গানপারে ম্যাকের কলাম : বাঁকা চোখে দেখা
মাকসুদুল হক ওর্ফে ম্যাক হকের এই কলাম ঘটমান বর্তমান বাংলাদেশের চাল্লু তৎপরতাগুলা সাদাসিধা সাপোর্টারের দৃষ্টিতে নয়, দেশপ্রেমের নাম ভাঙায়া ভানভনিতায় বিলীন বুদ্ধিজীবিতায় নয়, পেশাদারের চুক্তিমানা আপোসকামিতায় নয়, এই কলাম নিত্যবৃত্ত নতজানু সময়টাকে দেখতে চায় ক্রিটিকের দৃষ্টিতে। এই ক্রিটিক কোনো সিন্ডিকেটবান্ধব স্তুতিগাথা নয়, এ একেবারেই বিকল ব্যবস্থার পক্ষ-ধসানো কথাচক্র, চাঁছাছোলা টাইমের বয়ান।
ম্যাক সবসময় বাঁকাচক্ষু ও ঠোঁটকাটা, কারো তোয়াক্কা বা কোনোকিছুর পরোয়া না-করে এই কণ্ঠ গনগনে লেলিহান সত্যান্বেষী। বিগত শতকের নব্বইয়ের দশকের উপান্তে যে-গনগনে ম্যাকের অগ্নিহল্কা পাওয়া গেছিল ‘চলতিপত্র’ সাপ্তাহিকের ‘এই নিষিদ্ধ সময়ে’ শীর্ষক কলামপ্রবাহে, যে-ম্যাকের লেলিহান লাভা ‘আমি বাংলাদেশের দালাল বলছি’ বইয়ের পাতায় পাতায় বিধৃত, সেই তীব্র তোখা ম্যাক আবারও হাজির এইখানে।
ম্যাক কী নিতান্তই নিরপেক্ষ? অবশ্যই না। ম্যাকের পক্ষটাও পরিস্কার ফিগার-আউট করা যায় তার সেই বিখ্যাত ‘(অ)প্রাপ্ত বয়স্কের নিষিদ্ধ’ অ্যালবামের ‘আবার যুদ্ধে যেতে হবে’ গান থেকে : “নিরপেক্ষের পক্ষ নিয়ে লড়ে যাব আমরা লড়াকু জনতা” … আর, কারা এই ‘নিরপেক্ষ’? ম্যাক এই কলামে পরিস্কার গলায় শব্দটা বারবার বলতেসেন, ‘জনগণ’। যদিও বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্ত ও বুদ্ধির সমস্ত বৃত্তি থেকে এই ‘জনগণ’ মিসিং, মিসড-আউট। শুধু মাকসুদুল হক এদেরে ভোলেন না, বারবার ফিরায়া আনেন তার কাজে তার কথায় এই বাদ-পড়া বাংলাদেশের জনগণটারে।
‘বাঁকা চোখে দেখা’ আমাদের এই আঁধিসঙ্কুল সময়টার খানাখন্দে টর্চ ধরে ধরে দেখাবে, একটু চোখকান খোলা রাখবার আর পা চালায়া হাঁটবার তাগিদ যোগাবে, ন্যাভিগেইট করবে আমাদেরে। — গানপার
সাংবাদিকতা, মিডিয়ামাফিয়া ও নিরপেক্ষের পক্ষ || মাকসুদুল হক
গেল কয়েকদিনে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের স্বাস্থ্য-মন্ত্রণালয়ে অবৈধ আটক, জেলে প্রেরণ ও দ্বিতীয় দফা শুনানির পর জামিন মঞ্জুরের ঘটনা বেশকিছু অপ্রীতিকর সত্য আমাদের মুখোমুখি করেছে।
আমরা যা-কিছু দেখেছি, শুনেছি ও পড়েছি তা হয় রাষ্ট্র অথবা মিডিয়ার ভাষ্য। যেহেতু তৃতীয় কোনো পক্ষ নেই এ-দুটি পক্ষের যে-কোনো একটির কথা বাছাই করে বিশ্বাস করা ছাড়া কোনো উপায় কি আছে? এই অটল সাদাকালো চিত্র ছাড়া মস্তিষ্কের ছাইরঙা পদার্থ ব্যবহার করে রঙধনুর বিভিন্ন রঙ অনুসন্ধান করা কি কোনো অপরাধ নাকি পাপ?
