সুলা গাইনের সুলুক সন্ধান || সরোজ মোস্তফা

সুলা গাইনের সুলুক সন্ধান || সরোজ মোস্তফা

আন্দাজের উপর ভর করে ইতিহাস খননের পথে বেশি দূর অগ্রসর হওয়া যায় না। আবার, এ-ও অসত্য নয়, আন্দাজ ছাড়া আদৌ কোনো অনুসন্ধান শুরুও হয় না। হাইপোথেসিস বা আন্দাজ-অনুমান, বলা বাহুল্য, অতীব দরকারি পদক্ষেপ যে-কোনো গবেষণায়। আন্দাজগুলোর সপক্ষে তথ্য, উপাত্ত ও তত্ত্ব প্রভৃতি জড়ো করতে হয়; সেই লক্ষ্যে, প্রতিপাদ্য সন্ধানসূত্রের অনুকূল ভাষ্য রচনার প্রয়োজনে, প্রাইমারি ও সেকন্ডারি উভয় সোর্সের সহায়তা লাগে। এক্ষেত্রে, সুলা গাইনের ঠিকুজি অনুসন্ধানের বেলায়, উপকরণ-প্রমাণক প্রভৃতির অপ্রতুলতা সত্ত্বেও খোঁজাখুঁজি/খোঁড়াখুঁড়ি অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়েছে কেবল খনক/গবেষকের অক্লান্ত উদ্যম ও অনিঃশেষ উৎসাহ স্বতোৎসারিত হবার কারণে। একটা বড় সুবিধার দিক হচ্ছে, যে-জলমাটিহাওয়ায় গাইন নিঃশ্বাস নিয়ে গেছেন — সেই বৃহত্তর কবিয়াল সংস্কৃতির সূতিকাগারে তথা নেত্রকোনা-মৈমনসিংহ অঞ্চলে এই খনকেরও জন্ম ও বেড়ে-ওঠা; যার ফলে বেয়াড়া আন্দাজের খপ্পরে খাবি খাইতে হয় নাই, উপরন্তু সহযোগ পাওয়া গেছে এই মাটির ও এর মনীষার। তেমনই একজন মনীষী — যিনি এ-অঞ্চলের সুপরিসর একটা কালখণ্ডের বীক্ষক ও সমসময়ের শিক্ষক — যতীন সরকার। গবেষিত প্রকল্পনায় এই শিক্ষক ও মননশীল লেখকের প্রাথমিক অনুপ্রাণন খননকারীর কাছে একটা পান্থপাদপের ন্যায় ক্রিয়া করেছে আগাগোড়া। বাংলাদেশের কবিগান ও লোকমহাজন, লোকায়ত জনপদাবলি প্রভৃতি সঞ্জাত সংস্কৃতি ও সমাজের নির্মিতি নিয়ে এই মহীরূহপ্রতিম মনীষীর কাজকর্ম সর্বজনবিদিত। সৌভাগ্য, সুলা গাইন অনুসন্ধান প্রকল্পের আওতায় তাঁর অন্তর্দৃষ্টিজাত বক্তব্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে এই রিসার্চকাজের অন্বেষণসূত্রগুলো খতিয়ে দেখবার সুযোগ পাওয়া গিয়েছিল। দুইযুগ আগে যিনি অনুপ্রাণিত করেছিলেন সুলা গাইন অনুসন্ধানকর্মে, সেই মনীষীর সঙ্গেই নিষ্পন্ন গবেষণার অনুষঙ্গগুলি বিনিময় এবং নিরীক্ষণ-পুনরীক্ষণে তাঁর দীর্ঘকালের বীক্ষণবিবেচনাগুলো সন্নিবেশিত করতে এই সাক্ষাৎকার আয়োজন করা হয়। এমনিতে, যেমন হয়, এহেন কর্মসম্পাদনের শেষে একজন কার্যদর্শী অধীক্ষকের দ্বারা সামগ্রিক মূল্যাঙ্কনমূলক মুখবন্ধ/ভূমিকা আদায় করে নেবার উদ্যোগ নেয়া যেত। তবে, এক্ষেত্রে, যতীন সরকারের বয়সজনিত অন্তরায়ের কারণে লিখিত-ভূমিকা আদায় করা সাধ্যাতীত বিধায় তাঁর সঙ্গে আলাপচারিতার প্রাসঙ্গিক অংশটুকু অনুলিখনের আশ্রয়ে এই অধ্যায়ে সন্নিবেশিত হচ্ছে। এ কেবল কথাবার্তা বা সাক্ষাৎকার নয়, এ একজন প্রায়-ত্রিকালদর্শীর জবানি, এ একজন সুলা গাইনের সন্ধানে লুপ্তপ্রায় যাত্রাপথে একটি দিঙনির্ণায়ক প্রচেষ্টা। — সরোজ মোস্তফা

