লাল, চিরকাল ২

লাল, চিরকাল ২

 

আজ কয় তারিখ, দিগন্ত?

অগস্ট, পাঁচ, সূর্য অনেকটাই নিভন্ত;
সন্ধ্যা, বলতেই পারি —

বিজয় মিছিল, ভ্যান্ড্যালিজম, ভস্মীভূত ঘরদোর …
অন্ধকার নামতেসে, অতর্কিত, ঘোর
গভীর রাইত পর্যন্ত উল্লাসোন্মত্ত জনতার সারি;
ইউটিউবে দেখতেসি সেনাপ্রধানের ফ্যুটেজ, বারবার

বাংলাদেশ কী পেয়ে গেল রাজা তার?

কিংস অফ ফিউচার
সিগ্রেটে আগুন ধরাতে ধরাতে দিগন্ত, অনেকটা ব্যস্ত
কণ্ঠে বলে, সেই দিনেরে খেয়ে ফেলসে বাঘে
বহোৎ আগে —

বেচারা রাজারাজড়াদের দুঃখের নাই অন্ত!
.
.
*
এরশাদের পতন দেখসিলাম
এইবার হাসিনার দেখলাম

পতন ও পলায়ন

খুন করে বেশিদিন খুশহাল থাকা যায় না
আমাদের পলায়তি পিয়েমের নাম হাসিনা

আর আমরা হলাম নবারুণ ভট্টাচার্যের কবিতায় ব্যক্ত
সরকারের অজাচারে অত্যাচারে ত্যক্ত
অতিশয় সাধারণ জনগণ!
.
.
*
আমার সোনার বাংলা
আমি তোমায় ভালোবাসি
দিনের শেষে দেখতে দিলায়
বিশ্বজিতের হাসি।
.
.
*
বিজয় নয়, বিনাশের আয়োজন

বললেন যিনি, তারে বলি,— আরে মদন!
শোষণমুক্তির পয়লা বাতাসেই তোর উড়ে যায় গায়ের বসন!
.
.
*
এত হত্যা, হাসিনা, রাইতে বেডে যাবার পরে
একটু হলেও তো অস্বস্তি করে
ভেতরে ভেতরে

করে না?

প্রাণের এত মায়া আপনার —
শুধুই নিজেরটা বাঁচাইবার!

কাতারে কাতার
হাজার হাজার
প্রাণনাশের পরেও কেন আপনারে খুনি বলা যাবে না

কারণ দর্শাবেন, এক্সিলেন্সি হাসিনা?
.
.
*
আমি দিগন্তকে বলি,—
দিগন্ত, নাও!
বাঁশিটা বাজাও

অথবা হার্মোনিকা

হাসিনা পালানোর পরের দিন
পুনরায় ধারদেনা, মাইক্রোঋণ …

যৌবনের রাজটিকা
হাজারচব্বিশের অনির্বাণ শিখা
ছাত্রজনতার উদাহরণমতো চলি

দিগন্তকে বলি, দিগন্ত, হয় গাও নয় পাততাড়ি গোটাও
অতি বিলম্বে বেহাত হয়া যায় বিপ্লব
অগ্নিস্ফুলিঙ্গ হয়া যায় যেমনটা আইসকিউব।
.
.
*
বিচি নাই, বলদ
কুড়ি বছরের বশংবদ
সমস্ত অন্যায় মাথা নামায়ে মেনে নেয়া
বাজারে বেজায় ধারদেনা, বকেয়া …

ছাত্রজনতার বাপচাচা ভাইবিরাদরদের কথা ভাবতেসিলাম

উনাদের দাম
ছাত্রজনতার কাছে কেমন —
বোঝা আর কতটুকু কঠিন, মহাত্মন!

