লাল, চিরকাল

লাল, চিরকাল

 

ব্ল্যাক, ডার্ক, নো লাইট
লেট আস ক্যারি আওয়ার ফাইট
নাথিং টু বি কানেক্টেড উইথ, নো-ওয়ান উইথ ফোর্সাইট …

নাউ ইট ইজ ব্ল্যাক, ডার্ক, পাওয়ারকাট নাইট

ডু নট রিট্রিট ও’ মাই সান্স অ্যান্ড ডটার্স
ও’ ল্যভিং ল্যুজার্স

ও’ মাই ফিউচার মাই পাস্ট মাই প্রেজেন্ট লেট’স্ ফাইট!

.
.
*
বেশিকিসু করব না আর
দুইদিনের সংসার
অত করাকরি দিয়া বালের দুইপয়সা ফায়দা নাই

নিশ্চিন্তি নিশ্চেষ্টভাবেই ঝিমাই

কিন্তু সুদিনের ফিরে আসায় দিরং যদি হয়
জানি না আর কয়দিন পারব টেনে যেতে এই নৃশংস সময়।

.
.
*
অবিশ্বাস্য!

শুধু আমি নই, দিগন্তেরও ঠোঁটে খেলে যায় হাস্য
তপ্ত তন্দুরচুলার গরম উধাও হয়া যায়
একটানা আঠাইশ মিনিট বৃষ্টির আকস্মিকতায়

হার্মাদের শাসনসঙ্গী সিটি কর্পোরেশন করে চলে
বেয়াড়া স্ট্র্যাটেজিক ছলেবলে

কেবলই বিল্ডিং বানাবার আসুরিক উন্নয়নদাস্য।

.
.
*
বসে আছি টিগার্ডেনে
নিয়ম মেনে
একটা সারগাম সাধতেসে দিগন্ত

নতুন কেনা বাঁশিতে

এইবারও ঘরবাড়িতে
বেজায় ধাড়ি ইন্দুরের উৎপাত
যখনতখন তেলাপোকা সারারাত
আরও আছে চিকা
ছারপোকা, কাঠপিপীলিকা

হাসিনা গভমেন্টের অশ্লীল অমার্জনীয় ধোঁকার পর ধোঁকা

আমি টিলার ছড়ায় বসে বসে নিভে-যাওয়া বিড়ি টানি
দিন খাই দিন আনি

দিগন্ত চৌরাসিয়ার মতো
অনুধ্যানস্থ
মন-কেমন-করা আড়বাঁশি নিরাধারা বাজায়

কার্ফিয়্যুকর্তা হাসিনার হেলমেটবাহিনী দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনি কিলিঙতাণ্ডব চালায়।

.
.
*
ধোঁয়ায় মিলায়া যাবার আগে
একটাকিসু তো নজর করা লাগে
একটা দাঁড়াদিশা
আমাদেরে লাগে ঠিক করা

তারপরও যদি কিনারায়
বা মাঝদরিয়ায়
ডুবে যায় ভরা

আফসোস নাই
মিলায়া যাবার আগে একটা রাস্তার নিশানা হাতড়াই।

.
.
*
বেহায়া যখন ঘুমায়
সে কী আমার মতো — মুখ হা করা অবস্থায়?

এতগুলা ছাত্র মরে গেল, মরে যায়
আরও কত, মরণাপন্ন প্রায়
কাতারে কাতার
শুমার করিয়া দ্যাখো কয়েক হাজার
তবুও ক্ষমতাপালঙ্কে কেউ মশারি গুটায়

সায়াহ্নের আজান কেমন বিদায়বিষণ্ণ শোনায়

বেহায়ারা আমারই মতো প্রসন্ন জুম্মার সন্ধ্যায়
পানসুপারি চিবাইতে চিবাইতে চ্যানেল উল্টায়।

