আমাদের বিস্ময় অ্যালবামরিভিয়্যু || কাজী উচ্ছল

আমাদের বিস্ময় অ্যালবামরিভিয়্যু || কাজী উচ্ছল

১৯৯৮ জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বেরিয়েছিল এলআরবি-র সপ্তম অ্যালবাম এবং দ্বিতীয় ডাবল-অ্যালবাম ‘আমাদের বিস্ময়’। ডাবল অ্যালবাম দিয়েই এলআরবি তাদের যাত্রা শুরু করে, যদিও এর আগে এই ধারণার প্রচলন এদেশে ছিল না। দুঃসাহসী সেই প্রচেষ্টায় অত্যন্ত সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছিল এলআরবি। সাত বছর পর আবারো ডাবল অ্যালবাম নিয়ে হাজির হয়েছেন আইয়ুব বাচ্চু এবং তার বাহিনী।

এদেশের প্রতিটি ব্যান্ড এবং ব্যান্ডপ্রিয় মানুষের প্রতি উৎসর্গ-করা এই অ্যালবামটিকে তুলনা করা যায় এলআরবি-র দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘তবুও’-র সঙ্গে। হার্ডরক এই ব্যান্ডটির প্রতিটি অ্যালবাম বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় বেশকিছু মেলোডিপ্রধান, রকধারার সামান্য বাইরে, কিংবা ট্র্যাডিশন্যাল সুর ও কম্পোজিশন রয়েছে। ব্যতিক্রম ছিল ‘তবুও’ অ্যালবামটি এবং এই ‘আমাদের বিস্ময়’।

অ্যালবামটির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এখানে পাঁচমিশেলী গানের সমারোহ নেই, যদিও আমজনতা সেই ধারাটিকেই সাদরে গ্রহণ করে। দেশের খুব অল্পকিছু ব্যান্ডের মতো এলআরবিকে রকশ্রোতা সৃষ্টি এবং এক্সপেরিমেন্টের দিকে অগ্রসর হতে দেখা যায় কনফিডেন্সের সাথে; যদিও এক্ষেত্রে যথেষ্ট ঝুঁকির পরিমাণ থেকেই যায়, আর সেই ঝুঁকি নেবার সৎ সাহস আছে এলআরবি-র মতো বড় ব্যান্ডের। এই অ্যালবামে অবশ্য মেলোডিয়াস সফট গানও আছে, তবে সেগুলোর গঠন সম্পূর্ণ রক প্যাটার্নে করা।

20915865_10211447658759728_189781543_n

লিরিক

লিরিকের ক্ষেত্রে এলআরবি প্রথম থেকেই স্মার্ট। এই অ্যালবামেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। গতানুগতিকতা পরিহার করে জীবনের কথা, মনোজগতের কথা, এবং আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনার চমৎকার উপস্থাপনা ঘটিয়ে বাপ্পী খান লিরিকের ধারণার পরিবর্তন করে ইতোমধ্যেই বিখ্যাত হয়ে গেছেন। এই অ্যালবামে প্রথমবারের মতো তিনি আধ্যাত্মিক জগতে বিচরণ করেছেন ‘সাড়ে-তিনহাত মাটি’, ‘ভবের দেশে’ গানদুটি লিখে। ‘স্মৃতি’ গানটিতে তিনি লিখেছেন, “আজকের বর্তমান কিছুক্ষণ পরে গেল স্মৃতির দেশে / জায়গা দখল চর-দখলের মতো” — চর-দখলের উপমাতে গীতিকারের সাথে একমত হওয়া গেল না, কেননা বর্তমান কিছুক্ষণ পর অতীত হবেই, এটা অবশ্যম্ভাবী; সব বর্তমানই অতীত হয়, কিন্তু সব চরই দখল হয়ে যায় না। গানের লিরিকের কারুকার্যময় সহজ এবং বোধগম্য উপস্থাপনা বাপ্পী খানের আয়ত্তাধীন। “দিন চলে যায় ফিরে আসে না / একটি রাজপুত্র সূর্য দেখবার / মনে হয় সুদিনের আলোয় ভরা সূর্য দেখি / হয় না দেখা / ভালো লাগে না।” তার লেখা কোনো গানকেই সম্ভবত বলা যাবে না “ভালো লাগে না”।

নিয়াজ আহমেদ অংশু এই অ্যালবামেই আত্মপ্রকাশ করেছেন পরিণত গীতিকার হিশেবে। ‘জলজোছনা’, ‘ষোলোআনা’, ‘রোদ্দুর জানে না’ প্রভৃতি গানগুলো সেটাই প্রমাণ করে। তবে ‘একটি সাঁকো’, ‘স্যুইসাইড নোট’ অংশুর লেখা এ-ধরনের গানগুলো সর্বসাধারণের বোধগম্য না-ও হতে পারে। ‘খুব সহজেই’ গানটিতে ‘আবেগী’ শব্দটি দু-বার ব্যবহার না করলে ভালো লাগত। এছাড়াও এঞ্জেল শফিক এবং লতিফুল ইসলাম শিবলীর লেখা গানগুলোও চমৎকার, বিশেষ করে ‘আকাশজোড়া ভালোবাসা’ এবং ‘চাই জল’-এর লিরিক আকর্ষণীয়। কিশোর গীতিকার মারুফ আহমেদ অপুকে সম্ভাবনাময় মনে হয়েছে ‘একটিবার’ গানটিতে। গীতিকার হিশেবে আইয়ুব বাচ্চু মাঝেমধ্যেই গান লেখেন, এই অ্যালবামেও কয়েকটি গান লিখেছেন যার মধ্যে অ্যালবামের টাইটেল স্যং তার লেখা।

lrb.jpg
আমাদের

ডাবল অ্যালবামের প্রথম পর্বের নাম ‘আমাদের’। কথায়, সুরে, কম্পোজিশনে দারুণ জমজমাট গান ‘সাড়ে-তিনহাত মাটি’ অ্যালবামের প্রথম গান। গানের থিমের সঙ্গে কম্পোজিশনের সামঞ্জস্য অদ্ভুত সুন্দর হয়েছে। এই গানের কিবোর্ডপিস্ এবং ব্যাকআপ দারুণ, টোনটাও মনকাড়া, গিটারে আরপিজিওর কাজটাও চমৎকার এবং মানানসই মনে হয়েছে। গানটি খুব শার্প করে মিক্সিং অথবা মাস্টারিং করার ফলে কণ্ঠ বেশিমাত্রায় চিকন বা হাল্কা লেগেছে। চমৎকার লিড ও বেজ্ গিটারসমৃদ্ধ ‘ভালো লাগে না’ গানটির শুরুটা থ্রাশ-মেটাল ধরনের হলেও মাঝে মাঝে ব্লুজ্ টাইপের গিটারওয়ার্ক করেছেন আইয়ুব বাচ্চু, মন্দ নয় আইডিয়াটা। আইয়ুব বাচ্চুর কণ্ঠ ও সাইফুল ইসলাম টুটুলের হার্মোনাইজ্ ভালো লেগেছে। ড্রামসের প্যাটার্ন চমৎকার। ‘মাঝরাতে’ গানটির কিবোর্ডপিসটাকে খুবই সাধারণ মানের মনে হয়েছে। অদ্ভুত সুন্দর ব্লুজ্ টাইপের গান ‘রোদ্দুর জানে না’, আরো সুন্দর হয়েছে আইয়ুব বাচ্চুর গিটারের ব্যাকআপ। সাইফুল হাসান স্বপন একই প্যাটার্নে ভালোই বেজ্ গিটার বাজিয়ে গেছেন সারাক্ষণ। গানটিতে বেজ্-এ লিড বাজাবার সুযোগ ছিল। ‘বিস্ময়’ গানটিতে ড্রামসের কারুকাজ করলে ভালো লাগত, সিম্বলস্ ব্যবহারে তিনি যথেষ্ট কৃপণতা করেছেন এ গানে। ‘সাড়ে-তিনহাত মাটি’ গানটির মতো ‘ভবের দেশে’ গানটিও দারুণ জমজমাট, সম্পূর্ণ রঙিন। বেশকিছু গানে ভোয়েস্-প্রোসেসর দক্ষতার সাথে ব্যবহার করেছে এলআরবি, তার মধ্যে এই গানটিও অন্যতম। গানটির সামগ্রিক প্রেজেন্টেশন খুবই ভালো লেগেছে, চমৎকার গিটারওয়ার্কের পাশাপাশি দারুণ ফিল্ দিয়ে গেয়েছেন বাচ্চু এ গানটি। ‘খুব সহজেই’ গানটিতে কণ্ঠে কিছুটা টায়ার্ডনেস ছিল। ‘আয়না’ গানটির কিবোর্ডপিস্ শুনে টুটুলকে জন্ লর্ড মনে হয়েছে। “যখন প্রবল বৃষ্টিতে বসে পাশাপাশি / একজোড়া চড়ুই করে উষ্ণতা ভাগাভাগি” … চমৎকার লিরিক্সের সাথে লিড, কিবোর্ড, সুর সবকিছুই ভালো ‘যখন থেমে যায়’ গানটির। কিবোর্ডের কালার ভালো লেগেছে, তবে আরো আবেগ দিয়ে গাইবার সুযোগ ছিল গানটি। জ্যাজ্ ঘরানার ‘সাঁকো’ একটি অভূতপূর্ব গান। স্যান্টানা এ ধরনের গান করে; আসলে স্যান্টানা ইটসেল্ফ ইজ্ অ্যা স্টাইল। কিবোর্ড বেজ্, লিড, ড্রামস সবকিছুই দারুণ লেগেছে গানটিতে। ভালো গেয়েছেন ‘চাই জল’ গানটি আইয়ুব বাচ্চু, গানটির ভোয়েস্ লেভেল্ নিখুঁত জায়গায় রাখা।