রাষ্ট্র ও মিডিয়া উভয়ই একে অপরের সম্পূরক। দিবানিশি ‘জনগণের স্বার্থ’ ছাড়া অন্য স্বার্থের ধার ধারে না বললেও তাদের সব কথাই কি বিশ্বাসযোগ্য? একে অপরের পিঠ চুলকিয়ে ‘কী আরাম’ বলে, অথচ ‘খামচি’ লেগে গেলেই আক্কেলগুড়ুম — অন্ধের মতো এদিক-সেদিক হাতাতে থাকে, পায় না কূলকিনারা! প্রতিষ্ঠান ও মিডিয়ার এই তথাকথিত নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন করা কি অন্যায়, ‘বেয়াদবি’, নাকি ‘অগণতান্ত্রিক’?
‘নিরপেক্ষের পক্ষ’ বাংলাদেশে অস্তিত্ব না-থাকলেও বহির্বিশ্বের বহু দেশে আছে। তাদের বলা হয় ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট অ্যান্ড ফ্রি মিডিয়া’, যারা জনগণ ছাড়া কারো পক্ষ নেয় না, বা কোনো স্বার্থের তোষামোদি করে মন, মেধা ও মস্তিষ্ক বিক্রি করে না।
বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ হতদরিদ্র জনগণের অতি নগণ্য একজন আমি, এবং দাবি করছি এই দারিদ্র্যই আমাদের শক্তি। সেই দাবির উপরে ভর করে কিছু তিক্ত প্রশ্ন করবার অধিকার নিশ্চয়ই আরো দশজনের মতো আমারও আছে। সেই মুক্তচিন্তার অধিকারের বলে, নিরপেক্ষের পক্ষ থেকে আমার এই পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসন্ধান, জনগণের সুবিধার্থে প্রেরণ করছি :
মূল বিষয় হচ্ছে দুর্নীতি, — এবং সরকারি মন্ত্রীমিনিস্টার, আমলা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের কেরানি, পিয়ন, ড্রাইভার পর্যন্ত সবাই ঘুষ খায়, অর্থ আত্মসাৎ করে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে বা আপাদমস্তক দুর্নীতিপরায়ণ — এসব কি ‘নতুন’ কোনো কেচ্ছা? পক্ষান্তরে মিডিয়া যে শতভাগ ‘দুর্নীতিমুক্ত’ সত্তা, তা কি বিশ্বাসযোগ্য? ঝেড়ে কাশি দিয়ে অনেকে না বলতে চাইলেও — আমি চুপ থাকতে নারাজ।
যা অনস্বীকার্য, এই ভয়াল মহামারীর মাঝেও রাষ্ট্রের বহু কর্মচারী নির্লজ্জভাবে দুর্নীতিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছেন। গণমাধ্যম থেকে সামাজিক যোগাযোগ মিডিয়াতে এ নিয়ে গেল একবছরেরও অধিক সময় এ-ধরনের একাধিক রিপোর্ট আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। জাতির এই ক্রান্তিলগনে এহেন ঘৃণিত কার্য কেবল অপরাধ নয়, এ ক্ষমা-অযোগ্য পাপ।
তবে দুর্নীতির জন্মবীজ কীভাবে বপন করা হয় ও তার ব্যবসা/ধান্দার সাথে সম্পর্ক কী তা নিয়ে আলোকপাত করা যাক :
দুর্নীতির শক্ত ভিতে গোড়াপত্তন করার মূল উপকরণ, অযাচিত ক্ষমতা। সেই স্বৈরশাসকদের আমল থেকে ‘গণতান্ত্রিক সরকার’ আমল পর্যন্ত অযাচিত ক্ষমতার নেপথ্যে দেখা গেছে কে কজন মন্ত্রীমিনিস্টার, আমলা, সচিব বা তাদের পিএস ছাড়াও কজন ‘দলের উচ্চপর্যায়ের’ নেতা, পাতিনেতা এমনকি দলীয় মাস্তানের সাথে নিজের কতটা ‘খাতির’ সেটাই মুখ্য। এ-সকল ‘যোগ্যতার’ বলে কে কতটা ক্ষমতা অর্জন করতে পারে, ক্ষমতাবান, বা ক্ষমতার করিডোরের কতটা কাছাকাছি, তা নির্ণয় করা এখন হয়ে গেছে আমাদের স্বভাবসুলভ দস্তুর।
সমস্যা হচ্ছে এই ‘ক্ষমতার’ বলে যে-কোনো টাউটবাটপার বা ‘স্মার্ট চোর’ দেশের হতদরিদ্র জনগণের টাকা বছরের পর বছর লুণ্ঠন করে পাচ্ছে সমাজে স্ট্যাটাস, স্যালুট, সালাম আর আদাব; পাচ্ছে অভিজাত শ্রেণিতে খুব সহজ অভিগমন।
‘অপরাধ যে করে আর অপরাধ যে সহে — আইনের চোখে দুজনই অপরাধী’ — এসব স্বচ্ছ গালভর্তি বুলি একসময় শুনতে পেতাম, কিন্তু আজ দুর্নীতির এই ‘স্বাভাবিকীকরণের’ খপ্পরে পড়ে আমরা যে সবাই দুর্নীতি না-করেও নিভৃতে ‘দুর্নীতিবাজ’ হয়ে যাচ্ছি, এ-কথা কি কেউ স্বীকার করছি?
