পাঙ্ক ইসলাম : তাকওয়াকোর || আহমদ মিনহাজ

পাঙ্ক ইসলাম : তাকওয়াকোর || আহমদ মিনহাজ

রবিনের কিতাবটি প্রায় এক দশক আগে বের হলেও এর প্রাসঙ্গিকতা অমলিন। মার্কিন দেশে জন্ম নেওয়া পাঙ্করক  ঘরানার গানে ইসলামকে উপলক্ষ ধরে বিকশিত তাকওয়াকোর-র (Taqwacore) খবর তাঁর কিতাব পাঠ করতে বসেই পাওয়া। সমগ্র উত্তর-আমেরিকা জুড়ে বিস্তৃত ইসলামী আচার-বিশ্বাস ও পশ্চিমে দেখা দেওয়া ইসলামভীতিকে সংগীতের সাহায্যে মোকাবিলার তাগিদ থেকে তাকওয়াকোর  জন্ম নিয়েছিল। আশির দশকে জুড়ে চাঙ্গা পাঙ্করক  নব্বই পেরিয়ে পরবর্তী দশকে প্রভাব হারালেও লাদেনকাণ্ডে বিধ্বস্ত অভিবাসী মার্কিনি মুসলমান গায়ক-বাদকরা র‍্যাপের বদলে পাঙ্ককে তখন বেছে নিয়েছিল। ইসলামভীতি ও ইসলামী চরমপন্থার দ্বৈত সংকটে জেরবার মুসলিম বিশ্ব থেকে বেরিয়ে স্রষ্টাকে নিজের অনুভব ও চিন্তনপদ্ধতির সাহায্যে উপস্থাপনের চেষ্টা তাকওয়াকোরএ সমবেত যুবাদের তাড়া করে ফিরছিল। সময়ের সঙ্গে এর প্রভাব ও প্রাসঙ্গিকতা ম্লান হলেও প্রায় দুই দশক জুড়ে তাদের কাণ্ডকারখানা পাঙ্করক  গানের স্পিরিট  বিবেচনায় মহার্ঘ মানতে হয়।

পাঙ্ক তো কেবল সংগীত নয়, এটা এক জীবনধারাও বটে। তো এই জীবনধারায় মাথা মোড়ানো শিল্পীর সহজাত খাসলত যেমন নেশাভাং, পোশাকপরিচ্ছেদ, খানাপিনা ও কামবাইয়ের সমুদয় উপকরণকে তাকওয়াকোর  নিজস্ব ধাঁচে আত্মস্থ ও তার মধ্যে ইসলামী বয়ানকে জুড়ে নিয়েছিল। পাঙ্ক অঙ্গে গান বাঁধার সমতলে তাদের দীনচর্চা অর্থাৎ সালাত আদায়, জুম্মাবারের খুতবা, কোরান ও হাদিস পাঠ বা তার ব্যাখ্যার মধ্যে সেই নৈরাজ্য ছলকে উঠেছিল যেটি ছাড়া নিজেকে পাঙ্ক রকার  প্রমাণ করা এক অসম্ভব ঘটনা। পাঙ্ক আসলে ‍কিছু গড়তে বা কোনোকিছুকে প্রতিষ্ঠা দিতে উতলা নয়। সাব-কালচারের অংশভাক সংগীতের ধারাটি হিপহপে একীভূত র‍্যাপগায়কদের মতোই স্বতঃস্ফূর্ত স্বাধীন সত্তাকে উদযাপন করে। এ-কারণে তার জীবনধারা ছন্নছাড়া হয়ে থাকে। মসৃণ, সুনিশ্চিত, নিরাপদ ছিরিছাদ বলে কোনোকিছুর বালাই সেখানে থাকে না। পাঙ্ক হচ্ছে এক ভবঘুরে, উড়াধুরা, বিকট (*এবং সমাজের চোখে কুৎসিত) গানরাক্ষস। তাকওয়াকোরও তা-ই বটে! এর প্রণেতা মাইকেল মোহাম্মদ নাইট অন্তত সেভাবেই উত্তর আমেরিকার মুসলমান সমাজে তাদের কার্যকলাপের ধরনকে স্বরচিত আখ্যানে চিহ্নিত করেছেন। বলা বাহুল্য আখ্যানটি বাস্তব ঘটনার ওপর দাঁড়িয়ে বিরচিত।

