টাইটানিকস্টার কেইট উইন্সলেটের এই ইন্টার্ভিয়্যু ‘গ্যুডহাউসকিপিং’ পত্রিকায় পাব্লিশ হয়েছিল ২০০৭ ফেব্রুয়ারিতে। এরপরে কেইটের ক্যারিয়ার আরও রঙদার আরও শানদার হয়েছে ডাউট নাই। কিন্তু জবরজং প্রসাধিত ম্যুভিপিকিয়্যুলিয়ার সেলেব কেইট নয়, এইখানে এক নখরামিবিহীন অভিনয়শিল্পীর ঘরোয়া আলাপের অন্তরঙ্গ ছবি দেখতে পাবো আমরা। টাইটানিকতারকার স্টারডম নিয়া ভাবিত নয় এই ইন্টার্ভিয়্যুটা। তারচেয়ে বেশি বরং উইন্সলেটের বিবাহিত জীবন, তার সংসার, ঘরকন্না, স্বামীসন্তান, দৈনন্দিন রুটিন ইত্যাদি পিকচারাইজ হয়েছে। এসেছে ন্যাচারাল ফিগারের স্বাস্থ্য লইয়া স্বাভাবিক থাকা কেইটের কথাবার্তা, মাতৃভূমিকায় কেইটের লাইফস্টাইল এবং তার হ্যাপিনেস ইত্যাদি ইত্যাদি।
একটা মুদিখানায় বা গ্রোস্যারি শপে, যেইখানে আমরা নিত্যপ্রয়োজনীয় ভুষিমাল খরিদ করিয়া থাকি, গানপারে এই ইন্টার্ভিয়্যুয়ের পয়লা কিস্তি আপ্লোড করা হয়েছিল গত মাসে, এইখানে এর দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ করা যাচ্ছে। নেক্সট পার্ট, সাপোজড টু বি দি লাস্ট অংশ, প্রকাশের চেষ্টা করা হবে যথাসাধ্য দ্রুত। তবে একটানা ট্র্যান্সল্যাশনকাজে একটা ক্লান্তি তো এড়ানো সম্ভব হয় না। তাড়াতাড়ি পড়া গেলেও তর্জমা তাড়াতাড়ি করাটা ডিফিকাল্টই।
লিজ স্মিথ নিয়েছেন মূল সাক্ষাৎকারটি ইংলিশে। এইখানে বাংলায় ট্র্যান্সলেইট করা হয়েছে। এর আগের কিস্তিটা চাইলে এই লিঙ্ক ক্লিকিয়ে পেয়ে যাবেন ইজিলি।
স্বীকার করতেই হবে কেইট, এইভাবে একটা ভুষিমালের দোকানে এর আগে আমি কাউরে ইন্টার্ভিয়্যু করি নাই। আপনার কনভিনিয়েন্স অনুযায়ী ইন্টার্ভিয়্যুপ্লেস ঠিক করে এক্সপেরিয়েন্সটা খারাপ হচ্ছে না।
দ্যাখেন, এই জায়গাটায় সকালবেলার দিকে আমার মতো যারা বাচ্চাকাচ্চার মা তাদের একটা মিটিং হয়। আমরা একলগে সবাই বসে একটু গল্পগুজব করি। আমার মেয়ের স্কুলের আরও ছয়জন মায়ের সঙ্গে আমি মিলে একটা গ্রুপ আছে আমাদের। মায়েদের গ্রুপ। সেই গ্রুপের একটা পার্ট আমিও। এই দোকানটাই আমাদের সভাস্থল। এইখানে বসে আমরা আমাদের বাচ্চাদের যত্নআত্তি, নিজেদের নিদ্রাভ্যাস, রোজকার আবহাওয়া ইত্যাদি নিয়া আলাপ করি। জিনিশটা আমার ভাল্লাগে। এঞ্জয় করি টাইমটা।
আপনার বাচ্চারা কি আপনার সঙ্গে ট্র্যাভেল করে যখন আপনি সিনেমাকাজের দরকারে দূরের কোনো লোকেশনে যান?
অবশ্যই। বাচ্চাদেরকে একলা ফালাইয়া আমি ফিল্মের কাজে বাইরে থাকি না। আমরা ট্র্যাভেল করি একলগে। এতটুকুনি তিফিল বাচ্চাগুলারে ফেলে আমি কী করে কাজ করব স্বস্তি নিয়া? ব্যাহত হবে সবকিছু। অতএব ওদেরে নিয়া কাজের স্পটে গেলে কাজটাই ভালো হয়। বাচ্চারাই আমার দুনিয়া।
মায়ের ভূমিকায় রিয়্যেল লাইফে কোন জিনিশটা আপনি এঞ্জয় করেন সবচেয়ে বেশি?
