হাসিনাপতন || আহমদ মিনহাজ

হাসিনাপতন || আহমদ মিনহাজ

 

দ্য নান ইজ কামিং
(হাসিনাপতনের পয়লা রাত)


অমানিশা চলছিল। চলমান ছিল পনেরো বছর। এখন কি তবে পূর্ণিমা? আকাশজুড়ে চান্নিপসর? মন তো দেখতে আকুল জোছনাধোয়া চরাচর। আকাশে তার আভাস নেই। ঘুটঘুটে মেঘথমথম আকাশ। আগস্টের আকাশ। কালোচাদরে ঢাকা। ভারী লাশের মতো নিকষ আঁধারঢাকা সে-আকাশ! মনে গুনগুন গানের কলি : ‘হইতাম যদি নিশার আকাশ / আষাঢ়িয়া কালো / মনে হয় বাসিতাম তোমায় / আরো বেশি ভালো।’ যতই গুনগুনাই, আগস্টরাতের নিকষ আকাশকে ভারী মনে হচ্ছে। মন চাইছে জোছনাপ্লাবিত চরাচর।

আকাশ থেকে মুখ ফিরিয়ে টিভিপর্দায় চোখ রাখা ছাড়া আপাতত মুক্তি নেই। চ্যানেল থেকে চ্যানেলে রিমোট ঘুরছে। চ্যানেলগুলোর কোণায় শোকজ্ঞাপক কালো স্টিকার উধাও! পনেরো বছরের অভ্যাস এক নিমেষে গায়েব! টিভিপর্দায় ঝুলে থাকা হে স্টিকার তুমি এখন কোথায়? চুলকানির মতো ছিলে এতদিন। তোমা বিনে অস্বস্তি হচ্ছে বেজায়। বাঞ্চোদ চ্যানেলওয়ালারা চুলকানির সুখ কেড়ে নিলো! তুমি কি ফিরবে না? বোকাবাক্সে দেখা দিবে না আরবার? অভাজনে দয়া করো। নতুন রূপে অন্য কারো বেশ ধরে ফেরত আসো পর্দায়। আগস্টের বদলি কোনো মাসে আসো তুমি। চুলকানির জ্বালা জুড়াতে চাতকপাখি তোমার অপেক্ষায়।

টিভিস্ক্রিনে যুবরাজের মুখ ভেসে উঠেছে। হায় ঈশ্বর, তাকে তো বেমালুম ভুলতে বসেছি! এতদিন গর্তে ছিলেন। হাসিনাপতনে আবার ফিরলেন! মহাবিশ্বে দেখছি হারায় না কিছু! চ্যানেলকর্তারা সেটি প্রমাণ করে ছেড়েছে। যুবরাজকে দেখছি। ফুটফুটে সুন্দর! তার সঙ্গে আরেকজনকে দেখাচ্ছে চ্যানেল। হাসিনাকালেও দেখেছি। বিগতপ্রাণ নাবিক। বয়সভারে চলতে নাচার। আগস্টরজনীতে নতুন রূপে দেখছি। চেনা-চেনা লাগে তবু অচেনা মনে হচ্ছে দেখে। ক্লান্তপ্রাণ নাবিক উঠে বসেছেন। টিভিপর্দা তড়িঘড়ি ধরেছে তাকে। তিনি কথা বলছেন। কণ্ঠে বরাভয়,—আমি ছিলাম, আমি আছি, আমি ফিরছি শিগগির।

টিভিচ্যানেলগুলোর কী হলো বুঝতে পারছি না! সেই তখন থেকে আধিভৌতিক চালাচ্ছে পরপর! টেরর মাত্র হেলিকপ্টারে পালিয়েছে। তার পালানোর খবর শুনে গর্ত থেকে বেরিয়ে এসেছে হরর। জেঁকে বসেছে টিভিচ্যানেল। মনে-মনে আওরাই : দ্য নান ইজ কামিং!
.
.
শোধ উধার : লে লাল্লু, কামাল দেখা
(হাসিনাপতনের পরের দিন)


তাণ্ডব শেষের থমথম শহরে অলিগলি ঘুরছি বোকচোদ। চৌহাট্টা ও শিবগঞ্জের মোড়ে হাসিনাসৈনিকের রমরমা ওষুধ বেচাকেনার দোকান দুখানা পুড়ে ছাই। কুমারপাড়ায় দরবেশ বাবার নামকরা পোশাক বিক্রির শোরুমটি লণ্ডভণ্ড। জেলরোডে শরিফ-শরিফার ঝাল মিটাতে আড়ংকে জখমি দেখছি বেশ। নয়াসড়কে আওয়ামীদোসর কারবারির দামি শাড়ি-গহনা আর প্রসাধনে বোঝাই তিনতলা শোরুম বেবাক চিচিংফাঁক। কিছু পড়ে নেই সেখানে। নেতা কি জানত এভাবে একদিন সব যাবে। সে কি গাইছে জেমসের গান : ‘এই চোখে তাকিও না / তুমি লুটপাট হয়ে যাবে / তুমি এই চোখে তাকিও না / চৌচির হয়ে যাবে’। জানত কি, তার তাকানোর বদলা নিতে তিনমহালা দোকানে হানা দিবে তারা, যাদেরকে পায়ের তলায় পিষে গড়ে উঠেছে তার এই তাজমহল। দামি কাপড়া, জেওর আর পারফিউমের বাহার! জানত কি, সেগুলো লুটের অপেক্ষায় হাভাতের মতো দিন গুনছে মানুষ নামের কিছু পঙ্গপাল। হাসিনার বানানো সাম্রাজ্যে তাদের একটাই পরিচয় ছিল,—তারা ভাড়াটে কামলা। দিনের-পর-দিন কিছু না পেতে-পেতে, তার দোসরদের হয়ে সভা ও মারপিটে ভাড়া খাটতে-খাটতে, হাসিনাবিরোধীর হাতে সমানতালে সভা আর মারপিটে কামলা দিতে-দিতে নিজেও জানে না কবে কখন মানুষ থেকে সাচমুচ জন্তুতে নেমে গেছে।

সমাজমাধ্যমে সক্রিয় হাসিনাবিরোধী অতিবাম অধ্যাপকরা দেখি খুশিতে আত্মহারা। এখন উনাদের দিন। তাই বোধহয় এমন বাকবাকুম পায়রা হয়েছেন। আদর করে জন্তুকে সবহারা  ডাকছেন। তারা নাকি প্রতিবিপ্লবের স্মারক। লুটপাট কাজেই পরম বৈধ। ভাংচুর চরম স্বাভাবিক। হতে পারে। সবহারা অথবা সর্বহারা অথবা হাভাতে, যে-নামে ডাক পাড়ি-না-কেন, যাকে ডাকা হচ্ছে সে এসবের অতশত বোঝে না। হাসিনাদোসর তাকে ভাড়া খাটিয়েছে। হাসিনাবিরোধীও সমান। সমাজমাধ্যমে পড়ে থাকা সুখী অধ্যাপক, ওজনভারী তাত্ত্বিক, চোয়ালভারী দাঁতাল কবি…সব্বাই নিজমাপে ভাড়া খাটাচ্ছে তাকে। সে হলো রাগি নেড়িকুকুর। উচ্ছিষ্ট পেলে চেটেপুটে খায়। সব্বাই যে যার মতলবে তাকে খাওয়ায়-পরায়। মাথায় হাত বুলিয়ে তোয়াজে রাখে। দরকার পড়লে, যা লাল্লু, তোর কামাল দেখা  বলে হুকুম ঝাড়ে। লাল্লু তখন ছোটে। হামলে পড়ে। দাঁত বসায়। আহত ও নিহত করে ফেরত আসে আপন ডেরায়। উচ্ছিষ্টের ভাগাড়ে মুখ রেখে খুঁজে মণিমাণিক্য।

তেতলা মহল লুটপাটে শরিক এক লাল্লুর কথা জেনেছি পরে। একুনে তিনবার হানা দিয়েছিল সেখানে। হাতের পোটলা দামি শাড়ি আর প্রসাধনে বোঝাই ছিল প্রতিবার। পরিচিত জনৈক তাকে জিগ্যেস করে, ‘কী করবি এগুলা দিয়ে? লাল্লুর মুখে বিশ্বজয়ের হাসি। চোখে ঝিকিমিকি দ্যুতি। দাঁত বের করে উত্তর দিয়েছে ‘দাও মারিলাইছি। ঢাকাত হগ্গলতা বেচি দিমু।’
.
.
রাতি না পোহাইতে
(হাসিনাপতনের একদিন পর)


হেলমেট লীগের অত্যাচার শেষ না হইতে নতুন উপদ্রব! অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো গঠন হয় নাই। যুবরাজের দলবল মাঠে নেমে পড়েছেন। ঘরে-অফিসে তালিকা ধরে পুছতাছ চলতেসে, আপনি কোন দল করেন? মোকাম কোনখানে জিম্মা রাখছিলেন এতদিন? যুবরাজের সাগরেদরা মাত্র অফিস ভিজিট করে গেলেন। চায়ের কাপে মৌজ করে চুমুক দিতে-দিতে ঘুরলেন অফিস চত্বর। হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুর অবশেষ ইতিউতি যাচাই করলেন বেশ!