০১/১১-এর পরবর্তী সময়টাতে যদি একটু মনোনিবেশ করি, দেখা যাবে তথাকথিত কিছু বিজ্ঞ লোক, ধনী, বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিক কর্মী সহ পত্রিকার সম্পাদক, সাংবাদিকদের ‘নথি ব্যবসার’ হুলস্থূল কাণ্ড। ক’জন ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক নেতা ফখরুদ্দিন/মইনুলশাহি গং-এর পা চেটে ফায়দা লুটেছেন, তা-ও আমরা বেমালুম ভুলেই গিয়েছি। এখন এসব লোকই জনগণের ‘নৈতিকতার অভিভাবক’ সেজে আমাদেরই উপর ছড়ি ঘোরাচ্ছেন? বাহ! কী দাম্ভিকতা!
সত্যি আমরা একটা অদ্ভুত জাতি! যতই নিজেদের ধুরন্ধর মনে করি, যতই ফেইসবুক টিপাটিপি করে বিপ্লবী, প্রগতিশীল বা ‘আধুনিক’ মনে করি — সত্যটা হচ্ছে আমরা বোকার স্বর্গে বাস করছি ও আমাদের এই গণতন্ত্রের অপর নাম ‘ঐচ্ছিক গবেটতন্ত্র’, এবং তার নির্ভেজাল নেতৃত্ব দিচ্ছে মেইনস্ট্রিম মিডিয়া বা গণমাধ্যম।
প্রবাদবাক্যও বাস্তবতা। “চুরিবিদ্যা মহাবিদ্যা যদি না পড় ধরা” — এই ‘কর্পোরেট মিডিয়ার’ জামানায় কে কার চেয়ে কত বড় চোর তা ‘প্রমাণ’ করা হয়ে উঠেছে আমাদের একমাত্র হালাল বিনোদন। এক চোর আরেক চোরের চুরি চূড়ান্ত না করা অব্দি এক বীভৎস ধুম্রজাল সৃষ্টি করে বোকা জনগণকে ধোঁকা বারবার দিয়েই যাচ্ছে। যখন দেখবেন সবকিছু ‘ব্যাক টু নর্মাল’ আর কোনো ‘চোর চোর’ উচ্চবাচ্য নেই, আমরা শিউর হতে পারি হয় ‘কেইস ফিট’ বা ‘নেগোসিয়েশন’ চলছে। রোজিনার আটক থাকার সময় একই রকম নেগোসিয়েশন চলেছিল ৫ ঘণ্টার অধিক সময় তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে নেগোসিয়েশন কেন ‘ব্যাকফায়ার’ করল তা বোঝার জন্য ধ্যান দিয়ে এই লেখাটা পড়তে থাকুন।
মিডিয়ামাফিয়া নামক অর্কেস্ট্রার কাজ হলো তাল-বেতাল পাকিয়ে সুর-বেসুর মিশিয়ে ফিউশন করে ভয়ঙ্কর অসুরের ধ্বনি — বা কনফিউশন — সৃষ্টি করা।
মেধা-মনন আর যুক্তির চর্চা না থাকার কারণে আমরা সজ্ঞানে বেছে নিয়েছি মোল্লাতন্ত্রের mob mentality। আমরা ধরেই নিয়েছি কর্পোরেট মিডিয়ার কিছু ‘ইমানদার লাঠিয়াল’-দের উস্কানিতে সবাই মিলেমিশে একটু অনলাইন চিল্লাচিল্লি লাগিয়ে দিলেই দুর্নীতি ভয় পেয়ে পালাবে। হাস্যকর বিষয়, এসব চিল্লাচিল্লির ‘হায়াৎ’ বড়জোর একসপ্তাহ থেকে দশদিন — এর বেশি না।
অবধারিতভাবে একই প্রবঞ্চনার ‘অ্যাডভ্যালু প্যাকেজে’ অন্তর্ভুক্ত থাকবে ‘টিভি টকশো’ নামের যন্ত্রণাকর অত্যাচার। ‘আইওয়াশ’ শুরু হয় ‘তকবাজদের’ মৌখিক মাস্তানি সহ verbal diarrhea-র সার্কাস। ধৈর্য ধরে সহ্য করা ছাড়া কিছুই কি করার আছে? নেই; — কারণ যে-কোনো ইস্যুতে ঘটনাপ্রবাহ সবই এক ও অভিন্ন — খুবই ক্লান্তিকর, খুবই প্রেডিক্টেবল, খুবই রিপিটেটিভ, খুবই বোরিং।
রোজিনা গ্রেফতার হবার পর যে-পরিমাণ সমর্থন জনগণ সহ শিল্পী, মিডিয়াকর্মী, আন্তর্জাতিক মিডিয়া ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছ থেকে পেয়েছেন ও পাচ্ছেন — তাতে খুবই পরিষ্কার উনার সাথে ভয়াবহ ধরনের গলদ হয়েছে। এহেন আচরণ রাষ্ট্র বা তাদের কর্মচারী একজন পেশাদার সাংবাদিক, একজন নারী, এক শিশুর মায়ের সাথে করবে, — তা কোনোভাবেই বরদাশত করা যায় না — আমিও করছি না।
তবে সাংবাদিকতা ‘পেশা’ আসলেই কি? — এ-বিষয়ে অনেকের অস্বচ্ছ ধারণা থাকার কারণে কিছু জিনিস এখানে স্পষ্ট করা প্রয়োজন :
প্রথম : সাংবাদিকতা এক ‘মহৎ পেশা’ হলেও, সব সাংবাদিকই দুর্নীতিপরায়ণ তা ঢালাওভাবে বলা যাবে না। প্রকৃত অর্থে সৎ ও নিষ্ঠাবান সাংবাদিকেরও কোনো কমতি নেই ও রোজিনাকে আমি সেই কাতারে রাখলাম।
দ্বিতীয় : ‘পেশাদার সাংবাদিক’ বা মিডিয়াকর্মীর অর্থ, তারা কোনো-না-কোনো পত্রিকা বা ‘মিডিয়া গ্রুপ’-এর বেতনভোগী কর্মচারী ও যে-কোনো ‘চাকরির’ মতো তাদের আছে হাজারো রকমের সীমাবদ্ধতা। এইসব সীমাবদ্ধতার বেড়াজাল ভাঙার চেষ্টার দায়ে কত সাংবাদিকের চাকরি নট হয়েছে, তার সংখ্যাও কিন্তু কম না।
তৃতীয় : সাংবাদিকের দায়িত্ব হলো বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ উদ্ঘাটন করে জনগণ সহ রাষ্ট্রের নজরে নিয়ে আসা; যা পুলিশ বা গোয়েন্দা সংস্থাদের দ্বারা সম্ভব না তা সাংবাদিকদের দ্বারা একেবারেই সম্ভব। রাষ্ট্র নিজেও সাংবাদিকদের গোয়েন্দাবৃত্তির জন্য ‘সোর্স’ হিসেবে নিয়োগ করে, তা এখন ওপেন সিক্রেট।
চতুর্থ : তথ্য বা ইনফর্মেশন জোগাড় করার জন্য সাংবাদিকরা যে-কোনো ন্যায়-অন্যায়, আইনি-বেআইনি কৌশল অবলম্বন করতে পারে ও করে। এটা নতুন কোনো বিষয় না। নিষ্ঠাবান সাংবাদিকদের একটিমাত্র কাজ — যে-কোনো উপায়ে, যে-কোনো মূল্যে তথ্য জোগাড় করা; — একেই বলা হয় ‘হার্ডকোর জার্নালিজম’।
প্রশ্ন : তাহলে এ-সকল কর্মের কে-ইবা চূড়ান্ত স্বত্বভোগী? খুব সহজ উত্তর : দেশের জনগণ।
তবে ব্যক্তি সাংবাদিকের আরো বড় দায়িত্ব বর্তায়। কীভাবে উদ্ঘাটিত তথ্য জনগণের সামনে প্রচার করবে? এখানেই সব তাফালিং এসে হোঁচট খায়। এর কারণ?
বাংলাদেশের কমবেশি সব পত্রিকা চলে কোনো-না-কোনো ধনাঢ্য ব্যবসায়ী গ্রুপের ছত্রছায়ায়। একটি পত্রিকা চালাতে যে-পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করতে হয় তা কোনো একক ব্যক্তিচেষ্টায় চালানো প্রায় অসম্ভব। তাই বড় কোনো ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর অর্থায়ন খুবই প্রয়োজনীয় ও তা যুক্তিসঙ্গত। তবে নিঃস্বার্থে কি কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান টাকা বিনিয়োগ করে? অবশ্যই না।
এই ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষেত্রে অঢেল কালো টাকা হাতের নাগালে। লাভ হোক আর লোকসান হোক — মিডিয়াতে বিনিয়োগ করে কালো টাকা সাদা করা প্রাথমিক ও মুখ্য কৌশল। এছাড়া ‘বাড়তি সুবিধা’-ও আছে। যেমন রাজনৈতিক শক্তি ও প্রতিপত্তি বিস্তার, যা দ্বারা ‘অতন্দ্র প্রহরীর’ ন্যায় ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুর কাছধারে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে ২৪/০৭/৩৬৫ দণ্ডায়মান থাকা সম্ভব।
নিরপেক্ষের কোনো পক্ষ না থাকলেও, মিডিয়াতে ‘মালিক পক্ষ’ বলেও একটা পক্ষ আছে ও তারাই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে নির্ধারণ করে জাতির কোন ‘পক্ষকে’ সমর্থন করবে, বা কোন রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক, কায়েমি স্বার্থকে প্রশ্রয় দেবে। উপরন্তু আছে বহুজাতিক বেনিয়া বিজ্ঞাপনদাতা, দেশি ও বিদেশি কোম্পানি সহ ভিনদেশের গোয়েন্দা স্বার্থ ইত্যাদি।
সকল ধরনের দুর্নীতির বিচার হোক, তদন্ত হোক ইত্যাদি ধারাবাহিক হুঙ্কারে কখনোই কি শুনছেন ‘মিডিয়ার দুর্নীতি’ তদন্ত বা বিচার হোক? না শোনেননি, সম্ভবত শুনবেনও না।
বরং উল্টাটা শুনবেন। জনগণকে অকপটে ধারণা দেয়া হয়েছে মিডিয়া এতটাই ভয়ঙ্কর ও শক্তিশালী এক চিজ যে সে যা-ইচ্ছা তা-ই লিখতে পারে, যা-ইচ্ছা তা-ই বলতে পারে এবং তারা সকল জবাবদিহির ঊর্ধ্বে। এছাড়া সাংবাদিক হলো খুবই ‘সাংঘাতিক’ তবে একান্ত ‘মাসুম বিপ্লবী সত্তা’।
এ-সকল ‘ফেরেশতা’-দের কাজ সঠিক হোক আর বেঠিক হোক হাততালি দিয়ে সমর্থন করা, বা তারা বিপদে পড়লে ‘মানববন্ধন’ নামের সেল্ফি তোলার মূর্খ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত থাকা, বা সুশীলতন্ত্র ক্লাবের ‘বিশিষ্টজনের বিবৃতি’ গুরুত্ব দিয়ে বিশ্বাস করা আমাদের একান্ত ‘ফরজ’ দায়িত্ব; অন্তত ফেইসবুকীয় পাব্লিকদের তা-ই বদ্ধমূল ধারণা।
মিডিয়ার স্বাধীনতাতে আমিও প্রচণ্ড বিশ্বাসী, কিন্তু স্বাধীনতার সাথে আসে দায়িত্ববোধ। ‘দায়িত্বহীন স্বাধীনতা’ বলে পৃথিবীতে কোনো স্বাধীনতা নেই, এই কথাটাই বাংলাদেশের মিডিয়া অসাধু সিন্ডিকেটের চাপে পড়ে অহরহ ভুলে যায় — মিডিয়াকে করা হয় বিতর্কিত ও দিকভ্রান্ত।
গণমাধ্যম বা মিডিয়া প্রকারান্তরে ‘ব্যবসা’। ব্যবসা যদিও কোনো অশ্লীল শব্দ না, মাঠপর্যায়ে রোজিনার মতো সাহসী সাংবাদিক এই ব্যবসায়িক jigsaw puzzle, অর্থাৎ সরু করাত দিয়ে কাটা বিশাল চিত্রের অতি নগণ্য এক টুকরা মাত্র।
এসব নীতিবান সাংবাদিকদের ব্যবসায়িক স্বার্থে ব্যবহার করা যায় আবার অপব্যবহারও করা যায়। একাধিকবার কেনাও যায়, বিক্রিও করা যায় এবং সবই ঘটে তাদের অজান্তে। তারা পেশাদারি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ধরা পড়ে গেলে চিলিচিল্লি ব্রিগেডকে নিয়োগ করে পুরা বিষয়টা অন্য খাতে প্রবাহিত করে চোখ পাল্টি দেয়া যায়। ক্ষেত্রবিশেষে এদের ‘খর্চার খাতায়’ পর্যন্ত রাখা যায়।
খুবই অবাক লাগে ভাবতে যে রোজিনাকে পাঁচঘণ্টা অবৈধভাবে আটক রাখার সময় ‘প্রথম আলো’-র সম্পাদক বা মালিকপক্ষের লোকগুলো কি করছিলেন? উনারা স্বাস্থ্য-মন্ত্রণালয়ে ছুটে গিয়ে মন্ত্রীর সাথে সরাসরি দেখা করে তার হস্তক্ষেপের অনুরোধ করেছেন, এমন রিপোর্ট কি কেউ দেখেছেন?
সব মিডিয়া নিজেদের একেকটি ‘পরিবার’ বলে দাবি করলেও, এ-যাত্রা এসব পারিবারিক ফালতুমির স্যাম্পল তো দেখতেই পেলাম। রোজিনা আটক হবার পাঁচঘণ্টার ভেতরেই ‘পরিবার’ থেকে ত্যাজ্য হয়ে বনে গেলেন ‘পেশাদার সাংবাদিক’। সংশ্লেষণে এর অর্থ ‘আমাদের পত্রিকায় চাকুরি করা চাকর’। আত্মরক্ষার্থে কোনো-এক আগামীতে রোজিনার কাঁধের উপরে সব দায় চাপিয়ে দিলেও অবাক হবার কিছুই নেই।
‘ডেইলি স্টার’-এর বুধবার ১৯ মে সংখ্যায় সম্পাদক মাহফুজ আনাম-এর দীর্ঘ কমেন্ট্রি পড়লাম। উনি রোজিনা ইসলামের বোন সাবিনা পারভীন-কে উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছেন — “রোজিনা সচিবালয়ে গিয়েছিল একজন ‘সোর্স’-এর কাছ থেকে কিছু নথি ও দলিল যোগাড় করার জন্য” … বিলকুল!
সাংবাদিক কখনো তার অ্যাসাইনমেন্ট নিজে ঠিক করে না। পত্রিকা নিজেই তা সেট করে দেয়, তাই স্পষ্টত ‘প্রথম আলো’-র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সহ মালিকপক্ষ যে এই ব্যর্থ ‘স্টিং অপারেশন’-এর বিষয় ওয়াকিবহাল ছিলেন তা হাল্কার উপরে ঝাপসা বাষ্পের মতো বোঝা গেলেও বোঝা যেতে পারে।
যে-দলিলগুলো হস্তান্তর করার সময় রোজিনা ধরা পড়েন তা বলা হচ্ছে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সদ্য-স্বাক্ষরিত ‘করোনা ভ্যাক্সিন’ সরবরাহ ও বাংলাদেশে উৎপাদন করার জন্য ‘গোপন চুক্তি’ বা নন-ডিসক্লোজের অ্যাগ্রিমেন্ট। অর্থাৎ স্বাস্থ্য-মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিপরায়ণ কর্মচারীদের হাতে এই ‘গুরুত্বপূর্ণ ও গোপনীয়’ নথি অলরেডি ডেলিভারির জন্য রেডি ছিল।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদয় বললেন, “এই দলিল ফাঁস হয়ে গেলে দেশের অনেক ক্ষতি হতো” — তা যদি সত্যই হয়ে থাকে যে প্রশ্নগুলো অনেকেই করছেন : কি করে এত গুরুত্বপূর্ণ ও গোপনীয় নথি প্রকাশ্যে উন্মীলিত থাকে? কি করে যে-কোনো ব্যক্তি পিএস-এর অবর্তমানে তার কক্ষে ঢোকে — নথি ক্যামেরাবন্দি বা ব্যাগে ভরে টুক্লিফাই করতে পারে?
