ভাইফোঁটা কী বৌদ্ধ বা খ্রিশ্চিয়ান পরিবারে হইতে পারে? এর উত্তরে হ্যাঁ বলে বিতর্কে জড়াতে চাই না।
পরিবারের একে অপরের প্রতি এমনেই পজিটিভ চিন্তা করে আমরা মঙ্গল কামনা করি। তারপরেও বোনটি আলাদা করে যমরাজের দুয়ারে খিল দেয় যাতে তার ভাইটাকে নিয়ে না যায়। তার ভাই যেন অমর থাকে।
ভাইফোঁটার এইটুকুই মেসেজ। তবে এর উৎস হিন্দুধর্মীয়। এবং পিতৃতান্ত্রিক সমাজে বিপন্ন ও নির্যাতিত বোনদের এই উইশটুকু কেন আলাদা এটাও তাৎপর্যপূর্ণ। বাবা মারা গেলে ভাইটি তার এক ভরসা। বিপদের জন্য সহায়ক এক স্তম্ভ।
এই উৎসবটি হিন্দু পরিবারেই পালিত হয়। এটা ভারতে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামেই প্রচলিত। ভাইদুজ, ভাইবিজ, ভাইফোঁটা বা যমদ্বিতীয়া নামেই পরিচিত।
সে-অর্থে এটা হিন্দুধর্মীয় উৎসবই বলা চলে। এটাকে বাঙালির উৎসব বলাটা সঠিক হয় না আসলে।
সংস্কৃত আর বাঙালিত্বে যদিও নানাবিধ মিল আছে তারপরেও এটা হিন্দু পরিবারের রিচুয়াল প্র্যাক্টিস।
কিন্ত উৎসবের মেসেজের দিকে খেয়াল করলে মনে হয় যে বৌদ্ধ ও ক্রিশ্চিয়ান ধর্মের লোকজন রিফর্ম করে এটারে পালন করতে পারে। তাদের মতো করে।
কারণ ভাই আর বোনের সম্পর্কটা দুনিয়াতে ইউনিক একটা সম্পর্ক যেখানে প্রেম ও যৌন সম্পর্কের অনুপস্থিতি থাকায় নারী ও পুরুষ বাইনারির জটিল সম্পর্কগত বিন্যাস থেকে আমরা মুক্ত থাকি। দেখেন যে বাবা-মা থেকে আমরা জন্ম নেই তারা এখানে মুক্ত না। অথচ ভাইবোন মুক্ত।
আবার পিতৃতান্ত্রিক দুনিয়ায় ভাইকে বাঁচানোর জন্য বোনের এই তাগিদ মোটাদাগে নারীকে নিরাপদে চলতে দেয়ার জন্য পুরুষের তাগিদ অনুভবের মতোই ব্যাপার।
অন্তত আমি ব্যাপারটারে এভাবে রিলেট করে ভাবি।
- রিপ্রিন্ট রিফ্রেশিং - November 7, 2025
- কোচবিহার ও আব্বাসউদ্দীন - November 7, 2025
- দেবেশ রায়ের ফ্যাসিবাদের বিত্তান্ত - November 6, 2025

COMMENTS