এতদিনে এত-রকম কিবোর্ড বাজিয়েছি যে সব নাম মনে রাখাই মুশকিল, মনে নেই অনেক। প্রথম ব্যবহার করেছিলাম রোল্যান্ড এসএইচ-২০০০ প্রিসেট সিন্থেসাইজার, সেটা ছিল মনোফোনিক। তারপর রোল্যান্ড ইলেক্ট্রিক পিয়ানো, তারও পরে দেশে প্রথমবারের মতো ইন্ট্রোডিউস করি কর্গ সিরিজের ৭৮ কে-ওয়ান সিন্থেসাইজার।
’৮০-তে কিনি রোল্যান্ড জুনো-৬ প্রোগ্রামেবল সিন্থেসাইজার; এটাতে পোলিফোনিক প্রিসেট না-থেকে সাউন্ড ওয়েভ এডিটর ছিল বলে ম্যানুয়ালি প্রোগ্রাম করে বাজাতে হতো। ’৮৩-তে কিনলাম রোল্যান্ড জুপিটার-৬, প্রিসেট সহ প্রোগ্রামেবল বিরাট কিবোর্ড। এসব কিবোর্ড কিনতে প্রত্যেকবারই আমাকে সিঙ্গাপুর যেতে হয়েছে, যে-কোনো মাইনর সমস্যার জন্যেও দৌড়তে হয়েছে সিঙ্গাপুর।
সে-সময়ে যে-কিবোর্ডই ব্যবহার করতাম রাতদিন সেটাই ব্যবহার করতাম। ফলে অল্পদিনেই প্রিসেট বাটন ঝামেলা করত, বেন্ডার লিভার ঢিলা হয়ে যেত, ধুলা জমে যেত কিবোর্ডপ্যাডে। এখন যেমন বুঝি তখন এসব সমস্যা মোটেই বুঝতাম না বলে ওখানেই, সিঙ্গাপুরেই, যেতে হতো।
জুপিটার-৬-এ ছিল ডুয়াল ভিসিও সিন্থেসাইজার, তার একটা ব্লক ঠিকমতো কাজ না করায় সিঙ্গাপুরে রেখে এসে ফেরত পেয়েছিলাম এক-বছর পরে। তো, রেগ্যুলার কাস্টোমার হবার সুবাদে বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ‘স্যুই লি’-র মালিক মি. পিটার স্যুং আমাকে এরপর প্রাথমিক সমস্যাগুলো সমাধান করার ব্যবস্থা করে দেন। তার টেক্নিক্যাল বিশেষজ্ঞের শিক্ষা এখনো কাজে লাগছে।
এরপর একে একে কিনেছি ইয়ামাহা ডিএক্স-৭, রোল্যান্ড ডি-৫০, কর্গ এম-১, আরেকটা ডি-৫০ আর কিছুদিন আগে একটা রোল্যান্ড এক্সপি-৮০। এক্সপি-৮০-র এলসিডি ডিসপ্লেটা বড়, কিবোর্ডটাও বড় — ৭৬ চাবির, ট্র্যাক আছে ১৬টা, টোনও চমৎকার।
বলতে দ্বিধা নেই, এদেশে যা কিবোর্ড দেখা যায় তার অধিকাংশই ইন্ট্রোডিউস করেছি আমি। তাই বলতে চাই য, অনেক কিবোর্ড প্রথমে বাজাতে ভালো লাগলেও দেখা যাবে আমাদের আবহাওয়ায় খাপ খাচ্ছে না। এনসনিক, কার্সভেল — এসব আমেরিকান কিবোর্ড সে-কারণেই আমি পছন্দ করি না। ১১০ ভোল্ট স্ট্যাবিলাইজার দিয়ে ২২০ করে নিয়ে এগুলো বাজানো যায় ঠিকই, কিন্তু ইলেক্ট্রিক সাইকেল অ্যাডজাস্ট করে না বলে অল্পদিনেই ডিসপ্লে ব্লিপ করতে শুরু করে। সেজন্যে আমার পছন্দ জাপানি কিবোর্ড, যার মধ্যে বিশেষ করে রোল্যান্ডের কথা বলতেই হয়।
অনুলিখন : কাজী উচ্ছল
[মানাম আহমেদ (Manam Ahmed) ‘মাইলস’ ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মিউজিক করছেন এই ব্যান্ডের সঙ্গে। বাংলাদেশের সাউন্ড ইন্ডাস্ট্রিতে মানাম আহমেদের অবদান অনেক। উপরের রচনাটা কাজী উচ্ছলের অনুলিখনে ‘আনন্দভুবন’ পাক্ষিকের ১ আগস্ট ১৯৯৮ সংখ্যায় বেরিয়েছিল। — গানপার]
- প্রিয় যন্ত্র, প্রথম যন্ত্র :: এহসান এলাহী ফান্টি - February 17, 2018
- প্রিয় যন্ত্র, প্রথম যন্ত্র :: হামিন আহমেদ - February 6, 2018
- প্রিয় যন্ত্র, প্রথম যন্ত্র :: আইয়ুব বাচ্চু - January 12, 2018
COMMENTS