আমার ধারণা অসিত যে জীবন চেয়েছিল, তার কাছাকাছি একটা জীবনই যাপন করে গেল।
সবকিছুতেই সে একটা অসিতীয় সিগ্নেচার রাখতে পারত, সেটা দেবব্রত কিংবা কিশোরি আমানকর শুনবার সময় হোক, টেবিল টেনিস খেলার সময় হোক, হাওয়াইন গিটার বাজানোর সময় হোক, কিংবা সুন্দরী ক্লাশমেটকে মন্দ্রগম্ভীর পরিবেশে মেয়েদের হলে এগিয়ে দেয়ার সময় আমাদের অন্যায্য জেশ্চারগুলোকে অবজ্ঞা করার সময়ই হোক।
বিশ্ববিদ্যালয়জীবন শেষ করার পর অসিতের সাথে কমই দেখা হয়েছে। কিন্তু জানতাম, সেই জীবন থেকে ইস্তফা দেয়নি সে। প্রচুর জীবনীশক্তি ছিল, ফলে মনে হলো, খানিক জোরই খাটানো হলো অসিতের ইমাজিনড আয়ুর উপর।
আরো কিছুদিন দিব্যি বেঁচে থাকতে পারত সে, সুস্থ এবং কর্মক্ষম অবস্থায়। দূর থেকে জেনে আনন্দ পাওয়া যেত, অসিত তার সংঘময়, সৃজনশীল আর স্বাপ্নিক জীবন যাপন করে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জে।
অসিত কুমার সাহা একাধারে একজন নাট্যকার, সংগীতশিল্পী, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও ইংরেজির অধ্যাপক ছিলেন। নাট্যদল ঐকিক থিয়েটার, সাংস্কৃতিক সংগঠন লক্ষ্যাপার ও লক্ষ্যাপার পরম্পরার প্রতিষ্ঠাতা তিনি। নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, হাওয়াইন গিটার পরিষদ সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন তিনি। নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করে সর্বশেষ তিনি মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের ০৯ মে তিনি ইন্তেকাল করেন। অসিত কুমারের বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। স্ত্রী ও ২ পুত্রসন্তান সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি। — গানপার
COMMENTS