স্যার, কেমন আছেন?
আরও জোরে বলো। তোমার কথা আমি শুনতে পারিনি। আমি কানে খুবই কম শুনি। বলতে পারো ‘হাটকালা’। কিচ্ছু শুনি না। ভালো আছি কি না জিজ্ঞেস করেছ? এই কথা নতুন করে কি বলবো? আমি ভালো আছি আমার শরীর ভালো না। আমি লেখক মানুষ কিন্তু লেখকের হাত দুটোতে শক্তি নেই। আর্থারাইটিস রোগে আমি পঙ্গু। অবশ হয়ে আছি। আমি আর লিখতে পারি না। ৯০ বছর হয়ে যাচ্ছে—এখন এ-জীবনটাকে আর ভালো থাকা বলে না। তোমরা জিজ্ঞাসা করলে বলি, ভালোই আছি। আমার কোনো রোগ নেই। উচ্চ রক্তচাপ নাই, হার্টের অসুখ নাই, ডায়াবেটিস নাই—আমার কোনো রোগ নেই। রোগের মধ্যে একটাই রোগ, আমি লিখতে পারি না। এখন কানেও শুনি না। স্মৃতিটা বেশ আছে কিন্তু আজকের কথা মনে রাখতে পারি না। আমার বাবা ১০০ বছর ছিলেন। মনে হয় আমিও থাকবো।

স্যার, আজকে আপনার সঙ্গে সুলা গাইন নিয়ে কথা বলতে চাই। আজ থেকে প্রায় ২০২৫ বছর আগে কবি সুলা গাইনকে নিয়ে কাজ করার জন্য আপনি আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। একজন বিস্মৃত কবিকে খুঁজে বের করাকাজটা মোটেও সহজ নয়। সম্পর্কে কোনো তথ্যপ্রমাণও নেই। দীর্ঘদিন অনুসন্ধান করে আমি এই কবি সম্পর্কে কিছু লিখতে চেষ্টা করেছি। কাজটা প্রায় শেষ পর্যায়ে। আজকে আপনার কাছে সুলা গাইন সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি।
শুনে খুশি হলাম তুমি সুলা গাইনকে নিয়ে কাজ করছ। সত্যিই খুব খুশি হয়েছি। আজ থেকে আড়াইশো-তিনশো বছর আগে আমাদের সমাজকে তিনি আলোকিত করে গেছেন। বিজয়নারায়ণ আচার্যই তাঁকে সামনে নিয়ে এসেছিলেন। বলা যায় নারী কবিদের মধ্যে তিনিই প্রথম কৃষ্ণলীলা লিখেছেন। তাঁর আগে কৃষ্ণকীর্তন বিষক কোনো কাব্য কোনো মহিলা কবি রচনা করেননি।

