মহামারী ড্রিমস
আমার সাথে গাও একটা ড্রিম সিকোয়েন্স,
আমার সাথে হাঁটো একটা উঁচু-নিচু উপত্যকা
আমার সাথে ভাবো একটা সময় যা উপুড় হয়্যা আছে
বলো বিশ্বাসী, বলো স্বপ্ন—
কুন ফায়া কুন, কুন ফায়া কুন, কুন ফায়া কুন।
আমি শব্দ জানি একটাই, ড্রিমস।
আরেকটু কাছে এসে শোও শেষ একটাবার।
দেখো একবার? ঘাড় ঘুরাও কোন দিকে? শোনো…
মহামারী কাইড়া নিতেছে প্রাণ, টান তো কাড়তেছে না।
আমি ধরতে পারতেছি তোমার সকল মিথ্যা।
আমার ড্রিমস ডাইকা যায় টানা…
কুন ফায়া কুন কুন ফায়া কুন কুন ফায়া কুন।
দেখো, হয়ে যাইতেছে একটা জনপদ,
দেখো বয়ে যাইতেছে একটা বাতাস।
তোমার কানের পাশে বয়ে যাইতেছে কার নিশ্বাস?
তুমি অঙ্গীকারবদ্ধ কার কাছে? তোমার নিয়ত কি?
তুমি ড্রিমস না রিয়্যালিটি?
আবার ভেসে আসতেছে ত্রাণের ট্রাক, আসতেছে খুন।
কুন ফায়া কুন, কুন ফায়া কুন
আমি জাইগা থাকতেছি বানের পানির মতন,
আমি স্বপ্ন দেখতেছি, ত্রাণকর্তা আসতেছেন।
আমি হুইসেল শুনি ইস্রাফিলের, আমি ফাইট করতেছি।
আমি বিশ্বাস রাখতেছি প্রেমে, তুমিতে, শোয়ায় আর খাবারে।
শোনো, কান পাতো, বলো কে থাকলো?
স্বপ্ন, ঈশ্বর, নীলাকাশ নাকি মরুপ্রান্তর?
একযোগে আমরা হাঁটা দিছি, যেদিকে স্বপ্ন।
একদল মানুষ শুধু বিড়বিড় করে খোলা প্রান্তরে,
কুন ফায়া কুন, কুন ফায়া কুন, কুন ফায়া কুন।
কুন ফায়া কুন, কুন ফায়া কুন, কুন ফায়া কুন।
কুন ফায়া কুন, কুন ফায়া কুন, কুন ফায়া কুন।
ম্যানিফেস্টো
খুচরো পয়সার মতন থেকে যাচ্ছি,
এখানে ওখানে।
গতমাসের ম্যাগাজিনের মতো,
খোলা পড়ে থাকছি হৃদয়ে।
দুপুরের বাড়তি ঝোলের মতো ভাসছি,
মিটসেলফে!
রাত বাড়তেই গভীর হচ্ছি,
খাঁদের মতন।
প্রিয়তমর চোখকে স্কুলে পাঠাচ্ছি,
সপ্তাহে দু’বার।
তজবি বের করে ঈশ্বরের বদলে জপছি,
ব্যথার নাম!
কবিতা কিংবা কার্পেটে শুয়ে থাকছি,
রাত্রিদিন।
তাকিয়ে দেখছি তুমি ভাত বেড়ে দিচ্ছো,
সকলের পাতে।
মিথ্যে ছুটির দরখাস্ত লিখতে লিখতে জামার ভাঁজে,
ভাঁজ দিচ্ছো বিদীর্ণতা।
আরে টাঙাও মশারি, ৩ অক্টোবর, শিশির,
আগুন এবং নার্গিস ফুল।
রেইনি একটা ডে
পাশ কাটায়া যাইতেছি ঘাম, ঘৃণা, ঘ্রাণরে।
পেছন ফিরে ভাবি, “যদি কিছু আমারে শুধাও”
আমি নীরবে তাকায়া থাকবো নাহ!
আমার হাত,
শুকনা আর খালি।
হাতের রেখা আঁকায়াবাঁকায়া তোমার বাড়ির দিকে…
সারাসকাল জলের দিকে হাঁটলা,
জল আদর বুলাইতেছে তোমার নখ, চামড়া আর মাংসে।
পুরানা বাকসো খুলছি,
পোকায় কাটা মেরুন শাড়ি বাইর হয়্যা আসলো!
