গান-গাওয়াটা হইল গানের একটা ইন্টারপ্রিটেশন || ইমরুল হাসান

গান-গাওয়াটা হইল গানের একটা ইন্টারপ্রিটেশন || ইমরুল হাসান

[একটা গান ধরে এই লেখাটা আবর্তিত হয়েছে। একটা গান ধরে মানে সেই গানের রেন্ডিশন ধরে। এইভাবে একটা গানকে দেখার ভঙ্গিটা, সেই দেখাটাকে লেখায় দেখানোর ভঙ্গিটা, আমাদের গানকেন্দ্রী গড়পরতা লেখালেখির এলাকাটাকে সম্প্রসারিত করে। যে-গানটা আলাপের উপলক্ষ্য সেইটার অডিয়োভিশ্যুয়াল রচনার শুরুতে দেয়া রইল। কৌতূহল-উদ্রেকী এই ধরনের লেখা ‘গানপার’ সবসময় সামনে আনতে চায়। আগামী দিনগুলোতে দেশী-বিদেশী গানের বিচিত্রভঙ্গিম পর্যালোচনা ‘গানপার’ উপস্থাপন করে যেতে চায়। লেখকেরা সাধপূরণে এগিয়ে এলেই ‘গানপার’ সফল হতে পারে।

এই লেখার উপলক্ষ্য শাহ আবদুল করিমের একটা গান। না, তা-ও নয়। এর উপলক্ষ্য ‘ক্ষ’-এর গাওয়া বাউল শাহ আবদুল করিমের গানের একটি বিশেষ রেন্ডিশন। গানটা ব্যাপক জনপ্রিয় বহুজনের গাওয়াবাহিত হয়ে বিভিন্নভাবে বিবিধ মাধ্যমে। ‘কাছে নেও না দেখা দেও না’ গানের মুখড়া। গানটা নয়, গাওয়াটাও নয়, শেষমেশ উপলক্ষ্য উজিয়ে এই লেখা তার প্রস্তাবিত ‘দেখা’ অনেকদূর পর্যন্ত প্রসার করতে চাইছে। এইখানেই ইন্ট্রেস্টিং লেখাটা।

কাজেই লেখাটা পাঠপূর্বে, বা পাঠকালে, বা পড়তে পড়তে, বা পড়ার শেষে, এই গানটা শোনা আবশ্যক। বা, গানটা দেখা। হ্যাঁ, দেখাটাকেও জোর দিতে চাইছে এই লেখার ইশারা। শাহ আবদুল করিমের গানটা? না, ‘ক্ষ’-এর এই বিশেষ ‘গাওয়া’ বাস্তবিক অর্থে।

লেখাটা পাঠোপভোগ্য সন্দেহ হয় না। – গানপার]

গান-গাওয়াটা হইল গানের একটা ইন্টারপ্রিটেশন। এই যে কাছেতে গিয়া ভাইঙ্গা পইড়া যাওয়া, দূরেতে গিয়া সইরা যাইতে চাওয়া, থাকিবতে লিঙ্গার করা, স্বরে; [‘ধন’-এ অবশ্য জোর নাই খুব-একটা … বা এইটারে কোনোভাবে এক্সপ্রেশনের মধ্যে নিয়া আসাটারে জরুরি ভাবতে পারেন নাই উনারা] ‘কাছে নেও না’-তে নাইমা গিয়া যাইতে চাওয়া, ভরসাতে যে জোর নাই খুব-একটা বা ‘তন্ত্রমন্ত্র’ যে কেমনে পড়তে হয় তাড়াতাড়ি, [ফাউল ত ব্যাপারটা, তাই না?]  আমিটাই যে মেইন বিষয় – এইগুলা সিঙ্গিং দ্য স্যং-ই না খালি; ইন্টারপ্রিটেশন অফ দ্য স্যং, একইসাথে। খালি গান গাইলে ত হবে না, গানরে বুইঝা তার বুঝানোটারেও গাইতে হবে, ‘ক্ষ’-র গানের এইরকম মাজেজা আছে। উনারা গানটারে গাইতেছেন না খালি, বুঝাইতেছেন আসলে।

আর ভিজ্যুয়ালে, বাচ্চাগুলার পারফরমেন্সরে মনেহয় শিশুশ্রম বলা যায় না, যেহেতু খেলতেছেই ওরা, এক-রকম; গিটারের সাথে খেলনাগিটার বাজাইতেছে (মাল্টিকালচারালিজমও হইতেছে মনেহয় ইন্সট্রুমেন্ট ইউজে); গায়িকারে মাইক্রোফোনটা আগাইয়া দিয়া পোলাটা সাজেস্ট করতেছে তুমিও খেলো আমরার লগে … আর অ্যাকচ্যুয়্যালি এইটা ত একটা খেলাই। শেষে ‘গুড জব’; মানে সেইটা বলা নিজেদেরকেই, অন্য হইয়া। এইটা ত করাই যায়। করে অনেকেই। যেই ভক্তের অন্তরে মুর্শিদ চইলা আসেন, তিনি নিজে কি আর মুর্শিদ না? এই-রকম নাফরমানি তো আছেই। না কইলেও।

এমনিতে ইন্টারপ্রেট করতে গেলে, ‘বাউল’ হইতে-চাওয়া আবদুল করিম মনেহয় মুর্শিদরে ভক্তের ‘অধীন’ করতে চান নাই পুরাপুরি; আবেদন জানাইছেন যে, অর্থের মধ্যেই কি শব্দরে লিমিট করা যায় না? মানে, যাইতে পারে কি না। উনি মনেহয় জানেন যে, যায় না; এই কারণে গানটা গাইতে চাইছেন।

… …

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you