বদ কপাল! বঙ্গবন্ধুকে নিয়া কে একখানা বহি লিখেছিল। বসের চেম্বারে সাজানো বুককেসে ধূলিমলিন কিতাব হেলায় পড়ে থেকেছে এতদিন। বস উল্টে দেখেছেন বলে মনে হয়নি। আমারও চোখে পড়েনি এতদিন। উনারা সেটি বের করলেন। আমি ভাবলাম, এই রে, কিতাবখানায় আগুন দিবেন বোধহয়! কী ভেবে ঠাণ্ডা গলায় হুকুম ঝাড়লেন : এইসব উল্টায়া রাখেন। চ্যাপ্টার ক্লোজ।  বস কোনো এককালে যুবরাজের দল করতেন। ঘটনা বিবেচনায় নিয়া বোধহয় ক্ষেমা দিলেন। বিদায় নিলেন সদলবল।

গতকাল আম্লিগের সঙ্গে কানেকশন থাকার সন্দেহে দুই হিন্দু সহকর্মীর বাড়িতে হামলা করেছেন কে বা কাহারা! কলিগ দুজন বিপন্ন। রক্ষার কেউ নাই। এখন অপেক্ষায় আছি, পরে কে আসবেন। কার হানা দেওয়ার সম্ভাবনা জোরালো।
.
.
অটোসেন্সরড নাকি পাল্টিবাজি
(হাসিনাপতনের দুসরা ও তিসরা রজনি)


দুদিন ধরে শহরজুড়ে তাণ্ডব দেখছি। ইথারে ইতিউতি ভেসে আসছে খবর। হাসিনাগং জানমান বাঁচাতে গা ঢাকা দিয়েছে। তাদের পালানো আর গ্রেপ্তারের খবর আনছে হাওয়াকল। কারা জানি তালিকা ধরে-ধরে দোসরদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে। হরিলুটের খবরে কান পাতা দায়। কানে আসছে লাশ ফেলে দেওয়ার খবর। থানায় আগুন আর ঘরবাড়ি পোড়ানোর বারতা। জেলবন্দি কয়েদিগো পোয়াবারো। মওকা বুঝে পালাচ্ছে দলবল। হাওয়াকলে ডাকাত পড়ার খবর পাচ্ছি দিনমান। নির্ঘুম পাহারায় তটস্থ পাড়া-মহল্লা।

তার মাঝে আয়নাঘর থেকে কারা জানি বেরিয়ে আসছে পিলপিল। গুম করেছিল হাসিনা। শোধ তুলতে টর্চার সেলে কয়েদ রেখেছিল। সবটাই আসছে হাওয়ায়। গুজব না সাচ্ বোঝা দায়। টিভিচ্যানেল অটোসেন্সরড। খবর প্রচার থেকে স্বেচ্ছায় বিরত। স্ক্রলে স্রোতের মতো নামের আসা-যাওয়া। যারা জেলবন্দি তারা ছাড়া পাচ্ছে। ম্যাজিক লণ্ঠন হাতে বেরিয়ে আসছে কয়েদখানার শিকলি ছেড়ে। অনেকানেক নামের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন আল মামুন নামটি স্ক্রলে ভেসে উঠল। তাৎক্ষণিক মনে পড়ে না কে সে! বিদ্যুৎচমকের মতো সহসা মগজের কোষে আলো খেলে যায়। ঘুমন্ত স্মৃতি জেগে উঠেছে। মেমোরি ইজ ইমমোর্টাল। ইনি তিনি হন বটে! খাম্বা মামুন নামে পুকারতেন সব্বাই। ইনার খাদ্যরুচি বড়ো বিচিত্র ছিল। মাছগোস্ত খাইতেন না বিশেষ। আস্ত বিদ্যুতের খাম্বা উদরে চালান করতেন অবলীলায়! হাওয়াভবনে ছিলেন যুবরাজের বিশ্বস্ত সাঙাত! মন্ত্রদাতা উজির। এনার সঙ্গে আরেকজনের নাম মনে পড়তেসে। দৌড় সালাউদ্দিন। পাবলিকের দৌড়ানি খাওয়ার দিন হইতে এই নামকরণ। ভালো কথা, উনি কি বেঁচে, নাকি ভবলীলা সাঙ্গ করে পাড়ি দিয়েছেন পরপার?