বিস্ময়

দ্বিতীয় পর্বের নাম ‘বিস্ময়’। প্রথম পর্বে হার্ডরকের আধিক্য ছিল বেশি, আর এই পর্ব কিছুটা সফট গানসমৃদ্ধ। প্রথম গান ‘একটিবার’-এর সুর হৃদয়গ্রাহী, কিবোর্ডের ব্যাকআপ ভালো লেগেছে, অপূর্ব মিক্সিং গানটির প্রাণ। হ্যেভি গিটার-রিফসমৃদ্ধ ‘ষোলোআনা’ গানটির ওভারঅল সবকিছুই ভালো। চমৎকার সুরের গান ‘জলজোছনা’, ড্রামসের রোলিং, গিটার, ব্যাকআপ গিটার, কিবোর্ড সত্যিই অপূর্ব। গানটির ফিনিশিংটাও অপূর্ব হয়েছে। হ্যেভি গিটারের কাজসমৃদ্ধ ‘স্যুইসাইড নোট’ গানটির থিম ইন্টারেস্টিং।

20915879_10211447652159563_151315235_n‘মনটা আমার’ সম্পূর্ণ ব্লুজ্ গান। গানটি রিম্ দিয়ে শুরু হলে ভালো হতো, ফিল্ দিয়ে বাজিয়েছেন এবং গেয়েছেন বাচ্চু, বিশেষ করে কান্নার অংশটির এক্সপ্রেশনের কোনো জবাব নেই। পিয়ানো গতানুগতিক মনে হয়েছে। ‘স্বপ্নবদল’ গানে হার্মোনাইজ্ ভালো লেগেছে, বাচ্চুর কণ্ঠে সর্দি-সর্দি ভাব ছিল। অসাধারণ একটি গান ‘আকাশজোড়া ভালোবাসা’। কিবোর্ডপিস্ দারুণ, কণ্ঠে এক্সপ্রেশন সহ বেশি ডেপ্থ দিয়ে গাওয়াতে শুনতে ভালো লেগেছে। সুন্দর কথার সাথে সুন্দর সুরের এই গানটি সত্যিই চমৎকার। গানটিতে বেজ্ গিটার ভালো বাজিয়েছেন স্বপন, আর শেষের দিকে একটু বেশিই ভালো বাজিয়ে ফেলেছেন তিনি। ‘যাবে যদি চলে যাও’ গানটির সুর ব্লুজ্ আর ট্র্যাডিশন্যাল্ সুরের সংমিশ্রিত রূপ। ভালোই। ‘স্মৃতি’ গানটির অ্যাকোয়েস্টিক গিটারওয়ার্ক এবং টোন ভালো লেগেছে। গানটিতে মাউথ অর্গান জুড়ে দিলে খারাপ লাগত না। শেষ গান ‘মেলামেশা’ একটি দুর্দান্ত গান। সুন্দর এক্সপ্রেশন দিয়ে বাচ্চু চমৎকার গেয়েছেন; কথা ও সুরের এত অদ্ভুত সমন্বয় সহজে দেখা যায় না।

