প্রথমেই তোমাদের সাপোর্টের জন্য তোমাদের অনেক ধন্যবাদ। আমাদের এটা ভাগ্য যে আমরা তোমাদের মতো সাপোর্টিভ অডিয়েন্স পাইসি। প্রায় প্রতিটা শোতেই তোমাদের দেখা যায়। এবং সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। আমরা এটাই চেয়েছিলাম, এটাই হচ্ছে, এবং তার জন্য তোমাদের আরেকবার ধন্যবাদ।
কিন্ত, ভালো লিসেনার হতে গেলে তোমাদের আরো বেশকিছু কাজ করতে হবে। যেহেতু দিনদিন আন্ডারগ্রাউন্ড সিন উন্নত হচ্ছে, সেহেতু তোমাদেরও উন্নত হওয়ার সময় এসেছে। তোমরা উন্নত না-হলে সিনের উন্নতি অনেকাংশেই কমে যাবে।
শুধু মেটাল টি-শার্ট গায়ে দিয়ে হেডব্যাং করলেই মেটালহেড হওয়া যায় না। প্রচুর গান শুনতে হবে। জানতে এবং বুঝতে হবে কি হচ্ছে। গড্ডালিকা প্রবাহ সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। ভেড়ার পালের প্রথমটা যেদিকে যায়, বাকি সবগুলা সেদিকেই যায়। গড্ডালিকা প্রবাহের স্রোতে নিজেকে ভাসায়ে দিলে হবে না। নিজস্ব ধারণা এবং অভিমত থাকতে হবে। আর সেটা তখনই সম্ভব যখন নিজের মধ্যে মিউজিক সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকবে।
আমরা ধাম করে বলে দেই ওমুক আমার বাল মিউজিক করে, অমুক ভাই সেরা, অমুক ব্যান্ডের ব্যাজিস্ট ব্যাজগিটারে চুলকায় … ব্লা ব্লা ব্লা। আমরা ব্যান্ড, মিউজিশিয়্যান, ওদের মিউজিককে অবশ্যই জাজ করব। কিন্ত তার আগে নিজেকে একবার ভালোভাবে জাজ করা তো অবশ্যই উচিৎ।
তুমি তোমার পাড়ার ১০ জন গিটারিস্টকে দেখে এদের মধ্যে বেস্ট যে তাকে পৃথিবীর সেরা বলে মেনে নিলা, এটা তো ভণ্ডামি ছাড়া আর কিচ্ছু না। সব গিটারিস্টকে তো আর দেখা সম্ভব না, অ্যাট-লিস্ট ১০০টা গিটারিস্টকে দেখে তারপর ডিসিশন নেয়া কি উচিৎ না?
তোমরা লিসেনার হিসেবে উন্নত হলে আমরাও ভালো কাজ করতে উৎসাহ পাবো। বোঝো নাই? আজকে কেউ-একজন ৪/৪ বিটের একটা রিফ বানাল যা আজ থেকে ২০-২৫ বছর আগে বানানো হয়ে গেসে। তুমি সেটা শুনে বললা এটা জোস, এ-রকম মেটালগান তুমি জীবনে শোনো নাই। তুমি ওর সামনে ওর প্রেইজ করতে করতে ওকে তোমার দেবতা বানায়ে ফেললা! একবার ভেবে দেখো, তুমি কি ওর উপকার করছ? না। তুমি ওকে আর ভালো কাজ করতে নিষেধ করছ। কারণ ওর কাছে মনে হচ্ছে এটাই যথেষ্ট। এটা করেই ওর মিউজিকে সাফল্য চলে এসেছে।
সত্যিকারের মিউজিশিয়্যানকে যথাযথ সম্মান দিতে শেখা উচিৎ। পারফর্মার আর মিউজিশিয়্যানের মধ্যে আকাশ-পাতাল ব্যবধান। ব্যাপারটা বুঝতে হবে।
সার্কেলে মেটালিকা vs মেগাডেথ নিয়ে কথা হচ্ছে। তুমি কোনো ব্যান্ডেরই ডিস্কোগ্রাফি ভালো করে শোনো নাই। দেখলা ম্যাক্সিমাম পোলাপান মেটালিকাকে সাপোর্ট দিচ্ছে। তুমিও সাপোর্ট দেয়া স্টার্ট করলা। একবার বাসায় গিয়ে শুনলাও না কে কি গান করে। ভাই, এ-রকম লিসেনার হওয়ার ইচ্ছা থাকলে কান কেটে ফালায়ে দাও। এই কান তোমার দরকার নাই। অন্ধ সাপোর্ট দিয়ে প্রিয় ব্যান্ডটার ক্ষতি করার চেয়ে বাসায় বসে মুড়ি খাওয়া অনেক ভালো। যে-ব্যান্ডের সত্যি ভালো চাও, তার প্রব্লেমগুলো ওকে বলো, কিভাবে সে আরো বেটার কিছু করতে পারে সেই বিষয়ে আইডিয়া দাও। পাব্লিকলি না বলে মেসেজ দিয়ে বলো। ব্যাপারগুলা বুঝতে শেখো।
যতটুকু জানো তা শেয়ার করতে হবে, আর যা জানো না তা জেনে নিতে হবে। তোমার অপিনিয়ন মোটেও ফেলে দেয়ার মতো কিছু না। সার্কেলে কথা বলার সময় তোমার যেটা মনে হয় সেটাই বলবে। হাওয়া যেদিকে যায় ওদিকে যাওয়াটা তোমার নিজের সাথে বেঈমানি করা ছাড়া আর কিছুই না। অপিনিয়ন দেয়ার মতো সাহস রাখো।
নিজেকে পার্সোন্যালি উন্নত করতে হবে। নিজের ফিলোসোফিকে উন্নত করতে হবে। যা ভালো লাগে সেটা ১০ জনের সামনে বুক ফুলিয়ে বলার সাহস রাখতে হবে।
“ফিজিক্যালি না, মেন্টালি প্রত্যেক মেটালহেড ওয়ানম্যান আর্মি। একজন প্রকৃত মেটালহেডের কাউরে চো*র টাইম থাকে না।”
এখানে শো-অফ করার কিচ্ছু নাই। তোমার অ্যাটিচ্যুড, থিঙ্কিং, চিন্তাভাবনা তোমাকে মেটালহেড বানাবে। টি-শার্ট, বুট, প্যাচ, ভেস্ট না। হ্যাঁ, এগুলা মেটালহেডের লাইফস্টাইল, কিন্ত এগুলা থাকলেই মেটালহেড হয়ে যাবা এমন কোন কথা নাই।
শেষে বলব, আমার কথায় কেউ যদি কষ্ট পেয়ে থাকো, তাইলে তার জন্য আমি সমবেদনাও জানাতে ইচ্ছুক না। আমি তা-ই বলসি যা আমার কাছে সত্য মনে হয়।
Be honest
Be bold
All your negativism
You should fold
… …
- সিলেট আন্ডারগ্রাউন্ডের অডিয়েন্সদের উদ্দেশ্যে || শুভ বক্স - September 6, 2017
COMMENTS