বোঝাবুঝি বিস্তর হইসে, এইবার কাম
ডাইরেক্ট অ্যাকশন —

প্রশংসায় প্রশংসায় ফাটিয়ে দিতে হবে ছাত্রজনতার নাম!
.
.
*
শেখ সেলিমের থাপ্পড়ের ঘটনায়
কেমন করে একটা মানুষ বডিবিল্ডার হয়া যায়
আমরা তা দেখসি নিশ্চয়
স্ক্রিনে একটা আধানাঙ্গা আদমসুরতের নৃত্য

সোহেল তাজ আর কিসু নয়, সিস্টেমেরই ভৃত্য।
.
.
*
জাফরস্যার, জাফরস্যার
এনসিটিবির এডিটার
কেলেঙ্কারি করে বেড়ান ছয়মাসে দুইবার

জাফরস্যার, জাফরস্যার
বুদ্ধিজীবীর ভ্রষ্টাচার
সোসাইটিতে এই জিনিশটা গা-সওয়া ব্যাপার

জাফরস্যার, জাফরস্যার
মুক্তিযুদ্ধচেতনার
চর্চা করে এখন রাজার তন্ত্রচৌকিদার

জাফরস্যার, জাফরস্যার
ছাত্ররা সব রাজাকার
উনিই কেবল প্যাট্রিয়োটিক ফ্রিডম-ফাইটার

ভ্রষ্টাচারী ইন্টেলেক্টের সঙ্গে একটা ভান
সম্মোহনী বিশিষ্টতায় সিস্টেমের জয়গান।
.
.
*
আমাদের নিকটবর্তী ইতিহাসে একটা ক্রুশ্যাল টাইমে
ক্যারেক্টারটা পাই আমরা সাহাবুদ্দিন নামে

কেয়ারটেকার সরকারের প্রধান জাস্টিস সাহাবুদ্দিন আহমেদ

বাকিটা জাতির হিস্ট্রিবুকের প্রাসঙ্গিক পরিচ্ছদে
দেখতে পাবো নগদে এবং যথার্থই বিশদে

বলি, ইতিহাস আর কিসু নয় একটা রাউন্ড পুনরাবৃত্ত গপ্পো

সমকালীন ইতিহাসে, এই দ্বিসহস্রচব্বিশে, ফ্যাসিবাদী হিমে
দেখি সিলেক্টেড প্রেসিডেন্ট যার ডাকনাম চুপ্পু

সময়টা ভারি বজ্জাত, শোনো, তালটা রাখিও ঢিমে।
.
.
*
শোনা যায় ইউনূস —
আই ডু নট ক্লেইম অ্যানি এক্সক্লুসিভ সোর্স
বাট ইউটিউব

জনরব
উপেক্ষণীয় নয়

ইউনূস যদি হয়
মাইক্রোঋণের মায়াপাশ ছেড়ে দেশ যেন বেরোয়।
.
.
*
সো, এই তো
সহস্রাধিক নিহত
কয়েক হাজার আরও হতাহত

পরিশেষে শেখ হাসিনা পলায়ত।
.
.
*
দেড়-দশকেরও অধিক সময়ের অধিষ্ঠান
ছেড়ে যেতে একটু কষ্ট তো হবেই

কিন্তু সমস্ত অভিযোগের উত্তর নিয়েই
ফিরবেন তিনি, নিশ্চয়, ফিরা পাবেন গান
গাইবার অধিকার আবার

আমার সোনার বাংলার

উত্তর না-পাওয়া অব্দি নির্বাসন
গোপন আবাসন ও জীবনযাপন

এক্সাইল ইজ বেটার ফর হার।
.
.
*
মোদ্দা কথা, হাসিনার পলায়নের পথে
অ্যাস্যাসিন হলো কয়েক হাজার তাজা প্রাণ

বুঝলাম, বাট, কথাটা আগে বলতে পারেন নাই?

