দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের বিতর্কিত প্রবন্ধগুলো পড়ছিলাম। ইনি যে তার সময়ের আরেক জাঁদরেল সমালোচক ছিলেন তা একদম জানা ছিল না। বিশেষ করে রবীন্দ্রনাথের ভক্তকূল সম্পর্কে তিনি সবসময় ‘রবীন্দ্রচেলা’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। এবং আমাদের এই সময়েও কেউ এতটা নির্মমভাবে কোনো লেখক রবীন্দ্রনাথকে জাজ করেনি যতটা দ্বিজেন্দ্রলাল করেছেন তার লেখায়।
শুধুমাত্র ‘সোনার তরী’ কবিতার অসারতা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি রবীন্দ্রনাথের কাণ্ডজ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। এটি যে রবীন্দ্রনাথের সবচেয়ে ব্যর্থ আর অর্থহীন কবিতা তা তিনি কবিতার একেকটি শব্দ ধরে ধরে বিশ্লেষণ করেছেন। তবে তার সকল মুগ্ধতা রবীন্দ্রনাথের ‘যেতে নাহি দিব’ কবিতা নিয়ে। এখানে তিনি উদারচিত্তেই নিজের মুগ্ধতা আর ঠাকুরের মেধার প্রশংসা করেছেন। কিন্তু, রবীন্দ্রচেলাদের মূর্খতা নিয়ে হাসাহাসিও করেছেন; কারণ, এরা নাকি এই কবিতার মর্ম বোঝে না।
ব্রিটিশ সরকারের কর্মচারী হয়ে এই লোক কী করে ধনধান্যের মতো অমর সৃষ্টি রচনা করেছিলেন সেই কৌতূহল থেকে তার স্বরচিত গদ্য আর সংগীত সম্পর্কে বিশ্লেষণ পড়বার নিমিত্তে তার বই পড়তে শুরু করেছিলাম। তাতে বাড়তি পাওনা যুক্ত হলো তার এই মারকুটে দিক। তবে তার সংগীত সম্পর্কিত লেখার খোঁজ যদি কেউ দেন তবে উপকৃত হবো। খুব ইচ্ছা আছে ভবিষ্যতে চার জমিদার যথা ঠাকুর, রজনীকান্ত সেন, অতুলপ্রসাদ, দ্বিজেন্দ্রলাল নিয়ে একটা মূল্যায়নধর্মী কিছু লেখার। ওম।
এপ্রিল ২০২৩
শিবু কুমার শীল রচনারাশি
টুকটাক সদালাপ সমস্ত
- দুইটি দেহের একটি সফর || শিবু কুমার শীল - May 19, 2025
- মেঘদল : নামকরণ, লোগোনির্বাচন ও কিঞ্চিৎ স্মৃতিরোমন্থন || শিবু কুমার শীল - May 17, 2025
- টুকটাক সদালাপ ১৭ - May 11, 2025
COMMENTS