পুরো অ্যালবামে গিটারওয়ার্ক বরাবরের মতো ভালো হয়েছে। গিটারের টোনডেপ্থ সহ ড্রেস্টশনের কালার অপূর্ব; এক্ষেত্রে বাচ্চুকে স্পেশ্যালিস্ট বলা যেতে পারে। গানের থিম অনুযায়ী গিটারের অপূর্ব ব্যবহার প্রতিটি গানেই প্রাণবন্ত। অ্যালবামে রকের মধ্যে থেকেও সুরের বৈচিত্র্য এনেছেন বাচ্চু। জ্যাজ্ এবং ব্লুজের আনাগোনা অ্যালবামটির সুরকে করেছে সমৃদ্ধ। সাবলীল উচ্চারণ এবং যথাযথ এক্সপ্রেশন দিয়ে গেয়েছেন বাচ্চু। তার কণ্ঠের নিজস্ব স্টাইল আছে। মাঝে মাঝে তিনি একটি বিশেষ টোন বের করেন কণ্ঠ থেকে যা মেইন ভোয়েস্ এবং ফল্স্ ভোয়েসের মাঝামাঝি, এটা আইয়ুব বাচ্চুর সম্পূর্ণই একটি নিজস্বতা এবং বহুব্যবহৃত। তবে সবক্ষেত্রে এই টোনটি ভালো লাগে না। যেমন ‘বদলে যাই’ (সুখ)। এই অ্যালবামের ‘মন পুড়ে ছাই হয়’, ‘শুকতারা’ প্রভৃতি গানে এই কণ্ঠ ভালো লেগেছে, কিন্তু ‘একটিবার’ গানটিতে ভালো লাগেনি।

কিবোর্ডিস্ট টুটুল দিন দিন উৎকর্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন তার প্রমাণ এই অ্যালবাম। স্পেশ্যালি তার টোন সিলেকশন খুবই সুন্দর। এই অ্যালবামে স্বপন ফিঙ্গার স্টাইলে বেশি বাজিয়েছেন। মাঝে মাঝে ছকের 14463216_10154321269380932_5287724213351792514_nবাইরে যেয়ে অতিরিক্ত কারুকাজ করতে সম্ভবত তিনি পছন্দ করেন না। রিয়াদ যথেষ্ট প্রোমিজিং ড্রামার। তবে রকব্যান্ডের ড্রামার হিশেবে তাকে অনেকটাই সংযত বলে মনে হয়। তাল, লয় এবং বিভিন্ন প্যাটার্নে বাজাবার ক্ষেত্রে তার মনোযোগ কেন্দ্রীভূত এবং এক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত সফল। একজন ভালো রকড্রামারের স্বপ্ন থাকে একটি হার্ডরক ব্যান্ড এবং ভালো কম্পোজিশন; সেদিক থেকে বলা যায় তিনি প্রাপ্ত সুযোগের সদ্ব্যবহার করছেন না।

এই ব্যান্ডে একজনই স্টার; আর তিনি হলেন আইয়ুব বাচ্চু। কিন্তু ব্যান্ডটির টিমওয়ার্ক পুরো ব্যান্ডটিকেই স্টার ব্যান্ডে পরিণত করেছে তার ধারণা পাওয়া যায় গানগুলির কম্পোজিশন থেকেই। চমৎকার কম্পোজিশন এলআরবি-র অন্যতম প্রধান অস্ত্র। ভালো গিটারিস্ট হয়েও কম্পোজিশনের প্রয়োজনে গিটারের অত্যধিক প্রাধান্য দেননি বাচ্চু।

ভ্যান্ হেলেন্, ডিপ পার্পল, জিঅ্যান্ডআর, জার্নি, পার্ল জ্যাম্, স্যান্টানা, রেইনবো প্রভৃতি ব্যান্ডের গান শোনায় অভ্যস্ত যারা তাদের কাছে এলআরবি-র এই ডাবল অ্যালবাম ‘আমাদের বিস্ময়’ খুবই ভালো লাগবে। বাংলাদেশের ব্যান্ডমিউজিকের উন্নতির গতি কতটা দ্রুত এবং সমৃদ্ধ তার আভাস পাওয়া যাবে এই অ্যালবামের গান শুনলে।

অ্যালবামটি ধারণ করা হয়েছে সাউন্ডগার্ডেন স্টুডিয়োতে। ধারণ করেছেন ইমরান এ চৌধুরী মবিন; সহকারী ছিলেন চারু, আসাদ ও দূরে। চমৎকার মিক্সিং করেছেন ইমরান এ চৌধুরী মবিন। গতানুগতিকতার বাইরে আকর্ষণীয় রঙে কাভার এবং পোস্টার ডিজাইন করেছেন নিয়াজ আহমেদ অংশু। এলআরবি-র লোগোটি কার করা তার উল্লেখ ছিল না এখানে। দুটি অ্যালবাম একসঙ্গে একটি মোড়কে জুড়ে দেয়াতে আকর্ষণীয় হয়েছে পরিবেশনা। অ্যালবামটি পরিবেশনার দায়িত্বে ছিল সাউন্ডটেক।