তাকওয়াকোর-র সদস্যরা পরিচয়ে মুসলমান কিন্তু জীবনাচারে পাঙ্ক। তাদের ঈশ্বর আরাধনায় ইসলাম নিছক টুল  হিসেবে ব্যবহৃত হলেও ব্যবহারের তরিকা নিয়ে সহমত ও মতান্তর দুটোই প্রবল। গিটারে চড়া লয়ের সুর তুলে পাঙ্ক জাহাঙ্গীর আজান দেয় এটা জেনেবুঝে যে এভাবে আজান দেওয়াটা বিদাহ  বা বিদআত। পাঙ্ক রাবেয়া বোরকায় নিজেকে কেন বন্দি রাখছে সেই ব্যাখ্যা কাউকে দেবার ঠেকা আছে মনে করে না। ওদিকে পুরুষের কুনজর এড়াতে যারা বোরকা পরে তাদেরকে অকাতরে ডিনাই  করে সে।

তাকওয়াকোরর ছাতায় সমবেত সদস্যদের জীবন চলে কোরানের আয়াতগুলোকে নিজের অনুভবের জায়গায় দাঁড়িয়ে পাঠ ও ব্যবচ্ছেদের ভিতর দিয়ে। কোরানের আয়াতসমূহে তারা যুগপৎ অবস্থান করেও সেখান থেকে নিষ্ক্রমণ নিতে দ্বিধা করে না। ব্যাভিচারী স্ত্রীকে মৃদু প্রহার সংক্রান্ত সূরা নিসা’র আয়াতকে রাবেয়া কালি দিয়ে মুছে দেয়, যেহেতু এই আয়াতকে সে তার ভাবনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে ভাবে। পাঙ্ক ফাসিক This is my shit  বলে বাথরুমে কোরান রাখতে দ্বিধা করে না। সালাতে ইমামের ভূমিকা যে-কেউ নিতে পারে এবং সেভাবেই তারা ঈশ্বরকে কৃতজ্ঞতা জানায়। সোজা কথা নৈরাজ্যে দাঁড়িয়ে তারা ইসলামকে আঘাত করে, যেহেতু এর খোলসে ঢাকা পড়া আল্লাহকে টেনে বের করাটা তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এক জিহাদ হয়েই আসে। ইসলামের ভিত্তি বলে স্বীকৃত কোরানের আয়াতকে তারা ওই জিহাদকে স্মরণে রেখে পাঠ যায়। কোরানকে সুবিস্তৃত আঙ্গিকে ব্যাখ্যা করে যে হাদিস তাকে গ্রহণ ও বাতিলের কাজটাও সেভাবে হয়।

নৈরাজ্যের সুনির্দিষ্ট সরলরেখা নেই। এভাবে হতেই হবে নয়তো ওভাবে…; — নির্ধারণবাদী ছকটাকে অস্বীকার করাই পাঙ্কের কাছে মৌলিকতা বলে স্বীকৃত। তাকওয়াকোর  তার বাইরে নয়। যারপরনাই তাদের কাজকারবারে অসংগতি ও স্ববিরোধিতা সহজ ছন্দে বহে। পাঙ্কগানের ভক্ত ওমর দলের সদস্যদের ইসলামযাপনের পদ্ধতি নিয়ে অহরহ ঝগড়া করে। বিদআত, হারাম ও তামাশা বলে দাগায়, যদিও হাতে উল্কি পরা ও পাঙ্কগানে ছলকে-ওঠা চিৎকারে স্বয়ং যাপন করতে ভালোবাসে। কিছুই নিশ্চিত নয় এখানে। রাষ্ট্র বা সমাজ নিশ্চয়তার পথ করে দিলে তারা সেখানে ঘাপলা পাকায় এবং এভাবে দেহকে যেমন ইচ্ছা ব্যবহার করে, আবার দেহের শক্তি ধরে রাখতে খানাপিনা বা ব্যায়ামটাও করে। সোজা কথা তার যেটা ভালো লাগছে সেটা করার মধ্যে পাঙ্ক নিজেকে পরিপূর্ণ ভাবতে চায়। পরিস্থিতি হচ্ছে নিয়ামক, যার ওপর পাঙ্কের বাদ্যবাজনা বা চড়াতালে সুরের পাগলামিটা নির্ভর করছে।