.
.
*
এ-পর্যন্তই
ছিল গতকাল

আমি তো গণক নই
দ্বিসহস্রচব্বিশে এই নৃশংস প্রশাসনিক স্বৈরতন্ত্রের সময়
মিনিটে কয়টা লাশ পড়ে, সেকেন্ডে কয়
আদৌ বলতে পারব না
আর এই বিষয়ে বেকার আলোচনা
আবশ্যিকভাবেই রিজেক্ট করি বিকজ আমরা হাসিনার কোলাবোরেটর
সঙ্ঘবদ্ধ চৌর্যবৃত্তির ষোলো বছরের ষণ্ডারাজ্যেশ্বর

আমাদের বায়োলোজিক্যাল পরিচয় আমরা আপাদমস্তকলিঙ্গ বলদের পাল।

.
.
*
কী হলো হঠাৎ হাসিনার
দুরারোগ্য কোনো মনোবিকার
অথবা খানাখাদ্য হজমজনিত গণ্ডগোল কোনো?

শোনো,
কুড়ি বছরের কাছিমেরও অমন হয়

তিনশ বছর বাঁচবে কাছিম, খুব বেশি তো নয়!

.
.
*
সিগ্রেট ক্রমশ দুর্মূল্য

অবশ্য কোন পণ্য দুর্মূল্য নয় বলো?
দুইহাজারচব্বিশে দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের তুল্য
গোল্ড ডায়মন্ডও নয়

ক্যাল্কুলেইট করে নিও যদি সম্ভব হয়।

.
.
*
শেষের পৃষ্ঠায় এসেই বিপত্তি
বৃষ্টির ব্যারিকেডে
আলিবাহার মসজিদ মার্কেটে
একটানা টাপুরটুপুর টিনের আওয়াজে নেশালু নৈশ নক্টার্ন

লড়ে গেলে লাভ হয়
না-লড়লে নয়
দিগন্ত, মনে রেখো, দুনিয়ায় এইটুকু শুধু সত্যি

নিশ্চয় আমরা আরেকটু সুব্যবস্থিত করতে পারব হক-হালাল আমাদের আর্ন!

.
.
*
বাইক ভিজতেসে, একটু দূরে, কয়েক ফিট

আলিবাহার গেইট থেকে গোয়াবাড়ি বাজার অব্দি জিগজ্যাগ স্ট্রিট
লাইট নাই, আইন্ধাইর

হাসিনা অ্যাসোসিয়েশনের শতসহস্র টোকাই লিগের টেরর
ক্রমশ জনগণের ধৈর্যবাঁধ ভেঙে দিসে, কে বাঁচায় রাজারে এবার, স্বয়ং ভারতেশ্বর?

মসজিদ মার্কেটের মুরব্বির দোকানে বসে বৃষ্টি দেখি, স্থির!

.
.
*
আজ কত তারিখ?

ফোনে দেখে নিলাম দুই অগস্ট, ঠিক
আটটা চল্লিশ

ফোনে ফের দেখে নিলাম, ত্রিশ
পঁয়ত্রিশ মিনিট মতো বসা যাবে আর

আজ লাল অগস্ট, কার্ফিয়্যু, হাসিনার —
দুইহাজারচব্বিশ।

.
.
*
দুই পৃষ্ঠা খালি রেখে এলাম
সেলাম প্রণাম
অথবা স্বাগত জানাই

ফিরা যাবার সময়
দেখা তো হবেই, নিশ্চয়

মৃত্যু, পরোয়ানা, কার্ফিয়্যু, লড়াই
তবু উত্তরণের গান গাই

বিদায় না জানাই, সি ইয়্যু, বাই বাই!

.
.
*
রাজা বাঁচাইতে যেয়ে এই নিধন
এই নীতি বিসর্জন

এক্সপেন্সিভ হয়া যায়
বেশি বেশি মাত্রায়

সেল্ফডেস্ট্রাক্টিভ

কলমের নিব
বলে ওঠে, শিট!

স্যরি, ড্যুড, আই ঔন্ট বাই ইট!

.
.
*
দিগন্তের বাঁশি
নিশিদিন বলতে চায়, ভালোবাসি

টিলাঘেরা চায়ের বাগান

সবুজ ভেষজ সন্ধ্যা
হারানো দিনের সুর, অনুরোধের আসর ও ছায়াছন্দা

হাসিনার যথাযোগ্য ইতিহাসে স্থান।

.
.
*
এনাফ ইজ এনাফ, পিয়েম!
আই হ্যাভ নো নেম

বাট আই হ্যাভ অ্যা ড্রিম

টু মেইক দি হোল থিং মোর ইন্ডিপেন্ডেন্ট
প্রফাউন্ড, পিসফ্যুল, পেইশেন্ট

লাইক অ্যান এন্ডলেস ভাইব্র্যান্ট স্ট্রিম!

