নেত্রকোণার নামকাহন (দ্বিতীয় পর্ব) || মঈনউল ইসলাম

নেত্রকোণার নামকাহন (দ্বিতীয় পর্ব) || মঈনউল ইসলাম

ব্যুৎপত্তি সম্পর্কে না জানলেও ‘ফোরটুয়েন্টি’ বা ‘৪২০’ বলতে আমরা প্রতারক, ধূর্ত, বাটপার প্রভৃতি বুঝিয়ে থাকি। এটি মূলত দণ্ডবিধির ৪২০ ধারা। দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় প্রতারণার শাস্তির বিষয়ে উল্লেখ থাকলেও প্রতারণার সংজ্ঞা দেওয়া আছে ৪১৫ ধারায়। সংজ্ঞা অনুযায়ী প্রতারণার তিনটি অংশ হলো — অসৎ উদ্দেশ্য থাকা, সম্পদ বা সম্মতিপ্রদানে বা প্রদান থেকে বিরত থাকতে প্ররোচিত করা এবং প্রতারিত ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক, সুনাম বা সম্পদের ক্ষতি হওয়া। প্ররোচিত করার এই বিষয়ের সঙ্গে আবার নোবেলবিজয়ী অর্থনৈতিক তত্ত্ব নাজ থিওরির আংশিক সাযুজ্য রয়েছে। নাজ থিওরির মূল বক্তব্য হলো, তথ্য প্রদানের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির পছন্দকে প্রভাবিত করা। বিনিময়ে ঐ ব্যক্তি পান শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি, পরিতৃপ্তি। প্রথম ক্ষেত্রে প্রতারিত হয়ে সম্পদ ও সুনামের বা শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির আশঙ্কা থাকলেও দ্বিতীয় ক্ষেত্রে তা নেই। বিষয়টি সম্পর্কে আরও ব্যাখ্যা প্রদানের পূর্বে আব্রাহাম মাসলো-র ‘প্রয়োজনীয়তার পদসোপান’ (hierarchy of need) সম্পর্কে আলোচনা করা আবশ্যক। কারণ প্ররোচনা, আর্থিক সক্ষমতা এবং ভৌগোলিক স্থান ও পর্যটনের মধ্যে সূক্ষ্ম যোগসূত্র রয়েছে। মাসলোর এই তত্ত্ব অনুযায়ী মানুষের জীবনের প্রয়োজনকে পাঁচটি স্তরে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম স্তরের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা সহ মানুষের মৌলিক ও শারীরিক প্রয়োজনগুলো মিটলে তার মধ্যে সুরক্ষা ও নিরাপত্তাবোধের চাহিদা তৈরি হয়। এভাবেই চাহিদার ক্রমগুলো পিরামিডের নিচের দিক থেকে উপরের দিকে ধাবিত হয়। তবে, তৃতীয় থেকে পঞ্চম স্তরের প্রয়োজনগুলো ধাপে ধাপে কিংবা একত্রেও অনুভূত হতে পারে। এই প্রয়োজনগুলো গ্রহণযোগ্যরূপে পূরণ হলে মানুষের মধ্যে পরিতৃপ্তি বা জীবনকে আরও একটু সাজিয়ে নেওয়ার মানসিকতা তৈরি হয়। লক্ষণীয় যে, প্রতিটি স্তর অতিক্রমের সঙ্গে আর্থিক সক্ষমতা, অধিকতর কিছু প্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষা এবং সমাজে নিজের অবস্থান তৈরির প্রচেষ্টা রয়েছে। অর্থাৎ পিরামিডের উর্ধ্বমুখী এই অভিযাত্রায় মানুষের অর্থ ব্যয়ের একটি প্রবণতা তৈরি হয়। প্রয়োজন শুধু একটু ‘নাজিং’-এর মাধ্যমে মানুষের পকেট থেকে এই অর্থ বের করে আনা। এই বিষয়কে পুঁজি করেই পর্যটন ব্যবসাকে সাজিয়ে তোলা হয়। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশে হলেও আমরা তা এখন পর্যন্ত কাজে লাগাতে পারিনি; অপরদিকে, পাতায়ার মতো ‘নামমাত্র’ একটি সৈকতকে ঘিরে রয়েছে কত আয়োজন!

