ফ্রাঁসোয়াজ জিলো : প্রণয়িনী পেইন্টারের প্রস্থান

ফ্রাঁসোয়াজ জিলো : প্রণয়িনী পেইন্টারের প্রস্থান

শেয়ার করুন:

ফ্রাঁসোয়াজ জিলো (১৯২১-২০২৩)। স্বনামখ্যাত আর্টিস্ট। চিত্রশিল্পী। বিশ্বজোড়া তার কাজের অনুরাগীরা। পাবলো পিকাসোর প্রণয়িনী ও সন্তানের জননী ও পিকাসোশিল্পের গুরুত্বপূর্ণ একজন মিউজ। ২০২৩-এর জুনের ৬ তিনি মৃত্যু গ্রহণ করলেন। শতাধিক বছরের আয়ু লভেছিলেন তিনি। একশ যোগ দুই।

তার মৃত্যু যেন একটা কাল-উদ্ঘাটনের সুযোগ করে দিলো দুনিয়াজোড়া আর্টসমুজদারদেরে। এই উপলক্ষে, ফ্রাঁসোয়াজ জিলোর মৃত্যুর পটভূমিকায়, এরই মধ্যে অনেক লেখালিখি হয়েছে। সেসব লেখায় উঠে এসেছে অনেক অজানা অচেনা, আধাজানা আধচেনা, চমকপ্রদ সমস্ত তথ্য। শুধু তথ্যঋদ্ধই হয়েছি আমরা, তা নয়, তা আপাদমস্তক নাড়িয়েও দিয়েছে আমাদেরে।

এমন নয় যে জিলোর জীবৎকালে আমরা তার শিল্পচর্চার খুব খবরাখবর রাখতাম। তবে, বাংলা অক্ষরবাহিত বইয়ের সুবাদে, যথেষ্ট না হলেও আমরা তাকে জানতাম। পিকাসো-জিলো ঘরকন্নাকাল ও ঘটনাঘটন আমাদের জানা। ছ্যাঁকা দেগে দিয়েছিলেন জিলোর হাতের তালুতে, চুরটের, এমন আরও যন্ত্রণা পাবলো পিকাসো উপহার দিয়েছেন তার এই মিউজটিকে, এইসব খবরাখবর আমাদের জানা বাংলা সাহিত্য পড়ার সুবাদেই। ইন্ডিয়ান কবি রণজিৎ দাশ এমন এক কবিতার স্রষ্টা, যার নাম ‘ক্ষত’, যা পাই ‘ঈশ্বরের চোখ’ নামের কবিতাবইটায়, তখন খ্রিস্টাব্দ ১৯৯৯।

তিনি, জিলো, পশ্চিমে বিখ্যাত হলেও, উত্তুঙ্গ দামে তার ছবি নিলাম হলেও, ওই অর্থে পৃথিবীবিখ্যাত শিল্পী তিনি নন, ফলে আমাদের ভূখণ্ডের শিল্পকলার আবহে শিল্পী হিশেবে তার বা তার কাজের সঙ্গে তেমন পরিচিতি আমাদের নাই, যদিও তার নাম পিকাসোর সূত্রে আমরা সকলেই জানি। কিছু ছবিও দেখা হয়েছে, ইন্টার্নেটযুগে এসে, সেসবই পিকাসোর অঙ্কনশৈলীর চিহ্নবহ মনে হয়েছে আমাদের কাছে। সে যাকগে।

এইবার তার মৃত্যুর পরই বরং তাকে নতুন করে চেনাজানার সুযোগ হয়। স্থির ও শান্ত পদক্ষেপে কীভাবে সরে যেতে হয় প্রেমিকের আগ্রাসী বৃত্ত থেকে, প্রেমের বাহুডোর থেকে, ক্রমে নিজস্বতার দিকে, আনন্দের দিকেও, এবং তা কোনও উত্তুঙ্গ নাট্যমুহূর্ত তৈরি না করেই, সিন ক্রিয়েইট না করেই,—তীব্রভাবে এই শিক্ষাটা ফ্রাঁসোয়াজ জিলো আমাদেরে দিয়ে গেলেন যেন।

ঘরণী হননি পিকাসোর, সন্তান নিয়েছেন। কন্যা পালোমা পিকাসো নামজাদা ফ্যাশনআর্টিস্ট। প্রফেশন্যাল আর্টডিলার ও জুয়েলারি ডিজাইনার।

ছবিতে দেখা যাচ্ছে পেইন্টার পাবলো পিকাসোর সঙ্গে জিলো, সৈকতছাতা হাতে পেইন্টার প্রেমিকটি পিছে পিছে, ১৯৪৮ সালে, ফ্রান্সের কোনো এক জলরাশির তটরেখা ধরে কুজনরত দুইজনে।

সেই জিলো চলে গেলেন দুইহাজারতেইশের ছয় জুন শতবর্ষী জীবনের পরপারে।

আর্টডেস্ক, গানপার

গানপার
শেয়ার করুন:

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you