মেরুন এই শাড়ি গায়ে দিয়া কয়েক বোতল কোক মারছি রইদের দিনে।
এক একবার মুখের দিকে চাইতা তুমি আর বুক ভাইসা যাইতো!
রেইনি একটা ডে বুঝলা?
কথাবার্তা তো এলোমেলো হইবোই।
আমার ধর্ম তুমি তোমার ধর্ম ঈশ্বর,
তাই না জানেমান?
বেদুঈন, বাইদ্যা, বেদনা আমার একশব্দ মনে হয়।
আমি একটা রাস্তা ধইরা হাঁটতাছি,
রোদ, রোদ, রোদ, একা, একা, রোদ, একা,
রোদ, একা, একা, রোদ, রোদ, বেদন, রোদ, নিদান, রোদ, একা, গাছ, শ্যাডোজ, রোদ…
গোপন নূরজাহান
নূরজাহানের বাকসো
খুলে যায়
একে একে আসে
ডর, দুঃখের নহর, প্রেম।
জানালা আটকে যায় সশব্দে
নূরজাহানের বুক ধ্ক ধ্ক করে
কড়ায় আটকে যায় প্রেম।
বৃষ্টির সাথে কুলকুল করে বয়ে যায়,
মাটির পৃথিবীর সুখ।
প্রাণের কাছে আজ নাই কোনো আত্মীয়,
নূরজাহানের বুকে একটা ডালিম ফালি হয়।
নূরজাহানের পায়ে বেজে ওঠে ঘুঙুর!
আজা নাচলে ইয়ার!
মুদ্রায় মুদ্রায় ক্ষোভ দলা হয়ে ওঠে।
হৃদয়-জয়-করতে-আসা সুহৃদ প্রেমিক,
বোঝে কি বেদনার ভাষা?
নিশুতি রাতে,
ভাগ হয় না পার্থিব সুখ
হায় নূরজাহান হায় সুবাস!
মনোলগ
আমিই কি মানুষের বাগিচায় নিকৃষ্ট মানুষ
যে ঢুকে যাচ্ছে একটা মনোলগে?
আমি বাঁচতে চাইছি একা আর স্পষ্ট।
মেঘের মাঝে করছি আমার পার্সোনিফিকেশন।
পুরুষের উদ্বেলিত যৌনতার নির্মাণসঙ্গী হবার ইচ্ছার প্রতি
আমি ঘৃণা দেখিয়েছি বারেবার।
মদের গেলাস ভরতি শুধুই দেখছি অনুকম্পার ভড়ং!
তুমি সম্রাট নাকি সৈনিক? মিথ নাকি ক্যাটেস্ট্রোফি?
তুমি হচ্ছো অনন্ত স্রোত, যাতে নিজেকে আমি যোগ করি মাত্র!
কান্নার পোশাক পরবার পর,
তুমি হয়ে ওঠো গন্দম-গিলে-ফেলা নাজুক পুরুষের ন্যায়।
আইডেন্টিটি ক্রাইসিসের এই দুনিয়ায়~
নহর, মাগী আর গির্জার ঘন্টায় শুনেছি তোমার ঘুম ভালো হয়?
স্বাতন্ত্র্য কীভাবে বিকিয়ে দিচ্ছ রোজ?
তোমাদের কথামালা, আলিঙ্গন, আড্ডা, সাহিত্য, প্রতিশ্রুতি,
শোধ, পত্রিকা, সংবাদ, বিষাদ, অলিগলি, হসপিটাল, জাগরণ,
মানববন্ধন, চাটুকারিতা, ভোর,
কোদাল দাঁত, বিউটি পার্লার, সুন্দরী নারী কিংবা ফরাশি গড়নের পুরুষ,
কিচ্ছুটি আমাকে টানছে না।
শুধুই টানছে খুলে-পড়া পোশাক আর আড়ালের ক্ষত।
কিংবা আরো আড়ালে থাকা মৃত্যুর শীতলতা!
আমি জীবনকে বারবার খুলছি,
দেখতে চাইছি আছে কি অন্য জীবন?
আছে কি এক ফড়িঙের দল?
~যারা নির্মোহ জেগে আছে প্রেমপ্রত্যাশীর পাশে?
ধাঁধানা
তোমাকে পার হয়ে আসে দারুচিনির ঘ্রাণ,
যুদ্ধবিরতিতে তুমিই মরমি পানীয়;
তিনভাগ জলের ধাঁধায় তুমি এক ভাগ স্থল।
চিলের চঞ্চুতে পলকেই বিঁধে যায় ব্লু মার্লিন!
