আমাদের মুক্তিযুদ্ধের এমন অসংখ্য ঘটনা আছে যেগুলো বলার শ্রেষ্ঠ সময় পেরিয়ে যাচ্ছে || সজীব তানভীর

আমাদের মুক্তিযুদ্ধের এমন অসংখ্য ঘটনা আছে যেগুলো বলার শ্রেষ্ঠ সময় পেরিয়ে যাচ্ছে || সজীব তানভীর

Didn’t we also flee Pakistan to encroach on this land, you were only two years old when we fled Rawalpindi and came to Delhi. No one willingly deserts their home for a strange land. Circumstances compel them to do it. For the world a refugee means a faceless crowd. But always remember this, Balli, that crowd is made of living, breathing people just like us. Remember, we too are refugees.

আমি কামিং অফ এজ মুভি পারতপক্ষে এড়িয়ে যাই, মানে ঠিক হজম হয় না আমার। কিন্তু এই মুভিটা আমাদের আটকে রেখেছে শেষ পর্যন্ত। এই মুভিটা মূলত একটা কামিং অফ এজ মুভি, যেটার ব্যাকগ্রাউন্ডে ওয়ার রেখে একজন ওয়ারহিরোর বায়োগ্রাফি বলা হয়েছে। এই মুভিতে যে-যুদ্ধের ব্যাকগ্রাউন্ড সেটা ১৯৭১-এর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। এই মুভির আগে  শেষ কবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দারুণ ভিজ্যুয়াল দেখেছিলাম মনে পড়ছে না আসলে। এবং এই মুভির সম্ভবত এই ব্যাপারটাই আমাকে ধরে রেখেছে মুভিটায়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের অত্যন্ত বড় ঘটনা যে গণহত্যা, সেটা কেন যেন মুক্তিযুদ্ধের কোনো মুভিতেই আর উঠে আসে না (একাত্তর-পরবর্তী সময়ের কিছু চলচ্চিত্রের পরে)। ভারতের একটা সিনেমায় এই বিষয়টিকে এত গুরুত্ব দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে, অবাক হয়েছি।

Those five minutes were the longest five minutes of my life. I now understood why we have to fight this war. To stand by and watch such atrocities and injustice happen before our eyes, was not in our nature.

ঠিক এভাবেই সিনেমায় প্রটাগনিস্টের মুখ দিয়েই বলানো হয়েছে, কেন এই যুদ্ধে পাশের দেশ ভারতের জড়িয়ে পড়তে হয়েছে। এবং পুরো সিনেমায় কোথাও ঐতিহাসিক কোনো ভুল তথ্য দেওয়া হয়নি একদমই, কোথাও আমাদের যুদ্ধ আর আমাদের যোদ্ধাদের খাটো করার সামান্যতম চেষ্টা পর্যন্ত দেখা যায়নি। আমরা ঠিক যেভাবে রাজাকারদের হাস্যকরভাবে উপস্থাপন করার অভ্যাস বানিয়ে ফেলেছি, এই সিনেমায় আমাদের সেই ধারা ভেঙে দিয়ে বরং দেখিয়েছে এই দেশদ্রোহী বিশ্বাসঘাতক রাজাকারগুলি আসলে কতটা হিংস্র ছিল। তাই বলে অতিরঞ্জিত করে লাশ আর রক্তের ছড়াছড়ি করেনি, দশ-বারো বছরের বাচ্চার মারা যাওয়ার দৃশ্যও খুব সাবধানতার সাথেই দেখানো হয়েছে সিনেমায়।

কারার ওই লৌহ কপাট…’ ফিল্মে আছেই সম্ভবত ৪০-৪৫ সেকেন্ড, সুর আমার পছন্দ হয়নি, কিন্তু আমার আসলে এতে আপত্তি নেই এর বেশি। ডিরেক্টর সম্ভবত চেয়েছিলেন এমনই, যেখানে একদল নবিস যোদ্ধা নিজেদের মতো করেই গানটা করছে, হয়তো।

সিনেমাটোগ্রাফি (একজন নারী সিনেমাটোগ্রাফার) আর অ্যাকশন দারুণ। মিউজিকটা কিছুটা খাপছাড়া। প্রিয়াংশু পেইনুলি (ভবেশ যোশি সুপারহিরো) খুব অল্প সময় স্ক্রিনপ্রেজেন্সেও দাগ কেটেছে, ইশান খাত্তার লিড অ্যাক্টর হিসেবে ঠিকঠাক বলা চলে। বলতে ভুলে গিয়েছিলাম, স্যাম মানেকশ একজন ম্যাজিকাল ফিগার আমার কাছে, উনার উপস্থিতির অংশগুলো এত দারুণ প্রেজেন্ট করা হয়েছে, ‘স্যাম বাহাদুর’ মুভির জন্য ক্ষুধা বেড়ে গেছে।

সিনেমাটা আমাদের অতি অবশ্যই দেখা উচিত। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের এমন অসংখ্য ঘটনা আছে যেগুলো বলার শ্রেষ্ঠ সময় পেরিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমরা প্রায় নব্বই বছরের এক ভিনদেশি বুড়ো নির্দেশককে এনে ঐতিহাসিক ঘটনাকে পালটে ফেলে প্রপাগান্ডা বানাচ্ছি। নিজেদের গর্বের একটা যুদ্ধের কথাও আমরা ঠিক করে বলতে পারি না, অন্যরা বলতে চাইলে অহেতুক প্রশ্ন তুলি।

আমাদের চলচ্চিত্র পেছাতেই থাকবে এমন হতে থাকলে…


সজীব তানভীর রচনারাশি
গানপার ম্যুভিরিভিয়্যু

COMMENTS

error: