বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের ইন্ডিয়ান বাংলা কবিতার বিনির্মাণ ও বিকাশে ‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকার ভূমিকা ও গুরুত্ব অবিস্মরণীয়। কথাটা আনডাউটেডলি স্বীকার্য। কৈশোরোত্তীর্ণ সদ্যতরুণ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সম্পাদিত এই পত্রিকাটি ছিল তখনকার পশ্চিমবঙ্গের তরুণতম কবিদের মুখপত্র। ক্রমে এই পত্রিকা কাল্ট হয়ে উঠেছিল। সম্পূর্ণ অবাণিজ্যিক একটা সাংস্কৃতিক উদ্যোগ ছিল পত্রিকাটা আদ্যোপান্ত।
বইয়ের নাম ‘কৃত্তিবাস : নির্বাচিত পঞ্চাশ’। যদিও বইনাম থেকে বোঝা যায় না আদৌ সংকলনটি কবিতার না প্রবন্ধের, শুধু বইটা হাতে নিয়া পাতা উল্টাইলেই বোঝা যায় নির্বাচনটি কবিতার। ফিফটি সিলেকশন্স। গদ্য ছাপা হলেও পত্রিকাটি মুখ্যত কবিতারই ছিল।
শঙ্খ ঘোষের কবিতা দিয়ে কৃত্তিবাসের প্রথম সংখ্যাটা স্টার্ট হয়েছিল। শঙ্খ মোটামুটি নিয়মিতই লিখেছেন গদ্যেপদ্যে এই পত্রিকায় একদিন, লিখেছেন শঙ্খসমসাময়িক অন্য অনেকেও। পরবর্তীকালে আরও অনেক নতুন কবি এসে এই পত্রিকায় লিখেছেন, নতুন সময়ের কবি তারা, পাশাপাশি লিখেছেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়দের পূর্বসূরিরাও। পত্রিকাটা ভারতীয় আঞ্চলিক বাংলায় শুধু নয়, আলোড়ন তুলেছিল স্বাধীন বাংলা ভাষার কবিসাহিত্যিকমহলেও।
পত্রিকার শুরু থেকে এর পরের চব্বিশ বছর পর্যন্ত প্রকাশিত সংখ্যাগুলা থেকেই কবিতাগুলি নির্বাচন করা হয়েছে। এরপরেও, ওই চব্বিশ বছরের পরেও, আরও অনেক অনেক সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে এই পত্রিকার, বোধহয় এখনও হচ্ছে। কিন্তু পঞ্চাশটা কবিতা নিবেন বলেই প্রিডিটার্মাইন্ড ছিলেন যেহেতু, সো ওই চব্বিশ বছরের মধ্যে পঞ্চাশটির নির্বাচন সম্পূর্ণ হওয়ায় সম্পাদককে থেমে যেতে হয়েছে। এর পরে আর অগ্রসর হন নাই।
বাংলা ভাষায় লেখা পঞ্চাশটি সিগ্নিফিক্যান্টলি বিউটিফ্যুল কবিতা ধরা রয়েছে এই বইটায়। পাতা উল্টাতে উল্টাতে, পড়তে পড়তে মনে হয় এইগুলা আজও সমকালিক, মনে হয় যেন সদ্য লেখা হয়েছে পদ্যগুলি। কিন্তু বইয়ের সম্পাদকীয় গদ্য থেকে এই কবিতাগুলি কবেকার তা আগে বা পরে জেনে ফেলা যায়।
এই সিগ্নিফিক্যান্ট সংকলনটির সম্পাদক সুব্রত রুদ্র। প্রকাশক প্রতিভাস। প্রকাশ হয়েছে ইন্ডিয়ার অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে।
বইনিউজ ডেস্ক
- রিপ্রিন্ট রিফ্রেশিং - November 7, 2025
- কোচবিহার ও আব্বাসউদ্দীন - November 7, 2025
- দেবেশ রায়ের ফ্যাসিবাদের বিত্তান্ত - November 6, 2025

COMMENTS