তাকওয়াকোর  এই পাগলামির মধ্যে একটা নতুন জিনিস ঢুকিয়েছে আর সেটা হচ্ছে স্রষ্টাকে তারা স্বীকার করে। মানবপ্রজাতির জীবনকে স্রষ্টা স্বয়ং নির্ধারণ করেন নাকি করেন না ইত্যাদি ঝগড়াঝাটির পরিশেষ ঘটে তাঁকে অতিকায় ও বোধাতীত ভাবার মধ্য দিয়ে। পাঙ্কের সূচনালগ্ন থেকে মোহাক  অর্থাৎ বিশেষ কেশবিন্যাস ও গিয়ার  বা পাঙ্ক ঘরানার জ্যাকেট গায়ে চড়িয়ে জাহাঙ্গীর তার জুম্মার খুতবায় ইসলাম বলতে সে নিজে কী বোঝে তার নির্যাসটা দিয়ে দেয় :

Islam is a fucking surrender… Is surrender getting up off the toilet halfway through a poop to go look in your Bukhari and see how Rasullullah wiped his ass? Maybe, brothers and sisters. InshaAllah. But to me, surrender can be laying outside at night to see shooting starsyou know what that means, right? That’s another eavesdropping jinn knocked out of heaven. So lie on your back, watch and get scared, real-real scared but not of Jehennam or anything like that; get scared because this universe is being controlled by Somebody besides you. Know that, realize that, dwell on it. And then you’re not scared anymore because that Somebody loves you in a way you can’t even begin to comprehend…

 “Allah’s too big and open for my deen to be small and closed. Does that make me a kafr? I say Allahu Akbar. If that’s not good enough then fuck Islam, you can have it. Imam Husain said, ‘he who has no religion, let him at least be free in his present life.’ So there you go. Now let’s pray.” [Source: The Taqwacores by Michael Muhammad Knight, 2003]

আল্লাহকে অতিকায় বলে দাগিয়ে আপাতভাবে ইসলামী বয়ানে থিতু জাহাঙ্গীর after all this shit I’m so fucking mulsim বলে নিজেকে চেনায়। ইসলামের বিশ্বস্বীকৃত পদ্ধতির ভিতরে তাকওয়াকোর  যে-কারণে যাপন করে আবার করেও না। মহাবিশ্বের অতিকায় অস্তিত্বের নেপথ্যে যে-নিয়ম ও নিয়ন্ত্রণ কাজ করছে তাকেই মূলত স্রষ্টার আদলে তারা কুর্নিশ ঠোকে। এর বাইরে যা-কিছু তাদের জীবনাচারকে সুনিশ্চিত প্রতিপন্ন করতে চায় তাকে প্রতিনিয়ত অনিশ্চিত করার মাঝে পাঙ্ক স্বাধীন ও সার্থকতা লাভ করে; — Straightedge পাঙ্কদের অমোঘ এই প্রবচনকে তাকওয়াকোর-র গায়ক-বাদকরা মোটের ওপর অনুসরণ করলেও স্রষ্টাকে সেখানে সংযুক্ত করায় তাদের যাপনপদ্ধতি Straightedge-র কপিক্যাট নয়। আল্লাহ বিরাট ও মানবমনের অগম্য, সুতরাং তাকে বিচিত্র নিশ্চয়তার ফাঁদে বেঁধে রাখার ফন্দিফিকিরকে আঘাত করাই নিজের নিজের মিশন বলে দাগায় তারা।

গেল দেড় দশক জুড়ে তাকওয়াকোর-র এই জার্নি উত্তর-আমেরিকা জুড়ে দ্য কমিনাজ (The Kominas), আলথাওরা (Al-Thawra), ভোটহেজবুল্লাহ (Vote Hezbollah), বিলাল বোল্ডার্স (Bilal’s Boulders), ওসামা টানেল ডিগারস (Osama’s Tunnel Diggers)-র মতো একের-পর-এক মুসলিম পাঙ্করক ব্যান্ডের উত্থানের মধ্য দিয়ে গতি লাভ করেছিল, যেখানে তারা আবার একে অন্যের প্রতিধ্বনি নয়। দ্য কমিনাজ  ব্যতীত বাকিরা সময়ের সঙ্গে ম্রিয়মাণ হয়ে পড়লেও পশ্চিম গোলার্ধের জনমনে তীব্র ইসলামভীতিকে বিদ্রূপবাণ হানার সঙ্গে খোদ ইসলামের সর্বাঙ্গে সক্রিয় চরমপন্থী কাজকারবারকে নৈরাজ্যে আবিল ভাষার সাহায্যে ধসিয়ে দিতে উন্মুখ ছিল। নৈরাজ্যের প্রয়োজনীয়তা যুক্তিসংগত কারণে সমাজে অমোঘ থাকে। মানুষকে শত ফন্দিফিকিরে যেসব পদ্ধতি অবিরত নির্ধারিত বা অবরুদ্ধ করে থাকে সেখানে ধস নামাতে Total Anarchy-র গুরুত্বকে অস্বীকার যাওয়ার সুযোগ নেই। দশকে-দশকে ওটা নতুন আঙ্গিকে মানবসমাজে উঁকি দিয়ে যায়।

