প্রিয় যন্ত্র, প্রথম যন্ত্র :: এহসান এলাহী ফান্টি

প্রিয় যন্ত্র, প্রথম যন্ত্র :: এহসান এলাহী ফান্টি

জীবনে প্রথম যে-ড্রামস্ আমি বাজিয়েছিলাম সেটা ছিল রাশান, তার নাম জানি না, তার মালিক ছিল স্পার্ক ব্যান্ড।

তখন সবে এইচএসসি দিয়েছি, টুকটাক গান করছি। ১৯৮৫ সালে চিটাগঙের ব্যান্ড ‘গোল্ডেন বয়েজ’-এর টামা স্যুয়িংস্টার ড্রামস্ ছিল, দুলাল ছিল তার মালিক, তার কাছ থেকে সেটা কিনে নিলাম বিশ হাজার টাকায়। তখন এত টাকা জোগাড় করা আমার জন্যে খুবই কঠিন ছিল, জোগাড় করতে পারিওনি। দুলাল তার ড্রামস্ নিয়ে যায়, যে-টাকা দিয়েছিলাম সেটাও ফেরত পাইনি। সেই শোকে আমি ভেঙেই পড়েছিলাম।

তারপর ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দেই আমার সংগীতজীবনে আসে সবচেয়ে স্মরণীয় বছর। এ-বছরই আমি প্রোফেশন্যাল কাজ শুরু করি। ‘ফিলিংস’-এর সাথে জড়িয়ে পড়ি আর প্রথমবারের মতো হাতে পাই সত্যিকারের ভালো ড্রামস্। পরের তিন বছর আমি বাজিয়েছি গুলু বলে এক ছেলের ইয়ামাহা ড্রামস্।

ঢাকায় আসার পরে চব্বিশ হাজার টাকায় কিনলাম ‘সোলস্’-এর থার্ডহ্যান্ড টামা স্যুয়িংস্টার।

মনে রাখতে হবে, প্র্যাক্টিস-স্টুডিয়ো-স্টেজ টানাহ্যাঁচড়ার পরে কোনো ড্রামসের অবস্থাই খুব ভালো থাকে না।

১৯৮৮ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত মাসচুক্তিতে ভাড়া নিয়ে অনেক ড্রামস্ বাজিয়েছি, তার মধ্যে অনেক ফালতু ড্রামসও ছিল। একবার এক নাইটক্লাবে ব্যান্ডশো-র মাঝখানে বেজস্কিন ফেটে প্যাডেল ভেতরে ঢুকে গেল, তখন ফ্লোরটমটাকেই নামিয়ে রেখে বেজ হিশেবে ব্যবহার করলাম। রোলিং করতে গিয়ে দেখি সিম্বলস্ নেই — এমন ঘটনা তো প্রায়ই ঘটেছে।

১৯৯২ সাল থেকে ইমনের সাথে ওর প্র্যাক্টিসরুম শেয়ার করেছি। ইমন ‘অভিশ্রুতি’ স্টুডিয়োর সাউন্ড-ইঞ্জিনিয়ার। এরপর ১৯৯৭-এ কিনেছি কালো টামা রকস্টারটা। এখন এই টামা রকস্টারের সাথে ব্যবহার করি জিলজিয়্যান ১৬ ইঞ্চি থিন ক্র্যাশ আর ১৯ ইঞ্চি। সেইসঙ্গে স্প্ল্যাশ-ক্র্যাশ ইত্যাদি তো আছেই।

সেই বছরেই, সাতানব্বইয়ে, প্রথম রিদম-প্রোগ্র্যামার কিনি আসাদের কাছ থেকে। পার্থ বড়ুয়া ‘আর-৮’ ব্যবহার করা দেখানোর পরে একটা সেকেন্ডহ্যান্ড ‘আর-৮’ কিনেছিলাম, ৯৮ সালে কিনেছি আরও দুটো। এর সাথে আছে এমসি-৩০৩ রোল্যান্ড বক্স-মড্যুলার। পরে ব্যবহার করেছি ‘ভিনসেন্ট ভ্যান গগ্’ ব্যান্ডের এনে দেয়া প্রোমার্ক স্টিক, মাঝেমাঝে টামা আর জিলজিয়্যান স্টিক দিয়ে, সাইজ ৫-বি।

অনুলিখন : কাজী উচ্ছল
সংগ্রহসূত্র : তৃতীয় বর্ষ ষষ্ঠ সংখ্যা আনন্দভুবন ১৯৯৮

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you