বাঞ্চ || ওলি মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরী

বাঞ্চ || ওলি মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরী

বাঞ্চ লিখলাম লাঞ্চের স্টাইল ফলো করে। প্রথম আলো  লাঞ্চবিরতিকে এইভাবেই লিখেছে দেখলাম গ্যুগল করে। টেস্টেখেলোয়াড়রা লাঞ্চবিরতিতে যায়। এটাকে মধ্যাহ্নবিরতিও বলা যায়।

ক্রিকেট থেকে বাঞ্চে ফিরি। লাঞ্চ ও প্রাতরাশ মিলিয়ে হয় বাঞ্চ। ব্রেকফাস্টের বদলে প্রাতরাশ বললে বেশ ঘটমট মনে হয়। তাই কোনো ভাষাবিদ নতুন যুৎসই শব্দ আবিষ্কারের আগে বাঞ্চই সহি।

বাঞ্চ হিসেবে আজকে সবজিখিচুড়ি খেলাম। শীতের সকালে বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। বাংলাদেশে আগে আবহাওয়ার পূর্বাভাস না মেলারই রেকর্ড বেশি ছিল। কিন্তু দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, ভাবতে ভালোই লাগে। পূর্বাভাসমতো হাল্কা বৃষ্টির দেখা মিললো ও শীতের তীব্রতা কিছুটা বাড়ল। ২০২১ ইসায়ি সনের মধ্য জানুয়ারিতে এই সিজনে এটা শীতের শেষ কামড়ই বোধ হচ্ছে। এরপর শীত ক্রমান্বয়ে তীব্রতা হারাবে। হাল্কা বৃষ্টিতে উদযাপনের উপলক্ষটা মিললো।

দৌড়াইয়া বাজারে গেলাম। ক্যাপ্সিক্যাম নিয়ে আসলাম। ক্যাপ্সিক্যাম কেন? কালের কন্ঠ  পত্রিকায় ক্যাপ্সিক্যাম দিয়ে সবজিখিচুড়ির সাথে ফটোটা জোশ ছিল। সাথে বেগুনও নিয়ে আসলাম। বেগুন দিয়া খিচুড়ি খাইতে গিয়া যেহীনভাইয়ের কথা মনে পড়ে গেল। অনেক বছর আগে লাগাতার আমরা বেশ কিছুদিন লাঞ্চবিরতিতে খিচুড়ি খেয়েছি এক ডাচ দম্পতিসমেত। সেইসময় ডাচ দম্পতির সাথে মিলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের জন্য প্রাথমিক শিক্ষার প্রস্তাবনা তৈরির একটি কাজে লেগেছিলাম কয়েক সপ্তাহ যাবৎ। দেশ তথা ঢাকা তখনো এত উন্নয়নের জোয়ারে ভাসেনি। মিডল ইনকামের হাওয়ায় ধানমণ্ডির সাতের-অ্যা তখনো ভেসে যায়নি।

সে এক কাজ ছিল বটে। সেভ-ইউকে থেকে সাথীভাই জয়েন করত মাঝেমাঝেই লাঞ্চে। ডেভিডও নির্দেশনা দিত দুরালাপনিতে। সে-ই সম্ভবত যোগাড় করেছিল ডাচদের ভিএস্ও থেকে। অবশ্য যেহীনভাইও যোগাড় করে থাকতে পারেন। কানেকশন তারও কম ছিল না। তবে, অনেক বছর পর ডাচদের নাম মনে করতে পারছি না।

জরি ও পরি দুইজনেরই কেতাবি নাম বেশ মনে আছে। জরি ও পরি নাম দু’টি অবশ্য এক সিনিয়র কলিগের দেওয়া। পরি আগে এসেছিল বিলাত থেকে। পরে, জরি এসে যোগ দেয় অস্ট্রেলিয়া থেকে। পরি অবশ্য এক দেশি ছোকরাকে উড়িয়ে নিয়ে যায়। জরি সে-রকম কিছু করেনি বাংলাদেশ ছাড়ার সময়।

সেসব দিনগুলাতে শায়েস্তা খানের খিচুড়ি রান্নার প্রশংসায় সবাই ছিলেন পঞ্চমুখ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদাআপাও বোধহয় একদিন এসে এই খিচুড়ি খেয়ে গেলেন। দেশি-বিদেশি সবাই বেগুনসমেত খিচুড়ি খেয়ে কুপোকাত। সৈয়দ সাহেবের নকল করে বলতে হলো, — সবজিখিচুড়ি তুমি কেন এত স্বাদ ধরেছিলে হায়, ডাচরা সব দেশ-ধর্ম ভুলিয়া লুটাইল তব পা’য় ।

তবে আজকের ক্যাপ্সিক্যামসমেত সবজিখিচুড়ির রেসিপিটা ‘কালের কণ্ঠ’ থেকে পাওয়া। আমি অবশ্য শিওর না হোমমিনিস্টার পত্রিকার নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে ফলো করে খিচুড়িটা প্রস্তুত করেছেন কি-না।

তবে মজা হয়েছে বেশ। জয়তু সবজিখিচুড়ি। জয়তু বাঞ্চ।

… …

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you