স্বরচিত কবিতা পাঠ || শক্তি চট্টোপাধ্যায়

স্বরচিত কবিতা পাঠ || শক্তি চট্টোপাধ্যায়

স্বরচিত কবিতা পাঠ খুব একটা দুরূহ ব্যাপার এ-রকম একটা ধারণা অনেকের আছে, কিন্তু এ কাজটা আমার মোটেই দুরূহ বলে মনে হয় না। বরং কবিতা পাঠকের এবং শ্রোতাদের মুখোমুখি হতে ভালোই লাগে। কেউ কেউ বলেন কবিতা পড়ার পর কবির সম্বন্ধে যে ইমেজ গড়ে ওঠে কবিকণ্ঠে আবৃত্তি শোনার পর সে-ইমেজে ফাটল ধরতে পারে; আমার কিন্তু এখনো তা মনে হয় না। কবিতা পড়ার পর কবি সম্বন্ধে যে ইমেজ সত্যিকারের সৎ পাঠকের মনে গড়ে ওঠে তা এত গভীরনিহিত যে কবিকণ্ঠে শোনার পর তা ভেঙে যেতে পারে না। কবিও তা জানেন, আর জানেন বলেই তাঁর প্রিয় পাঠকের সামনে নিঃসঙ্কোচে দাঁড়াতে পারেন। তবে এ-কথা তো সত্যি যে সব কবিই ভালো আবৃত্তিকার নন যেমন সকলেই নন ভালো কবি। যার ফলে সভাসমিতিতে খুব কম কবি ভালোভাবে কবিতা পাঠ করতে পারেন। কিন্তু নিজের লেখা কবিতা কোনো কবি যদি যথেষ্ট যত্ন নিয়ে পড়েন তবে সেই কবিতা শ্রোতার মনোযোগ কেড়ে নিতে সক্ষম হয়। যদিও পরে আবৃত্তি করতে হবে ভেবে কোনো কবি কবিতা লেখেন না কিন্তু তাঁর লেখা কবিতা যখন তাঁকে আবৃত্তি করতেই হয় তখন তাঁর স্বভাবই তাঁকে চালিত করে, আর কোনো প্রতিক্রিয়া নয়। আমাদের দেশে স্বরচিত কবিতা পাঠের বহুল প্রচার এখনও হয়নি, ফলে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তির রেকর্ডও খুব জনপ্রিয় হয়নি। কিন্তু এ-ধরনের রেকর্ড জনপ্রিয় হবার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে বলে আমার মনে হয়; তবে তার পিছনে সঠিক উদ্যোগ ও অধ্যবসায় অবশ্যই দরকার।

সংগ্রহসূত্র / শক্তি চট্টোপাধ্যায় গদ্যসংগ্রহ ৪, দে’জ ১৯৯৭, কলকাতা

… …

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you