নায়ক ট্রিটমেন্ট || আনম্য ফারহান

নায়ক ট্রিটমেন্ট || আনম্য ফারহান

আমাদের বা ভারতবর্ষের অভিনেতারা (নারীদেরকে আলাদা কইরা অভিনেত্রী আর বলা গেল না যদিও) পলিটিক্যল কারেক্টনেস নামক এক ফালতু জিকিরে ধরাশায়ী। যদিও ভারতে নেপটিজম খুবই পরাক্রমশালী তাও মোটামুটি মানের একটা ইউএসএ মডেল প্রায় সবকিছুতেই ফলো করার কারণে কিছুটা ডাইভার্সও তারা হইতে পারছে। কিন্তু ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি চলেই হইল রাজনীতিসম্যক জ্ঞান দ্বারা। ওইখানে ক্ষমতা কিভাবে কাজ করে, তা আপনি বাংলাদেশে বইসা বুঝলেও ওইভাবে ঠিক ধইরা উঠতে পারবেন না।

এইভাবে বলার কারণ হইল ছোটবেলা থেকেই আমরা যাদেরকে নায়ক মনে করতাম, বা একটু ফ্যাশনিস্টিক সিম্বল হিসাবে আইডেন্টিফাই করতে পারতা, তাদের একটু ম্যাচো, একটু মেইলিস্টিক অ্যাপিয়ারেন্সকে স্বাভাবিক মনে করতাম। কোনো সমস্যা ছিল না তাতে।

পরে পরে, কালচারাল ইন্ডাস্ট্রি এমনই এক ভূতে নিমগ্ন হইল, যে, নায়ক মাত্রই ব্লু ব্লাড যেন। অথবা একটা তেমন ইমেজ।

আর থিয়েটার ব্যাকগ্রাউন্ড থাকলে তাদের আলাদা কদরের যেই মাত্রা দেখা যায়, তা হইল কালোকে কালো বলা আসলে। মেধার নামে, যোগ্যতার নামে তাদেরকে আসলে রেসিজম দ্বারাই ট্রিট করা হয়। এই তারাও আবার একরকম কনভিন্সডই দেখা যায়! হা হা!

(থিয়েটার করা কম ‘নায়কসুলভ’ অভিনেতাদের প্রাইড হইতেছে থিয়েটার ব্যাকগ্রাউন্ড আর বাকি নায়কদের আশ্রয় তাদের রাজপুত্রসুলভ অ্যাপিয়ারেন্স এবং অতি অবশ্যই কানেকশন। এইগুলির মতো হাস্যকর আর কিছু নাই)

ভারতে অর্জুন রামপাল, চাঙ্কি পান্ডে, নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি, রাজকুমার রাও, রিচি চাড্ডা — এ-রকম অনেক নাম নেওয়া যাবে। মনোজ বাজপেয়ী হইল গিয়া ট্র্যাজিকমেডির হিরো! বোঝা গেল নিশ্চয়ই।

আমাদের এইখানে আহমেদ রুবেলও তেমনই। ওই একই ট্রিটমেন্ট পাওয়া।

এই সমস্যাগুলির গোড়ায় আমাদের যারা নির্মাতা, তাদের নিজস্ব কিছু কলোনিয়াল চিন্তার রিফ্লেকশন পাওয়া যায়। আর উনারা অডিয়েন্সের গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠিতে যেই বিচার করেন, তা আসলে তাদের নিজেদেরই চিন্তার সমস্যা।

এত কিছুর পরও আহমেদ রুবেল যেই উচ্চতা আমাদের এইখানে আদায় কইরা নিছেন, তা অত খারাপভাবেও হয় নাই।

শরীফুল ইসলাম রাজের কথাই চিন্তা করেন। কিছু জিনিস তো আর্টিস্টের ব্যক্তিসত্তা থেকেই ওয়ার্ক করে। বাজারের সুবিধার একটা উইন-উইন এনভায়রনমেন্টও থাকে ক্রিয়াশীল।

ওইভাবে, আহমেদ রুবেলের প্রাপ্তিও নেহায়েৎ কম কিছু না।

আমাদের উচিত নায়ক হিসাবে প্রতীয়মান সামাজিক এলিমেন্টগুলিকে ঠিকঠাক জায়গায় ফিট করতে পারার প্রতি আহ্বান জারি রাখা এবং বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে নারচার কইরা যাওয়া। আর এর জন্য বিপরীত শক্তিসমূহের সমালোচনা কইরা যাওয়া।

—০৮/০২/২০২৪


আনম্য ফারহান রচনারাশি

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you