করোনা প্যান্ডামিকে ব্যতিব্যস্ত ও বিপর্যস্ত দুনিয়ার গোড়ার দিকটায় দেশের পর দেশে যখন সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং, লকডাউন ও কোয়ারেন্টাইন প্রভৃতি শব্দ ও তৎনিহিত আচার-বিচারের সঙ্গে আমরা পরিচিত হচ্ছি, ঠিক সেইসময় এক দূরভাষ-সাক্ষাৎকারে কেইট উইন্সলেট বলেন যে এই জিনিশগুলা আদৌ মন্দ কিছু নয়। এইগুলার লগে কেইট আগে থেকেই ইউজড-টু। হাউ কাম!
হলিউডস্টার কেইট তখন মনে করায়া দেন যে ২০১১ সনে ‘কন্ট্যাজিয়ন’ নামে একটি সিনেমায় কাজ করেছিলেন তিনি যেখানে এই সিচুয়েশনগুলার প্রবল হাজিরা ছিল। ওইটাও ছিল করোনারই সমধর্মী-সমগোত্রীয় সংক্রমণ নিয়া ছায়াছবি। এবং মুকাবিলার প্রক্রিয়াটাও করোনায় এখন যা করা হচ্ছে, সেই ইম্যাজিন্যারি সিনেমায় প্রায় তেমন-তেমনই করা হয়েছিল। কাজেই, কেইট বলেন, তিনি জানেন যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ভাইরাসের বিরুদ্ধে বেঁচে থাকবার লড়াই ভীতিকর কিছু নয়।
এইবার আমাদেরও মনে পড়বে নিশ্চয় যে কুড়িকুড়ি মার্চের শেষদিক থেকে দেশে-দেশান্তরে আহূত লকডাউনকালে যেসব সিনেমা মানুষ ঘরে বসে দেখেছে সেসবের মধ্যে কেইট-কথিত ‘কন্ট্যাজিয়ন’ ম্যুভিটি শীর্ষস্থানীয়। সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং, কোয়ারেন্টাইন প্রভৃতি আইডিয়াগুলো ওই সিনেমাটি রিলিজের পরপর একদশক আগে যারা দেখেছিলেন এবং ভেবেছিলেন এইগুলা জাস্ট কাল্পনিক জিনিশ, ফিরতিবার দেখতে বসে সবাই বিমূঢ় হয়ে ভাবেন কল্পনার বাস্তব হয়ে ওঠা দেখে।
বেশ কিছুদিন আগে, একদম সম্প্রতিই, কেইট কথা বলেন মার্ক ম্যারনের সঙ্গে। ম্যারনের পডকাস্টে কেইট করোনাকালে তার দিনানুদৈনিকতা নিয়া আলাপ করেন বেশ কিছুক্ষণ। তখন তার মুখে স্বস্তির নিঃশ্বাস শোনা যায় ভ্যাক্সিন নিয়া। কেইটের অশীতিপর বাবা রজার জন উইন্সলেট টিকা নেয়ার পরে মেয়ে কেইট খুবই খুশি, ‘হিউজ রিলিফ’ বলে তিনি নিঃশ্বাস ফেলেন স্বস্তির। নিজে কবে নেবেন এমন প্রশ্নে কেইট বলেন তিনি চান তার চেয়ে বেশি বয়স্করা, বিশেষ করেই বৃদ্ধ ও প্রৌঢ়রা, আগে ভ্যাক্সিনেইটেড হউক, তারপরে তার টার্ন নিশ্চয় আসবে। হ্যাপিলি ওয়েট করতে রাজি আছেন তিনি, বলেন বিদুষী এই টাইটানিকতারকা।
‘অ্যামোনাইট’ সিনেমায় শেষ অভিনয় করেছেন তিনি, যা প্রেক্ষাগৃহে যেয়ে লোকে কবে দেখবে বা আদৌ পারবে কি না দেখতে, এমন প্রশ্নের উত্তরে কেইট চার-অক্ষরের হোপ শব্দটির উপরে জোর দেন। ‘অ্যামোনাইট’ নিয়া শিল্পী অনেকদিন বাদে লোকসমক্ষে আসতে যাচ্ছিলেন, প্যান্ডামিকে ভেস্তে গেল সব। তবে ব্যেটার ডেইজ অবশ্যই দূরে নয়, কেইট মনে করেন।
উল্লেখ করা যাক যে ‘অ্যামোনাইট’ সিনেমাটি রিয়্যাল লাইফ স্টোরি নিয়া বানানো। যুক্তরাজ্যের প্যালিঅন্টোলজিস্ট ম্যারি অ্যানিং এবং বিজ্ঞানী হিসেবে তার দিনযাপন ও ব্যক্তিক টানাপড়েন নিয়া ‘অ্যামোনাইট’ আবর্তিত। কেইট সেখানে ম্যারির রোলটা করেছেন। সঙ্গে আছেন সাওয়ার্স রোন্যান, যিনি অভিনয় করেছেন ব্রিটিশ নারী জীববিজ্ঞানী শার্লোট মার্চিসনের ভূমিকায়। বিবাহিতা শার্লোটের সঙ্গে অকৃতদার খ্যাপাটে মেজাজি ম্যারির যৌনব্যক্তিক জঙ্গম ছবিটিতে উঠে এসেছে।
‘অ্যামোনাইট’ এরই মধ্যে টরোন্টো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দেখানো হয়েছে। অ্যামেরিকায় গেল বছর নভেম্বারে এবং অস্ট্রেইলিয়াতে এই জানুয়ারিতে বেশকিছু থিয়েটারে এইটা দেখানো হয়েছিল, যেমনটা মার্চে ইউকেতে। এইদিকটায়, মানে এই কন্টিনেন্টে, কবে নাগাদ লোকে দেখতে পাবে এমন কোনো কথা আলাপচারিতায় আসে নাই যদিও।
এছাড়াও খবর হলো, কেইট বহুকাল বাদে জেইমস ক্যামেরনের লগে একদল হয়ে কাজ করছেন ‘অ্যাভ্যাটার ২’ সাইফাই সিক্যুয়েলে। এইটা আল্লা চাহে তো ২০২২ নাগাদ বাইরাবে, কেইট জানান।
প্রতিবেদন / মিল্টন মৃধা
গানপারে কেইট উইন্সলেট
কেইটের কথাবাত্রা ধারাবাহিক
- যেভাবে হয়ে ওঠে ‘এসো আমার শহরে’ || শিবু কুমার শীল - March 6, 2025
- Basudeb Dasgupta’s ‘Randhanshala’ The Cooking Place translated by Sourav Roy - March 4, 2025
- ভিক্টোরিয়া অ্যামেলিনা ও যুদ্ধদিনের ইউক্রেনীয় কবিতা || জয়দেব কর - February 17, 2025
COMMENTS