এই রকফেলার ফাউন্ডেশন ১৯৩৮-১৯৪০ সাল পর্যন্ত মোট ১২,৯,০০০ ইউএস ডলার তিনধাপে বিনিয়োগ করছিল ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়াতে।
কার টিমে, কেন করছিল?
বিনিয়োগটা হইছিল ইউনিভার্সিটির তৎকালীন ফিজিক্সের প্রফেসর, নিউক্লিয়ার বিজ্ঞানী ও পরবর্তীতে নোবেল বিজয়ী ‘আর্নেস্ট ওরল্যান্ডো লরেন্স’ (১৯০১-১৯৫৮) এর টিমে।
ওই প্রজেক্টটা ছিল একটা যন্ত্র উদ্ভাবনের। যেইটার নাম ‘সাইক্লোট্রন’। এই যন্ত্রও দুইধাপে উন্নীত করা হয় ফান্ডটির সহায়তায়। প্রথমটি ছিল ৬০ ইঞ্চির, দ্বিতীয়টি ১৮৪ ইঞ্চির।
এই যন্ত্রের কাজ হলো চার্জিত অণু ও পরমাণুকে একটি স্পাইরাল রাস্তার ভিতর দিয়ে প্রবাহিত করে চৌম্বকশক্তি এবং বৈদ্যুতিক শক্তির সাহায্যে আরও শক্তিতে রূপান্তর করে এর চলাচলের গতি বাড়িয়ে দেয়া।
এই উদ্ভাবনের জন্য মিস্টার লরেন্স ১৯৩৯ সালে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।
২.
এই প্রযুক্তি ব্যবহার হয় কোথায় এবং কেন?
এর ব্যবহার হয় হচ্ছে, পারমানবিক বোমা তৈরিতে যেই ইউরেনিয়াম-২৩৫ লাগে, সেইটাকে বেশি পরিমাণে অন্য ইউরেনিয়াম-২৩৮ থেকে আলাদা করতে। যা সহজ ভাষায় পরিশোধন দিয়েও বোঝা যায়।
লরেন্স জানতেন এর মিলিটারি প্রয়োগ ও যুদ্ধকালীন উপযোগিতার দাম। রকফেলারের তৎকালীন ডিরেক্টর ‘ওয়ারেন উয়েভার’ ও তাঁর মধ্যে হওয়া একটি ডকুমেন্ট আছে আমার কাছে। আরও কিছু তথ্য যে-কেউ খুঁজলে ইন্টারনেটেই পাবেন।
এখন এর সফলতাকে কাজে লাগিয়ে নির্মিত অ্যাটম বোমা ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকা নিক্ষেপ করে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে। বাকিটা তো জানা-ই আছে সবার।
অ্যাটম বোমা ও নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর তার চলমান ইউরেনিয়াম পরিশোধন প্রক্রিয়ায় যেই পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করে তা কেমন দেখুন :
সর্বমোট সক্ষমতার একহাজার ভাগের একভাগ মাত্র নিউক্লিয়ার অস্ত্র ব্যবহৃত হলে তা থেকে উৎসারিত ৬৯০ মেট্রিক টন কার্বন ডাই-অক্সাইড পরিবেশে প্রবেশ করে। যা যুক্তরাজ্যের একবছরের সর্বমোট কার্বন নিঃসরণের পরিমাণের চেয়েও বেশি। (তথ্যসূত্র : এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স জার্নাল)
৩.
এই রকফেলার ফাউন্ডেশন আমাদের এইখানে ‘চিফ হিট অফিসার’ নিয়োগ করেছে বা স্বীকৃতি দিয়েছে এমন রাজনৈতিক ক্ষমতার অনুকূলে, যা সাদা নয়, কালো।
জাতিসংঘে গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে ভূমিকা রাখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও পিঠ চাপড়ে দেয় সেই পশ্চিমারাই। হা হা।
এখন আমেরিকার কোন্ ইমেজের দরকার পড়ল যে বাংলাদেশ থেকে এই বিষয়ক এনজিওমডেলের ইনফ্লুয়েন্সারকে তারা দলে নিলো ও স্বীকৃতি দিলো? তা-ও আবার ক্ষমতারই কোলের আধুনিক ব্লাডকে? লেটেস্ট প্রজন্মকে?
ইয়াং দেশি জনগোষ্ঠী, ও মাইগ্রেটেড বাঙালি ও ইন্ডিয়ান কম্যুনিটির সফট কর্নার আমেরিকা পাবে। তার খুবই দরকার এখন সেইটার।
সাথে সরকারও জ্বালানী খাতের অনেককিছু লেজিট করে নিতে পারবে। মতাদর্শিকভাবে।
লাইক— ‘বিগ ব্রাদার ইজ ওয়াচিং ইউ’-এর স্বস্তির মতো বড়ভাইয়ের ডানার নিচে আছি, খারাপ কিছু করার সুযোগ কই? এবং এই বড়ভাইয়ের ডানাবিস্তারি শিকারে ভবিষ্যতের জন্য এইসব ইস্যুতে আরও নিপতিত হওয়া ও লেজেটিমেসি দেওয়া।
আমিও এই সংকূলতা যথারীতি দেখতে পাইতেছি।
রচনাকাল : ৫/৫/২০২৩
- ভিক্টোরিয়া অ্যামেলিনা ও যুদ্ধদিনের ইউক্রেনীয় কবিতা || জয়দেব কর - February 17, 2025
- মাসুম পারভেজ : কবি, কাব্যগ্রন্থহীন || সরোজ মোস্তফা - February 7, 2025
- ছত্তার পাগলার সন্ধানে আহমেদ স্বপন মাহমুদ ও সরোজ মোস্তফা - January 28, 2025
COMMENTS