আমার এই রুটিনটা ভাল্লাগে। মুর্গিডাকা সকালে ঘুম থেকে ওঠা, তারপর নাশ্তা বানানো, নাশ্তা খাওয়া আর বাচ্চাদেরে সেধে ধরেবেন্ধে খাওয়ানো, দুপুরের লাঞ্চবক্স প্যাক করে দেয়া, তারপর স্কুল ধরে দে ছুট … সব-কয়টা পার্টই ভীষণ এঞ্জয় করি। ভাল্লাগে আমার। এইগুলা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমি জানি যে এই রোজকার তুচ্ছ মুহূর্তগুলোই একটা বাচ্চার লাইফে খুব ক্রুশিয়্যাল।.
এইটা তো সুস্থ ও সবল সন্তান লালনপালন ও তাদের বিকাশের ক্ষেত্রে একটা বিগ পার্ট, তাই না?
হ্যাঁ, তারা ভালোবাসে রোজই শিখছে। এই জীবনের মুহূর্তগুলোর কাছে একটা মানুষ কি চাইবে এবং কীভাবে চাইবে এই জিনিশগুলো শেখা গুরুত্বপূর্ণ। আমার আরেকটা ব্যাপার মনে হয় যে, এই রোজকার স্বাভাবিক স্ট্রাকচারটা তারা শিখুক। আমি কঠোর নীতিবাগিশ মা নই, কিন্তু আবার গা-ছাড়া মাও নই। আমার হাসব্যান্ড, স্যাম, কি বলব, বাবা হিশেবে একটা গা-ছাড়া ঢিলাঢালা ভাব আছে ওর মধ্যে। বাচ্চারা তাদের বাবাকে যেন আঙুলের ডগায় নাচিয়ে ছাড়ে শিশুশয়তানি দিয়া।
আপনি কি আরও সন্তান নিতে চাইবেন?
নিতে পারলে ভাল্লাগবে আমার। এক্ষুনি নিব পরিকল্পনা নাই যদিও। দুইটারে লইয়া আমি এখনও গোছায়া উঠতে পারি নাই। এদের লগে একেকটা দিন যেন অজানা অ্যাডভেঞ্চার। বিপদসঙ্কুল এবং অসাধারণ শিহরণময়। একেকটা দিনের দাঙ্গাহাঙ্গামার বর্ণনা দিলে একটা প্রামাণ্য বই হয়ে যাবে। একদম রায়ট।
ইদানীং আপনাকে ভীষণ ব্যস্ত দেখা যায়। যেমন ক্যারিয়ার নিয়ে তেমনি বাচ্চাদেরে নিয়েও সংসার নিয়েও সমান কমিটেড আপনি।
দেখুন অভিনয় করা, এবং অভিনয় থেকে জীবিকানির্বাহ, আমার কাছে খুবই ইম্পোর্ট্যান্ট। এমন না যে দুম করে সেটে যেয়ে একটাকিছু করে দিয়া আইলাম আর নিজের সেরাটা বাইর হইল, না, আমার অত প্রতিভা নাই। আমারে প্রিপারেশন নিতে হয়। আমি হোমওয়ার্ক করি স্কুলশিক্ষার্থীর মতো নিয়মিত। অভিনয় নিয়া আমি খামখেয়ালি আচরণ কোনোদিনই করি নাই। প্রিপারেরশন নেয়ার এই পার্টটা আমি নিজের সন্তুষ্টির জন্যই করি। ভাল্লাগে এই হোমওয়ার্কের সময়টা।
[ইংরেজিতে এই ইন্টার্ভিয়্যু গ্রহণ করেছেন লিজ স্মিথ। মূল ইন্টার্ভিয়্যু ২০০৭ সনে ফেব্রুয়ারি নাগাদ ছাপা হয়। বিদিতা গোমেজ এইটা বাংলায় গানপারের জন্য অনুবাদ করেছেন। ইন্টার্ভিয়্যুটা আগামী কিস্তি দিয়া শেষ হবে। — গানপার]
… …
- যেভাবে হয়ে ওঠে ‘এসো আমার শহরে’ || শিবু কুমার শীল - March 6, 2025
- Basudeb Dasgupta’s ‘Randhanshala’ The Cooking Place translated by Sourav Roy - March 4, 2025
- ভিক্টোরিয়া অ্যামেলিনা ও যুদ্ধদিনের ইউক্রেনীয় কবিতা || জয়দেব কর - February 17, 2025
COMMENTS