একটি স্থান পর্যটনের জন্য তখনই আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয় যখন এর ভূপ্রকৃতি হয় অসাধারণ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ও সৌন্দর্যমণ্ডিত; না-হয় এর সঙ্গে ঐতিহাসিক বিষয়, রূপকথা কিংবা এমন কোনো যোগসূত্র থাকে অথবা সেখানে থাকে বিনোদনের ভরপুর আয়োজন। পাহাড়, সমতল এবং হাওড়ের অভূতপূর্ব সম্মিলন নেত্রকোণাকে করেছে অনন্য। হাওড় ও নদীর সীমানা বর্ষার পানিতে একাকার হয়ে যাওয়ায় তা বিশাল দিগন্তবিহীন সাগর বা সমুদ্র মনে হয়। কাব্যের অলঙ্করণে তা আরও প্রকটরূপে বাঙময় হয়ে ওঠে। মূলখণ্ডের মধ্যে সমুদ্রভ্রমণের অভিজ্ঞতা লাভ এমন হাওড়াঞ্চলেই সম্ভব। বিশেষজ্ঞগণ তাই মনে করেন ‘সাগর’ শব্দটি আঞ্চলিকতায় পরিবর্তিত হয়ে হাওড় (সাগর>সায়র>হাওড়) হয়েছে। এমন অত্যন্ত সাদামাটা পরিবর্তন অথবা কিছু কিছু স্থানের নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ইতিহাস বা রূপকথা স্থানগুলোকে করে তোলে অনন্য।

দুর্গাপুর উপজেলার সোমেশ্বরী নদীর তীরে অবস্থিত ‘রানী খং’ মিশনের নামকরণের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এমনই একটি মিথ। গারোদের ভাষায় ‘খং’ শব্দের অর্থ গর্ত। মিথ অনুযায়ী এই পাহাড়ের নিচে একটি বিশাল গর্ত বা সুড়ঙ্গ ছিল। সেই সুড়ঙ্গের মধ্যে বংশপরম্পরায় দৈত্যাকার রাণী কুমির বাস করত। এই ‘রাণী কুমিরের গর্ত’ বা ‘রাণীর গর্ত’ থেকে পাহাড়ের নাম হয় ‘রাণী খং’। এই পাহাড়ের ওপরে অবস্থিত মিশনটি তাই ‘রাণী খং মিশন’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

মৈমনসিংহ গীতিকা  একটি আন্তর্জাতিকভাবে প্রসিদ্ধ লোকগাথা। নাম মৈমনসিংহ হলেও এর কাহিনিগুলো মূলত নেত্রকোণা ও কিশোরগঞ্জের বিস্তৃত হাওড় এলাকার মানুষের মুখে মুখে গীত। এই গীতিকার প্রথম পালা মহুয়ার সঙ্গে জড়িয়ে আছে তলার হাওড়, বামনকান্দি, বাইদ্যার দিঘি, উলুয়াকান্দি প্রভৃতি নামগুলো। গারো পাহাড়ের উত্তরে হিমানী পর্বত; তার উত্তরে সমুদ্রের নিকট এক গহীন বনে ডাকাত সর্দার হোমরা বাইদ্যা বাস করত। তামাশা দেখাতে দেখাতে হোমরা বেদে ধনু নদীর তীরে অবস্থিত কাঞ্চনপুর গ্রামে চলে আসে। সেই গ্রামের এক বৃদ্ধ ব্রাহ্মণের বাড়ি থেকে ছয় মাস বয়সী মহুয়াকে চুরি করে নিয়ে যায়। ষোলো বছর পরে তারা তামাশা খেলা দেখাতে ধনু নদীর পাড়ের বামনকান্দা গ্রামের ব্রাহ্মণ নদের চাঁদ ঠাকুরের বাড়িতে আসে। নদের চাঁদ তাদের খেলা দেখে খুশি হয়ে প্রচুর বখশিস দেন এবং হোমরা বেদের প্রার্থনা অনুযায়ী উলুইয়াকান্দা নামক স্থানে বসবাসের অনুমতি দেন। উল্লেখ্য উলুখাগড়া জাতীয় তৃণাচ্ছাদিত পতিত জমি থেকেই এমন নামকরণের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হয়। এই বেদের দলের ব্যবহার্য দিঘি লোকমুখে বাইদ্যার দিঘি নামেও পরিচিতি লাভ করে। সেখানে বসবাসের সূত্র ধরে এবং নদের চাঁদের সঙ্গে মহুয়ার মন দেওয়া-নেওয়া শুরু হয়। তাদের মধ্যে প্রণয় গভীর হলে মহুয়াকে নিয়ে বেদের দল সেখান থেকে পালিয়ে যায়। শুরু হয় নদের চাঁদের মহুয়াকে খোঁজার মর্মন্তুদ অভিযান। পরে দেশ-দেশান্তর ঘুরে কংস নদীর তীরের জঙ্গলের কোনো স্থানে পুনরায় তাদের দেখা হয়। মদন ও কেন্দুয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে রয়েছে তলার হাওড়। বর্ষার ভরা যৌবনে প্রমত্তা এই হাওড়ের ঊর্মিমালা পাড়ি দিয়ে বামনদের পাড়া, বেদেদের স্বল্পকালীন আবাস উলুয়াকান্দা, ব্যবহৃত দিঘি খুঁজে বের করার অভিযান একজনকে নিয়ে যাবে রূপকথার জগতে; যেখানে জাগতিক রোগ-শোক ও দুঃখগাথাকে ছাপিয়ে উঠবে মহুয়া ও নদের চাঁদের রোমাঞ্চকর প্রেমকাহিনি। হাওড়ের জলে ভাসতে ভাসতে চোখ বন্ধ করুন। কল্পনায় দেখতে থাকুন দ্বীপের মতো জেগে-থাকা কোনো এক গ্রামের বাড়িতে টাঙানো তারের ওপর দিয়ে ভারসাম্য রক্ষার অপূর্ব কলাকৌশল দেখিয়ে দর্শক মাতিয়ে রাখছে ষোড়শী মহুয়া। বর্ষার মেঘফাটা রোদ্দুরে ক্লান্ত আর আফালের দুলুনিতে তন্দ্রাচ্ছন্ন ভ্রমণপিপাসুর কর্ণকুহরে যদি আঘাত করে ‘সেই বাইঙ্গন বেচ্যা দিয়াম তোমার গলার হার’-এর সুমিষ্ট সুরলহরী! স্বপ্নাবিষ্ট হয়ে পড়বেন যে-কোনো পর্যটক। উল্লেখ্য বামনকান্দা নামে কোনো গ্রামের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া না গেলেও বামনিকোনা নামে একটি গ্রাম রয়েছে মোহনগঞ্জ উপজেলার গাগলাজুর ইউনিয়নে। উচ্চারণবিভ্রাটের কারণে বামনকান্দা বা বামনিকোনা পারস্পরিকভাবে পরিবর্তিত হয়ে থাকতে পারে। মৈমনসিংহ গীতিকার ভূমিকায় ড. দীনেশচন্দ্র সেন যেমনটি লিখেছেন, “লিপিকারগণ অজানিত দেশের নাম লইয়া প্রায় লিখিতে ভুল করিয়া থাকেন, সুতরাং বকশাইয়ার ‘বংশাইয়া’-রূপ গ্রহণ আশ্চর্য নহে”। একইভাবে বামনিকোনা গ্রাম বামনকান্দা নামে পরিবর্তিত হয়ে থাকতে পারে।

একইভাবে আড়ালিয়া গ্রাম, নিরলইক্ষার চর, ধলাই বিল, জাহাঙ্গীরপুর নামগুলো নিতান্তই সাদামাটা, রঙহীন, গতানুগতিক। কিন্তু এই নামগুলো জ্যান্ত হয়ে ওঠে মলুয়া পালার জীয়নকাঠির স্পর্শে। মলুয়া পালায় বর্ণিত কোনো কোনো স্থান তৎকালীন জাহাঙ্গীরপুর দেওয়ানিভুক্ত হলেও বর্তমানে কিশোরগঞ্জের আওতাভুক্ত। বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই পার হয়ে চান্দবিনোদের সঙ্গে আড়ালিয়া গ্রামের মোড়ল হীরাধরের কন্যা মলুয়ার মিলন ঘটে। কিন্তু বিধি বাম। জাহাঙ্গীরপুর দেওয়ানির কাজির ক্রোধে পড়ে তাদের সংসারে নেমে আসে ঘোর অমানিশা। মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুরের দেওয়ান চান্দবিনোদকে বন্দি করে নিয়ে আসে। তাকে মুক্ত করতে মলুয়া নিজে বন্দিত্ব বরণ করে। চান্দবিনোদকে মুক্তির নামে নিরলইক্ষার চরে পাঠানো হয় তাকে জ্যান্ত কবর দেওয়ার জন্য। কৌশলে পোষা কোড়া পাখির মাধ্যমে খবর পাঠিয়ে ভাইদের মাধ্যমে স্বামীকে উদ্ধার করে মলুয়া। আবার দেওয়ানের লালসা থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য গ্রহণ করে কঠিন ব্রত। এই ব্রত শেষ হওয়ার পূর্বেই মলুয়া কোড়া শিকার করতে ধলাই বিলে যাওয়ার জন্য দেওয়ান জাহাঙ্গীরকে প্রলুব্ধ করে। পোষা কোড়ার মাধ্যমে ভাইদের খবর পাঠিয়ে পূর্বের ন্যায় মুক্ত হয় দেওয়ান জাহাঙ্গীরের কবল থেকে। কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নে আড়ালিয়া নামক একটি গ্রাম থাকলেও তা কাহিনির বর্ণনা অনুযায়ী এই আড়ালিয়া গ্রাম নয়। কারণ জাহাঙ্গীরপুর গ্রাম আড়ালিয়া হতে ২৬ মাইল উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। সে-হিসেবে গ্রামটি খালিয়াজুরী উপজেলার সীমান্তবর্তী কিশোরগঞ্জ জেলার কোথাও অবস্থিত হবে। তবে, ধলাই বিলটি আটপাড়া উপজেলার ‘ধলুয়া বিল’ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, পালাটি জাহাঙ্গীরপুরের উপকণ্ঠের পদমশ্রী, রাজীবপুর, মঙ্গলসিদ্ধ, খুরশিমুল, সাউদ পাড়ার বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে সংগ্রহ করা হয়। সবকিছু মিলিয়ে মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুরের দেওয়ানিকেই নির্দেশ করে।

‘দেওয়ান ভাবনা’ পালার সঙ্গে জড়িয়ে আছে তৎকালীন স্বচ্ছল পরিবার তথা দেওয়ানের লালসার কাহিনি। দেওয়ান ভাবনার একজন গুপ্তচর ছিলেন বাঘরা। বিভিন্ন স্থানের সুন্দরী নারীদের সংবাদ দেওয়ানের নিকট পৌঁছে দেওয়া ছিল তার অন্যতম কাজ। সোনাই এবং এই-রকম আরও বহু সুন্দরী নারীর সন্ধান দেওয়ায় দেওয়ানের নিকট থেকে লাখেরাজ হিসেবে বাঘরা একটি হাওড় পুরস্কার পান। এই হাওড় কালক্রমে ‘বাঘরার হাওড়’ নামে পরিচিতি লাভ করে। নেত্রকোণা থেকে দশমাইল দক্ষিণ-পূর্বে আটপাড়া উপজেলায় এই হাওড় অবস্থিত। এই হাওড়ের নিকটবর্তী দেওয়ানপাড়া গ্রামে দেওয়ান ভাবনার আবাস ছিল।

কেদারনাথ মজুমদার উল্লেখ করেছেন যে, সে-সময় ডাকাত বা দস্যুদের প্রচণ্ড উপদ্রব ছিল। এমনকি ভদ্র গৃহস্থ অনেক পরিবারও তখন নিজস্ব সেনাবাহিনির ন্যায় দস্যু বা ডাকাতদল পালন করতেন। জলে, স্থলে বা জঙ্গলে সর্বত্রই দস্যুদের ত্রাসোদ্দীপক বিচরণ ছিল। ডাকাতদলের আড্ডার জন্য নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলার ‘লুনেশ্বর’ বিখ্যাত ছিল। এমনই এক ডাকাতের কাহিনি বর্ণিত হয়েছে দস্যু কেনারামের পালাতে। সুসঙ্গ থেকে জালিয়ার হাওড় পর্যন্ত তার দাপট। এই জালিয়ার হাওড়ের দিগন্তবিস্তৃত নলখাগড়ার জঙ্গলে সাধু বংশী দাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় দস্যু কেনারামের। সাধুর ধর্মবাণী শুনে কেনারামের বোধোদয় হয়। সে দস্যুতা ছেড়ে দেয় এবং সে মনসার ভাসান গেয়ে মুষ্ঠিচাল ভিক্ষার দ্বারা জীবনধারণ শুরু করে। কাহিনিতে কিশোরগঞ্জের ৯ মাইল পূর্ব-দক্ষিণে জালিয়ার হাওড়ের অবস্থানের কথা বলা হলেও মদন উপজেলাতেও একই নামে একটি হাওড় রয়েছে। হাওড়ের অবস্থান যেখানেই থাকুক, তা মাছশিকারের জন্য জেলেদের নিকট একটি মোক্ষম পছন্দনীয় স্থান ছিল বলেই নামকরণ থেকে প্রতীয়মান হয়।

মহুয়া, মলুয়া, দেওয়ানভাবনা, দস্যু কেনারামের পালা প্রভৃতি কাহিনির মধ্যে রয়েছে অভূতপূর্ব লোভ-লালসা এবং প্রেম-ভালোবাসা ও ত্যাগের নিদর্শন। প্রেমের টানে পাগল হয়ে উদভ্রান্তের মতো দেশ-দেশান্তরে ঘুরে বেড়ানোর গল্প যেন রূপকথাকে হার মানায়। যে-কোনো কাহিনিতে বর্ণিত পথ (route) উদ্ঘাটনে (expedite) হাওড়ে ভাসতে ভাসতে অবগাহন করুন এই মর্মন্তুদ কাহিনির মায়াজালে। হাওড়ের ওপর দিয়ে হু হু করে বয়ে-চলা বাতাসের ন্যায় এক অপার্থিব শূন্যতার হাহাকারে আলোড়িত করে মানবিক অনুভূতিগুলোকে। বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে ওঠে কান্না, গুমরে ওঠে সমবেদনা। ভ্রমণ হয়ে ওঠে পরিতৃপ্তির, আনন্দের।


নেত্রকোণার নামকাহন (প্রথম পর্ব) || মঈনউল ইসলাম

… …

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you