হাসতে হাসতেই চলে গেলেন আতাভাই। রাষ্ট্রীয় কিংবা নিরেট ব্যক্তিগত জীবনে সংকট, সমস্যায় কথা বলার মানুষটা নাই—ভাবতেই ভীষণ শূন্যতা অনুভব করছি।
আতাভাই প্রকৃত অর্থেই যোদ্ধা ছিলেন। যারা খুব কাছ থেকে সঙ্গ পেয়েছেন তারা জানেন। ছোটখাটো বিষয়কে এতটা রসে-বশে দেখাতে পারতেন সেটা অতুলনীয়।
নিজে কোনো অনুষ্ঠানে গিয়ে খেতেন না। ভালোমানের বই উপহার দেওয়া এক ধরনের বাধ্যতামূলক কাজ। কারো কারো ক্ষেত্রে নীরবে পরামর্শ, অর্থসহায়তা এসবও করতেন।
মাংস খেতেন না আতাভাই। কিন্তু শিক্ষার্থী, আমাদের মতো আড্ডাবাজ, অনুরাগীদের নিজ হাতে রান্না করে খাওয়াতেন। রান্নায় লতাপাতা, আঁশযুক্ত খাবারের আধিক্য থাকত। বেলের শরবত, মৌসুমী ফলমূল নিজে খেতেন অন্যদেরও খাওয়াতেন। ভাতের সাথে হরেক পদের ভর্তা। সবজির উচ্ছিষ্ট ছালবাকল দিয়েও অপূর্ব সব ভর্তা, খাবার প্রস্তুত করতেন। পরতেন পুরনো কাপড়চোপড়, কিন্তু পুরনো হলেও ঝকঝকে তকতকে। এক অনাড়ম্বর দৈনন্দিনের অনন্য অনুসারী তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়ে ব্যস্ত জীবনযাপন করেছেন। অনেক শিক্ষার্থীর কাছেই তিনি জীবনের ধ্রুবতারা, আদর্শ আতাভাই।
আতাভাইয়ের ব্যক্তিমানসের বাইরে তাঁর রচয়িতামানসকে অনেকটা পাওয়া যাবে তাঁরই রচিত ‘প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে’, ‘মরমের ডাক’ প্রভৃতি গ্রন্থে। এর বাইরেও বেশ কিছু ছোটকাগজ, মেঠোসুর পত্রিকা, মেঠোসুর ফেসবুক পেইজ, মেঠোসুর ইউটিউব কনটেন্টে আগ্রহীরা পড়তে, দেখতে বা শুনতে পারেন আতাভাইকে খুঁজে বের করে।
সুন্দরভাবে জন্ম এলাকা কালকিনীতে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে সম্পন্ন হলো তাঁর শেষকৃত্য।
এই সিলেটে শিক্ষা, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নিজস্ব বলয়ে নীরবে-নিভৃতে আতাভাইয়ের অবদান অনেক গভীর। আতাভাইয়ের সাথে যাদের যোগাযোগ বা সম্পর্ক ছিল তাদেরকে আতাভাইকন্দ্রী স্মৃতিচারণমূলক লেখা দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। সেইসব লেখার সমবায়ে সময়-সুযোগে মেঠোসুর-এর পক্ষ থেকে একটি প্রিন্ট স্মারকগ্রন্থ ও/অথবা পত্রিকা আকারে একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশের ইচ্ছে রইল।
গানপারে আতাউর রহমান
গানপারে ট্রিবিউট রচনামালা
বিমান তালুকদার রচনারাশি
- লোককবি তাজউদ্দিন ও তাঁর গান || জফির সেতু - November 25, 2025
- শাহজালাল শাহপরান গ্রামবাঙলায় গাজির গান || তুহিন কান্তি দাস - November 22, 2025
- আমাদের গ্রামের নাম আমাদের নদীর || কাজল দাস - November 19, 2025

COMMENTS