শাদিবিচ্ছেদের খবরের সঙ্গে ট্যাক্সফ্রড সংক্রান্ত একটা ট্রায়ালের খবর আমাদের নিউজফিডে ভেসে বেড়াইতেসিল সদ্য-গত-হওয়া বাইশের একটা টাইমে এবং তখনই ইয়াদ হয় শাকিরার কয়েকটা গান ইংলিশ থেকে বাংলায় ট্র্যান্সলেইট করে রাখসিলাম ২০১৪/’১৫-র দিকটায়। ফেসবুকে একটা সময়ে নোটস্ অপশনটার সুবাদে বেশকিছু জিনিশ লেখা হইসিল, পরে এই অপশনটা তামাদি হয়ে গেলে মেমোরিস্ থেকে লেখাগুলা কুড়ায়াবাড়ায়া হ্যাশট্যাগ দিয়া রাখসিলাম যতটা পারা যায়। সেভাবে এই ০২টা গান পাওয়া গেল সহসা, আরও ০২/০৩টা থাকার কথা, আবার পরে কখনো ওইগুলা হাতের নাগালে এলে একটা আলাদা ড্রাফট করা যাবে। এমনিতে গেল-বছরটা আমাদের জন্যও তো কম দুর্ঘটের ছিল না। মারী ও বন্যায় আমরাও পর্যুদস্ত হয়েছি, ইউক্রেন-রাশিয়ার বেক্কল যুদ্ধবিবাদের ফলে এবং আমাদের দেশের গদিনশিন দুঃশাসনের একচেটিয়া হার্মাদির কারণে দেশের নিত্যপণ্যের বাজার বল্গাহারা হয়েছে। সেসব আমরা সইতেসি দীর্ঘ যুগযুগান্ত ধরে। একভাবে কেবলই টিকে থাকা শুধু। অপ্টিমিস্ট থাকা ছাড়া শ্বাস ফালাইবার উপায় নাই। ঠিক সেভাবেই শাকিরা তার এক-দশকেরও বেশি সময়ের সংসার থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করসেন এবং এতদিনের প্রণয়পুরুষ ও দুই সন্তানের ঔরসদাতা বার্সিলোনার মিডফিল্ডার জেরার্ড পিকের সঙ্গে সেপারেশনের খবরটা ফাইন্যালি ডিক্লেয়ার করসেন সন্তপ্ত গলায়। ভালোবাসার শাদি ছিল তাদের, এবং তা এমনই যে একাধিক গানের গীতিভাগে শাকিরা তার প্রণয়পুরুষের কথা উল্লেখও করসেন সকৃতজ্ঞ। ‘ওয়াকা ওয়াকা আফ্রিকা’ গানের মিউজিকভিডিয়ো শ্যুট করার সময় পিকের সঙ্গে পরিচয় এবং আশনাই শাকিরার, পরে তা পরিণতি পায়। নিউজমিডিয়ায় এইগুলা আইটেম ছিল বহুদিন, বলা বাহুল্য। কনের থেকে বরের বয়স দশ বছর কম হবার কারণে বেশ গঞ্জনারও শিকার হইতে হইসিল শাকিরারে, যেমন হতে হয় বাংলায় এবং অন্য সর্বত্রও। সবই সামলাইসেন শাকিরা। প্রায় একটি জীবন পেরিয়ে এসে এই বিচ্ছেদ। শুভ হোক, সামলে উঠুক, সমস্ত বিচ্ছেদী গানে থাকুক মিলনের মোহন ইশারা। আর এই নিম্নপত্রস্ত দুইটা গান মূলানুগ নয়, ভাবানুগ যথাসাধ্য। পড়ে দেখতে পারি।
ভূমিকা ও তর্জমা : জাহেদ আহমদ
হোয়েনেভার, হোয়ারেভার
জন্মেছ তুমি আমা’ হ’তে বহু দূরতর কোনো দেশে
স্রেফ তুড়ি মেরে সেই দূরত্ব মোচন করেছি দোঁহে
এ-জনমে আমি তৃপ্ত ধন্য পরদেশী ভালোবেসে
এখানে লভিনু তোমার সঙ্গ সুরম্য সমারোহে
দ্যাখো সোনা দ্যাখো তোমার লাগিয়া পাহাড় ভাঙতে পারি
তিল ও জড়ুল গুনে গুনে আমি যত্নে জেনেছি তোমায়
দেখিব না ফিরি’ জীবনে আমার কি কি চাই দরকারী
নিঃশেষে ভালোবেসে যাব শুধু তুমি যদি হও সহায়
চেয়ে দ্যাখো মনমুনিয়া আমার দ্যাখো তুলে দু-নয়ন
তোমার সামনে ব্যাকুলা নিজেরে করেছি সমর্পণ
যতদূরে যাই যেখানেই থাকি প্রিয়
অঙ্গবিহীন নৈসঙ্গেও দুজনে প্রণয়ক্রিয়
যখনই ইচ্ছা আমাদের মৈথুন
ভুরু-ইশারায় গাঢ় সংগীতধুন