না, ভাই!
থিয়েটার চলতেসিলো, রক্তপাত যথা শাস্ত্রমতে
দেখতে দেখতে শেখ মুজিবের মূর্তিমুখেও ফুরায়া যায় গান

যতটা পারি বিবেকেরে এড়ায়া রাস্তা পারাই।
.
.
*
বিশটি বছর ধরে —
বেশিকিসু বলতেসি না তো, অতিরঞ্জিত করে? —
শেখ হাসিনার সগর্ব দুঃশাসন —
কুড়ি নয়, প্রায় ষোলো —
ওই হলো —
প্রায় —
বলা যায় —

ছাত্রজনতা বাকরুদ্ধ স্বদেশের কেটে দিলো অশুভ বাঁধন।
.
.
*
সে যেন বড়ভাবে ভাবতে পারে, আর
করতে পারে সেসব, যা তার কথা ছিল করবার

সে যেন ভুল থেকেও ফুটায়া তোলে ফুলের সংসার।
.
.
*
সেই লিডার
দরকার
যে অনেক বড়ভাবে ভাবতে পারে, আর

ডে-টু-ডে ডিউটিগুলা পালন করে যায় তার।
.
.
*
একটা কবিতা আমি কিয়দংশ লিখে
ফেলে রেখে
একাধিক কবিতার দিকে ধাবিত হই নাই

এমন ঘোষণা আমি দিতে পারব না ভাই
কিন্তু, একটি জিনিশ মনে হয় বলে রাখি
একসঙ্গেই তো থাকি

বিশেষ কিসু করবার তোয়াক্কাও করি আর অতি অল্প, থোড়াই।
.
.
*
মাঝখানে বেশ অনেক দিন
সংযোগবিচ্ছিন্ন, অবস্থা যাকে বলে একদম সঙ্গিন

কুল রাখি না শ্যাম
সেটাই তো প্রোব্লেম

জুলাইয়ের লালে ল্যাপ্টানো অগস্ট রক্তাভ অমলিন।
.
.
*
দিগন্ত যদি মিনিট দশেক
অল্পস্বল্প অতিরেক
কুড়ি-পঁচিশ

দিতে পারে সময়

আমি দ্বিসহস্রনয় থেকে একটানা আগস্ট চব্বিশ
বলে নিতে পারব মনে হয়।
.
.
*
এই তো
অল্পায়ত
ছোট ছোট নুড়ি পাথরের মতো

কবিতাগুলা কালভার্টের তলায়

আগস্টের অচেনা হাওয়ায়
দেখি কিছু পুরানা পাপীর মুখ প্রকাশ্য সদর রাস্তায়

আম্মা বেঁচে থাকলে কাঁপতেন আমার জন্য, উদয়াস্ত, শঙ্কায়।
.
.
*
সময় ভালো নয়
দিগন্ত, টালমাটাল সময়

বারো বছর আয়নাঘরে থেকে বেঁচে ফেরা মানুষের মন

সময় দাও, লোকটা স্বাভাবিক হোক
অভিজ্ঞতাটা বাকি জীবন ধরে বলুক

আয়নাঘরের বাইরে সে বেরিয়ে এসেছে যখন

অথবা আয়নাঘর আয়তনে বেড়ে যাবে
এসেনশিয়্যালি জিনিশগুলা আরও বৈধতা পাবে
কে জানে
এইসব নিয়া ভাবনাভাবনিরও খুব-একটা নাই মানে

দেখা যাক ওয়াকার ইউনূস করতে পারতেসেন কি না অনুধাবন।
.
.
*
দাগ লেগে যায়

শাদা জামা সারাক্ষণ ভোগায় আমায়
এই বুঝি দাগ লেগে যায় শার্টের কলারে হাতায়।
.
.
*
হিসাব করলে একুশ বছর ক্ষমতায়, আর
একুশ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকার
হিস্ট্রি আপনার

দেশমাতৃকার বারোটা বাজাইবার এখতিয়ার
আপনারে দেই নাই
কিন্তু বাজাইসেন বারোটাই

তিফিল দুধের শিশুটাও পায়নি রেহাই

নিজেই বলেন, ওগো বরেণ্য, করণীয় —
মুহতারিমা, আপনার লাগি’ কী ট্রিটমেন্ট বাঞ্ছনীয়
বলে যেতেন যদি কষ্ট করে একটাবার!

