দাস্তাম্বু || ইমরুল হাসান

দাস্তাম্বু || ইমরুল হাসান

দাস্তাম্বু : ‘কবি’  কীভাবে আরো অপ্রয়োজনীয় হয়া উঠলেন সমাজব্যবস্থার ভিতর – তার অসম্পূর্ণ কাহিনি

গালিব (মির্জা গালিব) আমার প্রিয় কবি। উনার লেখার বাংলা অনুবাদ পড়ছিলাম আগে। আর জাফর আলম সাহেবের অনেক অনুবাদ দেখছি; মনে হইছে উর্দু-সাহিত্য সর্ম্পকে উনার খুব আগ্রহ আছে।

দিনলিপি আমার আগ্রহের জিনিশ। প্রাত্যহিকতার যে যন্ত্রণা এর ত কোন প্রতিকার নাই। তার উপর বইটাও আকারে ছোট; লেখা হিসাবেও মাইনর একটা টেক্সট, বইমেলায় কিনা বইগুলি থিকা তাই এইটাই প্রথম পড়তে শুরু করলাম। প্রতিদিনকার রক্তাক্ত হওয়ার কাহিনি!

কী রকম অসহায় একটা মানুষ, শুধুমাত্র বেঁচে-থাকার জন্য, তাঁর কাব্যপ্রতিভাও বন্ধক রাখতে চাইতেছে … কী রকম দিশেহারা!

যেই সমাজের ভিতর উনি ছিলেন, সেইখানে কবির যে-ভূমিকা, সেইটা পাল্টাইয়া যাইতেছে। যেই সমাজে উনি ছিলেন, সেইখানেও ছিলেন উপেক্ষিত আর এই নতুন ব্যবস্থায় ‘কবি’ হিসাবে বাঁচাটা প্রায় অসম্ভব। দিনলিপি কি, আসলে এইটা ত একটা মিনতি! (পেনশন দিবে ত ইংরেজরা!!)

এত সহজ সরল কথাবার্তা, এত ভারী! দুই/এক পাতা পড়ার পর মনে হয় আর পড়ব না …

কবির অনুভূতির চাইতে প্রখর ত আর কিছু নাই। তাই উনি এনলাইটেনমেন্ট টের পাইছিলেন, ইংরেজদের গুণগান গাইছেন এই জায়গাটাতেই যে, ‘যাঁরা আমাদের ন্যায়বিচার কাকে বলে শিখিয়েছেন’;  মিথ্যা উনি বলেন নাই, কিন্তু নিজের হৃদয় এত জোরে চেপে ধরছেন যে না-বলায় বধির হয়া, টুপটাপ রক্তে ভেসে যাচ্ছে তাঁর শব্দগুলা।

সেই রক্তের ধারায় অনেককিছুই স্পষ্ট, বিশেষ কইরা কবিতা ও সমাজব্যবস্থা কিভাবে পরিবর্তিত হইতেছে। একজন কবি সমাজের কাছ থিকা কোনো সম্মান কিংবা আর্থিক সাহায্য পাওয়ারও যোগ্য না। সমাজের মূল-ব্যবস্থার ভিতর তিনি আর নাই তখন। এই যে একপাশে চইলা যাওয়া, শুধুমাত্র ‘ব্যক্তি’ হিসাবে না; ‘কবি’, একটা অবস্থান হিসাবে সমাজের ভিতর অর্বাচীন হয়া উঠাটা – এইটাই চোখে লাগল খুব।

কবির জীবন, কী আর এমন গুরুত্বপূর্ণ! এরচে’ ভালো উনার গান শুনি …

হাজারো খায়েশি অ্যায়সি কি হার খায়িশ পে দম নিকলে
বহুত নিকলে মেরে আরমান, লেকিন ফির ভি কম নিকলে…

… …

আগের পোষ্ট

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you