শ্রীহট্টেশ্বরী শিল্পপ্রবন্ধমালা ৬ / কামরুল হাসান : প্রসন্ন পটুয়ার ধ্যান

শ্রীহট্টেশ্বরী শিল্পপ্রবন্ধমালা ৬ / কামরুল হাসান : প্রসন্ন পটুয়ার ধ্যান

ব্রতচারী দিনগুলার গল্প পড়তেসিলাম যখন
পটুয়ার খেরোখাতায়
এসএসসি দিয়া আমাদেরও মন
উড়ুক্কু মাছের মতন
তখন
লম্ফ মেরে একেকটা হাওর, টিল্লা, রাবারবন
তুড়ি মেরে পেরিয়ে যেতে চায়

আমরাও বইপুস্তক পড়ার নেশায়
দিনদুনিয়ার বহুকিসু ভুলে যেতেসিলাম
কোথায় কোথায় নিতে হয় বিরাম
কোথায় একেবারে ছেড়ে দিতে হয়
রিলেরেসের সময়
ফিনিশিং লাইনে রিচ করবার আগে
পেছন ফিরা তাকাইতে নাই
বিকেলবেলায় গ্রামরাস্তায় গাছে গাছে ঝুলন্ত জলপাই

কিন্তু অতকিসু তো বলে দেয় নাই কেউ
সমুদ্রতরঙ্গ, নদীঢেউ
ঝড়ে এবং ঝঞ্ঝায়
রেস্কিয়্যুবোটের অপেক্ষায়
থাকব, না সাঁতার শুরু করব প্রমত্তায়

বাইসেপ ফুলায়া ক্যানভ্যাসে এসে খাড়ান
পটুয়া কামরুল হাসান
দুইশ বুকডন ও উনবিংশ শবাসন সম্পন্ন করবার পর
ড্রয়িঙপ্যাডে এইচবি পেন্সিলে এঁকে ফেলেন উনিশশ উনসত্তর
উঁকি, তিন কন্যা, রায়বেশে  ইত্যাদি চিত্রের পর চিত্র অবিনশ্বর
মরবার আগে এক বিশ্ববেহায়ার চেহারা
তারও আগে ‘এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে’ পোস্টার
ও অন্যান্য জানোয়ার
আর সুরম্য সংসার ও পটচিত্রধারা

বাহবা পাবার আশায় নয়
চাইসেন সময়
যেন কথা কয়
তার রঙে, রেখায় এবং তুলিকায়
জাগতিক আর-কিসু অভিপ্রায়
থাকলে থাকতে পারে নেহায়েত অল্প

অপরিচিত নয়, এইটা কামরুল হাসানের গল্প
জন্মাইসিলেন সেই বিকলডানা পাখিদের দেশে
যেইখানে লেখকেরা শাসকের সঙ্গে মেশে
বেহায়ার মতো প্রণয়ন করে বেড়ায় শাসকদোহন গ্রন্থ
উহারা আজিব গ্রহের জন্তু
মঞ্চে বসা পায়ের উপর পা তুলে
তেলতেলে চেহারাসুরতে ফ্যালফ্যালে জেলাশাহরিক বনবীথি তৃণমূলে

এই শিশ্নোদরগুলার খপ্পর থেকে রেহাই পেতে হলে
চাই কিসু-না-কিসু ব্রতচারী মিশন

পড়তেসিলাম পটুয়া  কামরুল হাসানের অনবদ্য আত্মজীবন।।

শ্রীহট্টেশ্বরী শিল্পপ্রবন্ধমালা / পাঠকজ্ঞাতার্থে 
শ্রীহট্টেশ্বরী শিল্পপ্রবন্ধমালা  নামটায় অবনঠাকুর উঁকি দিলেও ওই কিসিমের প্রবন্ধ ও অনুসন্ধান এইটা না। মানে, এই সিরিজটার কথা বলতেসি, শ্রীহট্টেশ্বরী শিল্পপ্রবন্ধমালা, মিসিলিনিয়াস টাইপের টপিক নিয়া আগাবে। একটাই মিল সবগুলায়, শ্রীহট্টেশ্বরী শিল্পপ্রবন্ধমালায়, এইগুলা আর্টকালচারের নানান মানুষজন নিয়া বান্ধা বাগবিস্তার, প্রবন্ধের প্রকৃষ্ট বন্ধন জিনিশটার প্রতি নির্নিমেষ তাকিয়ে থেকে, এক্সপার্টদের অপিনিয়নের মজমায় ডাইলে রসুন ছ্যাঁকাইবার কায়দায় হাল্কা টাইমে হাল্কা সাউন্ডে যা-কিসু করবার তার করবে, এবং বলবে, এইসব মানুষ ও জিনিশ নিয়া আমিও ভাবি আমিও ইহাদেরে চিনি। শ্রীহট্টেশ্বরী শিল্পপ্রবন্ধমালা  নামের উৎসের বইটির ঋণ স্বীকার করি জীবনে, এই চিনাজানার খবরান্তর করাটাই লিট্রেচার। যার যত ধন, সে ততই কৃপণ। অতএব, অধিক বাক্য করি সংবরণ। তৈয়ার করি ইল্যুশন। এইটাই শ্রীহট্টেশ্বরী শিল্পপ্রবন্ধমালার মিশন। অধিক কিসু না। গাজোয়ারি লিট্রেচার আর আর্টকালচারের দুনিয়ায় এই জিনিশগুলি শ্রীহট্টে শেখ হাসিনার অতিকায় শাসনামলের কোনো-একটা টাইমে লেখা, ফাইজলামি নয়, তাৎক্ষণিক হলেও তন্ময়,  শ্রীহট্টেশ্বরী শিল্পপ্রবন্ধমালা। সালাম, আদাব, শুভেচ্ছা। —  জাহেদ আহমদ

শ্রীহট্টেশ্বরী শিল্পপ্রবন্ধমালা

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you