‘জীবনের সমান চুমুক’ আশির অন্তে এসে প্রকাশিত হলেও কবির মনোবিশ্ব তখনো পূর্ববর্তী দশকি বলয়ে সত্তার নির্ণয় সন্ধানে নিমগ্ন ছিল। কবিতার পালাবদলের সঙ্গে কদম মিলিয়ে চলতে অভ্যস্ত খোন্দকার আশরাফ হোসেনের সময়-সংযোগ প্রবণতায় পরের দুই দশকে পরিবর্তন ঘটে যায় এবং নব্বইয়ে অমোঘ হয়ে ওঠা জীবনবেদ ও ভাষাঅঙ্গে নিজেকে তিনি একাত্ম করেন। তো এই সন্ধি ও বিচ্ছেদের যোগফলে আশির মধ্যভাগে দেখা দেওয়া কবিগণ ভিন্ন ভ‚মিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তাদের পাল্লায় পড়ে আস্থাশীলতার পুনরাবৃত্তি বা ঘুরেফিরে সেখানে নোঙর খোঁজার প্রবণতা রূপ পাল্টাতে শুরু করে। নব্বই থেকে শূন্য দশক জুড়ে ‘গো-ক্ষুরের মতো বিভাজিত’ সময়ের কোপানলে দগ্ধ ব্যক্তি তার ব্যক্তি-একক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার স্পর্ধা হারিয়ে ফেলে।
আশির দশকের কবি, আশির দশকের কবিতা
নব্বইয়ের কবি, নব্বইয়ের কবিতা
আশির দশকের মাঝামাঝি ‘তিন রমণীর ক্বাসিদা’ (১৯৮৪) কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে বাংলা আধুনিক কবিতার জগতে আত্মপ্রকাশ করেন খোন্দকার আশরাফ হোসেন। কবির অন্যান্য কবিতাবইয়ের মধ্যে রয়েছে ‘ পার্থ তোমার তীব্র তির’ (১৯৮৬), ‘জীবনের সমান চুমুক’ (১৯৮৯), ‘সুন্দরী ও ঘৃণার ঘুঙুর’ (১৯৯১), নির্বাচিত কবিতা (১৯৯৫), ‘যমুনাপর্ব’ (১৯৯৮), ‘জন্মবাউল’ (২০০১) প্রভৃতি। প্রকাশিত প্রবন্ধগ্রন্থের মধ্যে ‘বাংলাদেশের কবিতা : অন্তরঙ্গ অবলোকন’ (১৯৯৫), ‘কবিতার অন্তর্যামী : আধুনিক উত্তর আধুনিক ও অন্যান্য প্রসঙ্গ’ (২০১০), ‘রবীন্দ্রনাথ ইয়েটস গীতাঞ্জলি’ (২০১২), ‘বাঙালির দ্বিধা ও রবীন্দ্রনাথ এবং বিবিধ তত্ত্বতালাশ’ (২০১৩) উল্লেখযোগ্য। অনুবাদ করেছেন তিনি পাউল সেলানের কবিতা ছাড়াও অনেক অনেক গদ্য, পদ্য ও সাহিত্যতত্ত্বের টেক্সট। একবিংশ সাহিত্যপত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক হিশেবে তিনি বাংলাদেশের তরুণ কবিসাহিত্যিকদের কাছে ব্যাপক গ্রাহ্য। জন্ম ১৯৫০। মৃত্যু ২০১৩। — গানপার
- ভোটবুথ, ভূতভোট, বজরঙবলি ও বেবুন - November 26, 2024
- ক্বারী আমীর উদ্দিন সান্নিধ্যে সেদিন || তারেক আমিন - November 20, 2024
- পোয়েট ও তার পার্টনার - October 19, 2024
COMMENTS