যেখানেই যাও যতদূরে থাকো মগ্ন
রয়েছি আমিও তোমার শরীরলগ্ন
ক’ব কথা কানে শীৎকারি ফিসফিসে
এটুকু জবান টুটিবার নয় একশত গর্দিশে
এই ঠোঁটজোড়া থামাইতে জানে বকবক
জানে নামাইতে পাথরে চুমুর নির্ঝর
স্তনজোড়া পাখিনেত্রের মতো অপলক
মৈথুনানত তুমিই সেখানে কিন্নর
পুরুষ-লোভানো সম্পদ নাই শরীরেতে একফোঁটা
আম্মার মতো দুইখানা পা রয়েছে শক্তপোক্ত
পদাতিক আমি বিরহপ্রহরে দেখাব পদচ্ছটা
পারাব লক্ষ-যোজন ফারাক হ’তে একাঙ্গ যুক্ত
রয়েছে এছাড়া আঁখি একজোড়া আভাগীর
দেবতা আমার আঁখিনীরে হবে পূজিত
তোমারে সেবিতে বেশিকিছু নাই দাসীর
করিব নয়নে দেবতা তোমার যাতনারে প্রশমিত
চেয়ে দ্যাখো পতিদেবতা আমার দ্যাখো তুলে দু-নয়ন
তোমারই বেদিতে উজাড়ি’ নিজেরে করেছি সমর্পণ
যতদূরে যাই যেখানেই থাকি প্রিয়
অঙ্গবিহীন নৈসঙ্গেও দুজনে প্রণয়ক্রিয়
যখনই ইচ্ছা আমাদের মৈথুন
ভুরু-ইশারায় গাঢ় সংগীতধুন
যেখানেই যাও যতদূরে থাকো মগ্ন
রয়েছি আমিও তোমার শরীরলগ্ন
ক’ব কথা কানে শীৎকারি ফিসফিসে
এটুকু জবান টুটিবার নয় একশত গর্দিশে
দ্যাখো চেয়ে প্রেমদেবতা আমার দ্যাখো মুঞ্জিয়া আঁখি
নিরখিয়া ভেবে বলো দেখি সোনা আদরে রাখিবে নাকি
নিরখিয়া ভাবো কোথায় তোমার কতটুকু পাওয়া বাকি
হৃদয়ারাধ্য যত্নআত্তি নিতে চাও নাকি সাহচর্যের ফাঁকি
চিরদিন ওগো প্রাণনাথ তুমি রইবে দেহে ও দরদে
চোখে চোখে পরিচর্যা করিব হৃদয়ের সম্পদে
যতদূরে যাই যেখানেই থাকি প্রিয়
অঙ্গবিহীন নৈসঙ্গেও দুজনে প্রণয়ক্রিয়
যখনই ইচ্ছা আমাদের মৈথুন
ভুরু-ইশারায় গাঢ় সংগীতধুন
যেখানেই যাও যতদূরে আর যারই সনে থাকো লগ্ন
মনে রেখো তুমি আমারে পেয়েছ প্রণয়েতে ধ্যানমগ্ন
ভয় নেই প্রিয়তম শোনো শোনো ভয়ের কিছুই নেই
হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল হবে প্রেমে পড়লেই
য়্যুর এম্ব্রেইস্
চব্বিশ ইঞ্চি কোমরে আমার লাভ নাই কিচ্ছুটি
তুমি যদি এই নিতম্বিনীরে একবারও ছুঁইলা না
কানাকড়িটিরও মূল্য তো নাই টিভিতারার এই খ্যাতি
প্রিয়তম তুমি স্ক্রিনে যদি এই দাসীটিরে দেখলা না
গাদাগুচ্ছের জামায়-কামিজে আলমারিখানা ঠাসা
কাঙালিনী আমি চাই না কসম পোশাকের ভালোবাসা
বাড়ির ভিতরে রন্ধ্রে রন্ধ্রে শ্বাসরোধী শূন্যতা
বাড়াবাড়ি ভিড়ে তোমারই জন্যে ব্যগ্র রোদনরতা
ভালোবাসি বলিবারে আশা করি দিরং হয়নি তেমন
অনস্বীকার্য তুমি বিনে এই দিনদুনিয়াটা অচেতন
মনখারাপের মতন এখানে মেঘ চরে ফেরে অবিরল
তুমি বিনা আমি আধেক শরীর অশথপাতার চিরল
বলি শোনো এই উন্মাদিনীর অগোছালো ক্ষতগীতি
হৃদয় আমার আছাড়িপিছাড়ি মাগিছে তোমারই প্রীতি
নীরবতাভাষে বলো প্রিয়তম কথায় ইলাজ অল্প
কথা নয় চাই তোমার আদর ও আলিঙ্গনের গল্প
- স্বরচিত কবিতার অন্তর্গত অনুপ্রেরণা || হাসান শাহরিয়ার - January 24, 2025
- আর্কের হাসান ও নব্বইয়ের বাংলা গান - January 23, 2025
- শাহ আবদুল করিম : জন্মের শতক পেরিয়ে আরও একটা আস্ত দশক || ইলিয়াস কমল - January 20, 2025
COMMENTS