খুব ভালো! কয়েদখানা বড়ো খতরনাক। শত্রুও যেন কয়েদ না হয় সেখানে। সে নয় বোঝা গেল। টিভিচ্যানেলের হলোটা কি? স্বাধীন দেশে তারা কেন এতটা হিসাবী? খবর দিচ্ছে মেপে-মেপে, ভাওবাতাস বুঝে! হাসিনার প্রেতাত্মা কি জিন্দা চ্যানেলওয়ালার ঘাড়ে? নাকি তারা বুঝতে নাচার কোনটা দিলে কী জুটবে কপালে? চ্যানেলগুলো মরভূমি। পরিচিত সংবাদ পাঠক-পাঠিকার অনেকে উধাও। টকশো গরমকরা সঞ্চালকরা লাপাত্তা। টকিংবার্ডগুলা নেই ত্রিসীমানায়। হাসিনাদোসর হওয়ার দায় কাঁধে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বাকিরা তাহলে কোথা হারাল? টিভিপর্দায় নতুন মুখের মিছিল। একজনকেও চিনি না সাচমুচ। খোদার কসম জান, এনাদের ইহজীবনে দেখি নাই টিভিপর্দায়। ভালোবাসার মওকা জোটেনি কভু। কোথা ছিলেন এতদিন হে নবীন! হে আমার নিউ নিউ সুইটি সুইটি টকিংবার্ড!

মাথায় কিছু ঢুকছে না। চেনামুখ দেখার অভ্যাসে ছন্দপতন সইছে না ভাই। মেনে নিতে পারছি না বিলকুল। হাসিনা পালিয়ে সব গড়বড় করে দিয়েছে। নতুন টকিংবার্ডগুলা আকাম্মা। মুখস্থ বুলি জপ করাতে এখনো নবিশ। যুতমতো বুলি জপতে শিখেনি। আরো ট্রেনিং লাগবে শিখতে। আপাতত সঙ লাগছে দেখে। টিভিচ্যানেলের রাতের আসরে বারোটা বাজতে মনে হচ্ছে দেরি নেই।
.
.
বিপ্লব ও স্বাধীনতা সমাচার : অথঃ ফরহাদ মজহার
(সরকারপ্রধানের শপথানুষ্ঠানের প্রাক থেকে অদ্যাবধি)


গম্ভীর আলাপ-১ : সম্মোহন
নেটে ঘুরান দিতে বসে ফরহাদ মজহারের লেখায় চোখ আটকে গেল। সম্ভবত ফেসবুক পোস্ট। কেউ কপি করে ব্লগে দিয়েছেন। মজহারের চিন্তনপদ্ধতির সঙ্গে মতবিরোধ ছিল, মতবিরোধ আছে, আদিঅস্তক থাকবে। উনার অ্যাক্টিভিজমের সঙ্গে একমত হওয়া মনে হচ্ছে না সংগত ঠেকবে ইহজীবন। তথাপি, তিনি একমাত্র চিন্তানবাব বাংলায়। ফ্রেমের বাইরে বসে রাষ্ট্রসংস্কারের দর্শন বোঝাতে খাটেন। সাম্প্রতিক দুর্যোগ নিয়ে তাঁর কথাবার্তায় আভাসটি পেলাম ফের।

আটাত্তরেও দিব্যি সবাক ফরহাদ মজহারের বক্তব্য প্রথমশ্রবণে বায়বীয় মনে হলো। বায়বীয় তবে অবান্তর নয়, বরং খানিক সম্মোহক। শুনতে বেশ। মগজকোষে কেমন জানি ঝিম ধরে। শুনতে-শুনতে ঘোর লাগে কানে। অসুবিধা নেই কোনো। ভাবুক তো এভাবেই ভাববেন। বিফল জেনেও ভাবনা সামনে আনবেন সবিরাম। আন্দোলন, অভ্যুত্থান যাই বলি, তার লক্ষ্য যদি সঠিকপথে যাওয়ার আগে ছিনতাই হয়ে যায় তবে বিপ্লব থেকে প্রতিবিপ্লব থেকে আরো কত কী…এসব উনি বোঝাবেন কাকে? ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে নামিয়ে অন্য ফ্যাসিস্টকে স্বাগত জানানোর পাঁয়তারা নিয়ে তাঁর মতো কাউকে বলতে দেখি নাই। মজহার বলছেন, মোরা শুনছি। মজহার ফতোয়া রাখছেন, মোরা ঢপ করে ভক্তি দিচ্ছি পায়ে। জাতির এই দুঃসহ ক্রান্তিলগ্নে মজহারকে রুখে সাধ্য কার!
.
গম্ভীর আলাপ-২ : মোহচ্যুতি
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এখন থেকে নজরদারিতে বন্দি রাখা উচিত। সন্দেহের চোখে উনাদের প্রতিটি মুভ আমলে নেওয়া প্রয়োজন। সত্যমিথ্যা নিশ্চিত নই, হাওয়ায় কথাটি ভাসছে, ফরহাদ মজহার এই আন্দোলনের নেপথ্য কুশীলব। আন্দোলনকে নতুন করে দেশ স্বাধীন ও বিপ্লব নামে চিহ্নিত করার পেছনে উনার বয়ানকে অবশ্য মতলবি মনে হচ্ছে। যে-কোনো গণজাগরণ থেকে পয়দা বিদ্রোহ, অভ্যুত্থান কিংবা তার জের ধরে স্বৈরাচারী শাসকের পতনকে সচরাচর বিপ্লব নামে ডাকেন সবাই। অধমের ক্ষুদ্র বিচারে সেটি কথার কথা। সাহিত্যিক অলঙ্কার। আপনার হয়তো মনে পড়বে ওসমান সমাচার নামে ঢাউস আখ্যান লিখেছিলাম দশক আগে। আখ্যানের পটপ্রবাহের কিছু জায়গায় বিপ্লবের প্রসঙ্গ না টেনে উপায় ছিল না। বিপ্লবের ফ্রেমে পড়ছে না জেনেই টেনেছিলাম। সাহিত্যিক অলঙ্কার হিসেবে তাতে দোষ ধরার কারণ ছিল বলে মনে হয়নি।