lrb-gaanpaar

[গানপারের পাদটীকা : গানপারে অ্যালবামরিভিয়্যু প্রকাশ করতে চাইছি নিয়মিতভাবে। লেখাপত্র জোগাড় করে উঠতে পারছি না, বা পারছি না নিজেদের প্রতিবেদক দিয়ে লিখিয়ে নিতে, ব্যাপারটা আজও পরিকল্পনা থেকে ছেঁটে ফেলতেও পারছি না। আশা আছে একটা সময়ে রেগ্যুলার বেইসিসে অ্যালবামরিভিয়্যু প্রকাশে কামিয়াব হব আমরা। আশাতেই বসতি আপাতত। তরুণ গানশ্রোতাদের কোঅপারেশনের দিকেই আপাতত মুখিয়ে আছি।

কিন্তু রচনাপত্র পাওয়া, বিশেষভাবেই নিউলি রিলিজড অ্যালবামের রিভিয়্যুয়িং রচনাপত্রাদি, ভারি বিরল এক ব্যাপার। ন-মাসে ছ-মাসে অ্যালবাম একআধখানাও বের হয় না আজিকালি, ইট’স্ ট্রু, কিন্তু পরিবর্তিত ট্রেন্ডে এখন সিঙ্গেলস্ বের হয় এবং ননস্টুডিয়ো সংকলন তো বহুবিচিত্র রয়েছেই। সেসবের রিভিয়্যু অভিপ্রেত। অথচ হচ্ছে না। ব্যান্ড বা মোটা দাগে আমরা যাকে রকমিউজিক বলি, রিভিয়্যু করতে চাইছি আমরা এই বিশেষ জঁরটা মাথায় রেখে। এম্ফ্যাসিস্ দিতে চাইছি এই দিকটায়। লেখা ও লেখকের সঙ্কট আছে কি না তা আজও হলফ করে বলতে পারব না। আমরা পাচ্ছি না, এইটুকু শুধু বলতে পারি। কীভাবে অ্যালবামরিভিয়্যু হবে বা সম্ভাব্য রকসংগীতসমালোচনা কেমন হতে পারে, এর একটা মিনিম্যাল অ্যাপ্রোচ কেমন হতে পারে, এই বিষয়ে একটা আন্দাজ আমাদের সম্ভাব্য অবদায়কদেরে দিতে যেয়ে এক/দুইটা আর্টিক্যল্ আমরা ড্রাফ্‌ট করে রেখেছি ইতোমধ্যে যা আশু প্রকাশ্য। তবে সেসবের আগে এই লেখাটা ছাপায় গেলাম এক্সামপ্ল্যারি ইনিশিয়েটিভ হিশেবে।

হ্যাঁ, এইটা প্রাচীন লেখা। প্রাচীন একটা অ্যালবামের। ১৯৯৮ সনের ১ জুলাই সংখ্যা আনন্দভুবনে এইটা ছাপা হয়েছিল। রচনাটা ভালো না মন্দ, রিডার হিশেবে এতক্ষণে সেইটা আপনার কাছে ক্লিয়ার। বলছি না যে এইটাই ঈপ্সিত সংগীতসংকলনসমালোচনা আমাদের কাছে। এইটুকু শুধু বলব যে এই রিভিয়্যুটা অ্যাভারেজের অনেক উপরে এবং সমস্ত বিবেচনায় ভালো রচনা। আর্কাইভে এই রচনার থাকাটা ভ্যাল্যু অ্যাড করবে এতে এতটুকু সন্দেহ নাই আমাদের। এবং এ-ধরনের রচনা আনন্দভুবনেও খুব বেশি পাব্লিশ হয়েছে এমন নজির নাই। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, এই রচনার লেখক কাজী উচ্ছলের পরিচয় আমরা বার করতে পারি নাই। তিনি নিয়মিত প্রদায়ক ছিলেন ‘আনন্দভুবন’ পাক্ষিকের, নিয়মিত রচনা ছাপা হতে দেখা যেত তার অধুনাবন্ধ সেই পত্রিকায়। ইত্যবসরে কেউ রচয়িতার হালফিল সাকিনঠিকানা জানতে পারলে আমাদেরে জানাবেন আর্জি রইল।

গানপার দিয়া আমরা অ্যালবামরিভিয়্যুয়ের নয়া জামানা চালু করতে পারব? কঠিন হলেও অসম্ভব তো নয় মাটিপৃথিবীতে কিচ্ছুটি। লেট’স্ সি।]

… …

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you