১১ হাইকু মাৎসু বাশো || বিজয় আহমেদ

১১ হাইকু মাৎসু বাশো || বিজয় আহমেদ

শেয়ার করুন:

জাপানের এক মহান কবি বাশো। তার হাইকু অনুবাদ করার সাহস দেখানো হয়তো উচিত হয় নাই মনে হয়। কেননা প্রাচীন জাপানের প্রকৃতি, ধর্ম, ও সন্ন্যাসীদের ধ্যানগ্রস্থ জীবনের ভাবান্তর খুবই কঠিন। আর হাইকু, হাওয়ার মতো আত্মায় মিশে থাকে বলে, হয়তো কিছুই ঠাহর করা যায় না অনুবাদে। তবুও, তবুও, বসন্ত এল বলে…

ন্যারো রোড টু দ্য ইন্টেরিয়র অ্যান্ড আদার রাইটিংস  নামক সংকলন ব্যবহার করেছি এই অনুবাদে। এই বইটা অসাধারণ। বাশোর তিনটা আত্মজৈবনিক গদ্য বা ভ্রমণকাহিনির সাথে একগুচ্ছ হাইকুও গ্রন্থিত আছে উক্ত বইয়ে। অসাধারণ একটা বই। উল্টানোপাল্টানোর সময়ে লোভ সংবরণ করতে না পেরে অনুবাদে হাত লাগানো।

স্যাম হ্যামিলের ইংরেজি অনুবাদ ব্যবহার করেছি। তার ইংরেজি সুখপাঠ্য। সাম্ভালা ক্লাসিকের বই। বোস্টন ও লন্ডন থেকে বইটি প্রকাশিত হয় ২০০০ সালে।

মাৎসু বাশোর ১১টা হাইকু অনুবাদ বিজয় আহমেদ

শোক

বছরের প্রথম দিন আজ
প্রতিটি ধানখেতের নিজস্ব সূর্যের জন্য।
পরস্পরের জন্যই তারা ছিল শোকাহত এতগুলা দিন।

 

আয়ু

প্রতি বছরের প্রথম ফোটা ফুল
দেখার জন্য
আমি দীর্ঘ ৭৫ বছর বেঁচে থাকতে চাই।

 

ভাগ্য

বছরের প্রথম তুষারপাত বাইরে
নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে
আস্তানায় (আশ্রমে) একা আছি বলে।

 

মনোযোগ

এমনকি ঘোড়াটা আমার মনোযোগ
কেড়ে নিলো
তুষারাক্রান্ত এই সকালে;

 

সুবাস

ধূপের সুবাসে, পবিত্র ও শান্ত
আমার দুই কান
বসন্তদূতের (কোকিলের) কান্না শুনতে পাই

 

বসন্ত

বসন্ত ফুটে আছে আজ
নাম-না-জানা পাহাড়ের চূড়ায়
সুবেহসাদিকের কুয়াশায়।

 

সু্বাস

আমি জানি না কোন গাছে
ফুটেছে ফুল
আহা সুন্দর সুবাস চারিদিকে

 

বুদ্ধের দয়া

চেরি ধরেছে গাছে।
বুদ্ধের দয়ার কথা মনে আসে
কৃতজ্ঞতায়

 

পাহাড়পিতা

সুবেহসাদিকের ফোটা ফুলে
আমি দেখতে চাই
পাহাড়পিতার (মাউন্টেইন গড) মুখ।

 

বয়েস

ঝোপঝাড়ের পক্ষীগুলা
বাঁশের বনের চারায় বসে
বয়েস বাড়ার গান গাইছে

 

কুয়াশা

নতুন চাঁদের নিচে
গমের ফুলের সাথে সাথে
কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে জমিন

১৫ জুলাই ২০২৫


বিজয় আহমেদ রচনারাশি
কবিতার গানপার, গানপার কবিতার
গান শুনি কিস্তিগুলা

বিজয় আহমেদ
শেয়ার করুন:

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you