অন লেখালেখি, ইনফর্ম্যাল

অন লেখালেখি, ইনফর্ম্যাল

এমনকি নিবন্ধপ্রবন্ধও যখন খুবই ক্লিশে একটা রাইটিং কনভেনশন হয়ে গেল, অত্যন্ত আর্কেইক আউটডেইটেড গলায় গাঁকগাঁক করে যাওয়াটাই নিবন্ধপ্রবন্ধের যখন দস্তুর হয়ে উঠল, অতি সেই আদিকালে ফেইসবুকের গোড়ার টাইমটায় একটা চান্স পাওয়া গেল দৈনন্দিন স্বভাবকণ্ঠে লেখালেখিটাকে একটু উটকো পণ্ডিতির বাইরে বের করে নিয়া আসবার। লক্ষ করা গেল, অনেক সুবিধা আছে নোট লেখার, রোজকার চিন্তাভাবনা-খোঁজপাত্তাগুলো দ্রুত ডক্যুমেন্টেড করে রাখা যায়; এই টিউন অন্য কোনো ফর্ম্যাল ওয়েতে — যেমন প্রবন্ধ-কলাম-আর্টিক্যল প্রভৃতিতে — ঠিক পাওয়া যায় না বলেই মনে হয় আমার। অনেক ফ্রি থাকা যায়, নোটলিখনকালে, একসময় এই নোটগুলো জোড়া দিয়া বাঁধা যায় ডিটেইল কোনো রচনার তোড়ায়। নোট লেখার রাস্তায়, অতএব, যাদের বড়সড়ক দিয়া হাঁটাচলা গাড়িচড়ায় পায়ে জোর ন-যোগায় তাদেরে স্বাগত জানাই। বিশেষত বাংলায়, ইংরেজিতেও নোটরচনা আলাদা মাত্রা ও আমেজ পায়/পাবে বলে আমার বিশ্বাস, বিশেষত ব্যক্তিক বোধ-অনুভূতিগুলো অনেক বেশি অ্যাকোমোডেট করা যাবে এই মিডিয়ায়, যেইটা খুব উপভোগ্য হবে। চিঠি লিখতে যেয়ে এককালে, কিংবা দৈনন্দিন ডায়রি রাখতে যেয়ে, যেমনটা সুবিধা পাওয়া যেত একসময়, এখন নোট লিখনপ্রক্রিয়ায় সেই জিনিশ হুবহু না-হলেও অনেকটাই তুলে আনা সম্ভব। লক্ষ করে দেখেছি, ইনফর্ম্যাল যতই বলি-না-কেন, রচনাকারে কিছু গুছিয়ে লিখতে গেলে একধরনের প্রেশার কাজ করে, একপ্রকার অদৃশ্য ও দৃশ্যমান চাপ, সেই চাপ কখনো উদ্দিষ্ট পাঠকের, কখনো মহাকালের, কখনো শিল্পপ্রণয়নের, কখনো রচনাকৌশলের, শৈলীগত কনভেনশনের, এছাড়া নানাবিধ সত্যি-মিথ্যা টালবাহানার টেম্পটেশন তো রয়েছেই। নিবন্ধ-প্রবন্ধ-কবিতা বা যে-কোনো টাইপের ফিকশন সৃজনের একটা ফাঁপা চাপের ফলে লেখাটা অনেকসময় আর লিখে ওঠা যায় না, সময় কেবল সময় খেয়ে যায়, ইত্যবসরে একের-পর-এক নতুন ফেনোমেনা সামনে আসতে থাকে, এবং এইভাবে অনেক লেখা ভাবনাবীজাকারে থাকা অবস্থাতেই ভেস্তে যায়। এর এককালে একটা ভালো বিকল্প ছিল, মুহূর্তের চিন্তাকুচি-ভাবনাবীজ-অনুদর্শন প্রকাশের একটা দুর্দান্ত পথ ছিল সেটি,— চিঠি লিখে রেখে দেয়া ভাবনাগুলো টুকে। একসময় একটু অনুভূতিশীল মানুষজন, লেখকরা তো বটেই, চিঠি লেখার পাশাপাশি প্রায় প্রত্যহ ডায়রি লিখতেন। জর্নাল নামের একটা দুর্ধর্ষ জঁর তো ফরাশিদের হাত বেয়ে দুনিয়ায় ছড়িয়েছে, আমাদের বাংলাতেও দুর্দান্ত কিছু জর্নাল রচিত হয়েছে কতিপয় কবি ও লেখকের কলমে। আঁদ্রে জিদের জর্নাল তো পড়েছি, কিংবা জীবনানন্দের এতসব কবিতা ও সঙ্গোপনে ফিকশন রচনা করে যাওয়ার পাশাপাশি তিনি রেগ্যুলার জর্নাল লিখতেন সস্তার এক্সার্সাইজ খাতায় ‘লিটারারি নোটস’ শিরোনামের তলায়, সেই জিনিশগুলো ভূমেন্দ্র গুহ সম্পাদনায় রিসেন্টলি পাব্লিশও হয়েছে, সেসবই কিন্তু কবিতা ও তাঁর অন্যান্য গল্প-উপন্যাস প্রভৃতির বাইরে একদম আলাদা ব্যঞ্জনাবাহী জিনিশ। ব্যক্তি জীবনানন্দকে চিনতে, এবং তাঁর সৃজনসামগ্র্য বুঝতে, সেইসব লিটারারি নোটস  প্রভূত সহায়ক। রবীন্দ্রনাথকে ভাবা যায় তাঁর ছিন্নপত্রাবলি  ও অন্যান্য চিঠিচাপাটির বিশাল সম্ভার ব্যতিরেকে! স্রেফ চিঠিতে-চিঠিতে আন্তোনিয়ো গ্রামশি রেখে গেছেন তাঁর থিসিসগুলো, দুইখণ্ডের একখণ্ড শুধুই চিঠিপত্র ও অন্য খণ্ড প্রিজন নোটবুক্স, অজয় গুপ্ত ও শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখের অনুবাদ ও সম্পাদনায় এই দুটো বই বাজারে পাওয়া যায় বেশ সস্তায়। চিঠিপত্রের বইটা যদি না-থাকত আমাদের সামনে, গ্রামশিকে একনোক্তাও বোঝা যাইত বলে মনে হয় না আমার। তেমনি কাফকাপাঠের ক্ষেত্রে তাঁর চিঠিপত্র দোরগোড়ার কাজ করে। আমি নিজে উপকৃত হয়েছি ইভেন ব্যক্তিগত জীবনেও কাফকার চিঠিগুলো পড়ে, প্রেমে-ব্যর্থ এই নিষ্ফল জীবিকাশাসিত জন্তুজীবনে, সৈয়দ সমিদুল আলম অনূদিত ফ্রানৎস কাফকা চিঠিপত্র সংকলন  পশিমবঙ্গের একটা প্রকাশনালয় থেকে বেরিয়েছে বেশকিছু বছর পূর্বে। একটা মারাত্মক চিঠিবই আছে কা’লিল জিব্রানের, অত্যন্ত নাজুক ও নরম সম্পর্কের নারীবন্ধু মেই জিয়াদাকে লেখা, নানান অনুবাদ পাওয়া যায় যার মধ্যে আমি পড়েছি মোস্তফা মীরের অনুবাদ,— মন্দ হয় নাই।  কীভাবে ভুলি আত্মজা ইন্দিরাকে লেখা নেহরুর সেই চিঠিগুলো! মোটরসাইকেল ডায়ারিস  নামের সেই আশ্চর্য নোটবুকের কথা তো মনে পড়বেই, লিখে গেছেন দিনের পর দিন যে-ডায়রিটি নানা ব্যস্ততার ফাঁকে চে আর্নেস্তো গেবারা। কত শত রাজবন্দি-বিপ্লবী তাদের প্রিয়জনের কাছে একান্তে লেখা চিঠির ভেতর দিয়ে একেকটা আলাদা চোখ ফুটায়ে গেছেন আমাদের, অন্য কোনো ফর্ম্যাল মাধ্যমে এইসব এইভাবে সম্ভব হইত বলে মনে হয় না। আজকাল আমার মনে হয়, খুব হিসেবি আর মতলবি এই দিনদুনিয়ায়, আড়ম্বরের এই আড়তে, নোটের ভিতর দিয়া সেই অনাড়ম্বর ব্যাপারটা ফেরানো সম্ভব। প্রবন্ধ-নিবন্ধ-কলাম প্রভৃতি লেখার বেলায় শৃঙ্খলা আর যুক্তি ও পারম্পর্য বহাল বা বজায় রাখার যে-একটা ব্যারিয়ার, সেইটা থেকে নোট অনেকটা মুক্ত বলতেই পারা যায়। নোট লেখার সময় মনে হয়, একটু কয়েকলাইনে দ্রুতরেখ একটা আউটলাইন করে রাখি চিন্তাটার বা আবেগটুকুর, পরে একসময় বিস্তারে যাওয়া যাবে। এই অ্যাপ্রোচ খুব সহায়ক লেখা প্রাণবন্ত করে তোলার ক্ষেত্রে, লেখায় একটা আটপৌরে আপন ও অনবদ্য ভাব আনয়নে, এর ফলে লেখা যুগপৎ ভাবনা ও আবেগের দিক থেকে অথেন্টিক থাকে। তথ্যের, এবং তত্ত্বের, শতভাগ সুলভ না-হলেও নোটে যেটুকু তথ্য ও তত্ত্ব থাকে সেটুকুর ভিত্তিতে কল্পনাকে বিচিত্রগামী করে খেলানো যায়। অবশ্য নোটেও উদ্দেশ্যপ্রণোদনা থাকতে পারে, টেম্পারিং থাকতে পারে তথ্যের ও তত্ত্বের, তবে তেমন প্ররোচনা থাকার ভাগ অন্য লিখনপ্রকরণের তুলনায় নোটপ্রকরণে কম, এইটাই বলতে চাইতেসিলাম। নোটের আশ্রয়ে মুক্তহস্তে লিখে যাওয়া যায়, এই মাধ্যম এস্তেমাল করে বেশ সুবাতাস আনয়ন সম্ভব নির্জীব অনুভূতিচিত্রণের রাজ্যে, এইটাই-যা লাভ।

২.
ভিন্সেন্টের চিঠিগুলো উল্লেখ করতে ভুলে গেসিলাম, তুলিকালিক্যানভ্যাসের শিল্পী সত্যজিৎ রাজনের মন্তব্যযোজনায় ইয়াদে এল। খুবই প্রাণীত হই থিয়োকে লেখা ভিন্সেন্টের এই চিঠিগুচ্ছ পড়ে ব্যক্তিগত ভঙ্গুর মুহূর্তগুলোতে, এগুলো অনুল্লেখ থেকে যাওয়া অন্যায়। এছাড়া আরও অসংখ্য চিঠিপত্র তো রয়েছে, যেসব পড়ার অভিজ্ঞতাস্মৃতি রোমন্থন করা আজও অনবদ্য সুখের। যেমন জন কিটসের কিছু চিঠি ফ্যানি ব্রনকে, খেঁকুড়ে ডিলান টমাসের উন্মত্ত দাম্পত্যকলহের মধ্যেও মদ্যপ স্ত্রী কাইটলিন টমাসকে লেখা একগুচ্ছ পাগলাটে প্রেমের চিঠি, জীবনানন্দের খুব কেজো গোছের ছোট ছোট চির্কুটগুলো, নজরুলের অনেক চিঠি, রিল্কের সেই বিখ্যাত দশটি চিঠি জনৈক তরুণ কবিকে লেখা…এইসব তো অবিস্মরণীয়। রিল্কের সুবিখ্যাত দশ চিঠি আমি পড়েছি রমেন্দ্রনারায়ণ নাগের অনুবাদে। এইটা খুব-সম্ভব বাংলায় রিল্কেলেটারের প্রথম অনুবাদ। এরপর তো অসংখ্য অনুবাদ বেরিয়েছে এই বইটির, বাংলায়। ইন রিসেন্ট ইয়ার্স অন্তত তিনটা বাংলাদেশে-বেরোনো অনুবাদ নজরপন্থে এসছে। আমার মনঃপূত হয় নাই। এক্কেরে খামাখা, অযথা, আননেসেসারি ইনিশিয়েটিভ মনে হইসে। একটাকিসু নতুন যুক্ত করতে না-পারলে একই কিতাবের একই ভাষায় ট্র্যান্সল্যাশন গর্হিত