আমাদের তো একটা চুলকানি সমাজ আছে। অদের সবকিছুতেই সমাজ গেল গেল টাইপের একটা অ্যাংরি রূপ আছে। ফলত তার রিয়্যাকশন। যা মুলত নিজেদের অক্ষমতা এবং অবদমনের ওয়ে-আউট। এই হউরের পুতেরা, এদের আইডিয়া ভক্ষণকারী অন্য হউরের পুতেরাও, পাওয়ার মেকানিজমের হাওয়া-যেদিকে-তাল-অইদিকে অংশরাও চান্স পাইলেই পোলাপানরে ‘অসামাজিক’ কাজের দোহাই দিয়া স্বাভাবিক মেলামেশা এবং প্রেম করতে দিতে চায় না।
আপনারা তো তাইলে ওই যে মাঝে মাঝে কতগুলা পয়দা হয় যে — অমুক ম্যাজিস্ট্রেট, তমুক পুলিশ, তমুক এমপিরা গিয়া পার্কে কাপল উচ্ছেদের মতো খারাপ কাজেরই কাজি হইলেন। তাদেরকে সামাজিকভাবে অপদস্থ করার, বাপ-মার নাম্বার নিয়া ফোন কইরা তাদের প্রাইভেসিকেও নরক বানাইন্না লোকই তো আপনারা, নাকি? এখন আবার ওই একই জাতের সাংবাদিকগুলারেও দেখতেছি তাগো লাইন ধরছে। ইভেন পত্রিকার ভিডিও সাংবাদিকতায়, সোশ্যাল মিডিয়ায়, কাপলদের পার্কে যাতায়াতকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেছে। ভিডিও কইরা ওইগুলা প্রচার করতেছে। মিডিয়া ট্রায়ালের কুফল সম্পর্কে ইনাদেরকে ইনাদের সম্পাদক এবং সম্পাদকীয় নীতিমালা কোনো সবকই দিতে পারেন নাই দেখা যাইতেছে।
তো সেই আপনারাই তো এখন বোটানিক্যল গার্ডেনের পিছে লাগবেন। আপনাদের পয়েন্ট হইতেছে নৈতিকতা ঘেঁষা। কেন ২০ টাকার টিকেট ১০০ টাকা করা হইল, এইটার পিছে নাকি পার্কে প্রেম করতে চাওয়াদের আরও সিকিউরিটি প্রদান করা হইল সরকারের তরফে। ওদের নাকি টিকেট ২০০/৩০০/৫০০ টাকা যা-ই করা হইত, সমস্যা হইত না। হা হা। যদি সরকার আসলেই শুধুমাত্র প্রেম করতে চাওয়াদের সিকিউরিটি প্রদানের জন্য তা করতেন তবে সেইটা প্রশংসার দাবি রাখে!
কিন্তু সরকার কেন এই মূল্য বৃদ্ধি করছেন, তা আপনারা সকলেই জানেন। অইগুলা অর্থনীতির অংক।
আমি আহ্বান করছিলাম পার্ক এবং পাবলিক টয়লেট থেকে সকল প্রকার টিকেট এবং আর্থিক লেনদেনের সিস্টেম উঠাইয়া দিতে। সম্পূর্ণ ফ্রি কইরা দিতে। প্রেম করারা প্রেম করবে, ঘুরতে যাওয়ারা ঘুরবে, শিক্ষাসফরওয়ালারা শিক্ষা খাইবে, বাট সবই হবে ফ্রিতে। কেন টাকা দিতে হবে?
২.
বোটানিক্যল গার্ডেনের প্রবেশমূল্য বাড়ানো হইছে। আগে ২০ টাকা ছিল। বর্তমানে কত হইছে তা ছবিতে দেখুন।
আমার বক্তব্য হইল —
যেই যুক্তিতে উনারা এইগুলা বাড়ান, রক্ষণাবেক্ষণ সহ ইত্যাদি, মানে যখন সিদ্ধান্ত হইছিল টিকেট সিস্টেম থাকবে, সেই কোন আমলে, তখনকার হিসাবে ২০ টাকা অত কম টাকাও না। তো মাঝখানে দীর্ঘসময় তো কাইটা গেল। বাড়ানো হয় নাই। যখন বাড়ানোর আলাপ উঠছে, তখন যেই হার নির্ধারণ করা হবে, তার যৌক্তিকতা তো অর্থনীতির অঙ্ক অনুযায়ীই চলবে। তাই না?
ওই হিসাবে তা আর কই অত বাড়ল? এখন একটা সিগারেটই তো ১৮ টাকা। একটা ডিম ১৩/১৫ টাকা।
পাবলিক সার্ভিসের মূল্য নির্ধারনের একটা পলিসি আছে। ওই হিসাবে বোটানিক্যল গার্ডেন যা অফার করে তার মূল্য হিসাবে এই দর ঠিক আছে এবং যুগোপযোগী।
কিন্তু পাবলিক সার্ভিসের সবকিছুর মূল্য নির্ধারণের কিছু নাই। সরকারকে আমাদের এইটা বলতে হবে।
বোটানিক্যল গার্ডেনের প্রবেশমূল্য প্রত্যাহার করা হোক।
প্লাস, পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করার জন্য কোনো মূল্য রাখা চলবে না। রমনা পার্কে প্রবেশ মূল্যও নাই, পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করতেও টাকা দেয়া লাগে না।
কিন্তু বোটানিক্যল গার্ডেন, চিড়িয়াখানা, ধানমণ্ডি লেক, বাসস্ট্যান্ড — এইসব জায়গার পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করতে ১০ টাকা দেয়া লাগে। এইটা ফ্রি করা হোক। এবং প্রচুর পাবলিক টয়লেট, ইউরিনাল — এইগুলা করা হোক। সিটি কর্পোরেশনের আয় এমনিতেও অনেক বাড়ছে। এই ব্যবস্থাপনা করতে কোনো সমস্যাই হওয়ার কথা না। আমাদের টয়লেট ব্যবহার করার স্বাধীনতার উপর এইগুলা অর্থদণ্ড প্রত্যাহারের দাবি জানাই।
৩.
পার্ক বা এ-ধরনের স্থাপনাগুলি উন্মুক্ত রাখাই বেটার। ওই আলাপটা করা দরকার। কেন পাবলিক পার্কে টিকেট কাইটা ঢুকতে হবে সভ্য সময়ের সভ্য-হইতে-চাওয়া কোনো শহরের বাসিন্দাদের? (আর টিকেট তো ছিলই এতদিন, সেই হারে এতবছর পর বাড়াইতে গেলে তার দর এইটা ঠিকই আছে।)
- ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ … || আনম্য ফারহান - August 9, 2024
- গুড ভার্সাস ইভিল সবসময়ই কন্টেক্সট মুখাপেক্ষী || আনম্য ফারহান - July 15, 2024
- সভ্য সমাজের পার্কে পাব্লিক টয়লেটে প্রবেশমূল্য || আনম্য ফারহান - July 11, 2024
COMMENTS