নৈরাজ্য জরুরি তবে সমস্যা হলো পাগলাটে এই কম্পন বেশিক্ষণ ধরে রাখা যায় না। অবসাদ ও উদ্দেশ্যহীনতা ভর করে সেখানে। সরলরেখায় চলবে না বলে যে-যাত্রা শুরু হয় সেটা তার চলার পথে সবকিছুকে আঘাত ও প্রত্যাখ্যান করে যে-কিনারায় এসে ঠেকে সেখানে নিজেকে একা ও নিরালম্ব ভাবা ছাড়া উপায় থাকে না। নৈরাজ্যকে যারা ঘৃণা ও আক্রমণ করছে নৈরাজ্য এর প্রত্যুত্তর করতে গিয়ে স্বয়ং ঘৃণার ভাষাকে নিজের জন্য অমোঘ করে তোলে। যারপরনাই খেলাটি স্বয়ং গ্রহণযোগ্যতা হারায়। একটা সংকীর্ণতার জন্ম হয় সেখানে। যদিও সকল সংকীর্ণতার থেকে বেরিয়ে বৃহৎ হওয়ার জন্য সে যাত্রা শুরু করেছিল!

পাঙ্ক জাহাঙ্গীর এই সত্যটা উপলব্ধি করায় তাকওয়াকোর-র জার্নিটা তার নিজের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে ওঠে। হাদিসে বলা আছে বটে, ইসলাম তার অন্তে এসে বাহাত্তর ফেরকায় ভাগ হবে ও পরস্পর সংঘাতে জড়াবে, যেখানে একটা ফেরকা হয়তো প্রকৃত ইসলামকে ধারণ করে আছে। জাহাঙ্গীরের মনে অগত্যা এই জিজ্ঞাসা তীব্র হয়, — বাহাত্তরে ভাগ হওয়ার খেলায় তাকওয়াকোর  কি তাহলে নিজেও একটা ভাগ? যদিও ভাগাভাগির খেলাকে আঘাত করার লক্ষ্যে সে জন্ম নিয়েছিল। কী উদ্দেশ্য তবে নিহিত এই নৈরাজ্যে? জিজ্ঞাসার উত্তর তার আর পাওয়া হয়নি! যে-বাড়িতে একদিন তাকওয়াকোর  ভূমিষ্ট হয় সেখানে সকল মুসলিম পাঙ্ক ব্যান্ডকে সে গান গাইতে ডেকেছিল। যারা তাকে সমর্থন করে অথবা করে না সব্বাইকে জড়ো করেছিল সে। রাতভর চড়াতালের সংগীতে নিজেদের উদযাপন করার ক্ষণে অপ্রত্যাশিত ঘটনার স্রোতে নিজের মরণ ডেকে আনে জাহাঙ্গীর।

প্রতিকূল পৃথিবীতে শত উপায়ে নিয়মবন্দি মানুষ যেনবা দ্য কমিনাজ-র Every land is Karbala, everyday is Ashura — এই গীতকলির প্রতিধ্বনি করছে! তার জীবনের প্রতি ইঞ্চি কারবালার ময়দান আর এক-একটা দিন হচ্ছে আশুরা, রক্ত ঝরছে তো ঝরছেই। নৈরাজ্যের শেষ নেই। কেউ কি সত্যি আছে একে থামানোর? যদি থাকে তবে কেন সে একে নিয়ন্ত্রণ করতে তৎপর নয়? কী চায় সে? নাকি সবটাই দুঃস্বপ্নে ঘেরা এক ধাঁধা? এইসব প্রশ্নের উত্তর আসলে হয় না। যেমন জিজ্ঞাসার পরিশেষে মৃত জাহাঙ্গীর স্বয়ং পড়ে থাকে না। তাকে মাটিতে গলেপচে মিশে যেতে হয়। যা থাকে সেটা তার ওই গিয়ার, ওটা গায়ে চড়িয়ে এতদিন গিটারে আজান দিয়েছে সে।