তাহলে কি আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি সুলা
গাইনের আগে কোনো মহিলা কৃষ্ণলীলা লিখেননি?
আমি যতটুকু জানি সুলা গাইনের আগে কোনো মহিলা কবি কৃষ্ণলীলা লিখেননি। তিনি তো মধ্যযুগের কবি। চন্দ্রাবতীকে আমরা বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবি বিবেচনা করি। সে-হিসেবে  সুলা গাইন বাংলা সাহিত্যের দ্বিতীয় মহিলা কবি। চন্দ্রাবতীর থেকে দেড়শ বছর কিংবা তারও পরে তিনি বর্তমান ছিলেন। বিজয়নারায়ণের দেয়া তথ্য অনুযায়ী দীনেশচন্দ্র সেন আমাদের জানাচ্ছেন তিনি ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে জন্মেছেন এবং ১৮৬৬ সালে লোকান্তরিত হয়েছেন। এই তথ্য নিশ্চয়ই আনুমানিক। তবে তিনি যে মধ্যযুগের কবি এতে কোনো সন্দেহ নেই। তিনি কৃষ্ণলীলা, পদ্মপুরাণ লিখেছিলেন। শোনা যায়, তাঁর হাতের লেখা পুঁথিও ছিল। তিনি লিখতে জানতেন। তবে তাঁর কোনো পুঁথি পাওয়া যায়নি। বিজয়নারায়ণ তাঁর ‘গোপিনীকীর্তন’ কাব্যটি সংগ্রহ করেছিলেন। সংগ্রহ করেছিলেন তাঁর দলের একজন গায়েনের থেকে। ‘সৌরভ’ পত্রিকায় কাব্যটির কয়েকটি অংশ প্রকাশিত হওয়ার পরে দীনেশচন্দ্র সেনের নজরে আসে। বিজয়নারায়ণ না লিখলে আমরা সুলা গাইনের কথা জানতেই পারতাম না। সুলা গাইন কীরকম জনপ্রিয় কীর্তনীয়া ছিলেন—এই সময়ে বসে আমরা কল্পনাও করতে পারব না।

সুলা গাইনকে কি মধ্যযুগের কবি বলা যাবে? বলতে চাইছি ভারতচন্দ্রের পরে আধুনিক যুগের সন্ধিক্ষণে তিনি কাব্যচর্চা করেছেন। তাই, জানতে চাচ্ছি তিনি কোন সময়ের কবি?
আমরা ইতিহাস সংরক্ষণ করি না। তাই আজ একেবারে সুনিশ্চিতভাবে তাঁর সম্পর্কে কিছু বলা যাবে না। তবে তিনি অবশ্যই মধ্যযুগের কবি। মধ্যযুগের শেষভাগে তিনি জন্মেছেন। উনিশ শতকের  সত্তরের দশক পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন। বিজয়নারায়ণ মনে হয় তাকে দেখেননি। বিজয়নারায়ণের জন্মের আগেই কিংবা জন্মের কাছাকাছি সময়ে তিনি লোকান্তরিত হয়েছেন। ভারতচন্দ্রের পরে আধুনিক যুগের সন্ধিক্ষণে কাব্যচর্চা করলেও তিনি মধ্যযুগের কবি। তাঁর কাব্যধর্ম ও বিষয় সবটাই মধ্যযুগীয়। মধ্যযুগ কি উনিশশতক এসব দিয়ে সুলা গাইনকে বিবেচনা করার দরকার নেই। তিনি যে কাব্য রচনা করেছেন সেটাকে দেখতে হবে । গ্রামে বসে একজন মহিলা কৃষ্ণলীলা রচনা করছেন। সেই কৃষ্ণলীলার গান দলবল-দোহার সহ সম্ভ্রান্তজনের বাড়িতে, উৎসবে গেয়ে গেয়ে ঘুরে রেড়াচ্ছেন—এই বিষয়টা একবার ভাবো। তাঁর সময়ে সে একটা বিপ্লব করে গেছে। মধ্যযুগে চন্দ্রাবতী যেমন রামায়ণরচয়িতা হিসেবে বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবি, ঠিক তেমনি মধ্যযুগে কৃষ্ণলীলা কাব্য রচনা করে সুলা গাইন বাংলা সাহিত্যের দ্বিতীয় মহিলা কবি। এই কথা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসরচয়িতাদের মনে রাখতে হবে।