ফরহাদ মজহার (ও অন্যরা) যদি ওই জায়গা থেকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা ও বিপ্লব নামে মহিমা দিতেন তাতে অস্বস্তি-আপত্তির কারণ থাকত না। বাস্তবতা সেরকম নয়। অস্বস্তির কাঁটা গলায় তাই খঁচ করে বিঁধছে। এবাদতনামার কবির আলাপগুলা মূল্যবান কিন্তু আন্দোলনের রাজনৈতিক ফলাফলকে যে-জায়গা থেকে বুঝে নিতে সকলকে তাতিয়ে তুলছেন সেটি মতলবি। কারণগুলো নিচে তুলে ধরি এইবেলা :

ক. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্র-সংস্কারে কাজ করবেন;—আন্দোলনের যারা মুখপত্র উনারা সেটি জাতিকে বারবার শুনিয়েছেন। ভালো কথা। সংস্কার সকলে চাইছেন। সমস্যা হলো, সংসদ তো উনারা ভেঙে দিলেন। না দিয়ে উপায় ছিল না। আবু সাঈদের মর্মান্তিক বলিদান আর আন্দোলনের স্পিরিট বিবেচনায় নিলে সংসদ ভাঙার বিকল্প নেই। প্রশ্ন হলো, সংস্কার শেষে এগুলোর আইনি বৈধতা কীভাবে সম্পন্ন হবে? আইনের বিশেষ ধারা ব্যবহার করে কাজটি সারবেন উনারা? স্বৈরাচারী শাসকের প্রতিনিধি হিসেবে দিব্যি বহাল রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে মামলা খতম করবেন? নাকি অন্য কোনো ফোকর গলে কাজটি সমাধা হবে? বিষয়টি পরিষ্কার নয়।

মজহার সমস্যাটি বোঝেন। কাজেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে বিপ্লব নামে দেগে দিয়ে কাজ হাসিল করতে চাইছেন। হাসিনাপতনকে বিপ্লব বলে প্রতিষ্ঠা করা গেলে আইনি মারপ্যাঁচের তোয়াক্কা করা লাগবে না। কথা সত্য, রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে বিপ্লব ব্লাসফেমির পর্যায়ে পড়ে। এখন সেটি সফল হওয়ার কারণে রাষ্ট্র স্বয়ং বিপ্লবের অধীন হতে বাধ্য। তার খোলনলচের সবটা স্থগিত করে গঠিত হবে নয়া সরকার। রচিত হবে সংবিধান। তাকে বৈধতা দানে তৈরি থাকবে স্বাধীন আইনিকাঠামো। কাজগুলো শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রচলিত আইনি বিধান অনুসারে প্রশাসন সহ বাকি কাজকাম চালাবে সরকার। সেখানে কোনো ধারা সাংঘর্ষিক মনে হলে আন্তর্জাতিক মহলে স্বীকৃত সনদ ব্যবহার করা যাবে। মজহার যারপরনাই রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে মানা করেছিলেন, যদিও (তাঁর ভাষায় কিছু লোকের নির্বুদ্ধিতায়) সেটি কার্যকর করা যায়নি।

