দেশের রাজনৈতিক দিশা || আনম্য ফারহান

দেশের রাজনৈতিক দিশা || আনম্য ফারহান

অনেকগুলা লাইভ দেখতেছি একসাথে। ফাইনালি সহিংসতা শুরু হইল আবার। ঢাকায় প্রবেশের পয়েন্টগুলাতে বিএনপির অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে এর সূচনা হইল।

যেই বহির্বিশ্ব পটেনশিয়াল রাষ্ট্রগুলাকে এখন মিলিশিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাইতেছে, মানে গত ২৫/৩০ বছর ধইরাই;— এর সেন্টারে আছে সেই পরাকাঠামো নিশ্চিতির পারফর্ম্যান্স, যেইটা কার্যত অনুগত রাষ্ট্রের জন্ম দেয়। আনুগত্যের পুরষ্কার স্বরুপ অ্যালোকেশনের হকদার হওয়ায়। এ-রকম আর কি — “বড় মাছ বাচ্চা মাছেরে কয় আমার দিকে থাকো, আর ওই বাচ্চা মাছের বাপেরে কয় দ্যাখ তোর পোলারে বিগড়াইয়া দিয়া তোরে ক্যামনে খেইল দেখাই।”

আরেকটু বড় পরিসরে তাকাইলে এইটা পরিষ্কার যে, তথাকথিত আধুনিক রাষ্ট্র জিনিসটাই এখন কুৎসিত থিওরি হিসাবে এর তলানিতে আইসা ঠেকছে।

ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের সুফল পাইতে বিশ্বব্যাপী যেই মাল্টিপোলার ক্লাস্টার ফর্ম হইতেছে আমাদের চোখের সামনে, ওইখানে আধুনিক রাষ্ট্র থিওরি কিছুটা গ্রাম্য গ্রাম্য লাগলেও আখেরে একটি ফলপ্রসু স্ট্রাকচারই হওয়ার কথা। অন্তত, উত্তরণের এই পর্যায়ে। ওইখানে ভবিষ্যৎ কার? জনগণের? না। ওইটা ঘটাইতেছেই ফ্যাসিস্টরা। এর সুফলও তারাই নিবে।

আমেরিকাপন্থী, ইয়োরোপপন্থী ক্ল্যাসিক উদারবাদিতার যেই ছায়া ডকট্রিন আছে, অর্থাৎ মাইল্ড পয়জনাস একটা প্রাতিষ্ঠানিক স্ট্রাকচার বা কাফকা বর্ণিত ব্যুরোক্রেটিক রাষ্ট্র; অর্থাৎ তারই ছায়া — ফর্মূলা রাষ্ট্র বানানো, যারা তারই প্রোডাক্ট — এই হচ্ছে তার পরিণতি। চরমপন্থার সিনার্জি। এইটা আমেরিকা ও ইয়োরোপকে ভোগ করতেই হবে। ইতিহাস এভাবে গড়াইয়া চলে।

এখন ফ্যাসিস্ট বিরোধিতাকারীদের আশ্রয় কি হইতে পারে? আধুনিক রাষ্ট্রের নতুন সংজ্ঞা কি হইবে? প্রাচ্য যে পুরাপুরি পাশ্চাত্য হবে না, এইটা বইলা দেওয়া লাগে না। কিন্তু নতুন এই প্রাচ্যরা সংঘবদ্ধ হইতেছে, এই ফেইজ চলার কালে তারা যেই ডেভলাপমেন্ট ইকোনমি অ্যাডাপ্ট করতেছে, এইটা তো ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দিকে যাওয়ার পথ। পুঁজির বিকাশের দিকে গিয়া তারই মাধ্যমে এমপাওয়ার্ড পিপল অ্যান্ড তাদের স্টেইট বানানো। তা একরকম রাস্তা। আর পাশ্চাত্যের আইডিওলজিক্যল স্টেইট বা ফর্মূলা রাষ্ট্র আরেক রাস্তা।

যেহেতু রাজনীতি সবসময়ই ফোকাস করে ‘এখন’-এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ; তাই রূপরেখা প্রণয়নে খেয়াল করা উচিত বড় কনফ্রন্ট কোনটা। ক্ষমতা নিজেই একটি কনফ্রন্ট এবং সাবসিকোয়েন্ট অভীষ্ট লক্ষ্য।

তাই, গোলমালের মধ্যে সাধারণভাবেই জনগণকে বোঝানো উচিত, সরকারগুলা আমাদের কই কই নিয়া যাইতে চায়। তা তারা বলবে না, কারণ নিজেরাও স্পষ্ট না। এবং, ওইটা স্পষ্ট করলে সকল বিদ্যমান ক্ষমতা উইং আসলে লাগেও না। মানে ওয়ার্ক করবে না আর।

তাহলে কি হইল? আমার রাজনীতি আমার হাতে নাই, এইটা বলব? বেহাত বিপ্লব? না। আমাদের দেশের লোকজনের পলিটিক্যল গাইড জিনিসটাই বেহাত হইছে। বিশ্বও বদলাইয়া গেছে। থিওরিস্টরাও সেই কমন ছকপন্থী। এর মধ্যেই বেটার অপশনে যাইতে হইলে অপশনই না ভাইবা আগামী এক দুই বছরের লক্ষ্য নিয়া একটা কমন সিদ্ধান্ত নেয়া লাগবে।

“রাজা আসে রাজা যায়”, এভাবে একটা ঘানি টানার মতো লুপ হয়ে গেছে আমাদের। কলুর বলদের চেয়েও জঘন্য অবস্থা।

COMMENTS

error: