কান্নাবর্ণ জ্যোছনাছায়া

কান্নাবর্ণ জ্যোছনাছায়া

কান্নার রঙ আর জ্যোছনার ছায়া
তাড়াই যতই দূরে বেজায় বেহায়া
আমায় ঘিরিয়া রাখে জ্যোছনায় আর
না-ছাড়ে পিছা আমার রঙ কান্নার

কান্নার রঙে আর জ্যোছনাছায়ায়
আমার গানের সুর গলে গলে যায়
আমি ডাকি প্রিয়তম শোনো শোনো শোনো
তুমি ছাড়া কারো বুকে প্রেম নাই কোনো

জ্যোছনাছায়ায় আর কান্নায় রাঙা
বাতাসে ভেসে বেড়ায় কামনার ডাঙা
কাউকে বলিনি তবু সকলেই জানে
সেই প্রিয়তমা পাখি থাকে এইখানে


পাখিটার নাম বুঝি ছিল দলছুট
সকাল কি বিকালের ছিল না বালাই
বিষাদের পানীয়য় ভেজানো দু-ঠোঁট
মাতাল পাখিটা যার চোখ-কান নাই

চোখ-কান নাই পাখি জিভের ডগায়
পাড়া-বেপাড়ায় খালি শিস দিয়া যায়
বাজে ডম্বরু বাজে সাতটি নিনাদ
চোখহারা কানছাড়া পাখির বিষাদ

শুঁড়িখানা ভরে দ্যাখো অজস্র পোকা
তারাও বাঁচতে চেয়ে খেয়ে গেল ধোঁকা
নাই চোখ নাই কান দলছুট পাখি
বিষাদনদীর মদে মেঘমাখামাখি


বলে যেতে চেয়েছিল স্বপ্নের কথা
গানে গেঁথে যেতেছিল অতলান্ত অচরিতার্থতা

আটকালো কিসে?

এক নটরাজ্ঞীর প্রণয়ের বিষে


এইভাবে যাবে

এভাবেই যায়
ফেলে রেখে ব্যথাপ্লাবী বিরানায়
বাসনাপাহাড়ের সানুদেশ, সুলক্ষণা স্ত্রী
কিংবদন্তি, সংসার, সন্তান, বঙ্গোপসাগর

কিবা হায় আসে যায়
না-যদি পাইলায়
নায়িকার আদর?


আনন্দ দেখালো না বলে
ভাঁজ খুলে
এইভাবে যেতে হলো চলে?

দেখাত যদি
নিদরদি
হৃদয়ের হাঁসটারে ছেড়ে বেদনাহাওরের জলে?

এইভাবে কেউ চলে যায়
বেফিকির চিরতরের চিতায় —

আনন্দ না-দেখানো হলে?


বায়স্কোপে কতটা আর
যতটা বাস্তবে দেখা যায়
নখরা ও নিষ্ঠুরতা নায়িকার?

তবু অন্য দশটা-পাঁচটা দায়দাবিও তো আছে
এই জীবনের, — এই আমাদের কাছে

সেসব ভুলে গেলে বটে শিল্প হয়
গানবাজনাও হয় যেটুকু মন্দ নয়
আরও হয় নাচাবাহানা গাঙে, ঘাঘটমাছে, গাছে গাছে

সেসবের মধ্যে একটা আন্দু রোমাঞ্চ উৎকট হয়ে রয়


হৃদয়পুরের জটিলতা বাঁচিয়ে দিয়েছিল
অনর্থ নর্তনকুর্দন থেকে

রেখে যেতে পেরেছে একে একে
অ্যালবাম চারখানি জীবদ্দশায়
প্লাস সোলো স্বপ্নবাজি

হৃদয়ের ছেলেখেলা তারপরে একদিন ছেড়ে গেছে তারে
বেরিয়েছে জ্যোছনাবিহারে


আরেকটুকু মিষ্টি দিও —
সঞ্জীব বলেছিল

কই, দিলো তো না

মাঠে মারা যাবে এত অনুনয়, গান, প্রার্থনা?

আখ শুকায়া যায়
তাতে নাকি ছিল রস কোনো-এককালে
এইটা আজ আর রিয়্যালাইজ করা দায়

চাশ্নি পিরের মাজারে
তেরোদিনের নিরম্বু উপোস একটা বানর
লাঠিগাছের ডালে বসা — হাত দিয়া গালে

কেন-যে এত লোকে ভাণ্ডার লোটে আর গণ্ডার মারে!

এরপরও, প্রভু, যদি দিতেই হয় দিও মোরে মেরুভল্লুকের আদর
জ্যোছনাবিহারে যেয়ে বাংলায় বিচ্ছেদী গাইবার স্বর


ব্যানারে ব্যবহৃত পোর্ট্রেটশিল্পী আরিফ ইকবাল
লেখা জাহেদ আহমদ

… …

জাহেদ আহমদ
Latest posts by জাহেদ আহমদ (see all)

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you