খ. মজহারের সদ্য আপলোড একখানা বাতচিত থেকে বোঝা গেল উনি (যদি ভুল না করি) নতুন সংবিধান রচনায় অচিরে হাত দিতে যাচ্ছেন। ইনটেরিম সরকার কর্তৃক আইনি সংস্কার সহ উক্ত কার্য সম্পাদনে সময় লাগবে। সুতরাং এখনি নির্বাচন দিয়ে মসনদে বসতে মরিয়া বিএনপিকে ‘কাজ করতে দিন, ডিস্টার্ব করবেন না’ বলে ধামকি দিতে দেখছি তাঁকে। বোঝা গেল উনাদের মনে অন্য প্লান রয়েছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের দ্বারা নির্বাচিত ও সে-কারণে বৈধ ভাবতে আমলোগকে প্রভাবিত করছেন মজহার। ছাত্র-জনতার আন্দোলন বা গণঅভ্যূত্থানের প্রতি পূর্ণ সম্মান ও সহমত রেখে বলতে হয়, এর অন্তর্নিহিত স্পিরিট কোনোভাবেই বিপ্লব ও দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হওয়ার সঙ্গে খাপ খায় না। স্বাধীন আমরা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একাত্তরে হয়েছি। তার বৈধতায় মজহারের আপত্তি থাকতে পারে, আমাদের নেই। এখন স্বাধীনতার নেপথ্যে যে প্রেরণা ছিল, যে-চেতনা এটি তৈরি করেছিল তখন, তার আলোকে দেশটাকে গড়া সম্ভব হয়নি। গড়তে না পারার দোষে বারবার রেজিম চেঞ্জ-এর আন্দোলনে নামতে হয়েছে। এরশাদ, খালেদা, হাসিনা স্বাধীনতার মূল প্রেরণাশক্তির বিপক্ষে ক্ষমতাচর্চা করেছেন। তারা সকলেই স্বৈরাচারী। তাদের পতন ঘটাতে কাজেই ছাত্রআন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের প্রয়োজন পড়েছে। স্বৈরাচারপতনকে কী কারণে স্বাধীন হয়েছি বলে দাগাতে হবে সেটি মাথায় ঢুকছে না।

এর মাধ্যমে কি তাহলে একাত্তরে সরাসরি স্বাধীতাবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত শক্তিকে বাংলার মাটিতে বৈধতা দানের মতলব আঁটছেন মজহার? দ্বিতীয় স্বাধীনতার কথাটথা বলে ইতিহাস থেকে একাত্তরকে মুছে দিতে চাইছেন? এমন এক ইতিহাস সামনে আনতে চাইছেন যেখানে একাত্তরকে ক্রমশ ঝাপসা করে চব্বিশ হয়ে উঠবে স্বাধীনতার প্রকৃত ক্ষণ? আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুসহ যা-কিছু একাত্তরের মূল নিয়ামক ছিল সেগুলোকে চিরতরে বাতিল করতেই বিপ্লব, প্রতিবিপ্লব মানে আওরাচ্ছেন? তাই তো মনে হচ্ছে এখন! যে-পটভূমিকায় দাঁড়িয়ে একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রাম ন্যায্যতা পেয়েছিল তাকে তো বটেই, সেইসঙ্গে আওয়ামী ঘরানার রাজনীতিকে গোর দেওয়ার মতলবে মনে হচ্ছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনক ব্যবহার করছেন মজহার।

গ. অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকার, বোঝাই যাচ্ছে, ছাত্রশক্তির গণদাবি বাস্তবায়নে কাজ করবে না। ছাত্রদের দিয়ে একটি রাজনৈতিক দল গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে গতকাল রাতে যে-আলাপ আমরা করেছি, তাকে বাস্তবসম্মত ঠেকছে না ভাই। উনারা সেটি হতে দিবে না। যদি হয় তাহলে ভালো, কিন্তু মজহারদের পরিকল্পনায় তার কোনো নিশানা এখনাবধি নজরে পড়েনি। যদি তাই হতো তাহলে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিপ্লবের বীজ থাকলেও কেন সেটি বিপ্লব নয়, এবং একে বিপ্লবে পূর্ণতা দিতে কী করতে হবে ইত্যাদি আলাপ উনি শুরু থেকে তুলতেন। মতলব অন্যখানে গচ্ছিত রেখেছেন মজহার।

বিএনপির জন্য তাহলে কী থাকছে? এনজিওর লোকজনে ঠাসা ইনটেরিম সরকার তার জন্য কতটা বেনিফিট বয়ে আনবে সেটি সময় বলে দিবে। সরকারে বিএনপিপসন্দ কাউকে দেখছি না। হেফাজতি আছেন বিলক্ষণ। দেখেশুনে মনে হচ্ছে দেশে ইসলামি শাসন কায়েমের ভিত্তি তৈয়ার করা এই বিপ্লবের লক্ষ্য। আরব বসন্তের আদলে আরেকখানা কালার রেভুলেশন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে পেরেশান ছাত্ররা এই প্লটিংয়ের করুণ শিকার। ভুল ও মতলবি ইতিহাসে ব্রেন ওয়াশড মাসুম ছেলেমেয়েগুলো বুঝতেও পারছে না, তারা আবার প্রতারিত হচ্ছে মতলবি ভাঁড়গুলোর হাতে।

