কয়দিন আগে ইন্ডিয়ান একটা টিভিচ্যানেল (www.lifeok.com)-এর বিজ্ঞাপনে চ্যানেলরে ইনডোর্স করতেছিলেন শাহরুখ খান এইভাবে যে, সাউথ এশিয়ান ডায়াস্পোরাদের মধ্যে সবচে জনপ্রিয় (বা হইতে পারে আদর্শ) একটা চ্যানেল। সম্ভবত ইন্ডিয়ান কালচারের কথাও বলতেছিলেন তিনি। (অবভিয়াসলি এইটা শাহরুখ খানের কথা না, এক ধরনের রিসার্চ ফাইন্ডিংই হয়তো ইউজ করা হইছে, টেক্সটে।) ইউটিউবে খুঁজলাম ভিডিওটা, কিন্তু পাইলাম না। পাইলে আরো অথেন্টিকভাবে বলা যাইত; যে, সাউথ এশিয়ান বইলা একটা কম্যুনিটি এবং তাদের ‘ইন্ডিয়ান কালচার’ বইলা একটা ‘জিনিস’ আছে বা গ্রো করতেছে।
মাইগ্রেটেড পিপলদের সহজে চিনার লাইগা পশ্চিমাদের (ইউরোপ-আম্রিকা ইত্যাদির) মনে একটা ক্যাটাগরি থাকতে পারে ‘সাউথ-এশিয়ান’ আর এইভাবে পরিচিত হইতে চাওয়া জনগণ ইন্ডিয়া-পাকিস্তান-বাংলাদেশ’র একটা ‘কমন কালচার’-এ আগ্রহী হইতে পারেন। যে-কোনো আইডেন্টিটিই তৈরি হয় আসলে এই ‘আদার’-এর পার্সপেক্টিভ থিকা।
এই যে ‘সাউথ এশিয়ান’ এই আইডেন্টিটিটা আসলে বাংলাদেশে যারা থাকেন তাদের লাইগা দরকারি কোনো জিনিস না খুব-একটা, পাকিস্তান বা ইন্ডিয়ারও একইরকমের ঘটনা, আইডেন্টিটির জায়গা থিকা (পলিটিক্যাল জায়গাটাতে পরে আসাই ভালো)। কিন্তু যারা (মানে, এর বাইরেও দুনিয়া আছে তো) ধরেন খুব-একটা আলাদা করতে পারেন না, যাদের কাছে একইরকম লাগে প্রায় এই এলাকার মানুষজনদেরকে, তাদের কাছে বেশি দরকারি এইটা। বাংলাদেশিদের কাছেও চাকমা, ত্রিপুরা, সাঁওতালরা যেমন ‘আদিবাসী’; একইরকমের প্রায় ব্যাপারটা। মানে, যারা ‘সাউথ এশিয়ান’ তাদের বাইরে যারা আছেন, তাদের কাছে সাউথ এশিয়ানরা কি-রকমের সাউথ এশিয়ান সেইটা প্রজেক্ট করার একটা ব্যাপার তো আছে … সেইটা কোর একটা জিনিস, আইডেন্টিটির।
ব্যাপারটা এইরকম না যে, আইডেন্টিটিগুলি আছেই; বরং বানানোই যায়। এই যে সাউথ এশিয়ান এইটা আসলে ব্রিটিশ কলোনির সময়কার ঘটনা তো বা মোগলরাও এইরকম কইরা ভাবতে পারছিলেন মনেহয়। তবে, এই ব্যাপারটা ইন্ডিয়ান হওয়ার চাইতে সাউথ এশিয়ান হওয়াটা ব্যেটার মনেহয়।…
টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়া কয়দিন আগে ঢাকায় যে-অনুষ্ঠানটা হইল এইটা সম্ভবত সাউথ এশিয়ান কালচারেরই একটা ডিসপ্লে, যেইখানে রাজনৈতিক সেন্সেটিভনেসের কারণে পাকিস্তান হয়তো বাদ গেছে এই দফায়; কিন্তু ফর্মুলাটা সম্ভবত অনেকটাই এইরকম : আশিভাগ ইন্ডিয়া, পনেরোভাগ পাকিস্তান আর পাঁচভাগ বাংলাদেশ। [নেপাল, শ্রীলংকা, ভূটান, আফগানিস্তান যে নাই তা না; উনারা একটু ডিস্ট্যান্টই মনেহয়।] এর আইকন হওয়ার জন্য অনেকদিক দিয়াই সুবিধাজনক জায়গায় আছেন ইন্ডিয়ান মুসলমান এ.আর. রহমান; উনার বিভিন্ন রকমের মিউজিক ফিউশনের কারণেই হয়তো। হিন্দিগানের সুফি টাইপের গায়ক, বাংলাদেশের জেমসও একরকমের আইকন হওয়ার সম্ভাবনার মধ্যে আছেন, এই কালচারাল ক্যাটাগরির।
যদি ইন্ডিয়াননেস খাইয়া না ফেলে তাইলে এইটা স্ট্রং একটা আইডেন্টিটি হইয়া উঠার কথা, নিয়ার ফিউচারে।
… …
- এন্ড্রু কিশোর আর ক্যাসেটে বন্দী আমাদের গানের জীবন || ইমরুল হাসান - July 22, 2020
- বাংলাদেশি সিনেমা : অ্যা ব্রিফ হিস্ট্রি ১ || ইমরুল হাসান - July 15, 2020
- আবারও কবিতার নয়া বই || ইমরুল হাসান - September 14, 2019
COMMENTS