মেঠোসুর ঋতুবীক্ষণ : ঐ দেখ ছয়টি ঋতু

মেঠোসুর ঋতুবীক্ষণ : ঐ দেখ ছয়টি ঋতু

শেয়ার করুন:

গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রি. শুক্রবার বাংলার সন্ধ্যা বাংলার ভোর, বাংলার রাত্রি নিঝুম দুপুর  মেঠোসুর শিশু-কিশোর ও অভিভাবকদের নিয়ে যাত্রা করেছিল রাতারগুল। রাতারগুলকে একসময় বাংলাদেশের একমাত্র জলাভূমি বলে মনে করা হতো এবং বিশ্বের কয়েকটি স্বাদু পানির জলাভূমির মধ্যে একটি। পরবর্তীতে যুগিরকান্দি মায়াবন, বুজির বন এবং লোকখি বাওড় জলাবন নামে আরও জলাভূমি আবিষ্কৃত হয়।

মেঠোসুর-এর কয়েকটি কার্যক্রমের মধ্যে ‘ঋতুবীক্ষণ’ কার্যক্রম ইতিমধ্যে অভিভাবকদেরও মনে উদ্দীপিত সংবেদনের সঞ্চার করেছে। সিলেট শহরের হাছন রাজার স্মৃতিসমৃদ্ধ যাদুঘর থেকে বাসে করে ভ্রমণে শরৎঋতু দেখতে, শুনতে গিয়ে নৌকাভ্রমণ ছিল বিশেষ আনন্দের। ৪৮ জনের দিনমান এ ভ্রমণে শিশু-কিশোরদের উছলে-পড়া আনন্দের বাহার বড়দের চোখে-মুখেও ছিল। ঘুরতে-ফিরতে আনন্দআড্ডার ছলে মাটি-মানুষ, আকাশ-বাতাস, কাশফুল, গাছগাছালি, প্রাণি-পাখি দেখার সাথে সাথে পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে সুরক্ষা, গান-বাজনা, আনন্দপূর্ণ নানান আয়োজন ছিল।

গরুকে সামনে রেখে—গরুর হাত কয়টি?—হাওরবিষয়ক লেখক, গবেষক সজলকান্তি সরকারের এমন প্রশ্নে বেশকিছু শিশুর আনন্দপূর্ণ জবাব মেলে চারটি, কেউ বলে দুইটি। আর কেউ কেউ বলে না, না, গরুর হাত নেই। সরল আরও কিছু আনন্দপূর্ণ বিষয়ে বেশ খানিকটা সময় কথা বলেন তিনি। তাঁর সহধর্মিণী রেখা রানী বসুও বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত ছিলেন। অতিথি লেখক, সাংবাদিক দেবব্রত রায় দীপন নাচে-গানে সর্বক্ষণ মাতিয়ে রাখেন শিশুদের। তিনি মেঠোসুর  ঋতুবীক্ষণ কার্যক্রমে সবগুলো ভ্রমণের সঙ্গী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তাঁর কন্যাদ্বয় সুন্দর সংগীত পরিবেশন করেন।

উপস্থিত ছিলেন ওয়াফি ইসলাম, সাগরিকা তালুকদার রঙ, রোদেলা তালুকদার রোদ, অভিরাজ ঈশান বনিক, আশিকুর রহমান, সুহম তালুকদার, সৌমিক দাস, সুমিত আচার্য্য, আফতাব উদ্দিন, আনন্দ তালুকদার, ইসমাইল ইসলাম, নাসির রহমান, তাহসির রহমান, ফাহিম ইসলাম, উল্লাস তালুকদার, জয়দ্বীপ সরকার অভি, মিনতী তালুকদার, মৌমিতা সরকার, অর্পা সরকার, পান্না সরকার, সাইফুল ইসলাম, সাথী ইসলাম, শিক্ষক রুনা লস্কর, সংগীতশিল্পী দিপালী তালুকদার, দেবদূতী প্রণমী মিথী, দীপান্বিতা দীপা, কৃষাণ বনিক, হেপী বনিক,  সম্পা তালুকদার, মাহবুব রহমান শেখ, রাজন আহমদ, ইসহাক আহমদ, জয়া মজুমদার, দীপা রানী দাস, সপ্ত দাস, দীপ তালুকদার, বাউল শীতন কান্ত দাস, দিব্য রায় তালুকদার, দীপ্ত তালুকদার, দিপেন রায় তালুকদার, ঝলক চৌধুরী, মাহবুব রহমান শেখ, জাহাঙ্গীর আহমদ, আব্দুল মালেক, সাংবাদিক আব্দুর রহমান হীরা।

মেঠোসুর ঋতুবীক্ষণ—এই কার্যক্রমটির সভাপতি হিসেবে রয়েছেন অঞ্জন সরকার, সদস্য শিক্ষক নিরঞ্জন সরকার, সংগীতশিল্পী নন্দলাল গোপ, মিউজিয়াম সহকারী জাহাঙ্গীর আহমেদ, মাহবুব রহমান শেখ, ড. ফয়েজ আহমদ, সংগীতশিল্পী দেবী মল্লিকা, বাউলশিল্পী শীতন বাবু, বিমান তালুকদার প্রমুখ।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে বিমান তালুকদার বলেন, পৃথিবীময় প্রায় সর্বক্ষেত্রে মনিব-ভৃত্য, রাজা-গোলাম এমন একটি অসংবেদন-অস্থিতিশীল পরিবেশ, হুঙ্কার লক্ষ করা যাচ্ছে। একজন আরেকজনকে, একদল আরেক দলকে অবদমিত রাখার প্রচেষ্টা। কেবল শ্রেষ্ঠর আধিপত্য, ছড়াছড়ি। যা মানবসমাজে সুকোমল সৌন্দর্যকে বিঘ্নিত, মানবধর্মকে প্রতিনিয়ত অপমানিত করছে। কথা হচ্ছে—প্রায় সবাই তো ধার্মিক তবে রাস্তার পাশের ইট, সম্পদগুলো নাই হয়ে যায় কেন! মানুষ মানুষকে মেরে উচ্ছাস প্রকাশ করে। কেন! এইসব ভাবা জরুরি।

এ-যাত্রা স্থানীয়ভাবে এই কার্যক্রম বাস্তবায়নে বিশেষ সহযোগিতা করেছেন নাট্যকর্মী আব্দুল মালেক, পরিবেশকর্মী আব্দুল করিম কীম ও উনার পরিচিতজন রাতারগুলনিবাসী সোনা মিয়া, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান রিপন, বাপ্পা ঘোষ চৌধুরী প্রমুখ।

সফরসঙ্গী সকলের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা এবং মেঠোসুরের পরবর্তী ঋতুভ্রমণে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে এবারকার ভ্রমণের সমাপ্তি টানেন বিমান তালুকদার।

গানপার ফিচার ডেস্ক

শেয়ার করুন:

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you