স্যার, আপনি কি মনে করেন, তাঁর নাম সুলাই ছিল? দীনেশচন্দ্র সেন মনে করেনসুলাশব্দটি সুলক্ষণার অপভ্রংশ। আমার মনে হয়সুলোচনাথেকে সুলা হয়েছে। আদরার্থে কিংবা পূর্বময়মনসিংহ অঞ্চলে নাম বিকৃত করে ডাকার প্রবণতায় তার নাম হয়েছেসুলা
হতে পারে সুলা তাঁর ডাকনাম ছিল। আমাদের বাঙালি রীতিতে বড় নামকে ছোট করার একটা প্রবণতা আছে। আবার আদর করেও ছোট নামে ডাকার একটা প্রবণতা আছে। সুলা নামটার ক্ষেত্রে এই ভাবনাও কাজ করতে পারে। তবে দীনেশচন্দ্র সেন মহাশয় যে-কথাটি বলেছেন সেটি হতে পারে। আবার তুমি যেমন বলছো ‘সুলোচনা’ থেকে ‘সুলা’ সেটি হতে পারে। তবে কাব্যের ভনিতায় তিনি সুলা লিখেছেন। তিনি নিজেই এ-নামে পরিচিত হতে চেয়েছেন। গায়েন ছিলেন। গান গাইতে গাইতে সুলা নামেই তিনি জগতে পরিচিত হয়েছেন‌। তাই সুলক্ষণা কিংবা সুলোচনা—এই আলোচনার চেয়ে সুলা নামেই তিনি পরিচিত থাকুন।

কবি তো নমঃশূদ্র ঘরের মেয়ে ছিলেন। নিম্নবর্ণের হিন্দুদের সমাজে লেখাপড়ার কোনো অধিকার ছিল না। এ-রকম একটি সমাজে সুলা কিভাবে লেখাপড়া শিখলেন?
সুলা নমঃশূদ্র ঘরের মেয়ে ছিলেন। হিন্দুদের বর্ণভেদ প্রথা এক বৃহৎ বিষয়। এ-বিষয়ে অল্পে বোঝানো যাবে না। আর্যরা শূদ্রদের সাথে মেলামেশা, বৈবাহিক আদানপ্রদান কিংবা জলও স্পর্শ করতেন না। ফলে সমাজে জন্ম নেয় বিভাজন ও অস্পৃশ্যতা। এই বিভাজনকে অতিক্রম করেই সুলা কবি হয়েছেন। তিনি লেখাপড়া শিখেছেন। অল্প বয়সেই তাঁর বিয়ে হয়েছিল। দেখতে খুব সুদর্শন ছিলেন না। কিন্তু গান জানতেন। ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল। বাল্যবয়সে সাথিদের সাথে মিলে গ্রামে গ্রামে গান করতেন। সেই থেকে শুরু। সুলার জীবনটাও অনেকটা চন্দ্রাবতীর মতো । চন্দ্রাবতীকে যেমন জয়ানন্দ ফাঁকি দিয়ে চলে যায় তেমনি সুলাকেও ফাঁকি দিয়ে তাঁর স্বামী চলে যায়। এই শূন্যতা থেকেই সুলা লেখাপড়া শিখেছেন। সারাজীবন গান গেয়েছেন। বাঙালি নারীর নিষ্ঠায় স্বামীর জন্য অপেক্ষা করেছেন। আমাদের গ্রামগুলো ছিল খুব স্বনির্ভর। প্রায় প্রত্যেকটা গ্রামেই ছোট ছোট টোল বা পাঠশালা ছিল। সেখানে পড়াশোনা হতো। ‘লেখাপড়া’ এবং ‘পড়ালেখা’ ব্যাপারটা এত সহজ ছিল না। খুব কম মানুষই ‘লেখাপড়া’ জানতেন। সুলার সৌভাগ্য যে তিনি লেখাপড়া শিখতে পেরেছিলেন। বোঝাই যাচ্ছে লেখাপড়ার বিষয়ে তার প্রচণ্ড আগ্রহ এবং নিষ্ঠা ছিল। গুরুর গৃহে ভাগবত ও বিভিন্ন পুরাণ অধ্যয়নই ছিল তাঁর একান্ত সাধনা। সুলার কবিতা পড়লেও আমরা বুঝতে পারি একটা সাধারণ পরিবারের ভেতর থেকে উঠে এসেছেন তিনি। তাঁর কবিতার ভাষাও সহজ। এই অঞ্চলের মানুষের ভাষাটাই তাঁর কাব্যভাষা।

