বিশ্বাসী আর সত্যবাদিতার জায়গাটা নিয়া মনে হইল, মুহাম্মদ (সা.) যখন মেরাজ থিকা ফিরা সেই কথা লোকজনরে বলতেছেন তখন তো তারা বিশ্বাস করতেছিল না। আবুবকর (রা.)-রে গিয়া লোকজন কইল, দেখো, তোমার নবি কি কথা কইতেছে এইসব! আবুবকর (রা.) শুইনা কইলেন, এর চে আরো কঠিন কথা বিলিভ করতেছি আমি; যেই আল্লারে কেউ কোনোদিন দেখে নাই, তাঁর লগে উনার দিনে-রাইতে আলাপ হয় আর তাঁর কথা উনি আমাদেরকে শোনান। তো, এই মেরাজের কথা বিলিভ করব না ক্যান! কি কও তোমরা! উনি খুবই অবাক হইলেন ওদের কথায়।
মানে, যিনি সত্যবাদী, তিনি তো সত্যি কথাই কইবেন। আর যিনি বিশ্বাস করেন কাউরে সত্যবাদী বইলা, তিনি তো তার সব কথাই বিশ্বাস করবেন। কারণ উনি তো জানেন, যিনি সত্যবাদী তিনি তো মিথ্যা কথা বলেন না!
ব্যাপারটা যতটা না মুহাম্মদ (সা.) সত্যি কথা কইতেছেন কি মিথ্যা কথা কইতেছেন, তার চাইতে অনেকবেশি হইতেছে কিভাবে ‘সত্যি’ বা ‘মিথ্যা’ জিনিসটা যাচাই হইতেছে। [এইখানে ইল্যুশনের কিছু নাই যে, সত্যি বইলা কিছু নাই।]
২.
যারা উনার কথা ‘সত্যি’ বইলা মানেন নাই, তারা তখন উটের ডেসক্রিপশন শুইনা যেমন মানেন নাই, এখন সায়েন্সে প্রুফ করা যায় না বইলাও মানতে পারতেছেন না। আর যারা মানছেন, তারা উটের ডেসক্রিপশনটারে নিছেন একটা প্রমাণ হিসাবে। সায়েন্স যে পুরাটা জানে না সেইটারেও আমলে নিতে পারেন। এমন না যে,পার্সপেক্টিভ দুইটা আগে থিকাই ভাইবা রাখছেন কেউ কেউ যে, মানবেন বা মানবেন না। কিন্তু পার্সপেক্টিভগুলি এক্সিস্ট করে। যেইখানে সাবস্ক্রাইব করতে পারি আমরা।
৩.
এই সাবস্ক্রিপনশনটারে আমরা সাব্জেক্টিভ অ্যাক্ট বইলা ভাবি। (যদিও পুরাপুরি তা না।)
কিন্তু মানুষ হিসাবে আমরা যে সাব্জেক্ট সেইটা সার্টেন টার্মস্ অ্যান্ড কন্ডিশনের উপর বেইজ কইরাই হয়। এনলাইটমেন্টের মানুষ যেমন, রেশনাল মানুষ, রেশনালিটির জায়গায় বিলিভ চইলা আসলে আপনি তো আর এতটা মানুষ না! যেমন, নিগ্রোরা আগে এতটা মানুষ ছিল না ইউরোপিয়ানদের কাছে, কারণ ওরা তো এনলাইটেন্ড না বা এখন মুসলমানরা, অনেকটা, কারণ এরা রেশনাল না এতটা। অবশ্য ভালো মুসলমানরা চেষ্টা চালায়া যাইতেছেন নিজেদেরকে রেশনাল প্রমাণ করার লাইগা। 🙂 একইভাবে অবিশ্বাসীদের উপ্রে হেইট্রেড চাপাইতে পারেন তো ধর্মবিশ্বাসীরা।
নিজেরে সাব্জেক্ট ভাবলে একটা এক্সট্রিম এক্সটেন্ট তক সবকিছু অব্জেক্টই। এই কারণে, আমরা যে সাব্জেক্ট, সেইটা মেইন না, বরং কোনো কোনো জিনিসরে জিনিস ভাবতে পারার ভিতর দিয়া আমরা নিজেদেরকে সাব্জেক্ট হিসাবে ক্লেইম করতে পারি আমাদের নিজেদের কাছে, সেই আইডেন্টিফিকেশনের প্রসেসটাই মেইন আসলে।
এই কারণে কখনো বিশ্বাস করলে যে নিজেরে বেশি “মানুষ” মনে হইতে পারে বা কখনো অবিশ্বাসী হইতে পারলে, সেই জায়গাগুলিরে বোঝার ট্রাই করা যাইতে পারে। কেউ কেউ যে বিশ্বাসী না বা অবিশ্বাসী না, তা না, কিন্তু এই প্রসেসটারে রিকগ্নাইজ করতে পারাটা ঘটনা মনেহয় আর-কি।
… …
- এন্ড্রু কিশোর আর ক্যাসেটে বন্দী আমাদের গানের জীবন || ইমরুল হাসান - July 22, 2020
- বাংলাদেশি সিনেমা : অ্যা ব্রিফ হিস্ট্রি ১ || ইমরুল হাসান - July 15, 2020
- আবারও কবিতার নয়া বই || ইমরুল হাসান - September 14, 2019
COMMENTS