বাণিজ্যলক্ষ্মী

বাণিজ্যলক্ষ্মী

‘নটিং হিল’ প্রথম ব্রিটিশ ছবি, যেটা রিলিজের ছয় সপ্তাহ পরে অ্যামেরিকায় একশ মিলিয়ন ডলার আয় করেছিল। রোম্যান্টিক কমেডি এই ছবিটির শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করেছেন জুলিয়া রবার্টস্ ও হিউ গ্র্যান্ট। এই ছবিটি মুক্তি পায় জেমস ক্যামেরনের টাইটানিক রিলিজের বছর দুইয়ের মাথায়। ঠিক টাইটানিকের মতো ঘটা করে এর প্রোমো ক্যাম্পেইন না হলেও যুক্তরাজ্যের এই শান্ত মেজাজের প্রেমরোম্যান্সধর্মী মিলনান্ত ম্যুভিটি বিগ বাজেটের টাইটানিকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টেনেছে দর্শক ও তঙ্খা। আয়-ইনকামও সমানে সমান না হলেও অলমোস্ট কাছাকাছি। ব্রিটেন ও অ্যামেরিকার দ্বৈরথে অ্যামেরিকাই জিতবে, ব্রিটেন হারবে, এই ইজি-গ্র্যান্টেড ইক্যুয়েশনটি নিশ্চয় সবসময় কাজ করে না। টাইটানিকের সঙ্গে নটিং হিল (Notting Hill) দুনিয়াজোড়া ব্যবসা করেছে প্যারাল্যালি। কিন্তু রেষারেষি নয়, দর্শক দুইটারেই নিয়েছে আদর করে। এবং দুইটাই থিম্যাটিক্যালি সিমিল্যারিটি বহন করছে যেহেতু, দুইটাই আখেরে প্রেমেরই সিনেমা, অতএব দর্শক উভয় সিনেমাই ইক্যুয়্যালি ভালোবেসেছে।

এর প্রায় বছর-পাঁচ আগে যুক্তরাজ্যেরই আরেকটা ম্যুভি সেদেশের সর্বোচ্চ উপার্জন করেছিল ওখানকার  ম্যুভিবাজারে। সেইটা ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দের ঘটনা। আর সেই সিনেমাটি ছিল ‘ফোর ওয়েডিং অ্যান্ড অ্যা ফিউন্যারেল’, ১৯৯৪ রিলিজড, ওই রিলিজ-ইয়ারেই ইনকাম করেছিল তিপ্পান্ন মিলিয়ন ডলারের মতো। ওই সিনেমাতেও অভিনয় করেছিলেন হিউ গ্র্যান্ট এবং সঙ্গে ছিলেন অ্যান্ডি ম্যাকডাওয়েল। ওই-সময়কার, নব্বইয়ের দশকের, তোলপাড় ব্যবসাসফল ছবিগুলোর মধ্যে যেমন যুক্তরাষ্ট্রে টাইটানিক, যুক্তরাজ্যে তেমনি নটিং হিল। ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিবছরে নটিং হিল কত আয় করেছিল কোনো হিসাব আছে? হ্যাঁ, আছে। একটু আগে যে-সিনেমাটার কথা বলা হলো, ‘ফোর ওয়েডিং অ্যান্ড অ্যা ফিউন্যারেল’, ওইটার দ্বিগুণ আয় করেছিল পয়লা ধাক্কাতেই। বাদবাকি এতগুলো বছর তো রইলই, বিচিত্র মাধ্যমবাহিত হয়ে এখনও তো থামিয়া নাই আয়।

একটা সার্ভে হয়েছিল নটিং হিল নিয়া ওই-সময়। একটা দর্শকজরিপ। অধিকাংশ দর্শকই সিনেমাটা দেখেছে জুলিয়া রবার্টসের কারণে, এইটা সার্ভে থেকে উঠে এসেছিল। ছবিতে দেখা যায়, জুলিয়া রবার্টস্ একজন অভিনেত্রী। মানে, অভিনেত্রীর রোলে প্লে করেছেন তিনি কাহিনিটিতে। যে-চরিত্রটি জুলিয়া রূপায়ণ করেছেন সেটিও অভিনেত্রীরই, বিখ্যাত অভিনেত্রীর গল্পকাল্পনিক চরিত্র। গল্পে একটা শান্তনির্জন শহরতলির বইদোকান গুরুত্বপূর্ণ স্থল হিশেবে প্লে করতে দেখা যায়। সেই বইদোকানের মালিকটি নিপাট ভদ্রলোক গোছের এক তরুণ। দোকানমালিক এই নিপাট গোছানো সুদর্শন তরুণের চরিত্রে অভিনয় করেছেন হিউ গ্র্যান্ট। জুলিয়া কাজের ঝক্কিতে জেরবার হতে হতে একদিন সেলেব লাইফ থেকে মুক্তি পেতে এই নির্জন শহরতলির বইদোকানটায় আসে। এইখান থেকেই সিনেমার ক্লাইম্যাক্স শুরু। দোকানমালিক তরুণ আর চোখধাঁধানো অভিনয়শিল্পী দুইয়ের মধ্যে প্রেমের সূত্রপাত হয়। এরপর নানান খাতে বইতে শুরু করে ঘটনা। হাস্যরস, সামাজিক সংঘাত, মানসিক ও মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েন, চোখা চাহনি ও বুদ্ধিদীপ্ত অভিনয়, বিন্যাস্ত সংলাপ ইত্যাদির সমবায়ে একটা সাক্সেসফ্যুল ম্যুভিচিত্র নটিং হিল।

চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সেই-সময় নটিং হিল আরেকটা রেকর্ড গড়েছিল। কোনো কমেডি সিনেমার এত মুনাফাদায়ক ওপেনিং এর আগে হয় নাই। রিলিজিং ইয়ার নাইন্টিসেভেনের মে মাসের শেষ হপ্তা থেকে একটানা সাতটি দিনের হিসাবে নটিং হিল আয় করেছিল প্রায় আঠাশ মিলিয়ন ডলারের মতো।

… …

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you