এই নথি তো পিএস দূরের কথা, মন্ত্রী মহোদয়ের কড়া হেফাজতে কেবল থাকার কথা নয়, তা একান্ত বাঞ্ছনীয় রাষ্ট্রীয় কর্তব্য ছিল বৈকি। এ-প্রশ্নগুলোর সদুত্তর না দিয়ে আগড়ুমবাগড়ুম কথা বলে পাশ কাটাবার অভিপ্রায় স্বাভাবিকভাবেই ‘ডাল মে কুছ কালা হ্যয়’ চিন্তার দিকে জনগণকে ধাবিত করেছে ও ভবিষ্যতে আরো করবে।
স্বাস্থ্য-মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে নিদেনপক্ষে ‘কর্তব্যের অবহেলা’ অর্থাৎ ‘নেগ্লিজেন্স অফ ডিউটি’ (একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ) অধীনে মামলা বন্দোবস্ত করা যায় না? যেহেতু একহাতে কখনোই তালি বাজে না — যে-সকল রাষ্ট্রীয় কর্মচারী এই নথি সরাতে চেয়েছিল, তাদেরকেও রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে আনিত অনুরূপ ‘রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা অ্যাক্ট’-এর অধীনে অতি জরুরি ভিত্তিতে পাকড়াও করা হোক।
ফিরে আসা যাক নথির বিষয়ে। করোনা ভ্যাক্সিন সংক্রান্ত দুটি গোপন সমঝোতা চুক্তির মূল্য কি হতে পারে? সমগ্র বিশ্বে এ-মুহূর্তে সবচাইতে রমরমা ব্যবসা হলো ভ্যাক্সিন। তাই বাংলাদেশের ১৬ কোটি জনগণের প্রয়োজনীয় এই ভ্যাক্সিনের মূল্য লক্ষ নাকি কয়েক হাজার কোটি টাকা তা কেবল অনুমেয়।
সাম্প্রতিক অতীতে টেস্টিংকিট, মাস্ক ও পিপিই-র সরবরাহের ব্যবসা/ধান্দায় আমরা দেখেছি বিভিন্ন ব্যবসায়িক স্বার্থ ছাড়াও শক্তিধর সিন্ডিকেটের লম্ফঝম্প। নির্লজ্জতার সীমা অতিক্রম করে কি পরিমাণের মিডিয়া লবিং এই অতিপরিচিত ও চিহ্নিত মহল করেছে তা কমবেশি আমরা সবাই প্রত্যক্ষ করেছি। সরকার এসব ভেজাল থেকে দূরে থাকার জন্যই কি এই গোপন চুক্তিগুলা করেছিল? আল্লাহ মালুম।
এই গোপনীয় চুক্তিতে এমন কি আছে, কারই-বা এতটা কৌতূহল? যেহেতু এটা ব্যবসায়িক ডিল, প্রথম কৌতূহল অবশই ব্যবসায়ী মহলের থাকারই কথা। অনেকভাবেই তা কাজে লাগানো যেতে পারে —
এক : চুক্তির স্পর্শকাতর কোনো অনুবিধির দোহাই দিয়ে সরকারকে বিব্রত বা ব্ল্যাকমেইল করা।
দুই : যেভাবে হোক এই সম্ভাব্য ব্যবসাতে নিজের বা সিন্ডিকেটের ভাগবাটরা নিশ্চিত করা।
তিন : বাংলাদেশ ‘চুপিচুপি’ কি করছে ও তা কিভাবে প্রতিহত বা সম্পূর্ণ বন্ধ করা যায়, সেও এক মহাধান্দা।
চার : বিদেশি রাষ্ট্র ও তার গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অবশ্যই জানার আগ্রহ থাকবে। কত টাকা বিদেশিদের কাছ থেকে হাতানো যাবে এই নথি বিক্রি করে, তা-ও অনুমেয়।
মাহফুজ আনামের লেখাতে আবারো ফেরা যাক। উনি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছেন — “রোজিনা যা-কিছুই করে থাকুক না কেন, সে করেছে কর্তব্যপালনরত অবস্থায় ও পেশাদারি দায়িত্ব থেকে। এখানে তার ব্যক্তিগত কোনো অভিসন্ধি ছিল না। বিষয়টা ছিল নিছক সাংবাদিকতা ও তা ছিল সম্পূর্ণ জনগণের স্বার্থে” — রিয়্যালি?
প্রশ্ন : আপনাদের এই ‘জনগণ’ নামের মালগুলা কে? আপনারা কি খেটে-খাওয়া হতদরিদ্র মানুষের কথা ঠাউরাচ্ছেন? এমন কী উল্লেখযোগ্য কাজ আপনারা এই মহামারীর সময় করেছেন যাতে বলা যেতে পারে আপামর জনগণ উপকৃত হয়েছে?
“হস্পিটালে সিট নাই, আইসিইউ নাই, অক্সিজেন নাই, হায় হায় হায় হায়” রব তুলে মৃত্যুর ভয়, বিষণ্ণতা ও আতঙ্ক ছড়ানো ছাড়া অন্যকিছু যে করেছেন তার কোনো প্রমাণ অন্তত আমি পাইনি। না আছে আপনাদের sense of humour, না আছে জনগণকে positive vibe দেবার কোনো ক্ষমতা।
খুবই মুষ্টিমেয় ও ফ্যাশনেবল ইংরেজি বোঝা (বা না-বোঝা) তথাকথিত ‘অভিজাত শ্রেণীর’ মানুষ আপনাদের কথা বিশ্বাস করে কারণ আপনারা তাদের রুচি, তাদের ‘মূল্যবোধ’, তাদের কায়েমি স্বার্থের আকাঙ্ক্ষাকে পালিশ করে চকচকা রাখেন, কেবল আপনাদের ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক স্বার্থের কারণে। যে-‘জনগণের’ কথা আপনারা বলেন তা আক্ষরিক অর্থে এক misnomer — যা আপনাদের মস্তিষ্কে, অন্তরে বা বিবেচনায় এক্সিস্ট করে না।
তর্কের খাতিরে ধরা যাক দুর্নীতি ফাঁস করে দিলেন। ‘সুফল’ না-আসা অব্দি মাঝবর্তী দিনগুলোতে বিনে পয়সায় কেনা একই চিল্লাচিল্লি ব্রিগেডকে ‘দুর্নীতি দুর্নীতি’ নাভিশ্বাস তোলা স্লোগান দিয়ে ফের মোতায়েন করলেন সর্বত্র। সপ্তাহ/দশদিন চিল্লাচিল্লির ‘মহাতাণ্ডব’-এর ফলশ্রুতিতে চীন ও রাশিয়া চুক্তি দিলো বাতিল করে — তারপর?