তেমন আমি বিঁধে থাকি হৃদয়ের কাননে।
মানুষকে সহজ ব্যাকরণ বইয়ের পাতার মতো পড়ে ফেললে,
থাকে শুধুমাত্র নির্লজ্জ সময়।
দাঁত, নখ, চোখ আর একটিমাত্র মিথ্যায় ঢাকা মানুষ,
বেরিয়ে আসে খোলস ছেড়ে।
মানুষ নিয়ত জন্মায়,
মিথ্যের মতো।
মানুষের শব্দ শোনায় বেত্রাঘাতের মতো।
যেমন শোনায় ঘোড়ার পিঠে সভ্যতার চাবুক!
তবে,
তিনভাগ জলের ধাঁধায় তুমি একভাগ স্থল
থৈ থৈ থৈ থৈ শব্দে বেজে ওঠো কানে!
ফিয়ার ফ্যাক্টর
উৎরাইতে পারি না ফিয়ার ফ্যাক্টর
এই বুঝি কিস্তিমাত!
নয়া হুকুম নাজিল হইলে তোমারে আর পাবো না।
রুমালের ফোঁড়ের মতো তুমিও ‘ভোলো না আমায়’ পর্যন্তই
কই যাও?
সেখানে কাগজী লেবু চিপা চা দ্যায়?
বোতামে বোতামে আঙুল প্রেম ডলে?
তুমি প্রেমবাহাদুর,
য্যান কামিজের ফিনিশিং লাইন।
তোমার মোটরগাড়ি ছুইটা যায় সমুদ্র-অভিমুখে
য্যান মর্ম দিয়ে গাই নাই আঁকড়ায় রাখার গান।
অতদূর যাবা?
বুকে বাজপাখির ডাক উঠবে না?
প্রিয় মুখ না-দেখা বিহানবেলায়,
ছোট বেগুনি ফুলের মতো কুঁকড়াবা না?
আমার লোভ হয়,
তোমারে আরো দিন রাখি বনেদি ভালোবাসায়।
আরো কান্দি তোমার বুকের উপর।
কিন্তু কও
আধুলি, টাকা, পয়সা, নোট, ভাংতি, আস্ত কি প্রেম বোঝে?
তবু…
তুমি ফিরো
তুমি ফিরো
তুমি ফিরো
তুমি ফিরো
একদিন ফিরো আমার দিকে…
লোকগুলো ফিরবে?
ফিরলেই যদি দুশো সাপ, মুখ বের করে জিগ্যেস করে—
কি অ্যাঁ? এই হলো ফেরার সময়?
~এই ভেবে লোকগুলো বাড়ি ফিরছে না।
শহরের রাস্তায়, রেস্তোরাঁয়, বড়-ছোট গলিতে,
লিফটে কিংবা ফায়ার এক্সিটে ওরা পা দোলাচ্ছে।
পান চিবিয়েই যাচ্ছে, ফিছফিছ করে খুলছে বিয়ারের সিপি, মস্করা করছে,
রিং বাজলেই কেটে দিচ্ছে ফোন।
একেকজন তখন রেসের ঘোড়া!
বাপ রে, কী তেজ!
ঠিক মধ্যরাত হলো,
এবার শরীর শুতে চাইছে, আদর চাইছে।
মাথার নিচে বালিশ চাইছে, চাইছে একটা হাত কিংবা কষা মাংসের ঘ্রাণ!
লোকে যাকে বলে, ঘর!
কিন্তু কাহাঁতক আর ঘর?
ধ্যার শালা!
আগালেই সাপ, পেছালেই শ্লেষ!
কিন্তু…
কথা তো ছিল ভিন্নরকম।
কথা ছিল দরজা হবে বেহেশতি!
রেশমের গালিচা, দুধ আর মধুর নহর বইবে চতুর্দিকে।
সালসাবিল ঝর্ণা আর চিরযৌবনা স্ত্রী করবে আপ্যায়ন।
কথারা চিরঞ্জীব নয়
তাই ঘর পড়ে রয় দূর কোলাহলে।
আমরা আগাই, রোজ রাতে দাবার সৈন্যের মতো!