বলে মনে করি আমি। রিল্কের চিঠিপত্রের একটা বড়সড় সংগ্রহ গত কয়েক বছরে পড়ে উঠতে পেরেছি একটু একটু করে, এই বয়সে এসে তো পড়াশোনা নিরবচ্ছিন্ন সচল রাখবার জো নাই, একজন জর্মান নারী-অনুবাদক ইংরেজিতে এনেছেন চিঠিগুলো, স্বচ্ছ সুভাষ্য হয়েছে ইংরেজায়ন অন্তত আমার বিবেচনায়। রিল্কের মশহুর দশ চিঠির প্রাপক সেই তরুণ কবিকে অবশ্য জনৈক সম্বোধন করাটা অনুচিত হয়, কেননা সেই তরুণের পরিচয় আমরা জানি, যিনি সিদ্ধহস্ত যশস্বী কবি হইতে না-পারলেও ওইসময়টায় লিখতেন কবিতা আর সেসব প্রকাশিতও হয়েছে বেশ পত্রপত্রিকায় বলে জেনেছি বিভিন্নসৌত্রিক তথ্যপরিশিষ্টাংশে। একদম সম্প্রতি একটা বই পড়তেসিলাম তারাশঙ্করের, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠিপত্রের, পিউর চিঠিপত্র অবশ্য বলা যাবে না সেসব, পত্রিকার সম্পাদক অ্যাড্রেস করে লেখা, ছাপা হবার নিমিত্তে সেগুলি লিখিত, হপ্তার প্রতি শনিবার ইন্ডিয়ান বাংলা যুগান্তর  পত্রিকায় গ্রামের চিঠি  শিরোনামক কলামে লেখকের স্বনামে ছাপা হতো সবই নিয়মিত। বইটার অস্তিত্ব রয়েছে বলে খবরও জানতাম না, যা-হোক। কিন্তু বইটা ইন্ট্রেস্টিং। তা, এগুলোকে তো-আর ইন-দ্যাট-সেন্স চিঠি বলা যাবে না। আরও মনে পড়বে, শেষের বছরগুলোতে আব্দুল মান্নান সৈয়দ পত্রাঙ্গিকে প্রবন্ধ লিখতেন পত্রিকায়, সেগুলোও তো আর-যা-হোক পত্রাবলি নয়।

৩.
স্মরণ করা যাক যে, আমরা হামেশা বলে থাকি এমন একটা আপ্ত কথা, রিসিভার এন্ড ও ডোনার এন্ডের অন্তর্বর্তী সংযোগের প্রয়াসটুকুই হচ্ছে ল্যাঙ্গুয়েজ বা ভাষা। তা, সংযোগসেতু গড়ে উঠল কি উঠল না দ্যাট’স নট অ্যা বিগ ডিল, য়্যু নো, প্রচেষ্টাটুকুই পথ করে দেয় এগোনোর। এই মর্মে আস্থা রাখলে, যারা আস্থা রাখেন,— তাদের কাছে আরাধ্য একটা মাধ্যম চিঠি। আইডিয়াল দাতাপ্রান্ত ও গ্রহিতাপ্রান্ত অনেক নিবিড়ভাবে এইখানে ক্লোজ কানেক্টেড হবার মওকা পায়। এখন অন্যান্য যত প্রকাশপ্রকরণ রয়েছে, যেমন কবিতা বা নিবন্ধপ্রবন্ধ প্রভৃতি, সেসব ক্ষেত্রে এই দুই প্রান্ত অনেক শক্তিশালী ও সুস্থায়ীভাবে কাছাকাছি আসার সুযোগ পায় নিশ্চয়, কেবল সেই নিরালা-নিবিড় ভাবটা বজায় থাকে না সেখানে। সেহেতু পত্রকারবৃত্তি আমার নিকট অনেক উঁচু মর্তবার একটা জায়গা। আমার নিজের দরোয়াজা হয়তো অত বুলন্দ হবে না, আমার লক্ষ্যও ঠিক কোনো দরোজাতালাশি কিচ্ছুও নয়, আমার বোকামি ও ভুলত্রুটিগুলোতেও যেন