.
.
*
ট্রুথ ইজ হুইচ সাইড?

হু কেয়ার্স? হোয়াট মোর নিড?
দি লিস্ট উই কল ইট অ্যাজ জেনোসাইড!

নাউ দে আর প্লেয়িং উইথ দেয়ার পাওয়ার অ্যান্ড গ্রিড
লেট দেম প্লে অন! লেট’স্ ওয়াচ দেম অন দ্য ব্রড অ্যান্ড বিগ স্ক্রিন

ও’, কাম অন, দিগন্ত! টেইক দ্য পাইপ, ম্যান! দ্য ইভনিং ইজ স্টিল গ্লুড অ্যান্ড গ্রিন!

.
.
*
কখনো কখনো অতিশয় বিবৃতিও কবিতা হয়
ডিক্টেটরের ডেভিলিশ ডামাডোলে রাঙানো সময়

সামাজিক মিডিয়ায় মানুষের উচ্চারণগুলায় সাহসের সঞ্চয়।

.
.
*
মাঝে মাঝে হ্যালুসিন্যাশন হয়

দৃষ্টিভ্রম? — বলতে পারো, অবশ্যই, নিশ্চয়
ম্যাক্লুহানের মিডিয়ারিয়্যালিটি নিয়া আলাপের সময় এটা নয়।

.
.
*
রাজা তুমি কার?

যতেক শঠতা আপাতত করো পরিহার
স্পষ্ট করে, দ্ব্যর্থহীনকণ্ঠ, বলো :

অনেক তো হলো
ধরাধরি বিলাই-ইন্দুর;
তারস্বরে এবেলা পাড়ি চিক্কুর —

বহিষ্কৃত হওয়াই কী নিয়তি তোমার?

.
.
*
রাজার সিপাই
ঘিরে ধরবেই, ঘিরে ধরা তার কাজ, তাই
টিয়ার গ্যাস, ওয়াটার ক্যানন, বুলেট, বারুদ

রক্ত, মৃত্যু, ক্রূর প্রতিশোধ

সিপাই নিয়া আমাদের হুদা মাথাব্যথা নাই
আমরা রাজার নিঃশর্ত পদত্যাগ চাই

নিজের প্রজাপালনে অক্ষম রাজার অন্তিম অস্ত্র মহিষাসুরিক ক্রোধ।

.
.
*
কিন্তু দালালদের ব্যাপারে
এক কল্পিত নতুন সময়ের কোনো নতুন নদীর ধারে

আমি কী লিখব কবিতায়

আমার দালাল বন্ধুর মুখের দিকে তাকাই
হাসি, চা খাই

হিলুয়াছড়া চায়ের বাগানে বিকেল মিলায়।

.
.
*
দালাল কারা?

মানুষহত্যায় হাসিতামাশা করেছে যারা
নাইন্টিনসেভেন্টিওয়ানে, একাত্তরে

এই দ্বিসহস্রচব্বিশে

হেলমেটে হননাস্ত্রে সজ্জিত খুনিকে যে সমর্থন করে
এই বিচ্ছিন্ন ভয়াবহতায় ভিপিএনে ফেইসবুকে ঢুকে যে নেতার ভজন ধরে

এদের লগেই লিভ টুগেদারে কেটে যায় আমার মরমি জীবনধারা।

.
.
*
রাজা বাঁচবার জন্যে এই কাজ করতেসেন! —

সবিস্ময় চাউনি সহযাত্রীটি জিগ্যেশ করেন
আমারেই নির্দেশ করে, এমন নয়;
কিন্তু লোকটার কথার সততায় আকৃষ্ট হতে হয়

আকৃষ্ট হই

দেখেন, মানুষ মারতেসে দেখেন! —
এতটা ন্যাক্কারজনকভাবে রাজা বাঁচবেন!