তার অর্থ রাষ্ট্র আবারো পিছিয়ে back to square one-এ চলে গেল ও ভ্যাক্সিন আসা আবারো পেছালো বা বন্ধ হয়ে গেল … এ-ই তো? তাতে জনগণের কি লাভ?
ক’জন বাঁচবে, ক’জন মরবে, ব্যর্থ বিজ্ঞান কি বলছে, ‘বিশেষজ্ঞ’-রা কি বলছে এসব হুজুগে খেলাতে তো মেতেই আছেন। ভালো কথা, এই মহামারীর সময়ে যখন সময় এমনিতে সংকুচিত, আপনাদের সময় নষ্ট করার কৌশিশের কারণে, এই তথাকথিত ‘জনগণ’ কতজন মারা যাবে তার কি কোনো হিসাব কষেছেন?
সর্বশেষে স্পষ্ট করতে দ্বিধা নেই, আমার সকল সমর্থন, সমবেদনা, সহমর্মিতা ও একাত্মতা ‘ব্যক্তি’ রোজিনার জন্য — ‘প্রথম আলো’ বা ‘ডেইলি স্টার’ গং-এর জন্য নয়। আমার দৃষ্টিতে উনি পরিস্থিতির ‘জীবন্ত বলি’ বা victim of circumstances। উনার জামিন মঞ্জুর হলেও উনি এখনো বিপদমুক্ত নন।
তার কারণ, যে-আইনের ধারাতে উনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘সর্বপ্রথম’। নিশ্চিত থাকেন আইনি ‘খেলা’ চলবে বহুদিন। সুনামির মতো আসবে সত্য-মিথ্যা মিশ্রিত ‘চাঞ্চল্যকর’ তথ্যর ঢেউ — যা গতকাল থেকেই শুরু হয়ে গেছে। খেলার ‘গোলপোস্ট’-ও কয়েকশো বার এদিক-সেদিক পাল্টাবে বিভিন্ন স্বার্থের intervention-এর কারণে — তাতেও কোনো সন্দেহ নেই।
এ-কারণেই রোজিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোর দাবি তুলছি। বাংলাদেশে আবারও সাংবাদিক সাগর-রুনির মতো হত্যার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক তা মোটেও কাম্য নয়। মুনিয়া হত্যায় মিডিয়ামাফিয়ার সংশ্লিষ্টতা ও ধামাচাপা দেবার ঘটনা তো নিশ্চয় আমরা অত দ্রুত ভুলে যাইনি।
এ-ধরিত্রীর পবিত্র মাটি নিরীহ মানুষের রক্তের ফিনকি আর সইবে না।
উপসংহার : রোজিনা আমাদের বোন, সত্যের লড়াকু সহযোদ্ধা। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সুষ্ঠ তদন্ত সহ বিচার হোক তা যেমন জরুরি, পাশাপাশি যুগযুগ ধরে নেপথ্যে কলকব্জা নড়াচড়া করা ‘রাঘব বোয়াল’-রা যেন এ-যাত্রা জাল ফুটো করে পালাতে না পারে, সেদিকে সবার সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য বিনীত অনুরোধ রইল।
মিডিয়ার দুর্নীতি নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক সচেতন ও সর্বদা সোচ্চার থাকুক এ কামনা করে আজকের মতো … বাই!
প্রচ্ছদ / অসীম দাস ।। প্রচ্ছদে ব্যবহৃত ফটোগ্রাফ / Sayeed Siddiqui Roummy
মাকসুদুল হক প্রণীত ও সংক্রান্ত রচনারাশি
- Are we ready for Khilafa E Bangal? || Mac Haque - September 5, 2024
- সিজনাল মায়াকান্না ও আমাদের প্রতিবাদের ফ্যাশনেবল কালচার || মাকসুদুল হক - October 22, 2021
- স্মর্তব্য ১৭৭১ || মাকসুদুল হক - October 20, 2021
COMMENTS