শ্রদ্ধাঞ্জলি : বিভুরঞ্জন সরকার || মাকসুদুল হক

শ্রদ্ধাঞ্জলি : বিভুরঞ্জন সরকার || মাকসুদুল হক

শেয়ার করুন:

বিভুরঞ্জন সরকারের সাথে আমার পরিচয় হয়নি বা জীবনে উনাকে কখনো স্বচক্ষেও দেখিনি। তবে উনার আকস্মিক মৃত্যুতে আজ আমি গভীরভাবে ব্যথিত। উনার প্রতি আমার সারাজীবনের কৃতজ্ঞতা থেকেই গেল, কারণ উনার নিজস্ব পত্রিকা ‘চলতিপত্র’-র মাধ্যমেই বাংলা ভাষায় আমার লেখালেখির জগতে প্রবেশ ঘটেছিল—সেই সুযোগটি উনি করে দিয়েছিলেন। ১৯৯৮-১৯৯৯ সালে আমার সাপ্তাহিক কলাম ‘এই নিষিদ্ধ সময়ে’ উনি বিনা সেন্সরশিপে ছাপাতেন। যদিও একদিনও উনার সাথে সরাসরি কথা হয়নি, উনি সহকর্মীদের মাধ্যমে সবসময় আমাকে সাহস করে নির্দ্বিধায় লেখার উৎসাহ দিতেন। একটাই শর্ত ছিল—লেখা থামানো যাবে না। আর হ্যাঁ, এও জানিয়ে রাখি—উনি আমার লেখার জন্য সম্মানজনক পারিশ্রমিক দিতেন। আজ উনার ‘খোলা চিঠি’ পড়ে জানলাম—উনি সারাটাজীবন অধিকাংশ সময় বঞ্চিত হয়েছিলেন।

আমি বহু বিষয় নিয়ে লিখেছি, আর উনি সেগুলোকে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করতেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘আমি বাংলাদেশের দালাল বলছি’ শিরোনামের লেখাটি, যা পরবর্তীতে বই আকারে প্রকাশিত হয় ও এখনো বাংলাদেশে পাওয়া যায়। ১৯৯৯ সালে যখন একটি রবীন্দ্রসংগীতকে জ্যাজ রক ফিউশন ধারায় করার ‘পাপের’ কারণে আওয়ামী সাংস্কৃতিক শকুনদের তোপের মুখে পড়ি, উনি একেবারে বিলম্ব না করেই ‘রবীন্দ্র রাজাকারের কবলে’ শিরোনামের লেখা ছেপেছিলেন নিঃসঙ্কোচে। সেটাই ছিল চলতিপত্রে আমার শেষ লেখা। বাকিটা ইতিহাস।

উনার প্রতি রইল ধন্যবাদ ও শ্রদ্ধা। জয়গুরু!

২২অগাস্ট ২০২৫, টরন্টো, অন্টারিও


গানপারে মাকসুদুল হক

শেয়ার করুন:

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you