যা-কিসুই প্রিয়
নষ্ট করে গেসেন আপনি, ইতি, ভবদীয়।
.
.
*
অন্তর্বর্তীকালীন অবকাশে
একেকটি দিন ঝড়ো যায় আর আসে

বেশি দিরং নাই আর —
ভুবনাবতার!
যে-কোনো দিনই শিশির ঝরবে ঘাসে
এসে যাবে শীতকাল

অন্তর্বর্তীদের ভাবগতিক অনেকটাই বিদিশায় বেসামাল।
.
.
*
বোধোদয় হোক আমার তোমার
বোধোদয় হোক সবার
বোধোদয় হোক ক্রমশ-অচেনা ছাত্র ও জনতার

অল্প যেটুকু চর্চা আছে এখনও পড়াশোনার
সেটুকুও যদি খোয়াতে না চান
ছাত্রদেরে ঘরে ফেরান

বিএনপি লীগ কিংবা জামায়াতে ইসলাম
ওরা চালায়া যাক ওদের যার যার মতো উদারা মুদারা তারা রামপাম পাম
পড়াশোনাটা না-থাকলেই বিশেষ সুবিধে এদের
বলবে না কেউ, অনেক হইসে, এবার থামান

ছাত্রজনতারা, আগাপিছা ভাইবা আগান!
.
.
*
মাঝে মাঝে ব্রেইক —

বাঁশি বাজায় দিগন্ত সিমসাং নিক
অন্ধকার ও অনিশ্চয়
কেটে যেন ফর্শা হয়

আমিরদীন নদীর তীরের ভোর

যদিও তখন অনিশ্চয় এতদূর
বোঝা যাচ্ছে না কে ভুল কে ঠিক।
.
.
*
দিগন্তের বাঁশির প্রশংসায়
বারো নম্বর ওজনঘরের সিমেন্টপিলার টিনের চালায়
বাগানের প্রত্যেকটা ক্যাটার্পিলার ঝিঁঝি ও জোনাকি
লিখতে দেখে একফাঁকে এসে জিগায় আমায়
বায় দ্য বায় —

দেশের অবস্থা যা শুনতেসি, সত্যি নাকি!
.
.
*
দেখি রিপাব্লিকের হৃদয় থেকে
একটি কীর্তনী জিকিরের আবহ বজায় রেখে
একটা গান উঠে আসে

এই দ্বিসহস্রচব্বিশের অগস্ট মাসে

সেই গান
অন্তর্বর্তীকালীন নয়, অশ্রুতপ্রায়, আবহমান।
.
.
*
যার যা কাজ
সে তা করবে না আজ
যার যা নয়
তা-ই সে করবার সময়
একবারও যদি ভাবত

বাংলাদেশের এই বিপুলা ছাতামাথা হাল হইত?
.
.
*
ফৌজ থেকে এসছেন —
সো? হোয়াট দেন?
ফৌজি হুকুমৎ কায়েম করবেন?

জি হুজুর জাহাঁপনা রাইট ইয়্যুআর স্যার
এক্সিলেন্সি অ্যাডভাইজার!

চউখ না-রাঙায়া যা পারেন করেন।
.
.
*
এ এক নয়া জায়গা, আজকেই
টিগার্ডেনের গভীর ভিতরেই

দিগন্ত ও আমি

ইউজুয়্যাল জায়গাটা আগেই অকুপাই হয়া যায়
নিউয়ার প্লেইসের খোঁজ পাই ঠিক সমাসন্ন সন্ধ্যায়

বিকেল তখন অস্তগামী

কিন্তু, নয়া জায়গাটা তারপরও মনে হয়
আগেরটার মতো অত শক্তপোক্ত নয়।
.
.
*
শ্রাবণের মেঘগুলারে এখন আর আকাশে
দেখা যায় না আনাগোনা করতে
এবং জড়ো হতে
যেমন হতো নব্বইয়ের ডিফ্রেন্ট টাচের গানে

এখন এখানে
হেলিকপ্টার আর স্নাইপার
আর গানপাউডার

গভীর রাতের ঘন ঘুমন্ত বাতাসে।
.
.
*
তারাভরা রাতে

কার?
বাচ্চুর? না আব্দুল জব্বার?