একঘর, একঘর, একঘর…
মঙ্গলবার
আত্মবিলাপের মাঝখান দিয়া কিছু মঙ্গলবার আসে,
একেকটা মঙ্গলবারে আমি একখান নতুন মানুষ।
যেন আমি খুলতাছি লাল, নীল, হলুদ, সবুজ আমব্রেলা।
আষাঢ়ের মঙ্গলবার রাইত ব্রাউন মেষের পাল।
যেইসব মেষ চরাচর পার হয়্যা যাইতাছে গলার ঝুনঝুনির ছন্দে।
ঘূর্ণিঝড় প্রথমে সাগরে, এরপর লোকালয়ে আসে।
যেইসব লোকালয় ছাইড়া প্রতি মঙ্গলবার পালাইতে চাই তুমি-আমি!
টুয়েজডে নাইটে কোনো ধুনফুন নাই।
মঙ্গলবার দুপুরবেলা ভাতটা খায়াই,
আমি ভুলে চইলা যাব নীলক্ষেত।
মঙ্গলবার দুপুরেই,
আমার গোলাপি ওড়নার সাথে কচি কলাপাতা সালোয়ার ম্যাচ করাইতে হবে।
রিকশা ঘুরাইতে কয়্যা আমি কপালে হাত দিয়া উত্তরাধুনিকদের মতো কইতে থাকব—শিট, ফাক, চুকচুক!
মঙ্গলবার দুপুররাতে আমার বিগার উঠবে সুগারের।
আমি হাতের করে গুনবো বিষ্যুদবার কদ্দূর।
মঙ্গলবার দুপুরে, চা খাইলা, বিড়ি ফুকলা, চাবাইলা কাঁচা সুপারি, পান।
আদুরে বেড়ালের মতন পায়ে পায়ে ঘুইরা গেল দিন।
ধ্যার মিয়া! দেখলা না!
ফানি ফাঙ্কি এই রাত্রে, তুমি আমারে চুমুক দিয়া তুলতে পারবা ওপর দিকে?
তারপর ঢোঁক গিলার মতন আবার নিচের দিকে নামাইলা?
অরোরার আলোয় পাওয়া দৈব টুয়েজডেতে
তুমি হাসি, অশ্রু, প্রেম, সংলাপ কিংবা তীব্রতার সমকক্ষ।
মে মাসে বৃষ্টিব্লুজ
জলের দিন,
আই রিমেম্বার স্কাইজ রিফ্লেক্টেড ইন ইওর আইজ।
বাজে মুডি ব্লুজ…
ড্যাং ড্যা ড্যাং ড্যাং ড্যাং।
জল, দুপুর, নদী, দ্বিপ্রহর, প্রজাপতি ম্যাচ আর মের গান।
আত্মহননের গান কলাবতী গাছের শরীর জুড়ে।
কানাগলি,
বৃষ্টির জল ঘোলা হলো বারগেন্ডিরঙা বিকেলে।
বিরহী নকশা জাগে কপালের ঠিক মাঝখানে।
কামিনীকাঞ্চন ঝুরঝুর করে আদরে নুয়ে পড়ে ছাদের কার্নিশে।
কালো পাখি উড়ে যায় গলির শেষে।
নিস্তব্ধতা তরঙ্গ ছড়ায় বিস্মৃতির শুঁড়িখানায়।
মাজবুরিয়া,
আকাশের রঙ খয়েরি, ভয় ছড়ায় নাভিমূলে।
কান্নাকে ডাকি ক্লাউন।
গোধূলির আলোয় এসো,
খোলো সব আবরণ যা তোমাদের আছে।
বিরাগ, জেদ, ক্ষিধে, কাম, লোভ, পরোক্ষ প্রতিহিংসা, কাপড়, ন্যাকা কান্না সব সব সব।
ড্রাগস,
নেশাতুর চোখ, উইন্ডি মন আর হৃদয় জোড়া স্কারস।
দিন কাটছে নধর সাইডবার্নে।
ফ্যান্সি ডিল হচ্ছে তোমার সাথে।
প্রেমানল ছড়াবো সিন্ধু থেকে ইনকায়।
মায়ান থেকে মুঘলে।
তামাম দুনিয়ায় ঘোষণা করি জিহাদের।
স্কেচ করি প্রেমের।
বৃষ্টি এতগুলো কথা কওয়াইলো শালা!
- মহামারী ড্রিমস অ্যান্ড আদার্স || সৈয়দা নীলিমা দোলা - July 9, 2025
- বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান, আমাদের আতাভাই || বিমান তালুকদার - June 30, 2025
- উৎসব পুরাই ১ এর ক || কাজী ইব্রাহিম পিয়াস - June 29, 2025
COMMENTS