আমাদের এই অঞ্চলে কৃষ্ণলীলার গানের চর্চা কেমন ছিল বলে আপনার মনে হয়? সাধারণ নমঃশূদ্র পরিবারের একজন মহিলার কৃষ্ণকীর্তন লেখার পেছনে কারণ কি বলে মনে হয় আপনার?
আমাদের এই অঞ্চলটা ছিল গানের অঞ্চল। পার্বন কিংবা আচারের গানে নারীরাই ছিলেন সর্বাগ্রে। মূলত নারীরাই এই অঞ্চলে গানের ধাত্রী। এই অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে চৈতন্যদেবের প্রত্যক্ষ প্রভাব ছিল। বৈষ্ণব সহজিয়া ধর্মের চর্চা এই অঞ্চলের ঘরে ঘরে এখনো বর্তমান। লক্ষ করলে দেখবে এই অঞ্চলে প্রচুর বৈষ্ণব আখড়া ও আশ্রম আছে। এর কারণ কি? চৈতন্যদেবের প্রত্যক্ষ প্রভাবে কিংবা তার উত্তরাধিকারীদের সহযোগিতায় এই ভাটি এলাকায় আশ্রম তৈরি হয়েছে। বৈষ্ণব ধর্মের সাধুরা এখনো সেখানে সহজ ধর্মের চর্চা করে। ভাটির বিতলং সাধুর আশ্রম থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি আশ্রমের বয়স দেখবে কমপক্ষে ৪০০ বছর। এইসব বৈষ্ণবীয় সাধু-আখড়ায় তৈরি হয়েছে এই অঞ্চলের কৃষ্ণকীর্তনের চর্চা ও সংস্কৃতি।

সুলা গাইনকে কি আপনি বৈষ্ণবীয় ধারার গায়েন বিবেচনা করছেন কিংবা বৈষ্ণবপন্থী বিবেচনা করছেন?
বৈষ্ণবপন্থীরা জীবনকে সহজ চোখে দেখেন । কবিও জীবনকে সহজভাবেই দেখেছিলেন। কৃষ্ণের গান রচনার মধ্য দিয়ে তিনি জীবনের মাহাত্ম্য ও শান্তি খুঁজে পেয়েছেন। তিনি গানটাই জানতেন। সেটাই সচেতনভাবে করেছেন। গান লেখা এবং গাওয়াটা তার পেশা ছিল। অন্তরে ছিল কৃষ্ণের প্রতি ভক্তি। ভক্তি ও দরদ ছাড়া কেউ কৃষ্ণলীলা লিখেতে পারেন না কিংবা গাইতে পারেন না। তিনি নিজেও যে বৈষ্ণবী ছিলেন এটা তার কাব্যের বন্দনার মধ্যেও আছে। তিনি বৈষ্ণবদীক্ষায় দীক্ষিত ছিলেন। তাঁর গুরু ছিল। তাই কৃষ্ণলীলা কাব্য রচনাকে তিনি তাঁর জীবনব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন। তাঁর গানের দলের অন্যান্যরাও বৈষ্ণবপন্থীই ছিলেন বলে মনে হয়।

স্যার, অনেক অনেক ভালো থাকবেন। আপনার প্রতি অনেক শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
তোমরাও ভালো থেকো। কবি সুলা গাইনকে নিয়ে কাজ করছো জেনে খুব খুশি হয়েছি। মানুষ তাঁর কর্মের জন্য বেঁচে থাকে। সুলা গাইনের নাম এবং কাব্য সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত। রামায়ণরচয়িতা চন্দ্রাবতীর মতো তিনিও বাংলা সাহিত্যের একজন গুরুত্বপূর্ণ মহিলা কবি। জেন্ডার বিবেচনা করলে বাংলা সাহিত্যের দ্বিতীয় মহিলা কবি।


সরোজ মোস্তফা রচনারাশি
গানপার ইন্টার্ভিয়্যু

COMMENTS

error: