“কবিরা এত কবি কেন; মানে, ঐ যে কবি-কবি টাইপের এক-ধরনের ব্যাপার আছে না! কবিরা এত ঐ টাইপের কেন? কবিরা খ্যাত্ আছে, আজব চিড়িয়া, ধরা যাক বেবুন। ফলত কবি-কবি টাইপের কবি থেকে দূরে রওয়া ভালো … কবিরা খারাপ, আনস্মার্ট, খ্যাত্ প্রায়শই … কবিদের ঘৃণা করুন!” — হিজল জোবায়ের
খবর্দার! বিঅয়্যার! ওই সব্বুনেশে কাজটা ভুলেও করতে যায়েন না যেন! ওতে পোয়েটদের প্যানপ্যানানি বাড়বে বৈ কমবে না নে। পদ্মা-মহানন্দায় তো তিল ঠাঁই আর নাহি রে প্যানপ্যানানির পয়মালিতে, যেটুকু শুকনা ধানজমিনের সংলগ্ন নাবাল গোচারণভূমি ঠাহর হয় এখনো অস্পষ্টা-আবছা, তা-ও তৎপ্রস্তাবিত প্রোটেস্ট্যাশনের প্রকল্প শুরু হলে ন্যাতা ত্যানার ন্যায় বেফজুল বর্বাদ হো যায়ে গা। আমি নিজেই দিমু শুরু করে, প্যানপ্যানানি, পয়ারে … ওরে, আমারে হ্যারা খালি খালি ঘিন্না করে রে, বিধাতা আমারে ঘেন্নাগ্রন্থনার ভার দিয়া চাবি মাইরা ছাইড়া দিসে রে … কেউ আমারে ভালুবাসে না রে … বন্ধু তুমি কই রইলায় রে … হ্যারা আমারে ঈর্ষা করে রে … ওগো মোর পরমপ্রিয় কচুবৃক্ষ, আইসো, দোঁহে লাগাই গলায় নিঠুর ফেঁসো পরস্পর … (ব্লা ব্লা) … কবিদের কাজ আমরা কবিরা করিবাম, গিগা-গিগাবাইট কবিতা লিখিবাম বেবুন-বাফুন ব্যাদ্না লইয়া … পালাবার জন্য তখন পথটা পাবেন না, মালাবার দ্বীপের নৌপথটাও মুখ ফিরায়ে নেবে …; এরচেয়ে বরং ক্রন্দনপুতুপুতু কবিদের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ বলুন, সমস্বরে বলুন ‘ভালো ভালো ভালো, সাতিশয় শিবম্ সুন্দরম্’, বলুন ‘ক্যারি অন, উ লি লি লি বাব্বা, কিপ ইট আপ কাক্কু!’ … ওতে ধ্যানপ্যাগোডার চাতালে অপরাহ্নের ন্যায় স্নিগ্ধা শান্তিটা তারিয়ে তারিয়ে পেতে পারবেন, নিজের কাজটাও কল্পনাপ্ল্যানের অলমোস্ট ধারকাছ দিয়ে করে যেতে পারবেন। উপদেশ না, হুমকি দিনু,— অন্যথায় দিব নে শুরু করে বেবুনদুঃখে ভ্যা ভ্যা কান্না দিস্তে-দিস্তে … গিগাবাইট ট্যারাবাইট … জিনা হারাম হো যায়ে গা তেরা …; আউর বেহতর হয় খেলারাম বাবরালিদিগেরে একটু অবজ্ঞা না-হোক উপেক্ষা করে যেতে পারলে, এই পিত্ল়াঘুঘুদেরে নিজের আলাপে আনা মানেই নিজের কাজকাম ব্যাহত হওয়া; বার্না ম্যায় তো সৈয়দ হকিশ পোলি(ও)টিক্যালি সেয়ানা পোয়েটদের প্রশংসায়/নিন্দায় নিঃশ্বাস-হ্যামারেইজে কবেই পটল তুলতাম! সৈয়দ হকিশ হনুমানজিদের লইয়া আমরা কী করিব, কোথা যাইব, উনাদের স্মার্টনেসের মানিক্কিচিপায় চিড়েচ্যাপ্টা জাতির ‘মানস-মানচিত্র’ ভোগান্তিরত, প্রপিতামাতামহদিগের নামও ভুলিয়া যাইবার দ্বারপ্রান্তে এখন কবিতাপাঠক ও বুদ্ধিজীবিপীড়িত দর্শক। উনি বিজ্ঞাপনী স্টাইলে হামেশা বলে আসছেন চল্লিশ বছর ধরে যে, ‘সেই ১৯৫৩ সাল থেকেই’ তিনি অত্র ভূভাষাখণ্ডের বডিবিল্ডার, আজ্ঞে, পেহলোয়ান, চ্যাম্পিয়ান, বটে! “রাজার হয়েই শিঙেয় ফোঁক / ভোটগুলি সব রাজার হোক / বলুক সবাই সেলাম করে / বুলবুলিটা রাজার লোক / তাল যদি দিস ঠিক তালে / অন্য সবাই পস্তালে / রাজার থালের এঁটো চেটেই / করবি সুখে মাতলামি” — কবীর সুমনের ‘ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমী’ লিরিক্সে এই সেয়ানা নাইটিঙ্গেলের খানিকটা সাক্ষাৎ আমরা পাই। আর পাই জাতীয় সংকটকালে বাংলাদেশের মিডিয়ায় সৈয়দ হকিশ বুলবুলিশায়েরদিগের সাক্ষাৎকারে। এখন, কোন বুথে দেবো সমর্থন, কোন ভূতের প্রশংসা করি কিংবা করি ক্রিটিক — আনস্মার্ট বেবুনের, না স্মার্ট বজরঙবলির?
(২০১৫ ডিসেম্বরে কবি হিজল জোবায়ের সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের সময়রেখায় আপডেট দিয়েছিলেন প্রোক্ত এপিগ্র্যাফের বক্তব্য; কমেন্টবক্সেই, ইন রিপ্লাই, নিবন্ধটি লিখিত হয়েছিল। — লেখক)
—জাহেদ আহমদ ২০১৫
- ছত্তার পাগলার সন্ধানে আহমেদ স্বপন মাহমুদ ও সরোজ মোস্তফা - January 28, 2025
- সপ্তপদীর দুপুরবেলায় সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় || ইলিয়াস কমল - January 27, 2025
- স্বরচিত কবিতার অন্তর্গত অনুপ্রেরণা || হাসান শাহরিয়ার - January 24, 2025
COMMENTS