আমি, স্বভাবত, চুপ রই।

.
.
*
লাল জুলাই —

নিশ্চয়, নিশ্চয়, মিথ্যা নাই
কী মৃত্যুমুখর রাজার বাঁচার উদগ্র বাসনা!

হার এক্সিলেন্সির কাছে
একটা মাত্র কথা আমার বলবার আছে
বেশি নয়, আমার কথা, সাকুল্যে একটাই —

আই বেগ, ইয়োর অনার, দোহাই
উড ইয়্যু কাইন্ড এনাফ টু স্যে গ্যুডবাই?

.
.
*
ছাত্রলিগিং করে
টেক্কায় টরে
যেভাবে গেসিলায় দূরে

অনেক, অনেক, অলমোস্ট ঈশ্বরের স্তরে

আওয়ামিলিগিং করে এই দ্বিসহস্রচব্বিশে
আমার সামনে নীতি আওড়াইবায় বাংলায় ইংলিশে

এমন সঙ্গ পরিত্যাগ করি ঘৃণাভরে।

.
.
*
রেভোল্যুশন উইল নট বি টেলিভাইসড
গাইসিলেন গিল স্কট-হেরন
উনার স্পোকেন-ওয়ার্ড পার্ফোমিং আর্টসের উত্তরাধিকারটা আমরাও করতেসি বহন
ইনডিড
আমরা সবাই

কিন্তু উপায় নাই
গিলবার্ট স্কট-হেরনের লগে একটি মিষ্টি বিরোধ
অগত্যা আমারই সিম্পল বয়ানে এহেন বোধ :
রেভোল্যুশন ইজ টেলিভাইসিং ইন বাংলাদেশ হ্যাশট্যাগিং লাল জুলাই

ইন আদার ওয়ার্ডস, জুলাই জেনোসাইড!

.
.
*
আমি লালের হয়ে কথা বলি
লালের পক্ষে, লালের ফরে
ফেভ্যরে

এই লাল দুইহাজারচব্বিশের
জুলাইয়ের
লাল

এই লালের লগে এর পূর্ববর্তী
কিংবা তার পরবর্তী
কোনো লালের কোনো সংশ্রব নাই

দ্বিসহস্রচব্বিশের অগস্টের লাল রাত্রিবেলায়
আমি ভিপিএনে ফেইসবুকে দেখি দালালদের রগুড়ে লেখায়
ছেয়ে যায়

আমার গোটা আন্তর্জাল।

.
.
*
অবশেষে নির্মলেন্দু গুণ
বলিলেন, দূর হ দুঃশাসন

যদিও তা বাস্তবে নয়
আশির দশকে মনে হয়
একবার বলসিলেন কবিতায়

এরশাদ নেমে গেছে, সেকেলে স্বৈরাচারী নিয়েছে বিদায়

হাসিনার দুঃশাসনযাত্রার ধ্বনি
নির্মলেন্দু শুনতে পান না
হারানো বন্ধুর শোকে বন্ধুটির কান্না

না-প্রেমিক না-বিপ্লবী বিকলাঙ্গ ভূখণ্ডের কাব্যশিরোমণি।

.
.
*
কী আর করেছি?
লিখে গেছি!

কী আর করতে পারতাম?
লিখে যেতাম!

ডিবি হারুনের কাছে স্বেচ্ছায়
আত্মসমর্পণ করা হাবাগোবা পাছামারাখাওরার তালিকায়
একটা সাকুল্যে এন্ট্রি দেখে উৎসুক আমার নজর স্বাভাবিকভাবে সেইদিকে যায়

তাতে লেখা, ঝুঁকে দেখি, মারজুক রাসেলের নাম!


লাল, চিরকাল
জাহেদ আহমদ

রচনা : ১৭ জুলাই টু ০৪ অগস্ট ২০২৪ ।। প্রকাশ : ০৬ অগস্ট ২০২৪


তাৎক্ষণিকা : ১৮ জুলাই ২০২৪

জাহেদ আহমদ
Latest posts by জাহেদ আহমদ (see all)

Support us with a click. Your click helps our cause. Thank you!

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you