শেখ হাসিনার
হানাদার হেলিকপ্টার
ক্র্যাকডাউন চালায় রাত থেকে প্রাতে

বেলা সাড়ে-বারোটায় নিউজ এসে যায় হাতে —
শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী না

তারপর তো দোকানপাট লুট হয়
দেখসি নিজের চোখে, এমন দৃশ্যও তো কম নয়

ছাত্রজনতার যদিও কোনো যোগসাজশ নাই তাতে।
.
.
*
দাও ভাত

বহুদিন খায় নাই যারা
পেটভরে
এই নৃশংস নগরে
এমন দুইচাইরজনের লগে দেখা হয়
মাসোহারা
মাইনেতে পেটের জ্বালায়
আমাদের বাসায়
কাজ করেন তারা

তাছাড়া
চাইলে মাঝেমধ্যে রুটি দিতে পারো
সঙ্গে একটু টক চাটনি, ডিম দিয়া আলুর ঝোল, আরও
গোটা খানেক মাংশের টুকরো

মোট কথা, ভাত চাই, ভাত —
ভাতে বোনা আমাদের দাঁত।
.
.
*
রক্তকণিকায়
মাঝেমধ্যেই ডিফেক্ট দেখা যায়

ডিফেক্ট মানে বাংলায়
যেইটারে বলে ঝামেলা, ঝুট
অস্ফুট
অন্তর্বেদনাও হতে পারে

সেইটা কেন হয়
এখনও বোধগম্য নয়?

ডিফেক্টের চূড়ায় রেখে গেসে দেশটারে
শেখ হাসিনার সময়।
.
.
*
দিগন্ত মনে হয় আজকে একটু ডাউন
বাঁশি বাজাতে চাইতেসে না বেশিক্ষণ

কথাবার্তা হলো, ছড়ানোছিটানো, প্রসঙ্গ হাসিনার গণখুন
মোস্ট ইন কমন।
.
.
*
ধরা পড়ে সালমান এফ রহমান
দাড়ি কেটে কুটিপাটি যেন হনুমান
সঙ্গে একটা আড়ুয়াভাঁড়ুয়া আনিসুল হক

হাসিনাপ্রাসাদে বেশুমার কীচকের দুইটি কীচক।
.
.
*
এই ধাক্কা সামলানো কঠিন
দিগন্ত, এই ধাক্কা সামলায়া উঠলেই ক্লিন
পূর্বদিগন্তে সূর্য

রক্তলাল রক্তলাল রক্তলাল

বর্তমানে হেলাদোলা ছাত্রজনতার কাল
চলতেসে, চলতে দাও, চলুক

সামাল দিয়া উঠতে পারলেই ইনশাল্লা
ছিপখান তিন দাঁড় তিনজন মাল্লা
মানুষের সদর্থ মনোবাসনা পূর্ণ হোক

কথা সত্য
চায়ের পাতার কুঁড়ির মতো

সমস্যা বাংলাদেশি সিভিল সোসাইটির ধৈর্য।
.
.
*
তুমি সব জানো, তা তো নয় —
তুমি কিসুই জানো না, তা-ও কী হয়?

তুমি নিশ্চয় রিয়্যাক্ট করো, মরে যাবার সময়?
.
.
*
কত সহজেই চলে যেতে শিখেছে মানুষ! —
সরকারে মারে যদি কারে দিব দোষ?
.
.
*
সনদ লাগবে কেন তোমার —

লাল?

তুমি তো স্বতঃস্ফূর্ত সংসার
তোমার কেন প্রত্যয়ন দরকার

তুমিও কী লীগের মতো লম্পট, ষণ্ডাপাণ্ডা, মাকাল?
.
.
*
যত দ্রুত ঘরে ফেরো, সুপুত্র ও সুকন্যাগণ!
তোমাদের দৈনন্দিন রুটিন ফলো করো, পড়ায় দাও মন

ছাত্রনং অধ্যয়নং …

ডোন্ট গেট মি রং
সুপুত্র ও সুকন্যাগণ, তোমরাই আমাদের অন্তিমের আশার বাহন।
.
.
*
নীল না-হয়ে লাল হলো ক্যান —

সত্যিই তো, রাজীব আশরাফ, এই গান
ফিরা আসবে এভাবে
এই দ্বিসহস্রচব্বিশে শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ প্রভাবে
একহাজার দুইহাজার যখন খুন হয় নিরীহ জনতা

ছাত্র ও কোলের শিশু

স্বয়ং যিশু
প্রোটেস্ট করেন
স্টপ জেনোসাইড, আভি, রাইট হিয়ার!
হোয়াট রং উইথ ইয়্যু, হাসিনা, মাই ডিয়ার!