তাকওয়াকোর-র নৈরাজ্যযাত্রা যার বিবরণে উঠে আসে সেই গুডিবয়  ইউসুফ, যে কিনা পাকিস্তান থেকে মার্কিন দেশে পা রেখেছিল প্রকৌশলী হবে বলে, জাহাঙ্গীরের রেখে-যাওয়া স্মৃতিচিহ্নগুলোর দিকে তাকিয়ে সেই ইউসুফ ক্ষণিক বিমনা হয়। নৈরাজ্যে কম্পিত ভবন ছেড়ে সুস্থির ও পরম নিশ্চিত জীবনের দিকে যাত্রা করার সময় তার হয়েছে। ভবনটি ছেড়ে যাবার ক্ষণে জাহাঙ্গীরের গায়ে সেঁটে-থাকা গিয়ারের দিকে তর্জনী তুলে অভিবাদন জানায় সে। যার অর্থ হয়তো এই, — কোনটা ঠিক বা বেঠিক এই গোলমালে ভরা পৃথিবীতে জাহাঙ্গীররা সহসা বিদায় নিলেও যে-নৈরাজ্যের দাগ তারা রেখে যায় সেটা মুছে যাবার নয়। মুছে যাওয়ার মুহূর্তে দাগটা পুনরায় ফেরত আসে নতুন কোনো জাহাঙ্গীরের হাত ধরে।

মহাবিশ্ব শৃঙ্খলা ও নিশ্চয়তার মাঝে অনড় থাকে না। অবিরত বিশৃঙ্খল ও অনিশ্চিত হতে না পারলে তার পক্ষে শৃঙ্খলা ও নিশ্চয়তায় স্থির থাকা সম্ভব নয়। নিয়ন্ত্রক বলে কেউ যদি থেকে থাকে সে এই ছকের বাইরে গিয়ে একে নির্ধারণের কথা ভাবে না, আর ভাবে না বলেই জীবন এতটা বিচিত্র ও সংঘাতমুখর! বৈচিত্র্যের খেলায় তাকওয়াকোর  হচ্ছে নগণ্য বুদবুদ! যদিও সব ছাপিয়ে যাওয়া বিশৃঙ্খলাটা মোটেও নগণ্য নয়। ওটা ছাড়া শৃঙ্খলা কদাপি নিজেকে নতুন করে গড়ার পথ পাবে না। সুতরাং সরলরেখা ধরে বিপজ্জনক কিনারায় উপনীত তাকওয়াকোর  শেষ হয়েও শেষ হয় না। নতুন নৈরাজ্যের অপেক্ষায় থাকে সে। নৈরাজ্যটা সবকিছু কাঁপিয়ে দেবে ও পরিশেষে জাহাঙ্গীরের মতো নিথর দেহে মিশে যাবে মাটিতে। গিয়ারটা তবু ঠিক পড়ে থাকবে সেখানে! সে অপেক্ষা করবে নতুন কারো গায়ে ওঠার জন্য!

বি. দ্র : আজ এ-পর্যন্ত। দ্য তাকওয়াকোরস  কিতাবখানা ইচ্ছে করলে ই-বুক রিডারের সাহায্যে ফ্রিতে পাঠ করতে পারবেন। কিতাব উপজীব্য করে তৈয়ার ফিল্মখানাও দেখতে পারেন। ইউটিউবে ওটা আছে। প্রিন্ট যদিও ভালো নয়। m4uhd.tv নামের সাইটেও মাগনা দেখতে পারবেন। ওটার প্রিন্ট ভালো হলেও দেখার সময় নেটওয়ার্কে সমস্যা করতে পারে। কিতাবের স্বাদ কিন্তু ফিল্মে পাবেন না। মাইকেল মোহাম্মদ নাইটের বয়ানকে ছুঁয়ে গেলেও কিতাবে যেসব কথাবার্তা উঠে এসেছে তার ব্যাপ্তি অনেক গভীর।


র‍্যাপকাহন ৩ : বাংলায় হিপহপ
র‍্যাপকাহন ২ : বাংলায় হিপহপ
র‍্যাপকাহন ১ : বাংলায় হিপহপ
ইসলামি হিপহপ

বাংলায় হিপহপ ও র‍্যাপ নিয়া গানপারে অন্যান্য রচনা

বাংলায় রিদম অ্যান্ড পোয়েট্রি নিয়া প্রাথমিকা
বাকরুদ্ধ ভুবনের পলিটিক্যাল অ্যান্থেম : স্কিব খানের ‘সব চুপ’
র‍্যাপ, রাজা কুমারী, প্রাচ্য ও পশ্চিম

আহমদ মিনহাজ রচনারাশি

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you