.
গম্ভীর আলাপ-৩ : মতলব ও তার আশু পরিণাম
ফরহাদ মজহার দূরদর্শী, এইটা মানতে হবে। কেন বিপ্লবকে সামনে আনতেছিলেন সেইটা উনার হাসিনাপুত্র জয়ের বক্তব্য ও তার প্রতিক্রিয়ায় ঠার করা গেল। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ বিষয়ে জয় যে-ইস্যু সামনে এনেছেন সেটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের কাণ্ডারিগণ বোঝেন না এমন নয়। উচ্চ আদালতের সকল কার্যক্রম (কার বিধানে জানি না) এজন্য স্থগিত করা হয়। আওয়ামী লীগ মনে হচ্ছে ওইটা ধরে ফাইট দিতে চেষ্টা করবে। আখেরে যেটি কাজে আসবে না। আইনের একশো ফোকর গলে উপায় ঠিক বের করবেন বর্তমান সরকার কিংবা তার নেপথ্যে সক্রিয় ঘাঘু তাত্ত্বিক ফরহাদ মজহার। বাংলাদেশে দল হিসেব টিকে থাকতে হলে হাসিনাপুত্রের অবশ্য পিছু হটার পথ নাই। সম্ভাব্য সকল পথে তাকে ফাইট দিতে হবে।

ভূরাজনৈতিক কৌশলের জায়গা থেকে ভারতকে চাপে রাখতে হলে বাংলাদেশে মৌলবাদী অস্থিরতা তৈরি আপাতত মোক্ষম দাওয়াই। মজহারগং সে-চেষ্টায় আছেন বোঝা যায়। আখেরে এটি ব্যাকফায়ার করবে। তথাপি ভূরাজনীতি বিশেষজ্ঞ রবার্ট ডি কাপলান তাঁর Monsoon: The Indian Ocean and the future of American Power-এ যেসব কথা বলার চেষ্টা করেছেন সেগুলো বিবেচনায় নিলে বেশ বোঝা যায়, আমেরিকা সম্ভাব্য কী-কী কারণে একদিকে এনজিও আর অন্যদিকে ইসলামি উগ্রবাদী শক্তিকে পরস্পরের সম্মুখীন করে সরকার সাজানোয় আগ্রহী। বেশ আগে লেখা হলেও বইয়ের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারে দেশটি ঘুরে দেখার সুখপাঠ্য বিবরণের এক জায়গায় কাপলান যে কথাগুলো বলেছেন সেগুলো আজকের কনটেক্সকে মূল্য রাখে। তিনি লিখেছেন :

But this mild version of Islam is now giving way to a starker and more assertive Wahabist strain. A poor country that can’t say no to money, with an unregulated, shattered coast of islands and inlets, Bangladesh has become a perfect place for al-Qaeda affiliates, which, like westernized NGOs, are another sub-state phenomenon filling the vacuum created by weak central government.

অর্থাৎ, খালেদা ও হাসিনা রেজিমের মধ্যে পাওয়ার শিফটকে মার্কিন প্রশাসন গোড়া থেকে নাজুক হিসেবে চিহ্নিত করছে। দ্বিতীয়ত, এর পেছনে দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার অনুপাতে গণতান্ত্রিক কাঠামোর অপ্রতুলতা ও সীমাবদ্ধতাকে সে আমলে নিতে আগ্রহী। তৃতীয়ত, এর ফোকর দিয়ে মধ্যপন্থী উদার ইসলামকে পরাস্ত করে উগ্র ইসলামি শক্তির উত্থান তার নজরে রয়েছে। চতুর্থত, উক্ত শক্তিকে প্রতিরোধ করতে সরকার নয় বরং এনজিওকে কার্যকর ভাবছে সে।

মানে দাঁড়াল, একটি এনজিও ভিত্তিক সুশীল সমাজকে যদি পেট্রোনাইজ করা যায় তাহলে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাবে। একদিকে ইসলামি উগ্রবাদী শক্তিকে যদি ক্ষমতায় বসাতে হয়, ঘটনায় ঝুঁকি থাকলেও আখেরে সমস্যা হবে না। ভারতকে এটি তার নিজস্ব নিরাপত্তার প্রশ্নে চাপে রাখবে। অন্যদিকে সময় হলে এই উগ্রতা প্রশমনে এনজিও থেকে বেছে নেওয়া শক্তিকে মার্কিন প্রশাসন ব্যবহার করতে পারবে। যে-পুতুল সরকারকে বসানো হবে তার প্রভাবকের জায়গায় এনজিও সার্ভিস দিতে থাকবে। মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি তো আর রিজিড নয়। সময়ে এটি পরিস্থিতি বুঝে নতুন মোড় নিচ্ছে, সামনেও নেবে। মোটা দাগে গণতন্ত্র কায়েমে তার যে-মডেল সেখানে এনজিও টাইপের শক্তি হচ্ছে মোক্ষম হাতিয়ার। ধারণা ভুল হতে পারে, তবে ফরহাদ মজহারসহ বাকিদের অনেকে বোধ করি মার্কিন এজেন্ডা হাসিল করবেন আখেরে, যেখানে ভারতনিষ্ঠ আওয়ামী লীগ তাদের জন্য বড়ো সমস্যা।

দেশ সুষ্ঠভাবে পরিচালনা আর একটি দলকে ঠাণ্ডা মাথায় নিশ্চিহ্নের চেষ্টা এক বিষয় নয়। ফরহাদ মজহারের ক্ষুরে মাথা কামানো মানস চৌধুরী বা সেলিম রেজা নিউটনের মতো ইসলামপন্থী বামঘরানার কবি-লেখক-একাডেমিশিয়ান সেটি বোঝেন বলে মনে হয়নি। হাসিনা ও তার ফাউল কিছু নেতাদের কুশাসনের দায়ে গোটা দলকে মুছে দেওয়া কতখানি যৌক্তিক? কতটা গণতান্ত্রিক? হাসিনার হাবিয়া দোজখসম দুঃশাসনের পরেও জামায়াত আর আওয়ামী লীগ এক জিনিস নয়, সরলাঙ্কটি বিপ্লববেহুঁশ এই লোকগুলোর কানে কে পৌঁছাবে? এসব নিয়ে উনাদের মনে কোনো প্রশ্ন নেই! নিজেরা তো আখেরে কোনোকিছুর ভাগ পান না, আবার নিজেরা যে গবেট সেটি বোঝেন কিনা কে জানে!

আফসোস, আওয়ামী লীগে কোনো রিফর্মিস্ট বেঁচে নেই। জয় দেশে আসার ইশারা দিয়েছেন। তার পক্ষে আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করা কঠিন। দলকে পুনর্গঠন, জনবান্ধব এজেন্ডা নিয়ে মানুষের সামনে হাজির হওয়া দূরের ঘটনা। আপাতত অস্তিত্বরক্ষার লড়াইয়ে তিনি ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে বিশ্বাস হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ পুরোপুরি দূষিত দলে পরিণত হয়েছে। এর খোলনলচে পালটানোর জন্য যেসব মানুষ ও উপকরণ থাকা দরকার তার কিছু আর বেঁচে নেই। জয় যদি দেশে আসেন, তাঁকে নেপথ্যে হাসিনা গাইড করবে, যার মধ্যে দম্ভ ও প্রতিহিংসা ছাড়া আত্মসমালোচনার ছিটেফোঁটা কারো চোখে পড়েনি আজোবধি। দলটিকে পরিবারতন্ত্রের হাত থেকে কে বাঁচাবে?

এমতাবস্থায় ফরহাদ মজহারের জন্য মাঠ ফাঁকা। বিএনপি গাধা প্রকৃতির দল। হালুয়ারুটির কারবারি। স্বভাবে আওয়ামী লীগের নকলি। তার পক্ষে মজহারকে সামলানো কঠিন হবে। আওয়ামী লীগ যদি ইনটেরিম সরকারের মেয়াদ কাজে লাগিয়ে নিজেকে গোছাতে পারে, সঙ্গী বামদের নিয়ে মাঠে নামতে পারে, সেক্ষেত্রে মজহার হয়তো খানিক চাপে থাকবেন, এবং তা-সত্ত্বেও হয়তো এই প্রথম উনার নিজস্ব ঢংয়ে বিপ্লব সম্পাদনে কামিল হলে হতবাক হবো না।

হাসিনা সব ধ্বংস করে দিয়েছে। গতকাল দলের লোকজন সভাটভা করেছে দেশের নানা স্থানে, সেখানে পালটানোর আভাস চোখে পড়েনি। পালটানোর জন্য সময়টি যদিও অনুকূল নয়। আগে তো জানে বাঁচবে, তারপর রিফর্মড হওয়ার কথা ভাবা যাবে। যাই হোক, পরিস্থিতি সামনে জটিল হতে চলেছে। দেশ না একটি গৃহযুদ্ধের দিকে যায় সেটি ভেবে উদ্বিগ্ন হতে হচ্ছে।


জুলাই জেনোসাইড : গানপার সংকলন
লাল, চিরকাল ১ ও ২
আহমদ মিনহাজ রচনারাশি

Support us with a click. Your click helps our cause. Thank you!

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you