পলাতকা জানবে না কারে বলে অমরতা।
.
.
*
লাল হতে না হতেই নীল!

বলেন, রাজীব, এর লগে মিল
কই গিয়া পামু আমি, ভাই?

জিন্দাবাজার পার হতে না হতে পেয়ে যাই
বিকেলের চা-বাগান, সূর্যাস্তরোশনাই।
.
.
*
প্রিয় নবারুণ,
প্রণাম গ্রহণ করুন
অথবা সালাম

বললাম তো, আমার নাম
আপনি চিনবেন না আমায়

আমি সোশ্যাল মিডিয়ায়
নিরীক্ষণ করি আমার দেশ, দশ, সময়
পার্টিজ্যান পলিটিক্স করা আমার কাজ নয়

কিন্তু জুলাই জেনোসাইড চলাকালে
একটা আশ্চর্য ঘটনা আমি নিরীক্ষণ করি —
স্যরি,
ইন অল সেন্সেস স্টকারের ভূমিকা নিতে হয়েছিল বলে;
আদারোয়াইজ ঘটনা জানবার রাস্তা আদৌ কোথায় এতদঞ্চলে?

অ্যানিওয়ে, নবারুণ, যেইটা বলতেসিলাম, বলি —
ইয়াং ও বয়সের-ঘষা-খাওয়া
অ্যাকাডেমির মিটিঙে যাওয়া
সাহিত্যিক সাংবাদিক মাস্টার পডকাস্টার সবগুলি
নির্বিচারে একটা গণহত্যায় প্রাপ্য প্রতিবাদ ও প্রতিক্রিয়ায়
হাসিনাফ্যাসিজমের চায় নাই বিদায়

এদের লেখাজোখায় একটা বাক্য শুধু উৎকলিতে দেখা যায়
আমাদের কবিসাহিত্যিকদের দেয়ালে ও সময়রেখায় —
‘এই মৃত্যু-উপত্যকা আমার দেশ না’ …

তাইলে কার দেশ?
মুরাদনগরের মন্থর মিজাজের মেষ
অথবা চাকরিটিকানো কবির কাল্পনিক মানসপ্রতিমার?

গণহত্যাকারীর অন্ধ জিঘাংসায়
পাঁচ নয় সাত নয় টানা পাঁচ তিনা পনেরো বছর ধরে
শহর থেকে শহরান্তরে
শেখ হাসিনার বিচারবহির্ভূত হত্যায়
কাতারে কাতার বেশুমার মানুষ মরে যায়

দ্বিসহস্রচব্বিশের গণহত্যায় চাকরি-করা বাংলাদেশি কবিসাহিত্যিক
শেষের দিকটায় বেফানা অবস্থায় দিগ্বিদিক
করে যায় লাইনের পর লাইন নবারুণ ভট্টাচার্য ও অন্যান্য কবির অপব্যবহার —

‘এই মৃত্যু-উপত্যকা আমার দেশ না’ আওড়ানি ছাড়া নাই আর-কোনো আলোচনা।

লাল, চিরকাল ২ ।। জাহেদ আহমদ ।। রচনা : ০৫ জুলাই টু ১৪ অগস্ট ২০২৪ ।। প্রকাশ : ১৭ অগস্ট ২০২৪


লাল, চিরকাল ১
জুলাই জেনোসাইড : গানপার সংকলন

Support us with a click. Your click helps our cause. Thank you!

COMMENTS

error: You are not allowed to copy text, Thank you