টুটাফাটা আমিই উপস্থিত থাকি, এইটুকুই মুকতাসার কামনা এই নাদান গুনেগার বান্দার। তা, আমাকে ব্লেইম করা যাইতেই পারে ইগোসেন্ট্রিক বলে, ওয়েল দ্যেন, আমি সেইটা কমপ্লিমেন্ট রূপেই গছিয়া লইব। অ্যানিওয়ে। এক্কেরে খামাখা, অযথা, আননেসেসারি ইনিশিয়েটিভ নয় এই চিঠিগুলো, বরং আমার পরানভোমর যদি কোথাও খুঁজিতেই হয় তো এইসব চিঠিচাপাটিতেই, নিবন্ধনোটপাটগুলাতেই। দুনিয়ার যা-কিছু গণিত-বিজ্ঞান-চিত্রকলা-সাহিত্যশিল্প সবই তো মহাসময়ের দরিয়ায় একেকটা বোতলবারতা, তাই না? আই ডু বিলিভ সো। অতএব যারা আমার এইসব অবলা-অল্পবলা-ভুলভালওলা চিঠিগুলোর উদ্দিষ্ট প্রাপক, প্রত্যেকটা চিঠিই এবং এর ইচ-এন-এভরি হরফই তো আমার অটোবায়োগ্র্যাফির অংশ, প্রত্যেক প্রাপক তাদের নিজেদের অজান্তে আমাকে বেঁচে থাকতে কোঅপারেট করছেন। তাদেরে মর্যাদা দানে আমি ইহজগতে অপারগ, কেননা ইহকালে এই অবরুদ্ধ ভুবনে আমার উন্নতির কোনো দুরাশা আমি করি না, আয়ু আমার ফুরায়ে আসিছে এইটা নিয়া আমি আর কান্নাকাটিও করি না আজকাল। তো, সম্পূর্ণ নিজেরই স্বার্থসংশ্লিষ্ট এই ইনিশিয়েটিভ, অক্সিজেনসিলিন্ডার এগুলো আমার, অতি ব্যক্তিগত। মহাকাল নামক মড়ার-ওপর-খাঁড়ার-ঘা নিয়া ভাবি না আমি বিলকুল, ভাবলে এইসব চিঠি এক্কেরে খামাখা, অযথা, আননেসেসারি  বলে মনে হলেও হতে পারত। তবে এই নিগেটিভ কনোটেশন্যাল বিশেষণগুলা ভাবতেসিলাম সেইসব অনুবাদব্রতীদের ব্যাপারে, যারা বাজারে একটা পার্ফেক্ট অনুবাদ সুলভ সত্ত্বেও সেই অনুবাদ ওভারল্যুক করে, বেমালুম ইগ্নোর করে সেই অনুবাদের অস্তিত্ব, নিজের হাতে ফের একখান অনুবাদ ভড়াৎ করে নামাতে পেট বাগায়া বাজারে বসে পড়ে। জিব্রানের দ্য প্রোফেট, রিল্কের চিঠিপত্র বা মার্কেজের গল্প-উপন্যাস — এইসব ক্ষেত্রে ব্যাপারটা খেয়াল করেছি। কিন্তু একই বই আমি দ্বিতীয়বার দ্বিতীয় অনুবাদক হিশেবে যদি ফ্রন্টিয়ারে এনে দাঁড় করাই, তো প্রথম অনুবাদ অ্যাক্নোলেজ করেই তা করব, এবং দ্বিতীয় অনুবাদে কেন ব্রতী হলাম কোন খামতিটা নোটিস করে সে-সম্পর্কে আলবৎ বলেকয়েই। যাকগে, আজ্ঞে, সেসব দিকে আর না-গেনু। বড়দিনের সাক্রামেন্টব্রেড মুখে মিলায়া যাবার পরে পেয়ালা হাতে অ্যাওয়েইটিং ফর সাক্রামেন্টাল ওয়াইন। সবাইকে মেরি ক্রিসম্যাস, শুভ বড়দিন!

জাহেদ আহমদ (প্রণয়ন  বড়দিন ২০১৩ পরিমার্জন  বড়দিন ২০২৩)

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you