বিজয় আহমেদ : কবিতার প্রাকৃত পুরুষ || সরোজ মোস্তফা

বিজয় আহমেদ : কবিতার প্রাকৃত পুরুষ || সরোজ মোস্তফা

বিজয় আহমেদ বাংলা কবিতার প্রাকৃত পুরুষ। পৌষের যে-মহিমায় সুন্দর হয়েছে বাংলার প্রান্তর, নদীর বিজন লোকালয়—কবি সেই জনসংস্কৃতির শব্দ, আখ্যান, বিশ্বাস, আচার-আচরণ ও মিথকে কবিতায় ধারণ করেন। কবিতাকে ধারণ করতে হয়। সময়-সমাজ-মানুষকে আড়াল করে নিছক শব্দ ও অলীক স্থাপনাকে কবিতা বলা যায় না। সহমর্মি সহজতায় কবিতা সময়ের প্রত্নতত্ত্ব।

বাংলা কবিতার কৃত্রিম প্রবাহ থেকে বেরিয়ে বিজয় ফিরেছেন আখ্যাননির্ভর মাটির কবিতায়। যমুনার চরাঞ্চল, মায়াবী গোধূলি, হাটভাঙা মানুষের বাড়িফেরা, পীরের মাজার, সুফির নিশান, ইয়াসিন, ইয়াসিনের বোরোধান, নারী, স্বপ্ন, রূপকথা—ভাষার সহজতায় উপস্থাপন করেন কবি বিজয় আহমেদ। পয়ারের মাধুর্যে বাংলা কবিতার চিরায়ত আখ্যান, বর্ণনার সৌন্দর্য ফিরে আসে বিজয় আহমেদের কবিতায়। ছন্দ ও ভাষার জটিলতাকে অতিক্রম করে কর্ষণযাপিত মানুষের জীবনকে পরিবেশন বিজয়ের কবিতাকে মহিমান্বিত করেছে।

সমকালে বসে একজন কবির কবিতার রূপ, নির্মাণ ও দার্শনিকতার অনুভব খুব সহজ নয়। কবিতা মূলত কবির দুচোখের ভাষাযাপন। দৃষ্টি ও সমাচারে যমুনার তীরবর্তী মানুষের ভাষা ও জনপদের রূপই লিখে যাচ্ছেন কবি।

এই ক্ষুদ্র জীবনে আমি এই উদার মানুষটির অকৃত্রিম দরদ ও ভালোবাসা পেয়েছি। আমার কোনো গুণ নেই কিন্তু কবি আমার জমিনে মমতা রোপণ করেছেন। দরদি হয়েছেন।

দাদা, আপনাকে খুব ভালোবাসি। ব্রহ্মপুত্রের কিনারে ছোট মগরার তীরে আমি থাকি। আপনার জন্য অপেক্ষা করি। কোন দিন আপনি হয়তো আসবেন।

বাংলা কবিতার প্রকৃত ও প্রাকৃত ভাষা লিখে যাচ্ছেন আপনি। আপনার যাত্রা দীর্ঘ হোক। দাদা, আপনাকে খুব ভালোবাসি। শুভ জন্মদিন, কবি!


সরোজ মোস্তফা রচনারাশি
বিজয় আহমেদ রচনারাশি
বিজয়ের জন্য বালিহাঁস ও বনজারুলির ফুল

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you