা সম্মত কন্যা না-করিলা ক্ষমা
পাগল হইয়া নাগর কত উচ্চৈঃস্বরে ডাকিলা
যোগাসনে আছিলা কন্যা সমাধিশয়ানে
আমিও লিখ্যা রাখি বিদায়পত্র কপাট ওপরে
জলের ওপরে ভাসে দেখো আমারও তনুদেহ
তুমি কন্যা চন্দ্রাবতী মাটিতে চম্পক হয়ে ঝরো।
.
.
তিনভাগ রক্ত
কুরুক্ষেত্রের বিস্তার এখানেও।

কুরু আর পাণ্ডবকুলের রক্তে এককালে
ভিজেছিল পৃথিবীর মুথাঘাস

আবারও মেদিনীযুদ্ধে পুড়ছে আকাশ
আর অতি কাছ-থেকে-ছুড়া গুলিতে বিদ্ধ
হচ্ছে বৃদ্ধ-নারী-শিশু ও পুরুষ

জাফরানের খেত ভিজে যাচ্ছে মানুষের রক্তে।

যুদ্ধ শেষ না আসন্ন?
কুরুক্ষেত্রে এই সংলাপ ছিল রাজা ধৃতরাষ্ট্রের
তিনি অন্ধ ছিলেন

এখন জগতসুদ্ধ সকলেই অন্ধ।

রক্তে ভেসে যাচ্ছে উপত্যকার মাটি
অক্ষৌহিণী সেনাদল চারদিক থেকে চিৎকার করছে
জিতেছি জিতেছি

আর অন্ধেরা প্রশ্নও করছে,
যুদ্ধ শেষ না আসন্ন!
.
.
এই ঘন শালদুধ
এই ঘন শালদুধ এসো আবার খাই
হলদে রং আর গাইয়ের গন্ধে-ভরা

খিরের মতো এই দুধের এসো ঘ্রাণ নেই
যদি চাও সাঁতার কাটি চাও তো ভাসি

এই ঘন শালদুধ এসো আবার খাই
মাছেদের সঙ্গে আবার দুজনে খাই।
.
.
বিছা
একটা বিছা তুমি
ঘাসের ওপর গুটিগুটি হেঁটে যাও।

আমি দূর থেকে দেখি
কাছে যাওয়ার সাহস পাই না

একটা বিছা তুমি
বহুকাল তোমাকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
.
.
কহ মনসা
সত্য করে কহ মনসা
কে প্রথম রেখেছিল হাত নাভিতে তোমার!
জরৎকারু নাকি আমি?
তোমার উপমা পেয়েছি মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে বিষহরী!
কহ সত্য করে কে রেখেছিল মাথা
বিষম উরুতে ভরসন্ধ্যায়!
বেদজ্ঞ পৌঢ় নাকি আমি?
নিদ্রাভঙ্গ করে আর জনমেজয়ের যজ্ঞে
অচ্ছোদসরসী কহ আমারে
জিয়ল পুরুষ নাকি আমি, কালনাগ?

কালীদহে ভেসে যায় সোনার বরন দেহ
সেঁতাল কাঠের লাঠি মাটিতে লুটায়
আর এই গাঢ় গ্রীষ্মে তোমাকেই ডাকি!
আমাকে কী কেটে গেছে সূতানালি সাপ
অদ্ভুত এই কালো রাইতের প্রহরে?
শ্যামবর্ণ শরীরের বিষের স্তূপ
চারপাশে কুষ্ঠকুকুরের ডাক
চড়ক পূজার আন্ধারে কহ ওগো নাগমাতা
আমিও কি জন্মেছিলাম তোমার কৃষ্ণ উদরেই?
.
.
মনে
রেখো
পুকুরে ভাসছে জারুল ফুল
আমি তাকে বলি, মনে রেখো!

বাতাস বন্ধ; স্থির হয়ে আছে পানি
আমি জানি এ-এক জারুলের গল্প :
একটা ঘুঘুর সাথে উড়তে গিয়ে এই দশা
এই নিশ্চল পানাভরা পুকুরে একা একা

ঘুঘুটিও উড়ে গেছে
ঘাসের ওপর পড়ে আছে একটি নরোম পালক

আমি তাকে বলি, মনে রেখো!


হাতে তারাফুল, শরীরে মারি ও মড়ক…
জফির সেতু কবিতাকালেকশন
গানপার ২০২৩


জফির সেতু রচনারাশি

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you