বন্ডম্যুভির ডিস্ট্রিবিউশন স্বত্বাধিকার হাসিলের জন্য দুই জায়ান্ট কর্পোরেটের মধ্যে একটা চাপা প্রতিযোগিতা চলছে তলে তলে। ব্যাপারটা চাপাও বলা যাচ্ছে না, চাউর হচ্ছে ক্রমশ, অ্যাট-লিস্ট হলিউডভিত্তিক বেশকিছু ওয়েবক্ষেত্রিক প্রতিবেদনে এহেন খবর অলরেডি বেরিয়েছে। বিশ্বপ্রসিদ্ধ সংবাদসংস্থা রয়টারের সূত্রে ছাপানো প্রতিবেদনগুলোর বরাত দিয়া জানা যাচ্ছে যে টাইম ওয়ার্নার ইনকর্পোরেটেডের ‘ওয়ার্নার ব্রাদার্স’, ‘সোনি কর্প’, ‘এমজিএম’, কমক্যাস্ট কর্পোরেশনের ‘য়্যুনিভার্স্যাল পিকচার্স’ এবং ‘টোয়েন্টিয়েন্থ সেঞ্চুরি ফক্স’ কোম্প্যানিগুলো ম্যুভি ডিস্ট্রিবিউটটরের স্বত্বাধিকার হাসিলের লড়াইয়ে শামিল রয়েছে।
এমনিতে অ্যাপল বা অ্যাম্যাজন দুনিয়াজোড়া খ্যাতকীর্ত প্রতিষ্ঠান হলেও ম্যুভি কিংবা এন্টার্টেইনমেন্ট বিজনেসে এই দুই প্রতিষ্ঠানের পত্তনি ছিল না এতদিন। বরঞ্চ ট্র্যাডিশন্যাল ম্যুভি ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসায়ে জড়িত নামজাদা প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি ইনফর্ম্যাল ওয়েতে বেশকিছু নতুন প্রতিষ্ঠান জন্ম নিচ্ছে দেখা যায় প্রায় প্রত্যেক বছর। অল্প বাজেট মোবিলাইজেশনে সেইসব প্রতিষ্ঠান লগ্নিকারক হিশেবে বেশ পেশাগত দক্ষতারও স্বাক্ষর রেখেছে এরই মধ্যে। বেশ-কয়েকটা নামজাদা ছায়াছবিবিপণনকারক প্রতিষ্ঠানের নাম উপরের অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে যাদের খান্দান সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সুদীর্ঘ।
হলিউড পত্রিকার প্রতিবেদনসূত্রে জানা যাচ্ছে, অ্যাপল ও অ্যাম্যাজন উভয়ে যে-ম্যুভির বিপণন/পরিবেশনের কাজে লিপ্ত হতে চাইছে সেই ম্যুভিটি হচ্ছে দুনিয়ার সম্ভবত সবচেয়ে বৃহৎ ফ্রেঞ্চাইজি ফিল্ম বন্ড সিরিজের আসন্ন খণ্ড। লড়ছে একক পরিবেশকের অধিকার অর্জনের লক্ষ্যে উভয়েই। ব্রিটিশ এই কাল্পনিক স্পাই থ্রিলারের বাজারজাতকরণের সঙ্গে যুক্ত হওয়াটা খালি বিজনেসের জন্যই নয়, প্রেস্টিজের জন্যও উমদা ব্যাপার বটে।
মেগা-রিটেইলার প্রতিষ্ঠান অ্যাম্যাজনডটকম এবং আইফোননির্মাতা অ্যাপল উভয়েই আশা করছে হলিউডে একটা শক্তপোক্ত ভূমি তারা লাভ করতে পারবে অচিরে। এবং ভূমিলাভের পথে জিরোজিরোসেভেন বন্ডকে গেইটওয়ে হিশেবে বেছে নেয়াটা আদৌ ভুল কোনো পদক্ষেপ তো নয় নিশ্চয়।
