দ্য আর্চিসের ঘোষণা বা টিজার যখন দেখলাম তখন আমার মনে যে-প্রশ্নটা খেলতেছিলো তা হলো, জোয়া আখতার কেন স্টারকিডদের নিয়েই সিনেমা বানাবেন? বলিউডে তিনি নিজেও স্টারকিড। তার ভাই ফারহানও। দুইজনই আমার পছন্দের নির্মাতা। ফারহানের চেয়ে জোয়ার ডিরেক্টরিয়াল অ্যাক্টিভিটি বরং বেশি। ছড়াইছেও ডালপালা মেলায়ে। কিন্তু সে তো ফারহানকে দেখছে, বাবার পরিচয় ছাপিয়ে নিজের পরিচয়ে বড় হতে হলে সবচেয়ে ভালো কী করতে হয়! সে নিজেও তারই পথ ধরেই (পুরোপুরি না যদিও) নিজেরে এই জায়গায় নিয়ে আসছে! কিন্তু তার সিনেমায় কেন স্টারকিড! অবশ্য স্টারকিডদের কাস্টিং করার অধিকার কেবল করণ জোহরের একার না, এইটাও মনে রাখতে হয়। সে যাজ্ঞে, প্রশ্নের উত্তরটা পেয়েছি সিনেমা দেখার পর। কিন্তু তবুও যুতসই হয়নি আর কি!
‘দ্য আর্চিস’ মূলত কমিক সিরিজ বেইজড গল্প। আমি যেহেতু কমিকটা পড়িনি, সেই অর্থে আমার কাছে নতুন সিনেমাই। আমার দেখার প্রধান উদ্দেশ্য জোয়া আখতারের নির্মাণ। শুরুতেই বলে রাখি, সে তার মান ঠিকই বজায় রাখছে। ক্লাস গ্রেড সিনেমা। কিন্তু এই সিনেমা এরচেয়ে বেশি ভালো এই জন্য যে, এইটা তুমুল একটা পলিটিক্যাল সিনেমা। তাও আবার একদমই উচ্ছন্নে যাওয়া (আদতেই না) জেনারেশনরে দিয়ে এই রকম একটা সিনেমা বানায়ে ফেললো। আদতে যেই জেনারেশনটা বেশিরভাগ সময়ই রাজনীতি সংশ্লিষ্ট হয় না। হইলেও সে থাকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো। কিন্তু এইখানে এই পলিটিক্যাল সিনেমাটা কিছুটা ‘রাঙ দে বাসন্তি’-র মতো। সরাসরি রাজনীতির চেয়ে ‘ইনভার্টেড’ পলিটিক্যাল বলা যায়। যেই জেনারেশনকে সিনেমায় দেখানো হয়েছে, আমাদের সময় তো বটেই বর্তমান সময়েও এই জেনারেশনের বড় অংশই রাজনীতিবিমুখ। এই বিমুখ রাজনৈতিক মুখ থেকেই বলা হয়েছে ‘এভ্রিথিং ইজ পলিটিক্স’। এইসব সংলাপ বা পার্সপেক্টিভ আদতে সিনেমাটাকে দুর্বল করে নাই, বরং কালারফুল করছে। এই কালারফুলনেসের জন্যই ‘দ্য আর্চিস’ একটা গুরুত্বপূর্ণ সিনেমা।
(শাহরুখের মেয়ে সোহানা খানকে আমার কাছে মনে হইছে শাহরুখই নারী চরিত্র করতেছে। এইটা বিরক্তিকর আমার কাছে। শাহরুখকে অতিরিক্ত দেখার কারণেই এমন লাগলো, আপনাদের না-ও লাগতে পারে। মেয়েই মনে হয়নি। বিপরীতে খুশি কাপুরের অভিনয় মনে হইছে স্মার্ট। খুশির সামনে দারুণ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত। সোহানা খানের সামনেও থাকবে, তবে তার জন্য নিজেকে ভাঙচুর করতে হবে প্রচুর।)
ইলিয়াস কমল রচনারাশি
গানপারে ম্যুভিরিভিয়্যু
COMMENTS