মুস্তাফা জামান আব্বাসী : অবদান তাঁর অবিনাশী

মুস্তাফা জামান আব্বাসী : অবদান তাঁর অবিনাশী

শেয়ার করুন:

 

এই রোজায় পড়েছি মুস্তাফা জামান আব্বাসীর লেখা হযরত মুহম্মদ (সা.)-এর জীবনী ‘মুহাম্মদের নাম’। কী ভাষায়, কী আন্তরিকতায়, কী তথ্য ও গবেষণায় আমার মনে হয়েছে বাংলা ভাষায় লেখা আমাদের প্রাণের নবির একটি শ্রেষ্ঠ জীবনী।

তিনি ইতিহাসের ছাত্র ছিলেন। গ্রন্থটি পড়লেই বোঝা যায় গ্রন্থটি অনন্য এবং প্রামাণিক। গ্রন্থটি লেখার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় লেখা নবিজির জীবনীগুলো তিনি পাঠ করেছেন। আমাদের জেনারেশনের লোকেরা এখন আর তেমন কেউ পড়ালেখা করতে চান না। প্রায় সবাই ফেইসবুকে স্ক্রল করেন। স্ক্রলিংজ্ঞান নিয়ে আমরা ঘোরাফেরা করি। মুস্তাফা জামান আব্বাসীরা পড়ালেখা করতেন, অনুসন্ধান করতেন। আমাদের শৈশবে ‘ভরা নদীর বাঁকে’ শিরোনামে বিটিভিতে একটা অনুষ্ঠান করতেন। কী দরদিয়া কণ্ঠে একেকজন লোকগায়ককে তিনি পরিচিত করিয়ে দিতেন — সেটা না-দেখলে কেউ অনুভব করতে পারবেন না। বাংলাদেশের জনসংস্কৃতিতে তিনি ভাওয়াইয়া ও নাতে রাসুলকে নতুন মাত্রা দিয়েছেন। তাঁর গায়কী এবং পরিবেশনে ছিল বাংলার মাটির দরদ ও নিজস্বতা।

আমরা কী জানি কাজী নজরুল ইসলামকে দিয়ে তাঁর পিতা আব্বাসউদ্দিন লিখিয়েছিলেন ‘রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশির ঈদ’? বহুবছর ধরে এই গান আমাদের ঈদুল ফিতরের সিগ্নেচার। শৈশবে আমরা মুস্তাফা জামান আব্বাসীর কণ্ঠেই শুনতাম এই গান। একদিক দিয়ে ঈদের চাঁদ উঠছে অন্যদিকে বিটিভি ও বেতারে ভেসে আসছে তাঁর দরদি ভরাট কণ্ঠ। তাঁর লেখা কাজী নজরুল ইসলামের জীবনীভিত্তিক অসাধারণ উপন্যাস ‘পুড়িব একাকী’।

আমার এখনো মনে আছে বিটিভিতে অসীম মমতায় বাংলার লোকশিল্পীদের পরিচয় করিয়ে দিতেন। দরদ না-থাকলে মনে হয় শিল্পী হওয়া যায় না, অনুসন্ধানী গবেষকও হওয়া যায় না। তাঁর ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী আর নাতে রাসুলের কাছে বাংলার মানুষ চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকবেন।

আমার সোনার চান পাখি
আমার রূপার চান পাখি,
আমি তরে ডাকি পাখি রে
তুমি ঘুমাইছাও নাকি…

সরোজ মোস্তফা ১০ মে ২০২৫


সরোজ মোস্তফা রচনারাশি

শেয়ার করুন:

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you