অ্যাম্যাজন ও অ্যাপল উভয়েই ওয়ার্নার ব্রাদার্সের মতো সমপরিমাণ অর্থ অফার করেছে কার্যসিদ্ধিতে। এই খবর জানিয়ে হলিউড ম্যাগাজিন আরও বলছে যে অফারকৃত অর্থের পরিমাণ বা অঙ্ক উভয় আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের কেউ বলে নাই নিউমেরিক ফিগার দিয়ে। এখন বল পুরোপুরি জিরোজিরোসেভেনের কোর্টে। একটা সূত্র জানাচ্ছে, বন্ড ফ্রেঞ্চাইজির অর্থমূল্য দুই বিলিয়ন থেকে পাঁচ বিলিয়ন ইউএস ডলারের মধ্যে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের মারফতে এই নিউজতথ্য হলিউড ম্যাগাজিন পেয়েছে একজন ইন্সাইডারের কাছ থেকে।
অ্যাপল ও অ্যাম্যাজনের কাউকেই অ্যাভেইলেবল পাওয়া যায় নাই রিপোর্ট প্রকাশের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত। ফলে এই খবরের ব্যাপারে তাদের মন্তব্যও অজানা এখন অব্দি। ডিস্ট্রিবিউশনের স্বত্ব এর আগে ছিল সোনির দখলে। সেই স্বাত্বাধিকার এক্সপায়ার করেছে ২০১৫ সনে। এই সিরিজের সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ‘স্পেক্টার’ দিয়ে সোনি ইনকাম করেছে প্রায় আটশ আশি বিলিয়ন ইউএস ডলার। খবরের সূত্র বক্সঅফিসমোজোডটকম।
যুক্তরাজ্যের লেখক আয়ান ফ্লেমিং প্রণীত বইয়ের কাহিনি অবলম্বনে জেমস বন্ড চরিত্রটি সেল্যুলয়েডে প্রথম চিত্রিত হয় ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে। শন কনোরি অভিনীত ‘ডক্টর নো’ হচ্ছে এই সিরিজের ডেব্যু। পঞ্চাশ বছর পেরিয়েছে এরই মধ্যে। এরপরে অনেকে এই চরিত্রে প্লে করেছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন রজার ম্যুর এবং পিয়ার্স ব্রস্নান। সর্বসাম্প্রতিক বন্ডম্যুভিগুলোতে ডেনিয়েল ক্রেইগ অভিনয় করছেন দাপটের সঙ্গে। এরই মধ্যে ডেনিয়েলের চারটে বন্ডম্যুভি করা হয়ে গেছে।
অ্যাম্যাজন এরই মধ্যে শোবিজ ইন্ডাস্ট্রিতে স্টেপ-ইন করেছে। বেশকিছু টিভিশো ও ম্যুভি নির্মাণের নেপথ্যপটে বেশ কয়েক বিলিয়ন অর্থলগ্নি ইতোমধ্যে করেছে অ্যাম্যাজন। পুরা আনকোরা আগন্তুক বলা যাচ্ছে না কাজেই তাদেরে এই সেক্টরে। এই বছরের গোড়ায় ‘আম্যাজন স্টুডিয়ো’ অর্জন করেছে ক্যাসি অ্যাফ্লেকের ‘ম্যাঞ্চেস্টার বাই দি সি’ দিয়ে বেস্ট-অ্যাক্টর অ্যাওয়ার্ডের ম্যুভির সঙ্গে সংলগ্ন থাকার গৌরবটাও। ম্যুভিটা বেস্ট অরিজিন্যাল স্ক্রিনপ্লে হিশেবে অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডটাও বগলদাবা করেছে। অ্যাম্যাজনের বউনি হিশেবে এইসব ঘটনা উৎসাহব্যঞ্জক সন্দেহ নাই।
অ্যাপল বরং এই ফিল্ডে একেবারেই নতুন। অরিজিন্যাল কন্টেন্টের বিনোদনব্যবসায় তাদের অভিষেক এই বছরের মাঝামাঝি রিলিজড টেলিভিশনশো ‘প্ল্যানেট অফ দি অ্যাপ্স’ দিয়ে।
প্রতিবেদনকারী : বিদিতা গোমেজ
… …
- শৈলিন উডলির কথাগুলি (৭) - August 11, 2019
- কেইটের কথাবাত্রা (১০) - July 25, 2019
- টিল্ডা টোল্ড (২) - May 12, 2019
COMMENTS